স্পর্শের_বাহিরে_তুমি Part-17

0
1774

#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
#part_17

তিয়াসার নিরবতায় দূরন্ত অপলব্দি করতে পারছে…দূরন্তর লাস্ট কথাটায় তিয়াসা হার্ট হয়েছে…কথা ঘুরানোর জন্য…

দূরন্ত: আচ্ছা ওই আন নোন পারসন কি এখনো পার্সেল পাঠায়…??

তবুও তিয়াসা কোনো রেসপন্স করলো না…দূরন্ত আসলে অতো শতো ভেবে কথাটা বলেনি…কিন্তু তিয়াসার কাছে এই কথা অনেকটা ভয়ের…

দূরন্ত: আচ্ছা এই যে আমি কান ধরছি…আর এমন হবেনা.. সত্যি বলছি…প্লিজ কথা বলো….।

তিয়াসা: না আপনার সাথে আমি একটা কথাও বলবো না… কেনো আপনি এমন কথা বললেন..? যদি আমি বলতাম তখন আপনার ভালো লাগতো…??

তিয়াসা ভাঙ্গা গলায় কথা বলাতে দূরন্ত স্পষ্ট বুঝতে পারলো তার তিয়া শুধুই রাগ বা কষ্ট পাইনি…. অনেকটা ভয় ও পেয়েছে… ভয়টা দূরন্ত কে হারানোর… যে ভয়ের মাঝে আছে দূরন্তর প্রতি অফুরন্ত থেকে অফুরন্ত ভালোবাসা…. এটা দূরন্তর জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি…

দূরন্ত: স্যরি..আর কখনো এমন কথা বলবো না… আমি তোমাকে রেখে কখনো কোথাও যাবো না আই প্রমিজ ইউ…।

তিয়াসা: হ্যাঁ… মনে যেনো থাকে.. আর যদি এমন কথা শুনি তো দেইখেন আপনার থেকে আমি কতো দূরে চলে যাই…।

দূরন্ত: হুমম মনে থাকবে আমার তিয়াটা… খুবববব ভালোবাসিইইই আমার তিয়া কে……

তিয়াসা: আমিও….।

দূরন্ত: হোয়াটটট আমিও…?? আমিও মানে কি…?? বলতে না চাইলে বলো না…কিন্তু এভাবে উত্তর দিবেনা কখনো আমিও….

যাস্ট কিছুটা রেগে…।
তিয়াসার সাথে দূরন্ত এই ফাস্ট টাইম এমন করে কথা বললো… যদিও দূরন্ত রেগেই কথা গুলো বলেছে..কিন্তু তিয়াসা একদম রাগ করেনি…আর দূরন্তর এই রাগ কি করে ভাঙ্গাতে হয় সেটাও বুঝে গিয়েছে….

তিয়াসা: আমিও কি এবং তার মানে হচ্ছে… আমিও আমার দূরন্ত স্যার কে অনেককককক বেশিইইইই ভালোবাসিইইইই…. বুজতে পেরেছেন…??

দূরন্ত একটু ভাব নিয়ে…

দূরন্ত: ওহহহ… পুরো কথাটা বলতে কি খুব কষ্ট হয়…?

তিয়াসা:হয়েছে আর ঢং করতে হবেনা…।

দূরন্ত: এক্সকিউস মি কিসের ঢং….??

তিয়াসা: এই যে আপনার এই ভাবে কথা বলাটাই আমার কাছে ঢং মনে হচ্ছে…

দূরন্ত: সব কিছু এতো লাইটলি মনে হয় তোমার কাছে…??

তিয়াসা: ওরে আল্লাহ গো..এটা তো পুরাই ওভার একটিং এর দোকান…. হয়েছে ড্রামা কিং আর ড্রামা করতে হবেনা…যে কথাটা শুনার জন্য এতো ড্রামা সেটা কিছুক্ষন আগেই বলে দিয়েছি…

দূরন্ত: কোন কোথাটা…??

তিয়াসা: কোন কথা আবার…আমি আপনাকে ভালোবাসি সেই কথা …,

দূরন্ত: হে হে… দু বার বলে ফেলেছো অলরেডি… শুধু এই কথাটা বলছিলে না বলে …আমার মনে হয়েছে আমি পেন্ডিং এ আছে…. আর এখন আমি এপ্রুভড…

তিয়াসা: হ্যাঁ বুঝতে পেরেছিলাম… যখন আপনি রেগে কথা বলেছেন তখনই…।

দূরন্ত: দেখেছো আমাদের বন্ডিং কতো স্ট্রং… আমরা দুজন দুজনকে কতোটা বুঝি… তখন তো তুমিও রাগ করতে পারতে… কতো ইজিলি সব সলভ্ব হয়ে গেলো… তুমি যদি আমার রাগের আড়ালের আসল কারনটা খুজে না পেতে…তাহলে বিষয়টা আরো কমপ্লিকেটেট হয়ে যেতো….।

তিয়াসা: এহহহ…আইছে আমার সাথে রাগ করলে আমি শুধু বসে থাকবো তাই না….

দূরন্ত: যখন আমি রাগ করবো তখন তুমি শুধু বসে কেনো..আমার কোলে উঠে বসে থেকো…তখন আর রাগ থাকবেনা ব্যানিশ হয়ে যাবে…রাগ টু রোমান্স হয়ে যাবে…।

তিয়াসা: এই যে একদম ফালতু কথা বলবেন না…

দূরন্ত: কি আন রোমান্টিক বউ হবে রে বাবা… এই কথাটা নাকি ফালতু কথা…।




২দিন পর….

তিয়াসা ভার্সিটি এসে সেতুর জন্য গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে…. তখনই তন্নী গাড়ি থেকে বের হলো…তন্নী কে দেখে তিয়াসা এগিয়ে গেলো তন্নীর দিকে… তখনই গাড়ি থেকে আরেকজন মানুষ বেড় হলো…আর সেই মানুষটা হচ্ছে তরিকুল আহমেদ….

তন্নী গিয়ে তরিকুল আহমেদকে হাগ করলো… আর তিনি তন্নীর মাথায় হাত রেখে বললো: টেক কেয়ার মাই প্রিন্সেস…।

বলেই তিনি আবার গাড়ি গিয়ে বসলো… আর তন্নী টাটা দিয়ে পিছনে ঘুরতেই তিয়াসা কে দেখতে পেলো….

তিয়াসা:এই তোর মধ্যে আর কতো মিস্ট্রি আছে রে হ্যাঁ…??

তন্নী: কিসের মিস্ট্রি…??

তিয়াসা: এই তুই তরিকুল স্যার এর মেয়ে… আর তোকে দেখেও তো বুঝা যাই না…

তন্নী: আমি কি নেমপ্লেটে লিখে রাখবো…আমি তরিকুল আহমেদ এর মেয়ে… আসলে আমি কিংবা আমার আব্বু আমরা কেউই চাইনা… এই সুবাধে কোনো এডভানটেজ নিতে… আর তো ভেবেছিলাম তুই হয়তো জানিস…।

তিয়াসা: জানলে কি আর এমন মিথ্যা কথা বলতাম..

তন্নী: কোন মিথ্যা কথাটা…??

তিয়াসা: ওই যে তোর ভাইয়ের উডবি ওয়াইফ..সেটা…।

তন্নী: হ্যাঁ মিথ্যে কথাটা সত্যি হতে কতোক্ষন…?

তিয়াসা: আমার বয়েই গেছে তোর ভাবি হতে… অলরেডি আমি বোকড…

তন্নী: হুমমম তাতো জানিইই… ওইতো হলেই হয় এক দিক দিয়ে ভাবি…।

তিয়াসা: হুমম চল….।




তিয়াসা আর সেতু ক্লাসে ফিসফিসিয়ে কথা বলছে… ওদের দুজনের ফিসফিসিয়ে কথা বলাতে এগিয়ে এসে…
দূরন্ত: ক্লাসে কি এমন জরুরী কথা যে ফিসফিসিয়ে বলতে হবে….?

তিয়াসা: স্যার আজকে তন্নীর একটা সিকরেট জেনে গেছি…?
ফিসফিসিয়ে…

দূরন্ত: কি..? ও কি কারো সাথে তোমার মতো প্রেম করে…?

তিয়াসা: আরে না… ওর পরিচয়… আসলে তেমন ভাবে কিছু জিঙ্গেস করা হয়নি আর ও নিজেও বলেনি… আজ জানতে পারলাম..ও হচ্ছে তরিকুল স্যার এর মেয়ে…

দূরন্ত: তুমি জানতে না..? আর কিছু জানোনি…?

তিয়াসা: আর কি জানবো…

দৃরন্ত: হুমম না জানাই ভালো… না মানে তুমি যার বউ হতে চাইছিলে তার কথা আরকি….

তিয়াসা বড় বড় করে তাকাতেই দূরন্ত সেখান থেকে প্রস্থান করলো….
তন্নী তিয়াসা কে একটা চিরকুট দিলো যাতে লিখা আছে…” ক্লাসে এসেও প্রেমের কথা বলতে হবে..? মন দিয়ে ক্লাস কর আর কটা দিন পরেই তো এনোআল এক্সাম ”

তিয়াসা কাগজটা দলা পাকিয়ে সেই কাগজ দিয়ে তন্নীর মাথায় ঢিল দিলো…!



দেখতে দেখতে তিয়াসার ফাইনাল এক্সাম চলে আসছে…তিয়াসার আবদার দূরন্তর দেয়া কলম দিয়ে তিয়াসা পরিক্ষা দিবে…. যদিও তিয়াসার পরিক্ষার আগে বিশেষ দুজনের কাছ থেকে কলম নেয়ার আছে এইবার দূরন্ত এডড হয়ে তিনজন হয়ে গেছে….



দূরন্ত নিজের ফেবোরিট তিনটে কলম সহ এক বক্স চকোলেট দিয়েছে তিয়াসা কে… তিয়াসা খুশিতে দূরন্ত কে হাগ করতে গিয়ে থেমে গেলো….।

দূরন্ত: এটা কিন্তু ঠিক হলো না….থেমে গেলে কেনো..?

তিয়াসা: তো কি করবো…আপনাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরবো…?

দূরন্ত:ধরলে ক্ষতি কি..?

তিয়াসা: অনেক ক্ষতি.. মেলা ক্ষতি…

দূরন্ত: যেমন…??

তিয়াসা: যেমন বলা যাবেনা…

দূরন্ত: ওহহহ আচ্ছা… আমাকে বলা যাবেনা…সিকরেট কিছু হবে হয়তো….

চোখ মুখে দুষ্টুমির রেখা ফুটিয়ে…..

তিয়াসা: কি ফালতু লোক… কি বাঝে মাইন্ড এর লোক রে বাবা..

দূরন্ত তিয়াসা কে টান দিয়ে লাইটলি হাগ করলো….।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে