#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
#EXTRA_PART
বিন্দু করিডোরের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ পানে..সকালে নামাজ পরে হাতে এক কাপ চা নিয়ে সকালটা উপভোগ করছে …সকালটা কি সুন্দর মনো মুগ্ধ কর…কিন্তু বিষন্নতার মাঝে ডুবে আছে বিন্দুর মন…আগামি কাল থেকে বিন্দুর নতুন করে পথ চলা শুরু হতো.. হয়তো বা..এতটা দিন পর বিন্দু নিজেকে বন্ধি থেকে মুক্ত করতে চেয়েছিল…হয়তো ভাগ্য সেটা চাই না…একটা মানুষ যার জন্য বিন্দু সব হারিয়েছে..সব কিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল… এবংকি নতুন করে আলোর দিশা টাও হারিয়ে ফেললো…বিন্দু ছোট করে একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলো….
///// আমি ছিড়ে ফেলেছি ডায়েরির পাতা….
…….যেখানে লিখা ছিল হাজারো স্বপ্নের কথা
শুধু ছিড়তে পারিনি আমার মনের পাতা……
…….যেখানে জমা আছে হাজারো ব্যাথা /////
সকালের খাবার খেয়ে বিন্দু রুমে এসে ফোনটা হাতে নিলো…দেখতে পেলো আননোন নাম্বার থেকে একটা টেক্সট এসেছে…ফোনটা রেখে দিতে গিয়েও কেনো যেনো রাখলো না…. মেসেজ অপশনে গিয়ে মেসেজটা চেক করলো…যাতে লেখা আছে ” একটা জায়গার নাম সেখানে গেলেই তার হারিয়ে যাওয়া খামটা পাবে ”
মেসেজটা দেখে বিন্দু একটু স্বস্থিবোধ করলো… খাম টা হয়তো ভালো কোনো মানুষের হাতে পরেছে…তাই তো খামটা ফেরত দেয়ার জন্য বিন্দু কে টেক্সট করেছে… মাকে ডেকে…
বিন্দু: মা…মা…।
বিন্দুর মা:কি হলো..এমন করে ডাকছিস কেনো…?
বিন্দু: জানো মা..একটা আননোন নাম্বার থেকে টেক্সট এসেছিল…আমি আমার হারানো খামটা ফেরত পেতে চলেছি…
বিন্দুর মা: কি বলছিস..আর তোর নাম্বার পেলো কোথায়..?
বিন্দু:কোথায় আবার…খামের বাহিরে আমার এড্রেস সহ ফোন নাম্বার দেয়া ছিলো…।
বিন্দুর মা: ওহহ আচ্ছা… কখন যাবি..?
বিন্দু: বিকেল চার টায়..।
.
.
.
বিন্দু আর নিজেকে বন্দি করে রাখবে না…নিজেকে মেলে ধরবে এই খোলা আকাশের নিচে..যেখানে নেই কোনো বদ্ধতা…অনেকদিন পর বিন্দুর মনটা আজ হালকা…। বিন্দু এতোটা দিন সব রং থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিল…।
বিন্দু আজ হালকা আকাশি কালারের চুরিদার পরেছে…চুল গুলো খোলা চোখে গাড় কাজল..আর ঠোঁটে হালকা করে লিপস্টিক দেয়া…আর বিন্দুর সব থেকে প্রিয় চুড়ি পরেছে… চুড়ির রিনিঝিনি আওয়াজ টা বিন্দুর খুব প্রিয়…।
বিন্দু সাইট ব্যাগ আর হাতে ফোনটা নিয়ে..মাকে বলে বেড়িয়ে পরলো…
.
.
বিন্দু পাচ মিনিট যাবৎ লেকের পুল সাইটে বেঞ্চে বসে আছে… এবার ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে টেক্সট আসা নাম্বারটায় ফোন দিলো…কিন্তু ওপাস থেকে ফোন ধরলো না…।
হঠাৎ পিছন থেকে একটা কন্ঠ ভেসে আসলো… “কেমন আছো বিন্দু? ”
বিন্দু পিছনে না তাকিয়েও খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে…এই কন্ঠ টা কার..কাপা কাপা হাত পায়ে বেঞ্চে বসা থেকে দাঁড়িয়ে পরলো…আস্তে আস্তে পিছন ঘুরে দাড়ালো বিন্দু… দীপ কে দেখে বিন্দু স্থির হয়ে গেলো…
!!….নিঃসংশয় ভেঙে উজার করো তাহাতে…
হাতটি না হয়..না পেলাম…
মন্দ কি চোখের ভাষা বিনিময়ে…হোক সকল বারন বাধা..একটা সময় তো তুমি ছিলে আমার…
আজ না হয় #স্পর্শের_বাহিরে_তুমি….!!
নিরবতা কাটিয়ে আবার…
দীপ: বললে না তো কেমন আছো…?
নিজেকে সামলে নিয়ে…
বিন্দু: আলহামদুলিল্লাহ….আপনি ভালো আছেন…?
বিন্দুর মুখে আপনি ডাকটা শুনা দীপের ঠিক অভ্যাস নেই… বিন্দু সব সময় বলতো কাছের কাউকে আপনি করে বললে কেমন যেনো পর পর লাগে…। আমি তো আপনি করি বলি তাকেই যে আমার কাছের কেউ না..যে অনেক দূরের তাকে…।
দীপ: হুমমম ভালো…।
বিন্দু: আপনার ওয়াইফ কেমন আছে…?
দীপ: হ্যাঁ ভালো আছে… তোমার কি খবর বলো…?
বিন্দু: এখানে না আমি আমার খবর অন্য কাউকে বলতে এসেছি..না অন্য কারো খবর নিতে এসেছি…।
দীপ: হুমম বুঝলাম…
বিন্দু: আমার খামটা দিন…
দীপের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে…।
আগের মতো বিন্দুর হাত ভর্তি চুড়ি…হাত বাড়িয়ে দেয়ার সময় চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ বরাবর দীপের ভালো লাগতো…আজ ও কি দীপের সেই আওয়াজটা ভালো লাগে…?
দীপ: তুমি কি করে জানলে খামটা আমরা পেয়েছি…আই মিন আমি পেয়েছি…
বিন্দু: আগে বুঝতে পারলে এখান অবদি আসতাম না… এখন বুঝতে পারছি কাল কে পরে যাওয়া খামটা আপনারা পেয়েছিলেন… দয়া করে খামটা ফেরত দিন…।
দীপ: হ্যাঁ সে তো দিবোই… তার আগে আমার কিছু কথা আছে…।
বিন্দু: দেখুন আপনার থেকে শুনার মতো কোনো কথা নেই… না আমাকে বলার মতো আপনার কোনো কথা আছে…।
এবার হাটু গেড়ে বিন্দুর সামনে বসে…
দীপ: প্লিজ আমার কথাটা একবার শুনো… তারপর হয়তো তোমার মনে আমার প্রতি কোনো অভিযোগ থাকবে না…কোন পরিস্থিতি তে আমি তোমাকে ছেড়ে দিয়া কে বিয়ে করেছিলাম…।
বিন্দু: প্লিজ স্টোপ দিজ টপিক…[ জোরে ]
আমি আদারস কোনো মেটার নিয়ে কথা বলতে চাইনা..আর আমার ইচ্ছেও নেই…
বলেই দীপ এর হাতে থাকা খামটা নিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালো বিন্দু…
আর দীপ এখনো সেখানে হাটু গেড়েই বসে আছে…
দীপ মনে মনে: আগে তুমি যখন রাগ করে চলে যেতে…ঠিক আজকের মতো করে…আর আমি খপ করে তোমার হাতটি ধরে ফেলতাম…কিন্তু আজ আমার সেই অধিকার নেই…কারন #স্পর্শের_বাহিরে_তুমি…!
চলবে…
….. সব প্রশ্নের উত্তর সব সময় সবার জানা হয় না…বা অপর জনকে বলাও হয়না…তেমনি বিন্দুর ও জানা হলো না কেনো দীপ তাকে ছেড়ে গিয়েছিল…আর দীপ ও বলতে পারলো না… এক অজানায় থেকে গেলো বিন্দু…..
[ সাধারণত প্রায় গল্পে একটা কাহিনী কে ভিত্তি করে লেখা হয়…আমি চেয়েছিলাম এই গল্পে দুটো কাহিনী গল্পের নামের সাথে ভিত্তি করে লিখবো…কিন্তু তা আর হলোনা… যদিও দুটো কাহিনী আলাদা আলাদা করেই তুলে ধরেছিলাম…কিন্তু আপনারা বুঝতে পারেন নি… বিন্দু দীপ আর দিয়ার কাহিনী টা আরো অনেক ক্লিয়ার ভাবে তুলে ধরার ইচ্ছা ছিল… যাক সে সব কথা… কোনো মতে বিন্দুর কাহিনী শেষ করে দিলাম… আর এখন থেকে অনলি তিয়াসা আর দূরন্তর কাহিনী থাকবে…]