#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
#part_5
তিয়াসা মায়ের ডাকে ধরফরিয়ে উঠে বসলো…চোখ ডলতে ডলতে…
তিয়াসা:তাহলে কি স্বপ্ন দেখলাম এতোক্ষন…?
তিয়াসার মা: কি স্বপ্ন দেখলি…?
তিয়াসা: ওই তো বজ্জাত অসভ্য…
এই পযর্ন্ত বলেই থেমে গেলো তিয়াসা…।
তিয়াসার মা: বজ্জাত অসভ্য কি….?
তিয়াসা: কি আবার ওই তো বাজে জজজ্বীন… হ্যাঁ তো জ্বীনকে স্বপ্ন দেখেছি…।
তিয়াসা আর ওর মায়ের কথায়…এতোক্ষনে রিশা ঘুম থেকে উঠে গেছে…
রিশা: তুই হয়তো ওই জ্বীন টাকে নিয়ে একটু বেশীই ভাবছিস..তাই স্বপ্ন দেখেছিস…
তিয়াসা: দূররর আমার তো আর কাজ নেই…আমি ওই জ্বীনকে নিয়ে ভাবতে যাবো…।
তিয়াসার মা: এই থামতো তোরা…আর তিয়াসা তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নে…।
তিয়াসা: ওওও মা…এতো সকালে এসব কি বলছো…?
তিয়াসার মা: ঠিকি বলছি…আমরা বাড়ি ফিরবো…।
বাড়ি ফেরার কথা শুনে বিশেষ করে রিশার মনটা খারাপ হয়ে গেলো…
রিশা: ফুপি কি বলছো..আরো দুদিন থাকার কথা ছিল তো তোমাদের..।
তিয়াসার মা: হুমম…কিন্তু তোমার ভাইয়া গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে…আর তোমার আঙ্কেল ফিরছে আজ সন্ধ্যার ফ্লাইটে…।
তিয়াসা: মা আব্বুর তো আরো দুদিন পর ফেরার কথা ছিলো…
তিয়াসার মা: হ্যাঁ… দুদিন আগেই কাজ শেষ তাই ফিরে আসছে….।
তিয়াসা তো খুশিতে লাফ দিয়ে বেড থেকে নেমে ফ্রেস হতে চলে গেলো..
তিয়াসার আব্বু বিজনেস এর কাজে দেশের বাহিরে গিয়েছিলো… আর তিয়াসার ভাই তিসান এবং ভাবি রাইসা বাড়ি প্লাস অফিস সামলানোর জন্য বিয়েতে এটেন্ড করতে পারেনি…।
তিয়াসা এবং তিয়াসা মা ব্রেকফাস্ট করেই বেরিয়ে পরে… তিয়াসার মনটাও খারাপ রিশার জন্য… এই কদিন রিশার সাথে অনেক মজা করেছে… রিশাকে খুব মিস করবে…।
গাড়িতে সারা রাস্তা মায়ের কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এসেছে তিয়াসা…। বাড়িতে ফিরেই তিয়াসা ওর ভাবিকে বিয়ের সব ভিডিও আর ছবি দেখাতে লাগলো…।
ভিডিও আর ছবি দেখানোর এক পর্যায়ে তিয়াসা যে চেয়ার থেকে পরে যেতে নিয়েছিল..আর সেটা দূরন্ত ধরে ফেলেছে.. সেই ঘটনাও ভিডিও হয়েছে…তিয়াসার ভাবি রাইসা একবার ভিডিও এর দিকে তাকাচ্ছে তো আরেকবার তিয়াসার দিকে…।
তিয়াসা: ভাবিইই তুমি ওই ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো…??
তিয়াসার ভাবি: কি কাহিনী হুমমম…হুমমমম…?
তিয়াসা: কিসের কাহিনী..?
তিয়াসার ভাবি: বুজো না… ওই হিরো টা কে হ্যাঁ… এতো কিছু হয়ে গেছে..সব আমি মিস করলাম…।
তিয়াসা: মনে হচ্ছে আমার বিয়ে হয়ে পাচ দশটা বাচ্চা হয়ে গেছে..আর সেটা তুমি মিস করেছো… আর ওই বেটা হিরো নয়… একটা বাজে বজ্জাত লুচ্চু ভিলেন…।
তিয়াসার ভাবি:ওই ছেলের প্রতি এতো রাগ কেনো ননদীনি…?
তিয়াসা: তুমি জানো ওই বজ্জাতটা কি করেছে..?
তিয়াসার ভাবি: কি করেছে গো..বলো.. বলো আমায়…।
তারপর তিয়াসা সব ঘটনা তার ভাবি কে বললো..তিয়াসার ভাবি নিজের হাসিটা আটকে রাখছে কারন কথা গুলো তিয়াসা বেশ বিরক্ত নিয়েই বলছিলো…
.
.
২৫ দিন পর…
আজ তিয়াসার এইচএসসি পরিক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে…তিয়াসার মনটা প্রচুরপরিমাণ খারাপ…খুব একটা খারাপ হয়নি রেজাল্ট..তবে প্লাস পাইনি 4.69…. তিয়াসার রেজাল্ট এ বাড়ির সবাই খুশি…শুধু তিয়াসা বাদে…।
.
.
.
অন্য দিকে তিয়াসার ছবি হাতে নিয়ে দূরন্ত অপলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে…।আরেক হাতে ফোন নিয়ে টাইপ করলো…
” Congratulation tiya ”
সেন্ট করে দিলো তিয়াসার নাম্বারে…।
.
.
তিয়াসা আননোন নাম্বার থেকে এসএমএস টা দেখে একটু বিরক্ত হলো..কারন ওর নাম শর্ট করে বলেছে…তিয়াসা কে শর্ট নামে কেবল ওর আব্বু আর ভাইয়া তিয়া বলে ডাকে…।
.
.
_____
.
.
….কয়েক মাস পর….
আজ তিয়াসার সেই দিন যে দিনটার জন্য এতো দিন অপেক্ষা করে ছিলো… হ্যাঁ আজ তিয়াসার ইউনিভার্সিটির ফাস্ট ডে… তিয়াসা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়েছে…সাথে ওর ব্রেস্ট ফ্রেন্ড সেতু ও… তিয়াসা কে ইউনিভার্সিটি তে ড্রপ করে তিসান অফিসে যাবে… গাড়ি গেটের বাইরে থাকতেই তিয়াসা গাড়ি থেকে নেমে গেলো… তার ভাইয়ার থেকে বিদায় নিয়ে… তিয়াসা আর সেতু কথা বলতে বলতে ভিতরে যাচ্ছে…তিয়াসা এতোটাই খুশি যে সামনে পিছনে কিংবা আশে পাশের কিছু খেয়ালই করছেনা….
বেখেয়ালি তে হাটলে যা হয় আরকি তাই হলো…
সামনে থেকে আসা মানুষটার সাথে ধাক্কা লেগে তিয়াসা নিচে পরে গেলো…আসলে ধাক্কাটা একটু জোরে লেগেছে..কারন সামনে থাকা মানুষটা দ্রুতগামী হেটে আসছিল… যার কারনে তিয়াসা নিচে পরে গেছে…
নিচ থেকে উঠতে উঠতে সামনের লোকটাকে বলতে থাকে…
তিয়াসা: দেখে চলতে পারেন না… চোখ কি বট গাছে রেখে আসছেন…?
লোকটি: দেখো আমি তোমায় ইচ্ছে করে ধাক্কা দেইনি…আমি ফোনে কথা বলতে বলতে আসছিলাম…কিন্তু তুমি তো দেখে চলতে পারতে….।
চলবে….
……ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন….
[ গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি ]