#স্তব্ধের_স্নিগ্ধতা
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:০২
হঠাৎ করে মুখের উপর পানি পড়তেই হুড়মুড় করে ঘুম থেকে উঠে গেল স্নিগ্ধতা। সামনে তাকিয়ে স্তব্ধকে দেখেই থমকে গেছে ভেতরকার ভয়গুলো আবারও জেগে উঠেছে।স্তব্ধ হাঁটু মুড়ে স্নিগ্ধতার সামনে বসে আছে হাতে জগ মোহ ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আজই প্রথম স্নিগ্ধতার মুখশ্রী দেখতে পেয়েছে স্তব্ধ, স্নিগ্ধতা ওতোটা ফর্সা না হলেও এককথায় সুন্দরী বলা যায় চিকন ঠোঁট টানা টানা চোখ চাহনিতে অনেক মায়া আছে,পিঠ পর্যন্ত পাতলা কালো চুল। স্তব্ধ এক হাত স্নিগ্ধতার গালে রাখতেই স্নিগ্ধতা কেঁপে উঠলো যা স্তব্ধ বুঝতে পেরেছে। ভিতু স্নিগ্ধতাকে তার কাছে অনেক ভালো লাগছে দৃষ্টি যেন সরছেই না স্পর্শটা আরও গভীর করতেই কাঁপা কাঁপা কন্ঠে স্নিগ্ধতা বলল,
– কি হয়েছে? আমি কি করেছি পানি দিলেন কেন?
স্তব্ধের এবার ধ্যান ভাঙলো এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিয়ে,
– তোমাকে সোফায় ঘুমাতে বলেছিলাম কিন্তু তুমি ঘরের মাঝখানে মেঝেতে ঘুমিয়েছ কেন?
স্নিগ্ধতা আশেপাশে তাকিয়ে নিজেকে মেঝেতে আবিষ্কার করতেই রাতের কথা মনে পড়লো,
– আসলে সোফায় ঘুমাতে পারছিলাম না তাই এখানে শুয়েছি।
– আমাকে বললেই তো হতো।
– আপনি ঘুমাচ্ছিলেন।
– ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।
স্নিগ্ধতা মাথা নাড়িয়ে উঠে ওয়াশরুমের দিকে হাঁটা ধরলো পেছন থেকে স্তব্ধ ডেকে,
– এই মেয়ে ফ্রেশ হতে যে যাচ্ছো পড়বেটা কি?
স্নিগ্ধতা পেছনে ঘুরে,
– এই শাড়িটা রাতেই তো গোসল করে পরলাম এখন আপাতত এটা দিয়েই হয়ে যাবে।
– ছিহ নোংরা মেয়ে বাসি পোশাক পড়ে থাকবে কি করে সোফায় গিয়ে বসো আমি শাড়ি নিয়ে আসছি।
স্তব্ধ কোনো উত্তর না শুনে বেরিয়ে গেল স্নিগ্ধতা দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করছে,’রাতেই তো গোসল করে এই শাড়ি পরলাম আর সাথে সাথে বাসি হয়ে গেছে বড়লোকদের কত কারবার।’
স্তব্ধ ঘরে চলে আসলো হাতে একটা নীল রঙের শাড়ি, স্নিগ্ধতার দিকে এগিয়ে দিয়ে,
– এবার যাও।
স্নিগ্ধতা শাড়ি নিয়ে চলে গেল, স্তব্ধের ধারণা নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দিনে তিন-চার বার গোসল করা উচিত তাই সে নিজেও বাইরে থেকে এসেই গোসল করে।ঘুমানোর পূর্বে গোসল করে আবার ঘুম থেকে উঠে জিম করেই গোসল করে এতে অরিত্রি শিকদার অনেক রাগারাগী করলেও স্তব্ধ নিজেকে বদলায়নি।
‘বুঝলে মা স্নিগ্ধতা মেয়েটা খুব ভালো আগেও অনেকবার দেখা হয়েছে একবার তো আমার জীবন পর্যন্ত বাঁচিয়েছিল।’
পানের পিকটা ফেলে আরেকটা পান বানাতে বানাতে রাহেলা বেগম বললেন,
– তোর জীবন বাঁচিয়েছে কিভাবে?
– আমার ব্লাড প্রেসার আছে জানোই তো ড্রাইভার ছুটি নিলো না কিছুদিন আগে তখন নিজেই গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলাম রাস্তায় জ্যামে আটকে গেছিলাম বাইরে কি গরম গাড়ির এসিটাও খারাপ ছিল ড্রাইভার তো বললোই না ওই রাস্তার মধ্যেই হঠাৎ করে প্রেশার হাই হয়ে গেল কেউ এগিয়ে এলো না কিন্তু কোত্থেকে যেন মেয়েটা আসলো সিএনজি করে আমায় হাসপাতালে নিয়ে গেল ক’জনই বা অপরিচিত মানুষদের বিপদে এগিয়ে আসে।
– এই মেয়েটাই সেদিন তোকে হাসপাতালে নিয়ে গেছিল!
– হুম মা তারপর মি.সানজিদের সঙ্গে দেখলাম জানলাম উনার বড় মেয়ে স্নিগ্ধতা। মেয়েটার আচার ব্যবহার অনেক সুন্দর তাই সুযোগ হাত ছাড়া করলাম না স্তব্ধের বউ করে বাড়িতে নিয়ে আসলাম কাউকে জানানোর মতো পরিস্থিতি ছিল না।
– সব বুঝলাম কিন্তু বউমা কি মানবে তার উপর দাদুভাই? দাদুভাই কি সম্পর্কটার মধ্যে মানিয়ে নিতে পারবে?
– স্তব্ধের কথা বাদ দাও ও তো খাপছাড়া ছেলে মায়ের আশকারাতে এমন হয়েছে তবে আমার জানামতে কোনো মেয়ে ওর জীবনে নেই কিছুদিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে স্নিগ্ধতা মায়ের উপর ভরসা আছে,আর অরিত্রিকে তুমি সামলে নিও।
– বউমা তো তার বোনের মেয়ের সঙ্গে দাদুভাইয়ের বিয়ে ঠিক করেছিল।
– আমি আরও তোমার ভরসায় আছি আর তুমি কিনা এসব বলছো? তুমি সব বুঝে নিও সব দায়িত্ব তোমার।
– আচ্ছা আচ্ছা আগে নাত বউকে দেখি জানি যখন আমার নাতির জন্য ঠিক মনে হবে তখনি ওকে বাড়িতে স্থায়ী করার দায়িত্ব আমার।
রাহেলা বেগম রাতুল শিকদারের মা,বাড়ির কর্তৃত্ব অরিত্রি শিকদারের হাতে দিয়ে দিলেও সব কিছু উনার অনুমতি নিয়েই করা হয়।অরিত্রি শিকদার শাশুড়িকে অনেক মান্য করেন।মান্য করাটাই স্বাভাবিক স্তব্ধের মা শিকদার বাড়ির বউ হয়ে আসার পর থেকেই শাশুড়ির অনেক ভালোবাসা পেয়েছেন সবসময় উনার মায়ের মতো ব্যবহার করেছেন।
সালেহা দরজার কাছে এসে,
– চাচী, ভাইজান আপনাগোরে নাস্তা করার জন্যে ভাবী ডাকতাছে।
রাহেলা বেগম খাবার টেবিলে গিয়ে বসলেন।অরিত্রি শিকদার খাবার টেবিলে রেডি করে বসে ছিলেন, রাহেলা বেগম জিজ্ঞেস করলেন,
– স্তব্ধ দাদুভাই কোথায় বউমা?
অরিত্রি শিকদার কিছু বলতে যাবেন তার আগেই স্তব্ধ চলে আসলো চেয়ার টেনে বলল,
– এইতো দিদান চলে এসেছি।
রাহেলা বেগম মৃদু হেসে,
– একা একা চলে এলে যে তোমার বউ কোথায়? শুনলাম রাতে নাকি বিয়ে করে বউ নিয়ে এসেছ।
স্তব্ধের মুখটা মলিন হয়ে গেল ঢপ করে চেয়ারে বসে পড়লো তারপর একটু থেমে উওর দিলো,
– বিয়ে কি আর শখে করেছি? তোমার ছেলে বিয়ের দাওয়াত খাওয়াতে নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে উল্টো আমায় বিয়ে দিয়ে দিলো।
– বিয়ে যেভাবেই হোক হয়েছে তো বউ তো পেয়েছ এখন সেই বউটা কোথায় আমায় একটু দেখাও।
অরিত্রি শিকদার ভেতরে ভেতরে অনেক রেগে আছেন তারপরেও শাশুড়ির সামনে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে,
– মা এই বিয়ে আমি স্তব্ধ কেউ মানি না যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের ডিভোর্স করিয়ে দিবো।
– সেকি বউমা স্তব্ধ দাদুভাই কি কাউকে পছন্দ করে নাকি?
স্তব্ধ হকচকিয়ে গেল,
– কাউকে পছন্দ হলে তুমিই জানতে পারতে দিদান।
– তাহলে তোমার মম ডিভোর্সের কথা বলছে কেন?
স্তব্ধ নিরুত্ত্যর অরিত্রি শিকদার বললেন,
– মা আপনি সব জানার পরেও কেন এসব বলছেন আচ্ছা মা আপনি কি চাইছেন মেয়েটা এই বাড়িতে থাকুক।
– আমাদের চাওয়াতে কি আসে যায় বউমা যারা সংসার করবে তাদের চাওয়াই আসল এছাড়া দাদুভাই তোমার মমের পছন্দের নাতাশাকে কেমন লাগে তোমার?
স্তব্ধ একবার অরিত্রি শিকদারের দিকে তাকালো তারপর দৃষ্টি সরিয়ে,
– ইডিয়ট মেয়ে একটা দেখা হলেই গায়ে পরে থাকে।
অরিত্রি শিকদার স্তব্ধের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকালেন কিন্তু স্তব্ধ উনার দিকে তাকায়নি। রাহেলা বেগম বললেন,
– দাদুভাই কি হলো বউকে নিয়ে আসো মেয়েটা নতুন এসেছে এই বাড়িতে স্বামী হিসেবে তোমাকেই তো সবটা চেনাতে হবে।
রাতুল শিকদার স্নিগ্ধতাকে নিয়ে এসে,
– ওর আর যাওয়ার দরকার নেই আমিই আমার ছেলের বউকে নিয়ে আসলাম।
রাতুল শিকদার স্নিগ্ধতাকে সাথে করে খাবার টেবিলে আসলেন।স্তব্ধ স্নিগ্ধতার দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো, অরিত্রি শিকদার তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে স্নিগ্ধতার দিকে তাকিয়ে,
– তোমার পরনে আমার শাড়ি না? আমার শাড়ি তুমি পড়লে কেন পেলে কোথায়?
সবাই স্নিগ্ধতার দিকে তাকিয়ে আছে,স্নিগ্ধতার পরনে অরিত্রি শিকদারের শাড়ি।স্নিগ্ধতার মৌনতা দেখে অরিত্রি শিকদার চেঁচিয়ে বললেন,
– চুপ করে আছো কেন? বাড়িতে আসতে না আসতেই আমার শাড়ির দিকে নজর দিলে।
– আমি জানতাম না এটা আপনার শাড়ি।
– তাহলে পেলে কোথায় পড়লে কেন?
– বাড়ি থেকে কাপড়ের ব্যাগ আনতে ভুলে গিয়েছিলাম তাই উনি দিয়েছেন শাড়িটা।
স্তব্ধকে ইশারা করে দেখালো স্নিগ্ধতা, অরিত্রি বিষ্ময় ভরা দৃষ্টিতে স্তব্ধের দিকে তাকাতেই স্তব্ধ বলল,
– মম শাড়ি নিয়ে ঝামেলা করো না তো।
– তুই আমার শাড়ি কেন দিলি ওকে?
– তোমার শাড়ি দিবো না তো কি আমার প্যান্ট-শার্ট দিবো? ওর কাছে ছিল না বলেই তো তোমারটা দিয়েছি।
– রাতারাতি আমার ছেলে বউ পেয়ে বদলে গেল আমার এত দামী শাড়িটা এই মেয়েকে দিয়ে দিল এই দিন দেখার জন্য বেঁচে ছিলাম, এই ছিল আমার কপালে বুঝেছি তোর বাপ আর তোর বউ মিলে তোর মাথা খেয়েছে।
স্নিগ্ধতা অবাক দৃষ্টিতে অরিত্রি শিকদারের দিকে তাকিয়ে আছে। অরিত্রি শিকদার খাবার রেখে চলে গেলেন স্তব্ধও মায়ের পেছনে ছুট লাগালো। রাতুল শিকদার মৃদু হেসে বললেন,
– তোমার শাশুড়ি মা একটু রাগী তবে মনটা অনেক ভালো ওসব মনে নিও না খেতে বসো।
– উনারা তো ঠিক মতো খেলেন না।
– স্তব্ধ আছে না ছেলের কথায় গলে গিয়ে একটু পর ঠিক খেয়ে নিবে।
– আচ্ছা আমি তাহলে আপনাদের পরিবেশন করি।
– করো তাহলে আগে পরিচয় হয়ে নাও ইনি তোমার দাদী শাশুড়ি।
স্নিগ্ধতা রাহেলা বেগমের দিকে তাকালো এতক্ষণ লজ্জায় কারো দিকে তাকায়নি তাই দেখাও হয়নি। রাহেলা বেগমের মাথায় কাঁচা পাকা চুলে ভর্তি,চুল গুলো খোঁপা করা অনেক ফর্সা চামড়া কুঁচকে গেছে।স্নিগ্ধতা মৃদু হেসে,
– আসসালামু আলাইকুম।
– ওয়া আলাইকুমুসসালাম। নাম কি তোমার?
– স্নিগ্ধতা ওয়াজেদ সবাই স্নিগ্ধা বলে ডাকে।
– মিষ্টি একটা নাম কিন্তু আমি তোমায় নাত বউ বলেই ডাকবো কি বলো?
– আচ্ছা।
– আমার খাওয়া শেষ তুমি খেয়ে আমার ঘরে এসো।
স্নিগ্ধতা মাথা নাড়িয়ে উওর দিলো, রাহেলা বেগম উঠে ঘরে চলে গেলেন। স্নিগ্ধতার কথা বলার ধরণ তার ভালো লেগেছে মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। রাতুল শিকদারও উঠে গেলেন অফিসে যাবেন তিনি।
সবাই যেতেই স্নিগ্ধতা টেবিল গুছাতে লাগলো খেতে ইচ্ছে করছে না তাই এঁটো বাসন গুলো রান্না ঘরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল সালেহা তাকে বাঁধা দিয়ে,
– কি করেন এগুলা? দেন আমি নিয়া যাই।
– আমি নিয়ে যেতে পারবো।
– কেউ দেখলে…
– কিছু হবে না আন্টি।
বলেই স্নিগ্ধতা সবগুলো রান্না ঘরে নিয়ে ধুয়ে রেখে দিলো। তারপর সালেহার কাছ থেকে জেনে রাহেলা বেগমের ঘরের কাছে গিয়ে,
– আসবো?
– হুম এসো।
স্নিগ্ধতা ভেতরে গিয়ে দাড়ালো, রাহেলা বেগম বললেন,
– দাঁড়িয়ে আছো কেন আমার পাশে বসো।
স্নিগ্ধতা বাধ্য মেয়ের মতো বসতেই রাহেলা বেগম আবারো বললেন,
– স্তব্ধ দাদুভাইয়ের মতো তুমিও আমাকে দিদান বলে ডাকবে আর যখন ইচ্ছে আমার কাছে চলে আসবে এসব অনুমতি নেওয়ার দরকার নেই।
স্নিগ্ধতা হেসে,
– আচ্ছা দিদান।
– বাড়িতে কেউ যদি কিছু বলে তাহলেও আমাকেই বলবে।
– আচ্ছা।
– আচ্ছা আচ্ছা করছিস কেন? আমার মাথায় একটু তেল দিয়ে দে তো মাথা ভার হয়ে গেছে।
এই প্রথম কেউ ভালোবেসে তুই সম্বোধন করায় স্নিগ্ধতার মনটা উৎফুল্ল হয়ে উঠলো।ড্রেসিং টেবিল থেকে তেলের বোতল এনে যত্ন সহকারে রাহেলা বেগমের মাথায় তেল মালিশ করে দিতে লাগলো। রাহেলা বেগম প্রশান্তিতে চোখ বন্ধ করে আছেন।
অরিত্রি শিকদার মুখ গোমড়া মুখে বসে আছেন বিছানায় স্তব্ধও একপাশে বসে মায়ের মতিগতি দেখছে।অরিত্রি শিকদার আড়চোখে ছেলের দিকে তাকিয়ে,
– এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
– দেখছি আর ভাবছি।
– কি?
– আমার মম একটা শাড়ির জন্য এভাবে রেগে আছে।
– শাড়ির জন্য রাগীনি তোর কর্মকাণ্ডে কষ্ট পেয়েছি একটা অপরিচিত মেয়েকে আমার শাড়ি দিলি?
– ওর কাছে ছিল না তাই তোমার শাড়ি দিয়েছি এছাড়া ও তো তোমার ছেলের বউ।
অরিত্রি শিকদার চোখ বড় বড় করে,
– তুই মেয়েটাকে মেনে নিয়েছিস স্তব্ধ!
– মানলেও সে আমার বউ না মানলেও সে আমার বউ বিয়েটা হয়ে গেছে প্রথমে মেয়েটার উপর অনেক রাগ হয়েছিল কিন্তু বুঝতে পারলাম ওর উপর রাগ করে লাভ নেই ও পরিস্থিতির স্বীকার আর আমি.. আমাকে ড্যড জোর করে বিয়েটা করিয়েছে।
অরিত্রি শিকদার চুপ করে ছেলের কথা শুনছেন স্তব্ধ থেমে আবারও বলতে লাগলো,
– অযথা খারাপ ব্যবহার করে কি হবে মম? মেয়েটার কষ্ট একবার ভাবো হুট করে বিয়ে ভেঙে গেল তার উপর অপরিচিত একটা ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়ে অপরিচিত এক জায়গায় আসলো প্লিজ বকাঝকা করো না।
– কি করবো না করবো তোর কাছ থেকে শিখব না আমি তোকে পেটে ধরেছি বুঝলি খুব শিঘ্রই তোদের ডিভোর্স করিয়ে ফেলব আজই উকিলের সঙ্গে কথা বলবো।
স্তব্ধ আর কিছু বলল না বসা থেকে উঠে মায়ের ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।কিই বা বলবে সে তো নিজ ইচ্ছায় বিয়েটা করেনি আর অপরিচিত কারো জন্য মায়ের বিপক্ষেও যেতে পারবে না।
________________
রাতুল শিকদার দুপুরে বাড়িতে চলে এসেছেন তাই সবাই একত্রে খাবার টেবিলে খেতে বসেছে স্নিগ্ধতা সবাইকে খাবার পরিবেশন করছে। খাওয়া শেষ হতেই রাহেলা বেগম বললেন,
– স্তব্ধ দাদুভাই নাত বউকে নিয়ে আজ বিকেলে কেনাকাটা করতে যাবে ওর যা যা প্রয়োজন নিয়ে আসবে।
– আমি কেন?
– তুমি ওর স্বামী তাই।
– বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাবো তাই আজ হবে না।
– আমি কিছু জানি না নাত বউ তুই বিকেলে তৈরি থাকিস দাদুভাই তোকে নিয়ে যাবে।
কারো কথা না শুনেই তিনি চলে গেলেন অরিত্রি শিকদার শাশুড়ির কথার উপরে কিছু বলার সাহস পেলেন না, স্তব্ধের মুখটা চুপসে গেছে সে আহত দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে আশাহত হলো।
যে যার মতো খেয়ে ঘরে চলে গেছে।স্নিগ্ধতা কাজ সেরে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে রাহেলা বেগমের ঘরে যাচ্ছিল পথিমধ্যে রাতুল শিকদার ডেকে,
– স্নিগ্ধা মা তোমার মা ফোন করেছে তোমার সঙ্গে কথা বলতে চান।
বলেই স্নিগ্ধতার হাতে মোবাইল ধরিয়ে চলে গেলেন,স্নিগ্ধতার অন্তর কেঁপে উঠছে ভয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে মনে মনে ভাবছে,’মা কেন ফোন দিলো? কি বলবে?কি করেছি আমি?
চলবে………..