স্তব্ধের স্নিগ্ধতা পর্ব-১৫

0
1422

#স্তব্ধের_স্নিগ্ধতা
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:১৫

স্তব্ধ স্নিগ্ধতার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে জ্বর কমছে না।একা হাতে স্তব্ধ স্নিগ্ধতার মাথায় পানিও ঢেলেছে,স্তব্ধ অসহায় কন্ঠে বলল,

– এই মেয়েকে দেখছি কিছু বলাও যাবে না, কিছু বললেই ভয় পায় আর জ্বর আসে।

অনেক চেষ্টা করেও ওষুধ খাওয়াতে পারেনি তাই আর কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে স্নিগ্ধতাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রইল স্তব্ধ, এসিও বন্ধ করে দিয়েছে।

শেষ রাতের দিকে জ্বর কমে আসলো ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছে স্নিগ্ধতা। ঘুম ভেঙ্গে গেছে শরীর ক্লান্ত লাগছে পাশ ফিরে তাকাতেই ঘুমন্ত স্তব্ধকে দেখতে পেল। স্তব্ধের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে উঠে গেল স্নিগ্ধতা, শরীরের সকল ক্লান্তি দূর করার জন্য এখন লম্বা একটা শাওয়ার নেওয়ার প্রয়োজন।

আধ ঘন্টা পর স্নিগ্ধতা চুল মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বের হলো।স্তব্ধ ঘুম থেকে উঠে গেছে দু’জনের চোখাচোখি হতেই স্নিগ্ধতা দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিলো। স্তব্ধ ফ্রেশ হতে চলে যেতেই স্নিগ্ধতা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে আয়নার সামনে গেল। জ্বর চলে গেলেও মাথা ব্যথা এখনও রয়ে গেছে তাই নিচে যেতে আর ইচ্ছে করছে না।স্তব্ধ ঘরে এসে স্নিগ্ধতার সামনে দাড়ালো রাগমিশ্রিত কন্ঠে বলল,

– সমস্যা কি তোমার? এখন দেখছি তোমার সঙ্গে কথাও বলা যাবে না কথা বললেই অসুস্থ হয়ে যাও কেন?

স্নিগ্ধতা মাথা নিচু করে রেখেছে হাতগুলো কাঁপছে, স্তব্ধ স্নিগ্ধতার দুই বাহু শক্ত করে ধরে বলল,
– কাঁপছো কেন? কাঁপা কাঁপি কি তোমার জম্মগত রোগ নাকি?

এবারও স্নিগ্ধতা কিছু বলল না স্নিগ্ধতার নিরবতা স্তব্ধের রাগ বাড়িয়ে দিচ্ছে ধমক দিয়ে বলল,
– স্নিগ্ধ আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি।

স্নিগ্ধতা বাচ্চাদের মতো কেঁদে দিল স্তব্ধ ভরকে গেছে স্নিগ্ধতার এহেম কাজে।স্নিগ্ধতা ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,

– আমি কি করেছি আপনি আমার সঙ্গে এমন করছেন কেন? সবাই আমার সঙ্গে শুধু খারাপ ব্যবহার করে কেউ আমায় ভালোবাসে না কেউ আমাকে বুঝতে চায় না।

স্তব্ধ স্নিগ্ধতাকে নিজের সঙ্গে আবদ্ধ করে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আহ্লাদি সুরে বলল,
– কাঁদে না বউ কে বলেছে তোমায় কেউ ভালোবাসে না আমি তো….

বলেই থেমে গেল স্তব্ধ অনুভূতি উলোট পালোট হয়ে যাচ্ছে কি বলতে যাচ্ছিল নিজেই বুঝতে পারছে না।স্নিগ্ধতার কান্নায় হুস আসলো, স্নিগ্ধতার কপালে চুমু খেয়ে বলল,

– স্যরি আর কখনও তোমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করবো না প্লিজ তুমি কেঁদো না।

কোনো কথাতেই কাজ হচ্ছে না স্নিগ্ধতা কেঁদেই যাচ্ছে এবার স্তব্ধ বিরক্ত হয়ে আবারো ধমক দিয়ে বলল,
– ভালো কথায়ও তো দেখছি কাজ হয় না তুমি যদি এখন কান্না না থামাও আমি কিন্তু তোমাকে তেলাপোকা ভর্তি ড্রামে ফেলে দিয়ে আসব।

ভয় পেয়ে গেল স্নিগ্ধতা ভিতু দৃষ্টিতে স্তব্ধের দিকে তাকালো। কান্না থেমে গেছে কিন্তু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে নাক টানছে।স্তব্ধ ঘর থেকে বেরিয়ে গেল কিছুক্ষণ পর আবারো ফিরে এলো তবে হাত করে খাবারের ট্রে নিয়ে।

স্নিগ্ধতাকে বসিয়ে হাতে খাবার ধরিয়ে দিয়ে বলল,
– দ্রুত খাবার খেয়ে নাও ওষুধ খেতে হবে।

স্নিগ্ধতা বাধ্য মেয়ের মতো খাবার খেয়ে নিলো, কারণ সে জানে এখন খেতে না চাইলে স্তব্ধ আবারো বকবে। স্তব্ধের রাগান্বিত হওয়ার কারণ স্নিগ্ধতার অজানা। ধীরে ধীরে স্তব্ধ বদলে যাচ্ছে এই বদলানো কারো চোখ এড়ায়নি এখন আর কাজের প্রতি অলসতা দেখায় না সঠিক সময়ে অফিসে উপস্থিত হয়, বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি আড্ডাটাও অনেক কমে গেছে সপ্তাহে এক থেকে দু’বার কিংবা কখনও কখনও যায়ও না।
.
.
আজ শুক্রবার ছুটির দিন সবাই বাড়িতে আছে।স্নিগ্ধতা চা বানিয়ে সবাইকে বসার ঘরে দিয়ে এসেছে। বিকেল হতেই রুশি এবং নাতাশার আগমন ঘটলো অরিত্রি শিকদার বাদে বাকি সবাই বেশ অবাক হয়েছে। রাতুল শিকদার জিজ্ঞেস করলেন,

– কি ব্যাপার রুশি এ সময় তুমি এ বাড়িতে?

– কেন দুলাভাই আসতে পারি না?

– তা পারবে না কেন কিন্তু কখনও এভাবে হুট করে আসনি তো।

অরিত্রি শিকদার বললেন,
– নিতু কোথায় রে রুশি?

– বাড়িতে রেখে এসেছি এসব ব্যাপারে ওর থাকতে হবে না।

রাহেলা বেগম ব্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে বললেন,
– কোন ব্যাপার?

– একটু অপেক্ষা করুন মা সব জানবেন।(অরিত্রি)

অরিত্রি শিকদার নিজের ঘরের দিকে গেলেন কিছুক্ষণ পর একটা কাগজ হাতে বের হলেন সবার দৃষ্টি উনার দিকে। কাগজটা স্তব্ধের সামনে রেখে চেঁচিয়ে ডাকতে লাগলেন,

– স্নিগ্ধতা…

স্নিগ্ধতা রান্নাঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে হালকা হেসে বলল,
– জ্বি মা।

– এদিকে এসে দাড়াও দরকার আছে।

স্নিগ্ধতা চুপ করে দাড়ালো।অরিত্রি শিকদার শান্ত গলায় বললেন,
– স্তব্ধ ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দে।

কথাটা শুনে সবাই অনেক অবাক হয়ে গেছে রাতুল শিকদার ক্ষিপ্ত স্বরে বললেন,
– ডিভোর্স পেপারে সাইন করবে মানে? বিয়ে কি তোমার কাছে লুডু খেলা নাকি?

– আমি আমার ছেলের সঙ্গে কথা বলছি তাই মাঝখানে কেউ কথা না বললেই ভালো হবে।

– অরিত্রি…

রাতুল শিকদারকে থামিয়ে দিয়ে অরিত্রি শিকদার স্তব্ধের দিকে তাকিয়ে আবারো বলল,
– সাইন করতে বললাম তো।

স্তব্ধ ব্রু কুঁচকে,
– আবার এটা নতুন করে বানিয়ে এনেছ?

– হুম এবার সাইন কর।

স্তব্ধ কাগজটা হাতে নিয়ে মৃদু হেসে বলল,
– বারবার এক কথা রিপিড করছো কেন মম যা বলার সেদিনই তো বলে দিয়েছি।

– তাহলে তুই সাইন করবি না?

– উহু।

অরিত্রি শিকদার কাগজটা স্তব্ধের হাত থেকে নিয়ে স্নিগ্ধতার সামনে ধরে,
– তুমি সাইন করে দাও তুমি সাইন করলে স্তব্ধ সাইন করতে বাধ্য।

স্নিগ্ধতা স্তব্ধের দিকে তাকালো এমন এক জায়গায় যে তাকে দাড়াতে হবে কখনও ভাবতেও পারেনি।স্তব্ধ অরিত্রি শিকদারের উদ্দেশ্যে বলল,

– ওকে ফোর্স করে লাভ নেই আমি যখন বলেছি সাইন করবো না সো সাইন করবো না আর ও করবে না।

রাতুল শিকদার রাহেলা বেগম আরিয়া তিহান সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।স্নিগ্ধতার শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না। নাতাশা আহত কন্ঠে বলল,

– স্তব্ধ কেন এমন করছো? আঙ্কেল তোমায় জোর করে বিয়ে দিয়েছে ভুলে গেছ তুমি? প্লিজ সাইন করে দাও।

স্তব্ধ নাতাশার কথা শুনেও না শোনার ভান ধরল।অরিত্রি শিকদার রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বললেন,

– আগে কখনও আমার অবাধ্য হসনি আর আজ কিনা এই মেয়ের জন্য আমার উপর কথা বলছিস তুই! আমার থেকে এই মেয়েটা তোর কাছে ইম্পর্ট্যান্ট হয়ে গেছে?

– আমি এখনও অবাধ্য হচ্ছি না তবে তুমি যা বলছো তা করা সম্ভব নয়।

রাহেলা বেগম সবাইকে থামিয়ে বললেন,
– বউমা দাদুভাই তো বলেই দিল ও নাত বউকে ডিভোর্স দিতে চায় না তাহলে তুমি কেন ওদের মাঝখানে আসছো?

– আমার ছেলে কি করবে কার সঙ্গে থাকবে আমি সিদ্ধান্ত নিব মা।

অরিত্রি শিকদার স্তব্ধের উদ্দেশ্যে বলল,
– তোর সাইন করতে হবে না তুই এই মেয়ের সঙ্গেই থাক আমি বেরিয়ে যাচ্ছি এই বাড়ি থেকে।

– মম পাগল হয়ে গেছ?

অরিত্রি শিকদার বেরিয়ে যাওয়ার জন্য উদত্ত হতেই রাতুল শিকদার পথ আটকে বললেন,
– অরিত্রি ছেলেমানুষি বাদ দাও এটা তোমার বাড়ি তোমার সংসার আর তুমিই কিনা চলে যাবে।

– হয় এই মেয়েটা এই বাড়িতে থাকবে নয় আমি থাকব।

– ও তোমার ছেলের বউ ওর সঙ্গে তোমার থাকা না থাকার কথা কিভাবে আসে।

স্তব্ধ অরিত্রি শিকদারের হাত ধরে শান্ত গলায় বলল,
– মম কেন এমন করছো? কেন স্নিগ্ধকে পছন্দ করো না?

– কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই আমি, তোমরা জানো আমি যা বলি তাই করি এই মূহূর্তে তুই যদি ডিভোর্স পেপারে সাইন না করিস তাহলে আমি একেবারে এই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাব আর আমায় খুঁজে পাবি না।

– মম!

অরিত্রি শিকদার পুনরায় কাগজ স্তব্ধের হাতে দিল। অরিত্রি শিকদার অনেক জেদি একজন মহিলা তিনি যা বলবেন তাই করে ছাড়বেন উনার জিদ সম্পর্কে বাড়ির সবাই অবগত সবথেকে বেশি স্তব্ধ জানে তার মায়ের সম্পর্কে।তিহান অরিত্রি শিকদারকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই অরিত্রি শিকদার হাত নাড়িয়ে থামিয়ে দিলেন।

স্তব্ধ একবার স্নিগ্ধতার দিকে তাকাল, স্নিগ্ধতার কান্না পাচ্ছে ভেতরে যেন এক ঢেউ বয়ে যাচ্ছে অনেক কষ্ট করে কান্নাটা আটকে রাখার চেষ্টা করছে মনে প্রাণে চাইছে স্তব্ধ যাতে সাইন না করে সবাই যেন অরিত্রি শিকদারকে বুঝিয়ে বলে। স্নিগ্ধতার বলার মতো কিছুই নেই, নেই কোনো অধিকার স্তব্ধ যা করবে তাই মেনে নিবে।বিয়েটা যদি স্বাভাবিক ভাবে স্তব্ধের ইচ্ছেতে হতো তাহলেও হয়তো কিছু বলতে পারতো স্নিগ্ধতা। স্তব্ধ বুঝতে পারছে স্নিগ্ধতার অবস্থা কিন্তু এখন তার কিছুই করার নেই এখনকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে নইলে তার মা জিদ ধরে সত্যিই চলে যাবে যা সে সহ্য করতে পারবে না।

রাতুল শিকদারও নিরব হয়ে গেছেন স্ত্রীকে তিনি অনেক ভালোবাসেন অনেকগুলো বছর একসঙ্গে হাতে হাত রেখে পাড় করেছেন শেষ বয়সে এসে স্ত্রীকে হারাতে পারবেন না আবার এই অন্যায়ও সহ্য করা যায় না স্নিগ্ধতাকে তো তিনি নিজ দায়িত্বে ছেলের বউ করে নিয়ে এসেছেন। তবে উনার কাছে এখন নিরবতাই শ্রেয় মনে হচ্ছে।

অরিত্রি শিকদার বললেন,
– কি হলো স্তব্ধ দাড়িয়ে আছিস কেন?

স্তব্ধের হুস ফিরল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কাগজে সাইন করে দিল।অরিত্রি, রুশি আর নাতাশার মুখে হাসি ফুটে উঠেছে ভেতরে ভেতরে চমকে গেছে স্নিগ্ধতা ভালোবাসার মানুষটিকে হারানোর মতো যন্ত্রনা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।অরিত্রি শিকদার কাগজটা নিজের হাতে তুলে নিয়ে বললেন,

– তোর কাজ শেষ এবার ঘরে যা।

– মম একবার ভেবে দেখো।

– বলছি তো ঘরে যা এই মেয়ের ব্যবস্থা আমি করছি।

ধমকের সুরে বললেন কথাটা,স্নিগ্ধতার দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছে না স্তব্ধ দৃষ্টি নত করে ঘরে চলে গেল।অরিত্রি শিকদার স্নিগ্ধতার হাতে কাগজ দিয়ে,

– স্তব্ধ সাইন করে দিয়েছে এবার তুমিও সাইন করে দাও কোনো নাটক সহ্য করবো না।

স্নিগ্ধতা অরিত্রি শিকদারের দিকে তাকাল, অরিত্রি শিকদার দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিলেন বাকিদের মতো তিনি কোনভাবেই এই মেয়ের মায়ায় পড়তে চান না।রুশি ধমক দিয়ে বললেন,

– কি হলো দ্রুত সাইন করে এই বাড়ি থেকে দূর হও।

স্নিগ্ধতা সবার দিকে তাকিয়ে নিলো তারপর চুপচাপ সাইন করে দিল কাউকে নিজের কষ্ট বুঝতে দিল না।সাইন শেষ হতেই রুশি নাতাশাকে ইশারা করল। নাতাশা ইশারা অনুযায়ী স্নিগ্ধতার হাত চেপে ধরে সদর দরজার দিকে যাওয়া ধরল পথিমধ্যে রাতুল শিকদার তাদের সামনে দাড়িয়ে,

– হাত ছাড়ো।

– আঙ্কেল।

– অরিত্রির অন্যায় মেনে নিয়েছি বলে যে তোমাদেরকেও মেনে নিব ভাবলে কি করে স্নিগ্ধা মায়ের কাছেও ঘেঁষবে না।

নাতাশা স্নিগ্ধতার হাত ছেড়ে দিল রাতুল শিকদার স্নিগ্ধতার মাথায় হাত বুলিয়ে,
– আমায় মাফ করে দিও মা কথা দিয়েও কথা রাখতে পারিনি চিন্তা করো খুব শিঘ্রই সব ঠিক হয়ে যাবে।

স্নিগ্ধতা নিশ্চুপ, রাতুল শিকদার আবারও বললেন,
– আমি তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসছি চলো।

স্নিগ্ধতা এবার মুখ খুলল নত দৃষ্টিতে বলল,
– তার দরকার নেই আমি একাই যেতে পারবো।

বলেই আর কারো কথার তোয়াক্কা না করে এক কাপড়েই বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল স্নিগ্ধতা।
_____________

পুরো ঘর এলোমেলো করে ফেলেছে স্তব্ধ, মাথা কাজ করছে না।বিয়েটা যেভাবেই হোক না কেন স্তব্ধ কখনও চায়নি স্নিগ্ধতাকে ডিভোর্স দিতে বরং অনেক চেষ্টা করে সম্পর্কটাকে মেনে নিয়েছে, ভালোবাসতে চেয়েছে স্নিগ্ধতাকে অনেক মায়াও জম্মে গেছে।

আজও প্রতিবাদ করেছিল কিন্তু মায়ের জেদের কাছে হার মেনে গিয়েছে ছোট থেকেই স্তব্ধ মায়ের উপর দুর্বল। বাবার অবাধ্য হলেও মায়ের অবাধ্য কখনও হয়নি আজ দু’টানায় পড়ে গেছে স্নিগ্ধতার সঙ্গে বড় অন্যায় করে ফেলেছে কিভাবে স্নিগ্ধতার সামনে দাড়াবে নিজের মা’কে কিভাবে মানাবে এই চিন্তাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

রাতুল শিকদার কঠোর গলায় রুশি এবং নাতাশাকে নিজেদের বাড়িতে চলে যেতে বলেছেন যার কারণে তারা আজ এখানে থাকতে পারেনি।অরিত্রি শিকদার বাড়িতে একা হয়ে গেছেন কেউ তার সঙ্গে কথা বলছে না। রাহেলা বেগম অসুস্থ হয়ে গেছেন, তিহানের হাত ধরে বললেন,

– একটু খোঁজ নিয়ে দেখ না নাত বউ ঠিকভাবে পৌঁছে গেছে নাকি আমার অনেক চিন্তা হচ্ছে কি একটা ঘটনা ঘটলো কে এখন নাত বউকে সামলাবে?

– দিদান এমন ছটফট করলে আরও অসুস্থ হয়ে যাবে।

অরিত্রি শিকদার শাশুড়ির ঘরে এসে পাশে বসে বললেন,
– মা এখনও শরীর খারাপ লাগছে? মাথায় তেল দিয়ে দিব?

– তোমার কিছু করতে হবে না বউমা তুমি নিজের ঘরে যাও।

– এভাবে কেন বলছেন মা?

– কিভাবে বলবো? এতদিন তোমাকে চিনতে ভুল করেছি আমি আজ তোমার আসল রূপ দেখলাম কিভাবে পারলে মা হয়ে নিজের ছেলের জীবন এলোমেলো করে দিতে?

– আমি ওর জীবন ভালো করে সাজিয়ে দিতে চাইছি।

– একবার ছেলের ঘরে উঁকি দিয়ে দেখে এসো তারপর কথা বলো।

এসবের পরে স্তব্ধের সঙ্গে কথা বলতেই ভুলে গেছিল অরিত্রি শিকদার দ্রুত বসা থেকে উঠে স্তব্ধের ঘরের দিকে যাওয়া ধরলো।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে