#স্বামীর_বিয়ে১৬
#সাখেরীন
রুহীনিঃ যা ভাবা ভেবে ফেলেছি। আমার আর আমার বাচ্চার ওপরে অভ্রের কোন ছায়া থাকবে নাহ। আমি কখনো পড়তে দিবো না। চলে যাবো আমি অনেকক দূরেররর যেখানে কেউ আমায় চিনবে নাহহ কেউ না। দুঃখ শুধু একটাই নিহালকে কিছুই বলতে পারছি না। আমি চাই না আমার জন্য অভ্র আর নিহালের ঝগড়া করুক।ওদের সম্পর্ক নষ্ট হোক।
নূরঃ রুমে এসে হাঁপাতে লাগলাম। তারপর হাসতে হাসতে বেডে গড়াগড়ি করতে লাগলাম। চোখ- মুখে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলাম কিছুক্ষণ আগের ঘটে যাওয়া কাহিনী গুলো। লজ্জায় গাল হয়ে গেছে। কি ছিলো এটা?? কেমন ফিলিং হচ্ছিলো তখন আমার??
নিহালঃ মুচকি হাসি দিয়ে দিয়ে টেবিলে কফি রাখার মগটা হাতে নিয়ে চুমুক দিলাম। কফিটা পুরো ঠান্ডা হয়ে গেছে দেখি। টেবিলে আবার রেখে দিলাম। বেডে শুয়ে পরলাম। কফির স্বাদ টা খুব ভালো ছিলো। তাই বেডের থেকে কফিটা আবার খেতে শুরু করলাম।
রুহীনিঃ রেডি হয়ে নিচে গেলাম।
অভ্রের মাঃ কোথায় যাচ্ছিস??
রুহীনিঃ ডিরেক্টরের সাথে দেখা করতে।
অভ্রের মাঃ ওহ। ওকে যা।রাত হবে নাকি???
রুহীনিঃ হয়তো।
অভ্রের মাঃ আচ্ছা যা।
রুহীনিঃ হুম।
রুহীনিঃ সরি মা আমি মিথ্যা বলতে চাইনি। পরিস্থিতিতে মিথ্যা বলতে হয়েছে।
ইলা কলিংবেলটা বাজাতেই খুলে দিলো। দেখলো অভ্র চোখমুখে হাসির রেখা ফুটে ওঠেছে।
ইলা অভ্রকে জড়িয়ে ধরলো।
অভ্র বাসায় ডুকলো। ইলা পানি এনে দিলো। অভ্র খেলো না।
ইলাঃ ( পানিটা টেবিলে রেখে) কি হয়েছে তোমার মন খারাপ কেনো?? আর ফোনটা আজকে রুহীনি রিসিভ করেছিলো কেনো??
অভ্রঃ নিশ্চুপ….।
ইলাঃ কি হয়েছে বলোতো….?
অভ্রঃ রুহীনি সব জেনে গেছে তোমার আমার ব্যাপারে। ( মাথা নিচু করে)
ইলাঃ কিিিিিিিি( খুশিতে)
অভ্রঃ ভ্রু কুঁচকে তাকালাম ইলার দিকে।
ইলাঃ(হাসি অফ করে। মন খারাপের ন্যাকামো করে) কিভাবে??
অভ্রঃ সব বললাম ইলাকে।
ইলাঃ( যাক বাবা খুশি হইলাম) সরিিিি আমার জন্য তোমাদের এই পরিস্থিতি। আমি কখন যে তোমায় আমার মন দিয়ে দিছি নিজেও জানি না।( মাথা নিচু করে রইলাম আর মনে মনে হাসতে লাগলাম)
অভ্রঃ না বাবুর আম্মু তোমার কোন ভুল ছিলোনা।
ইলাঃউমমম… এখন হবে?? রুহীনিকি মানবে??
অভ্রঃ জানি না। কিন্তু রুহীনি আমার সাথে কথাই বলছে না। আমার বুক ফেটে যাচ্ছে ওর অবহেলায়।
ইলাঃ ভালো হয়েছে। রুহীনি আমিতো এতোদিন এটাই চাইতাম জান। একবার খালি তোমার বাড়ির সৃকৃতি পাই তাহলে দেখবা আমার আসল রুপ দেখবা। রুহীনিকে বাসা থেকে আর তোমার লাইফের থেকে বের করিয়ে ছাড়বো। আমি তোমার ভাগ কাওকে দিবো না। তুমি শুধু আমার। তোমার জন্য আমি আমার সব ছেড়ে দিয়েছি। আর এই বাচ্চাটা হলো আমার মোহরা। এই বাচ্চাটাই পারবে তোমার বাড়ির বউের সৃকৃতি দিতে। তোমার ওপর শুধু আমার অধিকার তা বুঝিয়ে দিতে।( মনে মনে এসব ভাবছিলাম)
অভ্রঃকি ভাবছো এতো??
ইলাঃ( থতমত খেয়ে) ভাবছি রুহীনি যদি রাজি না হয় আমাকে মেনে নিতে তাহলে আমার আর আমার বাচ্চার কি হবে??
অভ্রঃ( ইলাকে বুকে জড়িয়ে) আমি আমার বাচ্চার জন্য সব করতে রাজি।রুহীনিকে ছাড়তেও রাজি। যদি ও রাজি না হয়।
ইলাঃ( আমি তো এটাই চাই)তোমার ফেমেলি আমাকে মেনে নিবেতো??
অভ্রঃ মেনে নিবে সোনা। তোমার গর্ভে আমার সন্তান যে আছে।
ইলাঃ( এই জন্যই বাচ্চাটা গর্ভে ধরে আছি। নাহলে এই বয়সে বাচ্চা কে নেয়। আর আমি একজন ফেশন ডিজাইনার। ফিটনেস বলে কথা আছে। কিন্তু কি করব অভ্রকে যে বেশি ভালোবাসি।)হুম।
রুহীনিঃ সব ঠিক আছে তো??
ইমানঃজ্বী মেম। তারপর আপনি একবার পড়েনিন কেথাও ভুল আছে কিনা।
রুহীনিঃ হুম দাও।
ইমামঃমেম এর হাতে পেপারটা দিলাম।( কিন্তু বুঝতেই পারছি মেম আর অভ্রের স্যারের মধ্যে কি হয়েছে যার ফলে তাকাল নামার পেপার?? আবার পেপারের বেবির কথাও লেখা আছে??মেম কি মা হতে চলেছে?? এটা কি অভ্র স্যার জানে???)
রুহীনিঃ ( বুঝতে পারলাম ইমান কি ভাবছে।) কি হলো??
ইমানঃ( থতমত খেয়ে) না মেম কিছু না।
রুহীনিঃ নাও পেপারগুলো ঠিকই আছে।
ইমানঃপেপারগুলো নিয়ে চলে এলাম।
ইমান হলো রুহীনির পি.এ রুহীনি যত ডকুমেন্ট ইত্যাদি ইত্যাদি সব ইমান জানা থাকে।
রুহীনিঃ আমি ড্রাইভ করে ডক্টরের কাছে যাবার জন্য রওনা হলাম।
অভ্রঃ ইলা জলদিই তোমাকে আমার বাড়ির বউ করে নিয়ে যাবো। ( ইলা কপালে চুমু দিলাম)
ইলাঃ হুম তাই যেনো হয়।
অভ্রঃ আজ আসি।
ইলাাঃ হুম।
কিছুক্ষন আগেই অরিন ও অভ্রের বাবা বাসায় এসেছে। লন্ডনে কিছু কাজে গিয়েছিলো। বাসা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
সবাই হলে বসে আড্ডা দিচ্ছে অভ্র সেই কখন থেকে রুহীনির অপেক্ষা করছে। সত্যি বলতে অভ্র একা না সাথে সবাই করছে।
রুহীনিঃ(ডক্টর কাছ থেকে চেক-আপ করে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত আট বেজে উঠেছে। বাসায় ডুকতেই দেখি বাবা আর অরিন এসেছে। বাবাকে সালাম দিলাম। অরিনের সাথে হাগ করলাম।) আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
বাবাঃ ওকে যা।
রুহীনিঃ আমি চলে এলাম রুমে।
নিহাল আমিও রুহীনি সাথে চলে এলাম।
অভ্রঃ কি হচ্ছে এইসব?? নিহাল কি সব জানে??আর রুহীনি বা এতক্ষন কোথায় ছিল??( মনে মনে)
নিহালঃ রুহীনি…..। ( রুমে নক করে)
রুহীনিঃ ওহ তুই….আয় ভিতরে।
নিহাল ঃকোথায় ছিলি??
রুহীনিঃ ডিরেক্টরের সাথে মিট করতে গিয়েছিলাম।
নিহালঃ তাই…
রুহীনিঃ হুম
নিহালঃ নাম্বার দে কথা বলবো আমি।
রুহীনিঃ দুরর যা তো আমি ফ্রেশ হবো।( কথা এড়ানোর জন্য)
নিহালঃতুই যে আজ কোন ডিরেক্টরের সাথে মিট করতে যাসনি সেটা আমি ভালো করেই জানি। কিন্তু তুই এতক্ষণে কোথায় ছিলি তা জানতে পারিনি।
রুহীনিঃ মাথা নিচু করে রইলাম।
নিহালঃ বল কোথায় ছিলি??
রুহীনিঃ ( মিথ্যা বলে লাভ নেই। আর এমনিতেই কাল তো বলবোই সবাইকে সব কিছু) নিহল আসলে আমি অভ্রের সাথে আর একই ছাদের নিচে একই রুমে থাকতে পারবো না। তাই তালাক নামার পেপারস রেডি হয়েছে গেছে তাই আনতে। ( চোখমুখ অফ করে)
নিহালঃ কি কিহহ বলছিসসস????
রুহীনিঃ হুম সত্যিই বলছি।।নিহালঃ মজা করছিস তাই না??
রুহীনিঃ আজব এটা নিয়ে কি কেউ মজা করে??( রেগে গিয়ে)
নিহালঃ কি বলছোস ভেবে দেখ।
রুহীনিঃ আমি ভেবেই বলছি।
নিহালঃ কিন্তু কেনো??
রুহীনিঃ আমার কেরিয়ার আছে। এন্ড আমি ফ্রীডম লাইফ চাই।
নিহালঃ রুহীনি তোর কেরিয়ার শুধু অভ্রই ছিলো। তাহলে এখন এসব বলছিস কেনো??
রুহীনিঃআমার লাইফ আমার ইচ্ছা তোকে এতো উওর দিবো কেনো?? তুই কে??
নিহালঃরুহীনি(থাপ্পড় দিলাম রুহীনিকে) আমারই ভুল ছিলো তোর মতো গ্রাম্য মেয়েকে এই পদে নিয়ে এসেছি অভ্রের বউ বানিয়েছি । তুই অভ্রের কোন….
রুহীনিঃ নিহাল বেরিয়ে যা আমার রুম থেকে।
নিহালঃ তোর মতো মেয়েদের না জুতার নিচে রাখাই ঠিক। নাহলে মাথায় উঠালে তোর মতো পাখা গজায়।
রুহীনিঃ বেরিয়ে যা। তোর আর আমার সম্পর্ক এখানেই শেষ।
নিহালঃ তোর মুখ যেনো আমি আর না দেখি।
নিহাল নিজের রুমে গিয়ে ব্যাগ প্যাক করে রওনা হলো নিজের বাসায় যাবার জন্য।
সবাই নিহালকে অনেক বললো থাকতে কিন্তু নিহাল অযুহাত দিয়ে চলে গেলো।
অভ্র রেগে রুমে গেলো সে জানে রুহীনি হয়তো কিছু বলেছে।
রুহীনিঃ কান্না করতে লাগলাম। আম সরি নিহাল। আম সরি। আমার আর কোন উপায় নাই তোদের থেকে দূরে যাবার। আম সরিিিিি
অভ্রঃ রুহীনিিিিিিি???
রুহীনিঃ হাটু ঘেরে নিচে বসে কান্না করছিলাম। অভ্রের ডাকে চোখমুখ মুছে উঠে দাড়ালাম।
অভ্রঃ ( রুহীনিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে) তোমার মনে হয় না তুমি একটু বেশিই বার বেড়েছো??
রুহীনিঃ ( অভ্রকে ধাক্কা দিয়ে)
চলবে…