স্পর্শের বাহিরে তুমি Part-01

0
5358

#স্পর্শের_বাহিরে_তুমি
#আদরিতা জান্নাত জুঁই
#part_1

তিয়াসা নিজের পেটে সফ্ট কিছু একটার স্পর্শ অনুভব করছে কিছুক্ষন যাবত..যার কারনে শরীরটা বার বার শিউরে উঠছে….বারবার মনে হচ্ছে সফ্ট কিছু দিয়ে ওর পেটের মধ্যে স্লাইড করা হচ্ছে…


শাড়িটা আরেকটু উপরে তুলো… তাহলেই না পুরো পেট টা দেখা যাবে…
আচ্ছা তোমরা মেয়েরা কি শাড়ি পড়ো শুধু ছেলেদের শরীর দেখানোর জন্য…নিজেদের বিউটি স্পট দেখিয়ে ছেলেদের এট্রাকটিভ করার জন্য…?

আচমকা একটা অচেনা কন্ঠস্বর পেয়ে তিয়াসা পিছনে তাকিয়ে দেখে তার রাহাত ভাইয়ার বন্ধু কি যেনো নাম দূরন্ত মেবি…

তিয়াসা: দেখুন মিস্টার…..
তিয়াসার কথা শেষ না করতে দিয়েই…

দূরন্ত: দেখতে চাইনি বাট আনফরচোনেটলি দেখে ফেলেছি…

তিয়াসা: Whattt…?
তখনি দূরন্তর হাতে একটা গোলাপ ফুল দেখতে পাই তিয়াসা…

দূরন্ত:Yes babay…

তিয়াসা: কি অসভ্য লোক রে বাবা… কি দেখছেন আপনি হ্যাঁ…?? আর আপনার হাতের ওই ফুল দিয়ে এতক্ষন যাবত আমার পেটে স্লাইড করছিলেন…?

দূরন্ত: দেখিনি এখনো দেখতেছিইই তো… তোমার পেটে বাম সাইটের কালো বিউটি স্পট টা…আমি আবার ভালো ছেলে হাত দেইনি তাইতো ফুল দিয়ে…

তিয়াসা: স্টপ..[ চেচিয়ে ]
তিয়াসা তাড়াতাড়ি করে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই পেটের বাম সাইট টা দেখা যাচ্ছে.. বেখেয়ালিতে কখন যে শাড়ির আচলটা কাধে তুলেছে…? তাড়াতাড়ি শাড়ির আচলটা কাধ থেকে নামিয়ে নিল তিয়াসা…

দূরন্ত:.That’s like a good girl… যা দেখানোর আমাকেই দেখিয়েছো…. আর কাউ কে দেখিয়ো না… আমি ভালো ছেলে বলে দেখা অবদিই সীমাবদ্ধ ছিলাম…

তিয়াসা: ফালতু লোক একটা… অসভ্য লোক.. লজ্জা করেনা বলতে.. সুনামের সহিতে বলছে আমি ভালো ছেলে… লুচুর কনটেইনার কোথাকার…বজ্জাত লোক একটা..ফুল দিয়ে যে স্লাইড করছিলেন আমার পেটে সেটা কিছুনা না…?

দূরন্ত: দেখ মিস বাচ্চা মেয়ে একে তো নিজে দোষ করেছো.. তার উপর আমাকে যা নই তাই বলছো… তুমি যদি তোমার শরীর নাই ঢেকে রাখতে পারো.. লোকে তো দেখবেই.. শুধু দেখবে নই ছুয়ে দিতে চাইবে…

তিয়াসা: ওওও হ্যালো বুইড়া বেডা… আই এম নট বাচ্চা মেয়ে ওকে…

দূরন্ত: ওহহহ রিয়েলি…

তিয়াসা: ইয়েসসস… আমি এবার এইচএসসি দিয়েছি সো বাচ্চার বয়স পেরিয়ে আসছি… ধুর ভাল্লাগেনা আপনার মতো ফালতু লোকের সাথে কেনো কথা বলছি…

দূরন্ত: আইছে আমার অফালতু মেয়ে… যাও যাও তোমার সাথে কথার বলার কোনো ইচ্ছে আমার নেই…এই টুকু বয়সে কি সব ধান্দা ছিহহ…

.
.
.
তিয়াসা মনে মনে: ধুর কেনো যে এই বিয়ে বাড়ি আসতে গেলাম..ওই ফালতু মার্কা কি সব বাঝে কথা বলে গেলো… এহহহ আমার এতো দিনের সাধনা সব মাঠে মারা গেল..কত শখ ছিল আমার এই বিউটি স্পট শুধু আমার হাসবেন্টকে দেখাবো… কোথ থেকে ওই লুচ্চাটা এসে উড়ে এসে জুড়ে বসে দেখো নিল…

কি থেকে কি হলো বুঝতে পারছেন না তো…?

_____বুঝিয়ে বলছি ____

আমি শায়েরি ইসলাম তিয়াসা.. এইচএসসি দিয়েছি ১ মাস পর রেজাল্ট .. বাবা মায়ের দুই মাত্র সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে…আমার বড় ভাই তিয়াস.. বাবার সাথে বিজনেস সামলায়..সাথে বউকেও সামলাতে হয়…।

আমার মামাতো বোন রিহা আপুর বিয়ে… সেই জন্য মামা বাড়িতে আসা… আজ আপুর গায়ে হলুদ… সবাই হলুদে শাড়ি পড়েছে.. আমিও পড়েছি… শাড়িটা পরতে না পারলেও হ্যান্ডেল ভালোই করতে পারি… সবার সাথে হলুদ দেয়ার সময় দৌড়াদৌড়ি করতে করতে কখন যে শাড়ির আচলটা কাধে তুলেছিলাম খেয়াল ছিল না…

আর কোথ থেকে উটকু জামেলা এসে আমাকে এতো গুলো কথা শুনিয়ে চলে গেল…উটকু জামেলা কি বলছি.. আমার মামাতো ভাইয়ের জানেজিগার দোস্ত দূরন্ত … ভার্সিটির নাকি লেকচারাল… সেই সুবাদে আমাকেও লেকচার দিয়ে গেলো আরকি….।

কিরে তিয়াসা এখানে লুকিয়ে আছিস হলুদ লাগাবো বলে..তুই যে এতো ভিতু তা তো জানতাম না…[ আমারর মামাতো বোন রিশা.. আমরা সেম ইয়ার ]

তিয়াসা: আইছে আমার পেত্নি.. ভয় পাই তাও আবার আমি…?

রিশা:আচ্ছা ঠিক আছে.. জানিস ওই দিকে কি হচ্ছে…?

তিয়াসা: এখনো জানিনা তবে জানবো.. কি হয়েছে বল…।

রিশা: সাঙ্গিতের জন্য যে ভাবে স্টেজ সাজাতে চেয়েছিলাম.. তার উল্টো ভাবে সাজাচ্ছে…

তিয়াসা: চল তো গিয়ে দেখি…

.
.
তিয়াসা: কি বিচ্ছিড়ি ভাবে সাজিয়েছে.. লাল ফুল গুলো মাঝে দিলে কি ভালোই না লাগতো..কি ইজি বিজি করে দিয়ে রাখছে…রিশা একটা চেয়ারের ব্যবস্থা কর তো…

রিশা: চেয়ার দিয়ে কি করবি…??

তিয়াসা: আগে নিয়ে আয় পরে দেখ কি করি…

রিশা: ওকে…।

কিছুক্ষন পর…

তিয়াসা মনের আনন্দে ফুল গুলো মনের মতো করে সাজাচ্ছে… পিছন থেকে আবার সেই কন্ঠ…

ডেকোরেটের কাজ যে মেয়েরা করে সেটা এই প্রথম দেখলাম… আজকে অনেক জিনিসই প্রথম দেখলাম..আহা নতুন সব এক্সপেরিয়েন্স…

তিয়াসা: ওই ফালতু ছেলে আপনাকে কিন্তুুওওওওও…..
আল্লাহ গো প্লিজ আমায় বাচাও… আমি এখনই মরতে চাই না..জীবনডা তো শুরুই করলাম না গো এখনই শেষ হয়ে যাবে গোওওও….

দূরন্ত: চুপপপ একদম চুপপ.. কানটা আমার শেষ করে দিল… মাইক ফেল…।

.
.
_______
______________________
_______
.
.

প্রায় তিন বছর পর আজ বিন্দুর প্রাক্তন প্রেমিক দীপের সাথে দেখা… সঙ্গে তার স্ত্রী…. দীপের সাথে বিন্দুর দীর্ঘ পাচঁ বছরের প্রেম ছিল… কিন্তু একদিন দীপ বিন্দুর সামনে হাটু গেড়ে বসে…তার থেকে মুক্তি চেয়েছিল…ভুলে যেতে বলেছিল দীপ কে…কাউকে মন থেকে ভালোবাসলে এতো সহজে কি ভোলা যায়…? বিন্দু আর দীপের মধ্যে তিন বছর হলো কোনো যোগাযোগ নেই…তবু আজও বিন্দুর মনে দীপের বিরাজ…দীপকে তার স্ত্রীর সাথে দেখে বিন্দুর বুকের ভিতর ধমকা হাওয়া বয়ে গেলো…।

দীপের স্ত্রী হাটতে সময় শাড়ীর সাথে পা লেগে হোচট খেয়ে পরে যেতে নিলেই দীপ তাকে ধরে ফেলে…।

দীপ:তুমি ঠিক আছো তো দিয়া..? আরে সাবধানে চলবে তো..?

দিয়া:হুমম ঠিক আছি…এতো ব্যস্ত হওয়ার কিছু নেই…

দীপ: যদি পরে যেতে তাহলে কি হতো বলো তো…?

দিয়া: তুমি যে আমার ভরসা…তুমি থাকতে আমি পরতেই পারিনা…এই হাত দুটো সব সময় আমায় আগলে রাখবে এই বিশ্বাস আছে আমার…[ দীপের হাত দুটো ধরে ]

বিন্দু সেখানে আর এক মূহুর্ত ও দাড়ালো না..আর কিছু শুনার শক্তি বিন্দুর নেই…যে হাত আজ দিয়াকে আগলে রাগছে…যে হাত আজ দিয়ার ভরসা হয়েছে…সেই হাতটা বিন্দুর ভরসার জায়গা হওয়ার কথা ছিল..বিন্দুকে আগলে রাখবে বলে প্রমিস করেছিল….বিন্দু না চাইতেও চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরছে….

বিন্দু দীপ আর দিয়াকে পাশ কাটিয়ে আসার সময়..বিন্দুর হাত থেকে একটা খাম পরে যায়…যেটা দিয়া দেখতে পেয়ে হাতে তুলে নেই..এবং বিন্দুকে পিছন থেকে ডাকে..কিন্তু বিন্দুর কানে দিয়ার ডাক পৌছায়নি তার আগেই দৌড়ে গেটের বাহিরে চলে যায়…দীপ খামটা হাতে নিয়ে উপরে লিখা নামটা দেখে আতকে উঠলো…

চলবে…..?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে