#স্নিগ্ধু_অনুভব
#পার্ট:১০
#পিচ্চি_লেখিকা
রুমের এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে আছি। পুরো রুমে অন্ধকার। অনুভব এখনো ফিরেনি। বাড়ি এসেছি অন্তত পক্ষে ৪০ মিনিট হবে কিন্তু এখনো ফ্রেশ হয়নি। ভয়ে এক প্রকার কাঁপছি। মাত্র সুখের দেখা পেয়েছি সেই সুখ কি আবারো শেষ হয়ে যাবে। রাহাত বিডিতে এসেছে সত্যি। রাহাতের বিডিতে আসার খবর অনুভব জানলে কেমন প্রভাব পড়বে আমাদের সম্পর্কে? তখন গাড়ির বাইরে তাকাতেই রাহাত কে চোখে পড়ে। রাহাতকে দেখেই ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠে। রাহাতকে ভয় পায় এমন না। ভয় তো পাই অনুভবকে। সে একবার জানলে আবারও আমার জিবনটা কালবৈশাখী ঝড়ের মতো এলোমেলো হয়ে যাবে। না না আর ভাবতে পারছি না। মাথা চেপে বসে আছি। হঠাৎ করেই রুমের লাইট জ্বলে উঠলো,,চোখ মুখ কুঁচকে সামনে তাকাতেই দেখি অনুভব। আমাকে এমন এক কোণায় বসে থাকতে দেখে বললো,,
“তুই ওখানে কি করিস স্নিগ্ধু?”
আমি শুকনো ঢোক গিলে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বললাম,,
“এ..এমনি তেই এখানে বসে আছি। ভালো লাগছিলো না তো তাই এখানে বসে আছি।”
“শরীর খারাপ নাকি দেখি তো!”
অনুভব দ্রুত গতিতে আমার সামনে এসে কপালে হাত ছুঁইয়ে দিয়ে বললো,,
“কই জ্বর তো নেই। কেন খারাপ লাগছে তোর? কোথায় খারাপ লাগছে বল!”
“কিছু হয়নি। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন।”
অনুভব আমার দিকে পূর্ণ দৃষ্টি রেখে বললো,,
“কখন ফিরেছিস?”
“এই তো একটু আগেই।”
“ফ্রেশ হোসনি কেন?”
এসির মধ্যেও ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছি। অনুভব কি বুঝলো কে জানে হঠাৎ করেই পাজা কোলা তুলে নিলো,,
“আরে আরে কি করছেন? নামান নামান।”
“ওই চুপ। এত লাফাস কেন তুই? বেশি লাফালাফি করলে ফেলে দিবো।”
ফেলে দেওয়ার কথা শুনে অনুভবের গলা জড়িয়ে ধরলাম। নয়তো সত্যি ফেলে দিতে পারে যে ডেঞ্জারাস লোক। অনুভব কোলে নিয়েই ওয়াশরুমে ঢুকে আমাকে নামিয়ে দিলো,,
“ওয়াশরুমে কেন আনলেন?”
“বউয়ের সাথে রোমান্স করার জন্য😐”
“ধুর সরেন আমি যায়।”
উনাকে সরিয়ে আসতে যাবো তখনি উনি হেচকা টানে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। ঝর্ণা বেয়ে পানি পড়ে ভিজিয়ে দিয়েছে দুজনকেই।
“ধুর কি করলেন এটা?ভিজে গেলাম তো। ছাড়েন তাড়াতাড়ি।”
“পারলে ছাড়িয়ে নে।”
“আপনার মতো বডি বিল্ডারের সাথে কি আমি পারবো? আরে পুরো ভিজে যাচ্ছি ছাড়েন।”
“এখন ছেড়ে কি হবে? ভিজেই তো গেছিস।”
“ধ্যাত ভাল্লাগে না।”
অনুভবকে এক প্রকার তাড়া দিয়ে শাওয়ার শেষ করিয়ে বের করে দিলাম। এর জন্য এই রাতের বেলা আমার শাওয়ার নিতে হচ্ছে। বজ্জাত লোক। যত এটাকে ইগনোর করতে চাই তত কাছে চলে আসে। তাড়াতাড়ি শাওয়ার নিয়ে নিলাম।
“এহহহ আমাকে তো অনুভব নিয়ে আসছে। আমি তো কাপড় না নিয়ে ঢুকছি এখন কি করি?”
ওয়াশরুমের দরজা একটু খানি খুলে মাথা বাইরে দিয়ে দেখি অনুভব বেডে বসে কি যেন ভাবছে।
“” আমি এখন কি করি? উনি তো এখানেই বসে আছে। রুমেও যেতে পারবো না তাহলে কি করবো?”
জোড়ে করে শ্বাস নিয়ে মাথাটা আবারও একটু বের করে অনুভবকে উদ্দেশ্য করে বললাম,,
“শুনছেন?”
“……………
কোনো সাড়া শব্দ নেই। আমি এবার আরেকটু জোড়ে বললাম,,
” ওই এনাকন….না মানে অনুভব শুনুন না!”
“আমি কিছু শুনতে পারবো না।”
“কেন পারবেন না?”
“তুই আমাকে বের করে দিলি কেন তাই!”
“ধুর শোনেন না!আপনি তো আমাকে ওয়াশরুমে নিয়ে এসেছেন কিন্তু ড্রেস দেন নাই তো! দিয়ে যান না প্লিজ!”
“পারবো না। নিজে এসে নিয়ে যা।”
“এমন করেন কেন? দিয়ে যান না!”
অনুভব কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বললো,,
“দিতে পারি বাট আমার একটা ইচ্ছা পূরণ করতে হবে তাহলে দিবো নয়তো না।”
“এটা আবার কেমন কথা?”
“এমন কথাই। শুনলে দিচ্ছি না শুনলে নিজে নিয়ে যা।”
“ধুর। বলেন কি ইচ্ছা?”
“বলবো আগে তুই চেঞ্জ করে আয় তারপর।”
“তো ড্রেস দেন।”
“উহু তার আগে প্রমিজ কর। যা চাইবো তা দিবি!”
“না শুনে কেন প্রমিজ করবো? আজব!”
“ওকে নিজে নিয়ে যা।”
“এই এই আমি প্রমিজ করবো তো।”
“ঠিক আছে প্রমিজ কর আগে।”
“আগে বললে কি হবে আজব!”
“বেশি কথা বললে নিয়ে যা তুই।”
“আরে ঠিক আছে প্রমিজ যা বলবেন তা শুনবো এবার কাপড় দেন!”
অনুভব ঠোঁট কামড়ে হেঁসে কাবার্ড থেকে একটা ড্রেস বের করে দিয়ে চলে গেলো। আমিও চেঞ্জ করে এসে টাওয়াল দিয়ে চুল মুছছিলাম।
“এবার ঝট পট এটা পড়ে রেডি হয়ে নে।”
অনুভবের দিকে তাকিয়ে দেখি হাতে একটা প্যাকেট। আমি ভ্রুকুচকে বললাম,,
“কিসের প্যাকেট এটা?”
“বড্ড বেশি প্রশ্ন করিস তুই। খুলে দেখ কি আছে?”
আমি অনুভবের হাত থেকে প্যাকেট নিয়ে খুলে দেখি কালো রঙের একটা শাড়ি। সিল্কের শাড়ি। শাড়ি দেখে উনার দিকে তাকিয়ে বললান,,
“এটা কার জন্য?”
“ধুরো গাধা মহিলা। আমার আরো ৪-৫ টা বউ আছে তাদের জন্য আনছি।”
“ওই ওই কি বললেন আপনি?”
“তুই আসলেও গাধি সর। কথা কম বলে শাড়িটা পড়ে আয়।”
“শাড়ি আর আমি? হাউ ফানি! আমি পারি না শাড়ি পড়তে!”
“তা পারবি কেন? তুই তো শুধু পারিস ফ্যাচ্ ফ্যাচ্ করে কান্না করতে আর ঢ্যাং ঢ্যাং করে নাচতে।”
” 😒😒
“অনার কাছে যা অনা পড়িয়ে দেবে।”
“অনা পারে?”
“হুম পারে। আমিও পারি। তোরে তো আবার আমি ছুঁইলেই ছ্যাকা লাগে।”
“হ লাগেই তো। সরেন,,”
অনুভবকে সরিয়ে দিয়ে প্যাকেট টা নিয়ে অনার রুমে গেলাম। অনা পড়তেছে। দরজার কাছে গিয়ে নক করলাম,,
“আসবো ম্যাম?”
অনা আমার দিকে তাকিয়ে পড়ার টেবিল ছেড়ে আমার সামনে এসে বললো,,
“নিজেদের বাড়িতেই পারমিশন নিয়ে ঢুকতেছো?”
“এইটা তো তোমারও বাড়ি অনা আর তাছাড়া তুমি যদি ব্যস্ত থাকো এই ভেবেই নক করলাম।”
“আচ্ছা আসো। তা কি মনে করে আমার রুমে আসা?”
“আরে দেখো না আমি তো শাড়ি পড়তে পারি না অথচ অনুভব শাড়ি দিয়ে সাফ সাফ বলে দিয়েছে পড়তে। তাই তোমার কাছে আসলাম।”
অনা আমার কথা শুনে মুচকি মুচকি হাসছিলো। আমি তা খেয়াল করে বললাম,,
“ওই হাঁসছো কেন?”
“এমনি তেই। আসো শাড়ি পরানো শুরু করি।”
“হুম।”
অনা শাড়ি পড়াতে পড়াতে বললো,,
“ভাবি একটা কথা বলবো?”
“হুম বলো না!”
” তুমি এ বাড়ি থেকে আর যেয়ো না প্লিজ।”
আমি সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে অনার দিকে তাকালাম। ওর কথায় অনেক করুন সুর। কেন? হঠাৎ এমন কেন বলছে?
“হঠাৎ এভাবে বলছো যে!”
“হুম বলছি। জানো ভাবি আমি প্রথম প্রথম ভাবতাম স্যার তোমাকে পছন্দ করেন না,,ভালো ও বাসেন না। কিন্তু…
” কিন্তু কি?”
“লাস্ট যেদিন তোমাকে স্যার মেরেছিলো সেদিন আমি মাইরের শব্দে তোমাদের রুমের কাছে গেছিলাম। গিয়ে দেখি তুমি সেন্সলেস আর স্যারের গায়ের শার্ট রক্তে ভিজে ছিলো । পুরো পিঠ রক্তাক্ত ছিলো। স্যার তখনও তোমাকে জড়িয়ে অনেক কাঁদছিলো।”
অনার কথা শুনে হা হয়ে গেছি। কি বলছে এসব? তার মানে অনুভব নিজেই নিজেকে..এত দয়ামায়াহীন কেন এই লোক?
“সেদিন তুমি চলে যাওয়ার পর স্যারের রুম থেকে ভাঙচুরের আওয়াজ পেয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখি স্যার সব ভেঙে ফেলেছে। আর ফ্লোরে হাঁটু মুড়ে কান্না করছে। তোমাকে সব বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোমার নাম্বার ছিলো না আর সেদিন বলার সুযোগও পায়নি।”
অনার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি দেখে অনা চোখের সামনে তুরি বাজিয়ে বলে,,
“কোন দেশে হারালে গো ভাবি? তোমার শাড়ি পরানো হয়ে গেছে যাও।”
“হুম থ্যাঙ্কস।”
অনার কথা গুলোই মাথায় বার বার আসছে। অনুভব এসব কেন করছে? আর যদি এতই ভালোবাসে তবে কেন এত অত্যাচার? কেন কাছে এসে আবারও দুরত্ব বাড়িয়ে দেওয়া?
অনার কথা গুলো ভাবতে ভাবতেই রুমে চলে এসেছি। সামনে তাকিয়ে দেখি অনুভব ব্ল্যাক একটা পাঞ্জাবি পড়েছে,,ব্ল্যাক ওয়াচ,,ব্ল্যাক সানগ্লাস,,চুল গুলো স্পাইক করা,, আরো একবার ক্রাশ খাইলাম আর কি,,আমাকে দেখে অনুভব হাতা ফোল্ড করতে করতে বললো,,
“হা করে তাকিয়ে না থেকে যা করার তাড়াতাড়ি কর বের হবো আমরা।”
“তাকায়নি আমি ওকে৷ আর কোথায় যাচ্ছি আমরা?”
“রাতের শহর ঘুরবো আমরা।”
অনুভবের কথায় অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকালাম। এই রসকসহীন লোক কি না বলছে রাতের শহর ঘুরবে? কেমনে সম্ভব?
“আবার কি হয়ছে? আরে যা তাড়াতাড়ি তোর সাজ গোজ শেষ কর।”
“হুম.”
“শোন!”
“হুম বলেন!”
“চুল বাঁধিস না খুলে রাখিস। ”
“এটা কেমন কথা! এই গরমে….
” চুপ থাক একটাও কথা বলবি না। যা বলছি তা কর।”
অগত্যা চুল খোলা রেখে হালকা সেজে নিলাম। বুঝি না এই রাতের বেলায় চুল খুলে কোন মহাভারত অশুদ্ধ করবো আজব!
রাতের শহর টা সত্যি অসাধারণ। কখনো সেভাবে সুযোগ হয়নি এই রাতের শহর ঘুরে দেখার তবে ইচ্ছা ছিলো অনেক। অনুভব আর আমি পাশাপাশি হেটে যাচ্ছি। দুজনেই খালি পায়ে হাটছি। আমার জুতা আর উনার জুতা সব জুতা উনার হাতে ধরিয়ে দিয়েছি হিহিহি।
“কেন যে তোরে নিয়ে বের হতে গেছিলাম?”
“কেন? বের হয়ছেন তো কি হয়ছে?”
“কি আবার হবে? ভাবলাম এত সুন্দর পরিবেশে বউয়ের সাথে রোমান্স করবো প্রেম করবো অথচ কি করছি? জুতো হাতে নিয়ে হেঁটে চলেছি। ভাল্লাগে না।”
অনুভবের কথায় শব্দ করে হেঁসে দিয়েছি।
“আহারে বেচারা।”
দুজনে একটু হেঁটে সামনে এসে দেখি ফুসকা, চটপটি, ঝালমুড়ি আরো অনেক কিছু আছে। এগুলো দেখেই তো লাফ দিয়ে উঠলাম।
“এই এই ব্যাঙের মতো লাফাচ্ছিস কেন?”
“ফুসকা খাবো। চলেন”
“নো। একদম না। এসব খেয়ে শরীর খারাপ করা যাবে না।”
“এরকম করেন কেন? কিছু হবে না। প্লিজ প্লিজ চলেন।”
“না একদম না।”
অনেক ঘ্যান ঘ্যান করে মহাশয় কে রাজি করিয়ে ফুসকা ওয়ালা মামার কাছে গেলাম।
“মামা ২ প্লেট ফুসকা।”
“২ প্লেট কে খাবে?”
“কেন? আপনি আর আমি।”
“নিজে খাবি খা আমারে টানবি না এসবে।”
“হুহ টানবো না যান।”
ফুসকা খেয়ে দুজন রিকশা করে ঘুরে অনেকটা সময় কাটিয়ে বাড়ি এসে পড়লাম। আজকের সময়টা অনেক ভালো কেঁটেছে। আমাদের সম্পর্কটাও আগের চেয়ে একটু সহজ হয়ে গেছে। অনুভব ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় শুয়ে পড়লো। আমি বেডে হেলান দিয়ে বসে আছি। হঠাৎ করেই অনার বলা কথা গুলো মনে পড়তেই অনুভবের কাছে গেলাম ঝড়ের গতিতে। অনুভবের হাত ধরে টানছিলাম। তা দেখে অনুভব বললো,,
“এভাবে টানছিস কেন?আজব!”
“উঠেন। সত্যি করে বলেন তো আপনার পিঠে এভাবে কাটলো কি করে?”
“আবারও এই কথা নিয়ে পড়েছিস!”
“হুম পড়েছি্। আপনি বলেন?”
“তুই যা ঘুমা।”
“না।”
“স্নিগ্ধু,,যা ঘুমা বলছি!’
অনুভবের ধমক খেয়ে চুপচাপ এসে শুয়ে পড়লাম। কাট্টি এই লোকের সাথে। কথা বলবো না আর হুহ।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করে আমি ভার্সিটি আর অনুভব হসপিটাল গেলো। ভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। মেঘলা আর তন্নি বললো বাইরে দাঁড়াতে। হঠাৎ করেই কেউ যেনো দৌড়ে এসে ঝড়ের গতিতে জড়িয়ে ধরলো। আমি তো পাথর বনে গেছি্। কি হলো এটা? কয়েক সেকেন্ড পর ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম লোক টা কে। কিছু বলতে যাবো তখন খেয়াল করলাম এটা আর কেউ না রাহাত। আমি রাহাতকে দেখে একটা ঢোক গিলে বললাম,,
” আ..আপনি এখানে কেন?”
“তোমাকে দেখতে আসলাম স্নিগ্ধু।”
“আপনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন কখনো আসবেন না আমার কাছে তাহলে এখন কেন?”
“তোমার নাকি বিয়ে হয়ে গেছে। অনুভবের সাথে!”
“হুম।”
“তোমার ভালোবাসা তবে স্বার্থক হলো বলো!”
“হুম।”
“ভালো আছো তো?”
“হুম।”
“আচ্ছা ভালো থাকলেই ভালো। আল্লাহ হাফেজ।”
এটুকু বলেই রাহাত কোথায় যেনো চলে গেলো। আবার কেন এসেছে উনি? আবারও আমার জিবনে দুঃখ আসবে। অনুভব কতটা জানে রাহাতের বিষয়ে? রাহাত বিডিতে এটা জানলে কি করবে অনুভব? ভুল বুঝবে আমাকে? না, আর ভাবতে পারছি না। কি হতে চলেছে আল্লাহ ভালো জানে। আচ্ছা অনুভবের এই রাগের পিছনে কোথাও এই রাহাতের বিষয়টা নেই তো? কিন্তু আমার তো কোনো দোষ নেই।
ক্লাস শেষ করে আজ আর আড্ডা না দিয়ে সোজা বাড়ি চলে আসলাম। অনুভবের সাথে একটা কথাও বলিনি। পুরোটা সময় চুপ করে ছিলাম। বারান্দায় গিয়ে তিশা আপুকে ফোন দিলাম,,
“হ্যাঁ ম্যাম বলেন। কি মনে করে এই আপুকে মনে করলেন?”
“আপু মজা করো না।”
“কি হয়েছে বল তো? তোর কন্ঠ এমন কেন?”
“আপু রা..রাহাত!”
“কিহহ,,রাহাত কি? কোথায় রাহাত?”
“বিডিতে আপু।”
“কি বলছিস এসব? রাহাত তো বলেছিলো ও কখনো আসবে না। তবে?”
“জানি না কি হবে?”
“তুই কোথায় দেখলি রাহাতকে?”
“আমার ভার্সিটির সামনে এসেছিলো। কথাও বলেছে।”
“অনুভব ভাইয়া জানে কিছু?”
“না আপু। উনি জানলে আবারও ঝড় উঠবে বুঝতেছো।”
“হুম বুঝছি। ভয় পাস না। দেখ কি হয়?”
“হুম।”
ফোন কেটে দিয়ে ভাবতে লাগলাম কি হবে? হঠাৎ করেই অনুভবের গম্ভীর কণ্ঠ শুনে চমকে উঠে পিছনে তাকালাম,,
“রাহাত বিডিতে স্নিগ্ধু?”
“……
” চুপ করে না থেকে বল!”
“হু..হুম।”
অনুভব কিছু না বলে আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। কিছুক্ষণ নিরব থেকে বললো,,
“এই সেই রাহাত তাই না?”
“হুম।”
“সেই সময় টা তে আমাকে না ঠকালেও পারতি।”
অনুভবের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি চোখে মুখে রাগের ছাপ নেই। আছে বিষন্নতার ছাপ। যা ভেবেছিলাম তাই।
“আমি আপনাকে ঠকায়নি কখনো!”
“তাহলে ৩ বছর আগে কি করেছিলি? ”
“সেইটা আপনার ফ্যামিলিকে জিজ্ঞেস করবেন তারা ভালো বলতে পারবে।”
চলবে…..
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️)
হ্যাপি রিডিং😊