#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
#part_4
তিয়াসা: আচ্ছা আমাকে কি সরকারি সম্পত্তি পেয়েছেন…? যখন যা খুশি করবেন..জোর খাটাবেন..?
দূরন্ত: আরে পাগলি সরকারি সম্পত্তির এতো যত্ন কে করে..?… আমি তো আমার পার্সনাল প্রোপার্টির যত্ন নিচ্ছি…।
তিয়াসা: আচ্ছা কতোদিন মেন্টাল হসপিটালে ছিলেন…?
হঠাৎ তিয়াসার এমন প্রশ্নে দূরন্ত কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেলো… একমিনিটের মতো সময় নিয়ে বুঝতে পারলো আসলে তিয়াসা ঠিক কি বলেছে…।
দূরন্ত: তুমি কি আমাকে কোনো ভাবে পাগ….
দূরন্ত কে থামিয়ে দিয়ে…
তিয়াসা: একদম ঠিক ধরেছেন.. আপনাকে পাগল ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছিনা…কারন চেনা নাই জানা নেই… একটা মেয়ের সাথে অনবরত অসভ্যতামি করেই যাচ্ছেন…।
দূরন্ত: অচেনা সে তো তোমার কাছে… তুমি কি আদৌ আমার অচেনা…?
তিয়াসা: না আগের জন্মে আমি আর আপনি রোমিও জোলিয়েট ছিলাম… যতসব ফালতু লোক… এই রিহা আপুর বিয়েটা আমার জন্য অশুভ …না হলে আপনার মতো অসহ্য লোকের সাথে দেখা হতো না..।
কথা গুলো একটু বিরক্ত হয়েই বললো তিয়াসা…সেখান থেকে চলে আসার জন্য পা বাড়াতেই…আবার তিয়াসার হাত টেনে ধরলো দূরন্ত…।
তিয়াসা কে এক হাতে ধরে…আর এক হাত এগিয়ে দিচ্ছে তিয়াসার দিকে… তিয়াসা একটু ভয় পেয়ে কাপা কাপা গলায়…
তিয়াসা: কককি করররছছেন..?
দূরন্ত: ওয়েট বেবি…
কথাটা শেষ করে তিয়াসার কপাল থেকে টিপটা তুলে নিলো দূরন্ত…।
তুমি জানো না মুসলিম মেয়েদের টিপ পরা বারন…।
তবুও টিপ পরেছো কেনো…? আর সব সময় এতো সেজেগুজে থাকো কেনো.? .. হিজাব পরে থাকবে…।
তিয়াসা: বিয়ে বাড়িতে হিজাব পরে থাকবো…??
আর যাই হোক আপনার মুখে এতো জ্ঞানের কথা মানায় না…হুহহহ…।
দূরন্তকে ভেংচি কেটে চলে গেলো তিয়াসা…।
বুকের বা পাশে হাত রেখে…
দূরন্ত: তোমার এই এটিটিউড গুলো আমার এখানে এসে লাগে গো…!
তিয়াসা গেটের কাছে গিয়ে দেখে গেটের ওখানে যে সব রিচুয়াল ছিলো… সব রিচুয়াল কমপ্লিট…!
রিশা: এই তোর হয়েছেটা কি বলতো..? মাঝে মাঝে কোথায় উদাও হয়ে যাস..?
তিয়াসা: তুই জানিস না তোদের বাড়িতে বজ্জাত অসভ্য ফালতু একটা জ্বীন আছে… সেই জ্বীনটাই আমাকে মাঝে মাঝে উদাও করে দেই…।
রিশা: এই তিয়াসা তুই সত্যি বলছিস..? বল না.. আমি শুনেছি জ্বীনরা নাকি অনেক মজার মজার খাবার খেতে দেই.. অনেক সুন্দর জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাই…তোকেও কি মজার খাবার আর সুন্দর জায়গায় ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলো…?
তিয়াসা: এই এফএম রেডিও চুপ কর… মাথা টা যে টুকু নষ্ট হওয়ার বাকি ছিলো..সে টুকুও মনে হয় গেলো…।
.
.
____
.
.
দুদিন পর…
রিহার বিয়ে প্লাস রিশেপশান খুব ভালো ভাবেই কেটেছে…কিন্তু তিয়াসা কে ডিস্টার্ব করার জন্য দূরন্ত অলওয়েজ কিছুনা কিছু করেছেই… দুজনের মাঝে সব সময় টম এন্ড জেরীর মতো ঝগড়া লেগেই ছিলো…
আজ দূরন্ত চলে যাবে… রিহান যেহেতু বেষ্ট ফ্রেন্ড ওর অনুরোধ ফেলতে না পেরে রিহার বিয়েতে এতো দিন এটেন্ড করেছে… আরো একটা কারন আছে অবশ্য… সেই দুবছর আগে থেকে একটা ইচ্ছে মনের মাঝে পুশে রেখেছিল… সেই ইচ্ছে টাও পূরন হয়েছে অনেক কাছ থেকে…হয়তো সেই ইচ্ছের টার খুব কাছে চলে এসেছে দূরন্ত… আর না হয় সেই ইচ্ছেটা ওর কাছে যাবে…।
দূরন্ত চলে যাওয়ায় সবারই একটু আধটু মন খারাপ…একজন বাদে..সে তো মহা খুশি..আর সে হচ্ছে তিয়াসা… দূরন্ত চলে যাবার সময় দূরন্ত কে আবার ভেংচি কেটে দিয়েছে… দূরন্ত কে ঘায়েল করার জন্য ভেংচিই যথেষ্ট…!
তিয়াসা মনের আনন্দে হেলে দুলে রুমে এসে বেডের উপর একটা চিরকুট দেখতে পেলো…। তিয়াসা চিরকুট খুলে দেখলো.. তাতে শুধু লেখা আছে… “তোমার জ্বীন তোমাকে খুব মিস করবে… খুব তাড়াতাড়িই তোমার জ্বীনের সাথে দেখা হবে… সি ইউ সুন জ্বীনের পরী ”
তিয়াসা চিঠিটা পরার পর সাথে সাথে চিঠিটা হাত থেকে ফেলে দিয়ে..দু পা পিছিয়ে গেলো…।
তিয়াসা মনে মনে: আল্লাহ গো সত্যি সত্যিই জ্বীন এ ধরলো নাকি আমায়… আমি তো জ্বীনের কথা মজা করে বলেছিলাম….
হ্যাঁ মজা করেই তো বলেছিলাম….
তারপর কিছুক্ষন ভেবে এক্সপেরিমেন্ট করে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করলো… আসলে এটা দূরন্ত জ্বীনের কাজ…।
.
.
পরেরদিন ভোরে…
তিয়াসা নিজের উপর কাউকে অনুভব করছে…কেউ একজন ওর খুব কাছে চলে আসছে… তিয়াসার কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলছে… “আমাকে মিস করছিলে”
তিয়াসার মা: এই তিয়াসা উঠ… কখন থেকে ডাকছি উঠছিস না কেনো..?
চলবে….