স্পর্শের_বাহিরে_তুমি part-08

0
2157

#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
#part_8

তিয়াসা পিছনে ঘুরে উড়নাটা তুলেই..ছেলেটাকে থাপ্পড় মারলো…ছেলেটাকে কিছু এক্সপ্লেইন করার সুযোগ ও দিলো না…

তিয়াসা: সাহস হয় কি করে আমার উড়না ধরার…?

ছেলেটি: তুমি কিছু না জেনেই আমাকে থাপ্পড় মারলে…কাজ টা মোটেও ঠিক করলে না…

তিয়াসা: বড্ডো সাহস তো আপনার… একে তো নিজে দোষ করেছেন..তারপর আবার বলছেন আমি কাজটা ঠিক করিনি…।

ছেলেটি: তুমি জানো আমি তোমার সিনিয়র…

তিয়াসা: লজ্জা করছেনা কথা বলতে হ্যাঁ… একে তো অসভ্যতামি করে তার উপর বলছেন আপনি আমার সিনিয়র…।

একটা গাছের আড়াল থেকে কয়েকটা ছেলে বের হয়ে.. সিফাত বলে ডাকতেই তিয়াসার সামনে থাকা ছেলেটা পিছনে ঘুরে তাকালো… আরে দোস্ত তুমি তো ডেয়ার গেম এ হেরে গেছো…

সিফাত: তোদের পরে দেখছি….
এটা একটা ডেয়ার গেম ছিল.. আমি শুধু উড়না টা ধরেছি…তার জন্য তুমি যেটা করলে সবার সামনে সেটার জন্য তো তোমাকে…..।

তিয়াসা: সবার সামনে যে একটা মেয়ের উড়না ধরেছেন… সেটা একটা মেয়ের জন্য কতোটা সম্মান হানি আপনি জানেন..?.. আমি আপনাকে থাপ্পড় মেরেছি তাতে আপনার সম্মান হানি হয়নি বরং একটা শিক্ষা হলো… ফারদার অন্য কোনো মেয়েকে নিয়ে এরকম ডেয়ার গেম নেয়ার আগে অন্তত তিনবার ভাববেন…।

কথা গুলো তিয়াসা রেগেই বললো… এভাবে চলতে থাকলে ব্যপারটা আরো কমপ্লিকেটেট হয়ে যাবে…তাই..
সেতু: দেখুন আপনারা একটা অন্যায় করেছেন..তার শাস্তি হিসেবে যাস্ট একটা থাপ্পড় পেয়েছেন… তো সুদবোদ সব…

সেতুর কথা শুনে সিফাত এর বন্ধু…
রনি: ওহেএ আনারকলি তুমি চুপ করো… না হলে…

তিয়াসা: যাস্ট সাট আপ…

রনি: ইশশ ফুলকলি রাগে না… রাগলে তো……..
আর কিছু বলার আগেই সেখানে দূরন্ত চলে এলো… এতোক্ষন দূরে দাঁড়িয়ে সব দেখছিল দূরন্ত… চেহেরার মধ্য রাগের ছাপ টা স্পস্ট ফুটে উঠেছে…দূরন্তর রাগ সম্পর্কে তিয়াসার ধারনা না থাকলে ও..এ ভার্সিটির প্রতিটা স্টুডেন্টের আছে… ছেলে গুলো আর কোনো কথা না বাড়িয়ে তিয়াসা আর সেতুর থেকে স্যরি চেয়ে চলে গেলো…।

তিয়াসা আর সেতু ও ক্লাস রুমে চলে যায়…।
ক্লাসে গিয়ে বসতেই…
তন্নী: তুমি কাজটা ঠিক করোনি তিয়াসা… ওই ছেলে গুলো একদম বাজে… যদিও ক্যাম্পাসে কোনো মেয়ের সাথে তেমন কোনো অসভ্যতামি করতে পারেনা… দূরন্ত স্যার এর জন্য.. তুমি যেটা করেছো সেটার রিভেন্জ রাস্তায় নিবে…তুমি সাবধানে চলো কেমন…।

তিয়াসা: হুমমম…ধন্যবাদ…

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় পনেরো মিনিট লেট… প্রথম পিরিয়ড এর ক্লাস দূরন্ত এর…।

সেতু:ওই আমার না খুব ভয় করছে… ওই ছেলে গুলো যদি সত্যিই কিছু করে…।

তিয়াসা কিছুর বলার আগেই ক্লাসে দূরন্ত চলে আসে…আজকে দূরন্ত রাগী মুডে আছে.. চোখ গুলো তে রাগের ছাপ স্পষ্ট ফুটে আছে…।

তিয়াসা: এই যমুনা সেতু এই দূরন্ত বাই সাইকেলের আবার কি হলো..?

সেতু: আমি কি করে জানবো… আমার থেকে বেটার তোর জানার কথা…।

তিয়াসা: আমার কি করে জানার কথা..?

তিয়াসা আর সেতুর এমন ফিসফিসিয়ে কথা বলায় দূরন্ত ধমক দেই… তিয়াসা আর সেতু সহ ক্লাসের সবাই কে সাইলেন্ট করিয়ে দিয়েছে দূরন্তর একটা ধমকে…।

তিয়াসা: স্যরি স্যার…।

.
.___
.

রাতে তিয়াসার ফোনে দূরন্তর নাম্বার থেকে আবার এসএমএস আসলো… ” আগামিকাল থেকে হিজাব না পরে ইউনিভার্সিটি তে আসলে খবর আছে… সেটা যে কোন টিভি তে প্রচার হবে সেটা তোমার উপর ডিপেন্ড করবে ”

বারবার দূরন্তর এমন জোর খাটানো কথাবার্তা তিয়াসার কাছে যাস্ট বিরক্ত কর লাগে… মনে হয় তিয়াসার রেস্পনসিবিলিটি কেউ দূরন্ত কে দিয়েছে… তিয়াসা চিন্তায় পরে গেছে.. হিজাব পরা ব্যপার না কিন্তু হিজাবে লাগানো পিন গুলো হ্যান্ডেল করা একটু ট্রাফ…অনেক ভেবে তিয়াসা এই সিধান্ত এ উপণীত হলো যে কাল তিয়াসা হিজাব পরেই যাবে….

.
.
পরেরদিন তিসান তিয়াসা কে ভার্সিটি ড্রপ করে দিয়ে গেলো….তিয়াসা কে একা ভার্সিটি আসতে দেই না… প্রতিদিন তিসান অফিস যাওয়ার সময় তিয়াসা কে ড্রপ করে দিয়ে যায়… আর ভার্সিটি শেষে ড্রাইভার পিক করে নিয়ে যায়…।
তিয়াসা গাড়ি থেকে নামার সময়..
তিসান: তিয়া শোন…

তিসান এর ডাকে তিয়াসা পিছন ঘুরে তাকায়.. গাড়ি থেকে নেমে তিয়াসার কাছে গিয়ে…

তিসান: আমার বোন টাকে খুব সুন্দর লাগছে হিজাবে… তবে সাবধানে পিন যেনো শরীরে আটকে না যায়.. বি কেয়ার ফুল…

তিয়াসা: ওকে ভাইয়া..এন্ড টেক কেয়ার…

তিসান: সেইম টু ইউ মাই সুইট সিস্টার..

তারপর তিয়াসা কে তিসান হালকা হাগ করে.. গাড়ি তে গিয়ে বসে… গাড়ির লুকিং গ্লাস নামিয়ে তিয়াসা কে টাটা দিয়ে চলে যায়….

আর দূরন্ত কেবল বাইক থেকে নেমে বাইক পার্কিং করার জন্য রেডি হচ্ছে…আর তখনি ভাই বোনের এই দুষ্টমিষ্টি ভালোবাসাটা চোখে পরে যায়…
দূরন্ত মনে মনে: হুমম বোনটাকে তো মিষ্টির গোডাউন বানিয়েছেন…এখন তো আমার ডায়াবেটিস হওয়ার উপক্রম…।

তিয়াসা ক্লাস রুম পযর্ন্ত হেটে আসতেই হিজাবের পিন গুলো দৌড়াতে শুরু করেছে…মানে পিন গুলো হিজাব থেকে আগলা হয়ে গেছে… আর একটু হলেই হিজাব খুলে যাবে…ক্লাসে এসে সেতু কে দেখতে না পেয়ে তিয়াসা একাই ওয়াস রুমে চলে যায়…তিয়াসা ওয়াস রুমের ভিতর গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো…আর সাথে সাথেই রুমের লাইট ওফ হয়ে গেলো…ওমনিই তিয়াসা দরজা খুলতে গেলো..কিন্তু দরজা বাহির থেকে আটকানো…তিয়াসা এবার ভয় পেয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলো…

চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে