#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
#part_15
দূরন্ত:আমি তোমাকে উল্টো প্রশ্ন করতে বলিনি…আমিই তোমার থেকে একটা প্রশ্নের উত্তর চেয়েছি…।
তিয়াসা: জানি না…।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো…আর লাস্ট কথাটা ছিল লজ্জা মিশ্রিত কথা…এই লজ্জা মিশ্রিত কথা যা দূরন্তর কান এড়াইনি… এই লজ্জা মাখা কন্ঠে দূরন্ত যেনো আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো তিয়সার দিকে….।
আর কিছুটা শায় ও পেয়ে গেলো…
।
।
।
পরেরদিন ভার্সিটিতে মিটিং রুমে দিশার ব্যপারটা নিয়ে মিটিং হচ্ছে….দিশাকে ভার্সিটি থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়ার সিধান্ত নেয়া হয়….কিন্তু দিশার বাবার অনেক আকুতি মিনুতিতে লাস্ট একটা চান্স দেয়া হয়েছে…. দিশা সব স্টুডেন্ট প্লাস টিচার্সদের সামনে তিয়াসার কাছে ক্ষমা চেয়েছে…এবং নেক্সট টাইম এমন ভুল করবেনা সেই প্রতিঙ্গা করেছে…
মিটিং শেষে সবাই একে একে চলে যাচ্ছে… দিশা কে পিছন থেকে দূরন্ত ডাকে…
দূরন্ত: তুমি মনে হয় কোনো কারনে তিয়াসার সাথে নিজেকে কম্পিট করছো…? ভুলেও সেটা করো না…কারন তুমি মনে হয় জানো না… তিয়াসা এই ভার্সিটির ওনার তরিকুল আহমেদ এর একমাত্র ছেলের উডবি ওয়াইফ…
দূরন্তর কথা শুনে দিশার চোখ তো চরকগাছ… মুখ দিয়ে মনে হয় কোনো কথায় বের হচ্ছেনা… তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে…
দিশা: ককককি বললছেনন স্যার… সত্যিই…??
দূরন্ত: তো আমি কি তোমার সাথে ফান করছি…? আমার কথা বিশ্বাস না হলে তিয়াসার কাছে জিঙ্গেস করতে পারো…!
দিশা: কনগ্রাচুলাশন স্যার…
দূরন্ত: আমাকে নয় তিয়াসা কে গিয়ে কনগ্রেস করো…!
দিশা মাথা নেড়ে সেখান থেকে প্রস্থান করে… এবং ক্লাসে গিয়ে মুখটা কাচুমাচু করে বসে আছে…।
কিছুক্ষন ধরে তিয়াসা খেয়াল করছে দিশা হয়তো ওকে কিছু বলতে চাই…। দিশার কাছে এগিয়ে গিয়ে
তিয়াসা: তুমি কি কিছু বলবে আমায়…??
দিশা: হুমমমম… কনগ্রাচুলাশন…!
তিয়াসা তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো…কিসের জন্য কি বললো দিশা বুঝতে পারছেনা…
তিয়াসা:কিসের জন্য….??
দিশা: আসলে আমি জানতাম যে তুমি ততা…
পুরো কথা শেষ করার আগেই…
তন্নী: তুমি জানতে না যে ও এই ভার্সিটির ফিউচার ওনারের ওয়াইফ..? তাই তো..?
দিশা: হুমমমম..
মুখে ক্লোজআপ হাসি টেনে….।
তিয়াসা: এক সেকেন্ড.. তোমাকে এই কথা কে বললো…??
দিশা: স্যার’ই তো বললো….
তিয়াসা: কোন স্যার…??
দিশা: কোন স্যার আর বলবে… যে স্যার এর বলার কথা সেই স্যার’ই তো বলেছে… দূরন্ত স্যার…।
তিয়াসা মনে মনে: আমিও না…এটা তো আমি’ই ডপ মারছিলাম দূরন্ত স্যার কে প্রথম দিন…এটা সবার কাছে বলে বলে পাবলিশড করতে কে বলেছে…? এটা যে মিথ্যা কথা সেটা যখন সবাই জানবে বিশেষ করে যাদের নিয়ে বা যাকে নিয়ে ডপ মেরেছি.. সে যদি জানে…আল্লাহ ভাবতেই যেনো আমার কেমন লাগছে…।
তন্নী: এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই…সব সত্যিই হয়েই যাবে…
তিয়াসা: মানে…?
তন্নী: কিছু না… তুই বুঝবি না…।
।
কলেজ থেকে আসতেই তিয়াসার ভাবি রাইসা এগিয়ে এসে…
রাইসা: ননদীনি প্রেম ট্রেম করছো নাকি…আজ কাল বাসায় ফুলের বুকে আসে…তাও আবার তোমারই পছন্দের সব ফুল আর কালারের…!
তিয়াসা: ওফফফ ভাবি..কেবল ফিরলাম…আগে ফ্রেস হয় দেন তোমার বকবকানি শুনবো কেমন…।
রাইসা: আমি সত্যি বলছি… বিশ্বাস না হলে রুমে গিয়ে দেখো…
তিয়াসা আর কোনো কথা না বাড়িয়ে রুমে চলে আসে…আর সত্যিই দেখতে পায় টেবিলের উপর একটা ফুলের বুকে রাখা…
তিয়াসা ফুলের বুকেটা ছুয়েও দেখলো না…কারন ও সিউর এটা দূরন্ত দেইনি…দূরন্ত দিলে ওপেনলিই দিতো..এভাবে লুকিয়ে দিতো না….!
।
।
।
রাতে তিয়াসা শুয়ে আছে… ঘুম আসছেনা কিছু একটা মিসিং লাগছে..এপাশ থেকে ওপাস ঘুরে তাও কোনো লাভ হলো না..শেষমেষ উঠে বসে পরলো..কোলের উপর বালিশ নিয়ে..বাম হাত গালে রেখে ডান হাত দিয় ফোন বারবার নাড়াচ্ছে…আর ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছে…অবশেষে দূরন্তর নাম্বারে কল দিলো তিয়াসা….
দুবার রিং হতেই দূরন্ত ফোন রিসিভ করলো… হয়তো দূরন্ত উৎ পেতে ছিল তিয়াসার কল এর জন্য…
তিয়াসা: আসসালামু আলাইকুম…
দূরন্ত: ওয়া আলাইকুম আসসালাম ম্যডাম…
তিয়াসা: কিসের ম্যডাম কে ম্যডাম হুমম…??
দূরন্ত: কেনো আপনিই তো আমাদের ম্যডাম আফটার অল আপনি..
দূরন্ত কথা সম্পূর্ণ না করতে দিয়েই…
তিয়াসা: আপনার সমস্যা কি হ্যাঁ… আপনি দিশা কেও বলে দিয়েছেন এই কথা… কথাটা কতোটা সত্যি সেটা তো যাচাই করে দেখবেন তা না… সবার কাছে বলে বেড়াচ্ছেন..এসব আজগুবি কথা…
দূরন্ত: আজগুবি কথা তুমি বলছো..আমি কি জানি এটা আজগুবি কথা..? তুমি বলেছো আর বিশ্বাস করেছি…
তিয়াসা: আমি বললেই বিশ্বাস করতে হবে..?
দূরন্ত: হ্যাঁ তুমি বললে তো বিশ্বাস করবোই…আচ্ছা তোমার এই বানানো কথাটা যদি সত্যিই সত্যি হয়ে যায় তাহলে…?
তিয়াসা: নাআআআ এটা হতে পারেনা…!
কিছুটা চিৎকার করেই…তিয়াসার চিৎকারে দূরন্ত ফোনটা কান থেকে নামিয়ে মিটিমিটি হাসছে… আর ফোনের স্কিনে তিয়াসার ছবিটা দেখছে…।
দূরন্ত: তাহলে তো আমার সাথে হতেই পারে তাই না…তাতে তো তোমার কোনো আপত্তি নেই…
তিয়াসা: সেটা কি একবারো বলেছি আমি…?
দূরন্ত: তুমি তো কিছুই বলছো না.. সব’ই তো বুঝতে পারছো তবুও…।
তিয়াসা: কি বুঝার কথা বলছেন…??
দূরন্ত: তুমি যেটা না বুঝতেছো সেইটা বুঝার কথা বলছি…বুঝেছো….?
তিয়াসা: ধুরর ছাই…
।
।
.
.
।
।
দূরন্ত শুয়ে শুয়ে ফোনের স্কিনে তিয়াসার ছবি দেখছে… যেই ছবিটা দূরন্তর মনে দাগ কেটেছে আরো ২.৫ বছর আগে…আর এই ছবি থেকেই দূরন্ত ভালো লাগা শুরু হয়…আর সেই ভালো লাগা অনেক দিন যাবৎ মনের মাঝে পোষন করতে করতে সেটা ভালোবাসায় পরিনত হয়…।
।
।
তিন মাস পর…
এই তিন মাসে দূরন্ত নানা ভাবে তিয়াসা কে মনের কথা বলতে চেয়েছে..কিন্তু বলে উঠা হয়নি… আর সেই অচেনা কেউ একজন প্রায়ই পার্সেল এ তিয়াসার ফেবারিট জিনিস পাঠাতো… কিন্তু তিয়াসা সেসব নিয়ে তেমন মাথা গামায়নি…তবে এটা জানার চেষ্টা করেছে অচেনা ব্যক্তিটি কে…? তিয়াসার থেকে অচেনা ব্যক্তির কথা শুনে দূরন্ত এবার ফোলটুস প্রিপারেশন নিয়েছে আজ ওর মনের কথা তিয়াসাকে জানাবেই…
এতোদিন মনের মাঝে আগলে রাখা ভালোবাসা হারানোর ভয় জমেছে মনে…
[ বানান ভুল দয়া করে ক্ষমা করবেন ]
চলবে…..