#স্পর্শ
#part_1
#sarika_Islam
-কি দিন এসে পরেছে ওয়াও মেয়ে হয়ে মায়ের বিয়ে খেতে যাচ্ছি আই কান্ট বিলিভ,,
আয়নার দিকে তাকিয়ে শাড়ির আচল দিতে দিতে বলল দিয়া,,বিরক্তি মুখে আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকেই বলতে লাগলো,
-কি দরকার তোর দা মোস্ট ফেমাস লয়ার দিতির বিয়েতে যাওয়ার?মানি আমি বুঝি না এত্ত ফিলিংস আসে কোথা থেকে তোর দিয়া?
হুট করে দিয়ার ফোন আসলো,স্ক্রিনে নাম দেখে দিয়া আরেকদফা বিরক্তি হলো,
-হ্যালো!!
-দিয়া কোথায় তুমি?
-অন দা ওয়ে মম,
-কাম ফাস্ট
বলেই ফোন কাট হয়ে গেল,দিয়া হাই হিল পরলো যা দিয়া একদমি না পছন্দের তাও আজ পরতে হলো, নিজেকে একবার দেখে বেরিয়ে পরলো বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য,কিছুক্ষনের মধ্যেই দিয়া পৌছে গেল খান বাড়িতে।গেটের সামনে বড় বড় করে লেখা ‘খান বাড়ি’ দিয়া এক নজর নেম প্লেট টার দিকে তাকিয়ে ভিতরে চলে গেল।
ভিতরে একদম মেহমানে গিচগিচ করছে পুরো বাড়ি।বেশির ভাগ মানুষকে দিয়া আগের থেকেই চিনে আর খুব ভালো ভাবেই।দিয়া স্টেজের সামনে গেল তার মা একদম সেজেগুজে বসে আছে।দিয়াকে দেখে দিতি হাত দিয়ে কাছে আসার জন্য ইশারা করলো।দিয়া না চাওয়া স্বত্তেও স্টেজের উপর উঠে দিতির কাছে গেল।মুখে একটা আলগা হাসি দিয়ে বলল,
-মম ইউ লুকিং সো প্রিটি,
-থেংস
একখানা হাসি দিয়ে দিতি বলল,দিয়া মুখটাকে একটু হাসির ভংগি করে আবার বিরক্তিতে চলে গেল।ঘুরে ঘুরে দেখতে মোটেও দিয়ার ভালোলাগছে না তাই সে ড্রিংক সাইডে গিয়ে বসলো।একটা স্ট্রবেরি জুস নিল দিতির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে স্ট্র দিয়ে জুসটা নাড়তে লাগলো,
-পাপা আই মিস ইউ সো মাচ,
দিয়ার খুব তার বাবার কথা মনে পরছে তার মা তার নতুন হাসবেন্ড এর সাথে কি ধরনের পোজে সেল্ফি তুলছে যা দিয়ার একদম ভালোলাগছে না,জুসের এক সিপ নিয়ে সেখান থেকে উঠে পরলো।হঠাৎ হিলের সাথে শাড়ির কুচিটা লেগে পরে যেতে নিলে কেউ এসে ধরে ফেলে।দিয়া একদম তার উপর গিয়ে পরে।সোজা হয়ে দারিয়ে কুচি নারাচারা করতে থাকে সামনে থাকা ব্যাক্তিটি হাত বারিয়ে বলে,
-হায় আমি রায়ান
-হোয়াটএভার
দিয়া চলে গেল রায়ান হাত বারানোটাই দিয়ার দিকে ঘাড় খানিকটা কাত করে টাটা করে দিল।দিয়ার আর এক মুহুর্তও থাকতে ইচ্ছে করছে না সে বাড়ি চলে আসলো।শাড়ি চেঞ্জ করে টপস আর প্লাজু পরে এসির টেম্পারেচার হাই করে গায়ে কম্বল টেনে শুয়ে পরলো।সাইডে থাকা ফোনটা বাইব্রেশনে বো বো করছে জানে এখন কে ফোন করতে পারে তাই না ধরেই একদম কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
সকালে,ঘুমের চোখেই কম্বল থেকে হাত বের করে এসি অফ করে দিল মুখ থেকে কম্বল সরিয়ে উঠে বসলো।বসতে না বসতেই হাচি শুরু হয়ে গেল।ঠান্ডা লেগে গেছে বেড সাইড থেকে টিসু নিল।চুলগুলো পুরোটাই লেয়ার কাটার ফলে সব চুল বের হয়ে গেছে।চুলগুলো খুলে ফেলল গায়ের কম্বল নিয়েই রান্নাঘরে গেল পাউরুটি টোস্ট হতে দিল আর জ্যাম টেবিলে এনে রাখলো।ফ্রেশ হয়ে টোস্ট করা পাউরুটি আর জ্যামটা নিয়ে সোফায় বসে পরলো আর গায়ে একটা কম্বল তো আছেই আর সাইডে টিসু বক্স।টিভি দেখতে দেখতে দিয়া ব্রেকফাস্ট করছে তখনি ফোন আসলো।ফোন রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে খুব এক্সাইটেড হয়ে বলল,
-হায় মেরি জান,আমাদের সব কালেকশন পছন্দ হয়ে গেছ।
এটা শুনা মাত্রই দিয়া খুশি হয়ে গেল দিয়াও একটু এক্সাইটেড হয়ে বলল,
-সত্যি বলছিস?শ্রেয়ু আম সো সো সো হ্যাপি,
বলেই দিল হাচি,সাইড থেকে টিস্যু নিয়ে নাক মুছতে লাগলো।অপর পাশ থেকে শ্রেয়া বলল,
-আবার এসি অন করে শুয়েছিস?
-হুম
-আবার ঠান্ডা লাগাইসস?কি হইসে এইবার?
-আরে আইসা বলুম নে
-আচ্ছা।
দিয়া চটজলদি টপস জিন্স আর গলায় একটা স্কার্ফ ঝুলিয়ে রেডি হয়ে নিল। দরজার সামনে দারিয়ে জুতা পরতে লাগলো তখন ফোন আসলো আবার দিয়া ফোনটা একবার দেখে আর ধরলো না এখন খুশির সময় এই সময়টা নষ্ট করতে চায়না।একটা রিকশা করে নিজের ড্রেসিং শপে আসলো সেখানে অলরেডি শ্রেয়া এসে হাজির।দিয়া ভাড়া মিটিয়ে ভিতরে গেল শ্রেয়াকে দেখে খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলো।
-আর কিছুক্ষন পর ক্লাইন্ট আসবে আমাদের কালেকশন দেখতে।আর আন্টির কি খবর?
-আমি জানি না আমাকে জিজ্ঞেস করিস না।কাল থেকে ফোন রিসিভ করছি না।
শ্রেয়া আর কিছু বলল না দিয়ার মুডটা এখন নষ্ট করতে চায়না।দিয়া তার চেয়ারে বসে ফোন ঘাটছে আর বারেবারে নাক মুচছে।শ্রেয়া এক কাপ চা নিয়ে আনলো,
-নে খা এইটা তাহলে একটু ভালো লাগবে,
দিয়া ফোন থেকে মুখ তুলে চা দেখে দিয়ার দিকে একটা মিষ্টি হাসি দিল,
-থেংস বেব এক তুই তো আছিস আমার,
-হইসে আর সেন্টি খাইতে হইবো না চা খা,
দিয়া একটা ভেটকি মেরে চায়ের কাপে চুমুক দিল তখনি তাদের ক্লাইন্ট আসলো।ফুল ব্লাক সুট টাই চোখে সানগ্লাস চুলগুলো খুব বেশি বড় না কিন্তু তাকে মানিয়েছে হাইট ছয় ফিট।পকেটে দুই হাত গুজে দিয়ার সামনে এসে দারালো দিয়া হাত বারিয়ে বলল,
-হায় আমি দিয়া খান,
-হায়,আমি আরমান আহুজা
দিয়া এক এক করে তার ড্রেসের কালেকশন দেখাতে লাগলো।আরমান আবার সেই পকেটেই হাত গুজে দেখতে লাগলো।কিছুক্ষন পর বলল
-হুম সিলেক্টেড,
বলে আরমান তার পিএর থেকে চেক নিয়ে দিয়ার মুখের সামনে ধরলো,
-আপনার চেক,
দিয়ার কিছুটা রাগ লাগলেও আপাতত রাগটাকে দমিয়ে রেখে এক ফালি হাসি দিয়ে চেকটা হাতে নিল।আরমান চলে গেল তার পিএ ড্রেসগুলো নিয়ে গেল।রাতে দিয়া আর শ্রেয়া একসাথে ডিনার করে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলো দিয়া বাড়ি গিয়ে দিতি খানকে দেখে খানিকটা বিরক্ত হয়ে গেল।বিরক্তি মুখে চাবিটা টেবিলে রেখে নিজের রুমে গেল।দিতি মেয়ের পিছু পিছু রুমে গেল।
-তোকে কতবার বলেছি আমার বাড়ি চল এই ভারাটিয়া বাড়িতে আর কতদিন?
দিয়া কিছু বলল না কাধে ঝুলানো ব্যাগটা বিছানায় রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেল।টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বের হলো।
-তুই আজ আমার সাথে যাচ্ছিস,
-আমি কোথাও যাচ্ছি না আমি এইখানে একা সুখে আছি।
দিয়া রুম থেকে বাহির হতে নিলে দিতি হাত ধরে ফেলে,
-কাল তোকে কোথাও নিয়ে যাবো
দিয়া হাত ছারিয়ে বলল,
-আমি কোথাও যাচ্ছি না
-আমি কাল 1টায় তোকে নিতে আসবো,
দিয়ার আর কোন কথা না শুনে দিতি চলে গেল,দিয়া ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিল পুরো বিল্ডিং কেপে উঠলো দরজার শব্দে।
চলবে,