স্তব্ধের স্নিগ্ধতা পর্ব-১২

0
1405

#স্তব্ধের_স্নিগ্ধতা
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:১২

‘আমাদের বাড়িতে এত সুন্দরী রমণী কোত্থেকে এলো? তুমি কি ভুল করে এখানে চলে এসেছ নাকি কারো সঙ্গে এসেছ?

আগন্তুক অপরিচিত লোকটার কথা শুনে স্নিগ্ধতা তাজ্জব বনে গেল। কলিং বেলের শব্দে সদর দরজা খুলতেই একটা অপরিচিত ছেলেকে দেখতে পায় স্নিগ্ধতা,ছেলেটা কথাগুলো স্নিগ্ধতাকে বলল‌। ছেলেটি কোনো জবাব না পেয়ে পুনরায় বলল,

– তুমি কি কথা বলতে পারো না? ওকেহ নো প্রবলেম তোমার হয়ে আমি না হয় কথা বলবো বাই দ্য ওয়ে তোমাকে কিন্তু আমার পছন্দ হয়েছে।

স্নিগ্ধতা এবার মুখ খুলল ঝাঁঝালো কন্ঠে বলল,
– ইয়ার্কি হচ্ছে আমার সঙ্গে? এমনিতেই চেনা জানা নেই বাড়িতে চলে এসেছেন এখন আবার আজেবাজে কথা বলছেন।

– আমি তিহান ধীরে ধীরে চেনাজানা হয়ে যাবে।

– ওখানেই থেমে যা আর একটা কথাও বলবি না।

স্তব্ধের শান্ত গলায় হুমকি শুনে সবাই স্তব্ধের দিকে তাকালো।তিহান নামক ছেলেটি দৌড়ে গিয়ে স্তব্ধের সঙ্গে কোলাকুলি করে,
– স্তব্ধ ভাই কেমন আছিস?

– ভালো হঠাৎ করে কিছু না বলে চলে এলি তোর তো আরও এক মাস পরে আসার কথা ছিল।

– সারপ্রাইজ! তোমাদের সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য মিথ্যে বলে চলে এলাম।

– সারপ্রাইজ ভালো ছিল।

– বাকিরা কোথায় ভাইয়া?

– বাড়িতেই আছে।

তিহানের চেঁচামেচি শুনে সবাই হল ঘরে চলে আসলো। অরিত্রি শিকদার গদগদ হয়ে তিহানের কাধে হাত রেখে বললেন,
– আমার আরেকটা ছেলে চলে এসেছে কি যে খুশি লাগছে।

– বড় আম্মু কতদিন পর তোমার সঙ্গে দেখা হলো কেমন আছো?

– তোকে দেখে এখন অনেক ভালো আছি।

বাকিদের সঙ্গে কথা বলে এবার রাহেলা বেগমের পাশে তিহান বসলো গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
– ডার্লিং এত শুকিয়ে গেছ কেন? নিশ্চই আমার বিরহে খাওয়া দাওয়া করনি ঠিক মতো?

রাহেলা বেগম তিহানের কান মুলে দিয়ে,
– এসে গেছে আরেক বাঁদর, এতদিন বাইরে থাকার পরেও বদলাসনি।

– বদলায় গিরগিটি আমি তো মানুষ।

– হ্যা দেখতেই পাচ্ছি রাতুল মেয়ে দেখা শুরু করে দে এবার তিহান দাদুভাইয়ের বিয়েটাও দিয়ে দিতে হবে তাহলে বাড়িতে আর বাঁদর থাকবে না।

তিহান লজ্জা পাওয়ার ভান ধরে,
– মেয়ে দেখতে হবে না দিদান তোমরা শুধু কাজী ডাকো।

তিহানের এহেম কথায় সবাই বিষ্ময় ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।স্তব্ধ উচ্ছসিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
– তুই তো সবকিছুতে ফার্স্ট তিহান, বিয়ের জন্য মেয়েও পছন্দ করে রেখেছিস!

– আরে না ভাইয়া তুই যা ভাবছিস তা না মেয়ে আমার এখনি পছন্দ হয়েছে তাও আবার বাড়িতে ঢুকেই।

সবাই আরও একদফা অবাক হলো। রাতুল শিকদার জানতে চাইলেন,
– বাড়িতে এসে মেয়ে পছন্দ হয়েছে! বলিস কি? কোন মেয়ে?

তিহান লাজুক দৃষ্টিতে স্নিগ্ধতার দিকে আঙুল দেখিয়ে,
– ওকে আমার পছন্দ হয়েছে।

তিহানের আঙুল বরাবর স্নিগ্ধতার দিকে তাকিয়ে আবারো অবাক হলো সবাই। স্নিগ্ধতা এতক্ষণ দর্শকের মতো সবটা দেখলেও এখন যেন মাথায় বাজ পড়লো। স্তব্ধ তিহানের ঘাড়ে হাত রেখে বলল,

– শেষ পর্যন্ত বড় ভাইয়ের আপন বউয়ের দিকে নজর দিলি?

তিহানের মুখ থেকে হাসিটা উধাও হয়ে গেল কপাল কিঞ্চিৎ কুঁচকে,
– বড় ভাইয়ের বউ?

রাতুল শিকদার বললেন,
– ও হচ্ছে স্নিগ্ধতা স্তব্ধের বউ।

– হুয়াট! ভাইয়া বিয়ে করল কিভাবে?

– আমি করিয়েছি বাকিটা পরে জানতে পারবি।

তিহান আহত দৃষ্টিতে সবার দিকে চোখ বুলালো।স্তব্ধ তিহানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
– কষ্ট পায় না ও হচ্ছে তোর ভাবী আর ভাবী মাতৃ সমতুল্য।

– ভাবী এত সুন্দর কেন ভাইয়া?

– ভাই সুন্দর হলে বোনও সুন্দর হয় যেহেতু তুই সুন্দর সেহেতু স্নিগ্ধ তোর বোন হিসেবে নিজেও সুন্দর।

– হতে চাইলাম সাইয়া বানিয়ে দিল ভাইয়া পোড়া কপাল আমার, আসসালামু আলাইকুম ভাবী মনে কিছু নিয়ো না।

স্নিগ্ধতা সালামের জবাব নিয়ে ঘরে চলে গেল। উপস্থিত সবাই হেসে দিল, রাহেলা বেগম বললেন,
– তিহান দাদুভাই এত দূর থেকে এলে ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নাও গিয়ে।

– আচ্ছা দিদান।

তিহান নিজের ঘরের দিকে চলে গেল।স্নিগ্ধতা বিছানায় বসে পা দোলাচ্ছে, স্তব্ধ এসে স্নিগ্ধতার পাশে বসে পড়লো মুখটা মলিন করে বলল,

– আমার কপালে যে অনেক দুর্ভোগ আছে এটা ইতোমধ্যে বুঝে গেছি।

স্নিগ্ধতা স্তব্ধের দিকে তাকিয়ে বলল,
– কিসের জন্য দুর্ভোগ?

– বউয়ের জন্য।

স্নিগ্ধতা বুঝতে না পেরে ব্রু কুঁচকালো,স্তব্ধ তার দৃষ্টি বুঝতে পেরে,
– সবার নজর কেন আমার বউয়ের দিকে? মেয়ের কি অভাব পড়েছে নাকি যে বিবাহিত এক নারীর পেছনে লাগতে হবে?

– তো কে কে আপনার বউয়ের পেছনে লেগেছে?

– মিলির বিয়ের সময় একটা ছেলে লাগলো আজ নিজের ছোট ভাই লাগলো আবার অফিসে এসে আ..

স্তব্ধ থেমে গেল কি বলতে যাচ্ছিল বুঝতে পেরে নিজেকে মনে মনে কয়েকটা গালি দিল।স্নিগ্ধতা জিজ্ঞেস করল,
– থামলেন কেন? অফিসে কে এসেছিল?

– অফিসে তো কত মানুষই আসে কাজের জন্য।

– আপনার ভাইও আছে জানতাম না তো, আচ্ছা আপনারা কয় ভাই বোন?

– আপু আর আমি আপন ভাই বোন অর্থাৎ দুই জন আর তিহান হচ্ছে আমার চাচাতো ভাই ড্যড এর আপন ভাইয়ের ছেলে।

– ওহ উনার বাবা-মা আসেননি কেন?

– বাবা-মা নেই, চাচ্চু তিহান ছোট থাকতেই মা’রা গেছেন তারপর ওর মা অন্যত্র বিয়ে করে নিয়েছে এরপর থেকে ড্যড মম বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করছে এক মায়ের পেটের না হলেও আমরা আপন দুই ভাই, পড়াশোনার জন্য এতদিন দেশের বাইরে ছিল পড়াশোনা শেষে ওখানেই চাকরি নিয়েছিল কিন্তু মম ড্যড এর চাপে একেবারে চলে এসেছে।

– ওহ।
______________

‘ভাবী কি আমার উপর রাগ করেছ? তখনকার জন্য আই এম রিয়েলি স্যরি।’

স্নিগ্ধতা মৃদু হেসে বলল,
– ইটস্ ওকেহ ভাইয়া।

– তুমি কিন্তু অনেক সুন্দর ভাবী আগে কেন আমার চোখে পড়লে না? আচ্ছা ভাবী তোমার কি কোনো বোন আছে?

– না একটা ভাই আছে।

তিহান আহত কন্ঠে বলল,
– অনেক কষ্ট পেলাম ভাবী।

স্নিগ্ধতা তিহানের ফেইস দেখে হাসলো।

তিহানের আসার খবর শুনে আরিয়া আবারো নৌসিনকে নিয়ে বাড়িতে এসেছে।নৌসিন দৌড়ে এসে স্নিগ্ধতাকে ধরে,
– মামী।

নৌসিনকে কোলে নিয়ে চুমু খেয়ে স্নিগ্ধতা বলল,
– এতদিন পর মামীর কথা মনে পড়লো?

– আম্মুকে বলেথি আম্মু আসথে দেয়নি।

স্নিগ্ধতা নৌসিনকে নিয়ে ঘরে চলে গেল।আরিয়া তিহানের পাশ ঘেঁষে বসে,
– খবর কি তোর কেমন আছিস?

– ভালো আপু।

– ড্যড এর সঙ্গে অফিসে বসবি নাকি অন্যকিছু?

– ভাবছি বিসিএস ক্যাডার হব তারপর কচি কচি মেয়ে পটাবো।

তিহানের কথায় আরিয়া হেসে দিল দুষ্টুমি করে বলল,
– তারপর লোকজন দু’জনকে চাচা ভাতিজি বলে সম্বোধন করবে।

– মনটা ভেঙ্গে দিলি।

– সত্যি করে বল কি করবি এবার?

– বিসিএসে টিকে গিয়েছি স্বনামধন্য সরকারি কলেজের ইংরেজি টিচার হিসেবে এক সপ্তাহ পরেই জয়েন করবো।

– ভালো তো, তোর মতো যদি স্তব্ধ হতো আরও ভালো হতো ড্যড টেনে হিচড়ে অফিসে নিয়ে যায়।

– বিয়ে দিয়েছ না এবার ভাইয়া শুধরে যাবে।

– আর শুধরানো মম আর আন্টি মিলে ওদের আলাদা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

– দিদানের কাছ থেকে শুনেছি তবে চাপ নিস না ভাইয়া আছে না ভাবীকে আগলে রাখবে।

– এর জন্য ওদেরকে দু’জন দু’জনের প্রেমে ফেলতে হবে যেভাবে বিয়ে হয়েছে স্তব্ধ এখন মেনে নিলেও মমের কথায় যদি পিছিয়ে যায়।

– ওহ এ ব্যাপার! এসবে আমার অনেক অভিজ্ঞতা আছে প্রেমে কিভাবে ফেলতে হয় তুই শুধু দেখতে থাক আপু।
.
.
.
আদ্রিক হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছে তবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ নয়। মাথায় আর নাকে এখনও ব্যান্ডেজ করা, আশরাফ খাঁন ছেলের সামনে বসে রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললেন,

– আমার ছেলের গায়ে হাত! শিকদার পরিবারকে আমি ছাড়বো না আমার ভালো মানুষি দেখেছে এবার দেখবে আশরাফ খাঁন নিজের ছেলের জন্য কি করতে পারে।

– দোষটা পুরো শিকদার পরিবারের নয় দোষ ছিল স্নিগ্ধতার এখন স্তব্ধকেও ভোগতে হবে এর পরিমাণ, আদ্রিক খাঁনের গায়ে হাত তোলা আমিও দেখে নিব তোমার কিছু করতে হবে না বাবা।

আশরাফ খাঁন আদ্রিকের কাধে হাত রেখে,
– যা ভালো বুঝিস কর।

আশরাফ খাঁন ঘর থেকে বের হতেই আদ্রিক কাউকে কল দিয়ে কিছুক্ষণ কথা বলে বাঁকা হাসলো।
____________

রাত হলেও তেমন একটা অন্ধকার নেই চাঁদের আলোয় আবছা আবছা সবকিছু দেখা যাচ্ছে চারিদিকে মানুষজনের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে শোনা যাচ্ছে শুধু ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। শীতল বাতাস বইছে, ছাদের কার্নিশ ধরে দাঁড়িয়ে আছে স্নিগ্ধতা।

আরিয়া জোর করে স্নিগ্ধতাকে লাল বেনারসি পড়িয়ে নতুন বউয়ের মতো সাজিয়ে দিয়েছে আর বলেছে,’ভাই বলেছে এগুলো পরিধান করে ছাদে যেতে ওখানে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।’

কথাটা শুনে অনেক লজ্জা পেয়েছে স্নিগ্ধতা সাথে অবাকও হয়েছে স্তব্ধ তাকে এ কথা বলেছে কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে না তবুও আরিয়ার জোরাজুরিতে সেজে ছাদে আসতে হয়েছে কিন্তু ছাদে এসে স্তব্ধের দেখা মিললো না।

আবহাওয়া বেশ ভালো লাগছে তাই আকাশের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে স্নিগ্ধতা অপেক্ষা করছে স্তব্ধের জন্য। স্তব্ধ সবেমাত্র বাড়িতে আসলো নিজের ঘরে গিয়ে গোসল করে বের হতেই তিহানের দেখা পেল। ভেজা চুল মুছতে মুছতে বলল,

– এসময় আমার ঘরে কিছু বলবি তিহান?

তিহান মাথা চুলকিয়ে মৃদু হেসে বলল,
– ভাবী কখন ধরে তোর জন্য ছাদে অপেক্ষা করছে আর তুই এখনও ঘরে।

স্তব্ধ ব্রু নাচিয়ে,
– স্নিগ্ধ আমার জন্য ছাদে অপেক্ষা করছে! কেন অপেক্ষা করছে?

– আমি জানি নাকি কি জন্য অপেক্ষা করছে? শুধু বলল তোকে যেন ছাদে পাঠিয়ে দেই।

– মাথায় কি ভূত চেপেছে নাকি? তুই জিজ্ঞেস করতে পারলি না কেন ডাকছে?

– সিরিয়াসলি ভাইয়া তুই এত আনরোমান্টিক কিভাবে হলি তোর নতুন বউ তোকে এই পূর্ণিমা রাতে ছাদে ডাকছে আর তুই কিনা এসব বলছিস তোর জায়গায় আমি থাকলে দৌড়ে চলে যেতাম।

স্তব্ধ আমতা আমতা করে,
– আমি মোটেও আনরোমান্টিক নই।

– তাহলে এখানে দাড়িয়ে আছিস কেন ছাদে গিয়ে বউকে জড়িয়ে ধরে রোমাঞ্চ কর আর প্রমাণ করে দে তুই রোমান্টিক বীর পুরুষ।

স্তব্ধ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে,
– হুম যাচ্ছি।

টাওয়াল রেখে ছাদের দিকে যাওয়া ধরলো স্তব্ধ। আরিয়া তিহানের কাধে হাত রেখে,
-প্লান এবার কাজে দিবে মনে হচ্ছে।

– চল আপু গিয়ে দেখি কি হয়।

আরিয়া তিহানের মাথায় চাপড় মে’রে,
– অসভ্য ঘরে যা ভাই ভাবীর প্রেম দেখার বয়স তোর হয়নি।

তিহান মাথা ডলতে ডলতে ঘরে চলে গেল আরিয়াও হেসে চলে গেল। অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার ফলে পা ব্যথা হয়ে গেছে কিছুটা ভয়ও অনুভব হচ্ছে, স্তব্ধের দেখা না পেয়ে নিচে চলে যাওয়ার জন্য পেছনে ঘুরতেই কারো বুকের সঙ্গে মাথায় বারি খেল স্নিগ্ধতা। মাথা তুলতেই স্তব্ধকে দেখে ঠোঁটের কোণে আপনাআপনি হাসি চলে এলো।

স্তব্ধ স্নিগ্ধতার থেকে কিছুটা দূরে সরে গেল চাঁদের আলোয় ভালো করে স্নিগ্ধতার দিকে চোখ বুলিয়ে,
– আমার বউটাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে যে কেউ দেখলেই প্রেমে পড়ে যাবে।

স্নিগ্ধতা লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নিল স্তব্ধ পেছন থেকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে স্নিগ্ধতার কাধে থুতনি ঠেকাল মুহূর্তেই স্নিগ্ধতার শরীরে এক কম্পন বয়ে গেল যা স্তব্ধ অনুভব করতে পেরেছে।স্তব্ধ অস্পষ্ট কন্ঠে বলল,

– আমার বউ দেখছি অনেক রোমান্টিক হয়ে গেছে সাজুগুজু করে আমায় ছাদে ডাকলো, ডাকলেই যখন লজ্জা পাচ্ছো কেন? লজ্জা পেলে তোমায় অনেক সুন্দর লাগে তোমার মধ্যে কিছু একটা আছে যা বারবার আমায় টানে।

স্নিগ্ধতা চমকে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,
– আমি ডেকেছি মানে? আপনিই তো আরিয়া আপুকে আমায় সাজিয়ে ছাদে পাঠাতে বললেন।

স্নিগ্ধতাকে ছেড়ে কপাল চুলকিয়ে স্তব্ধ বলল,
– বলার হলে তো আমি নিজেই তোমাকে বলতে পারতাম আমাকে তিহান বলল তুমি নাকি আমার জন্য ছাদে অপেক্ষা করছো।

– আমি বলিনি বিশ্বাস করুন।

স্তব্ধ কিছু একটা ভেবে দোলনায় বসে হাতের ইশারা দিয়ে স্নিগ্ধতাকে ডাকলো।স্নিগ্ধতাও স্তব্ধের পাশে এসে চুপ করে বসলো।এক হাত দিয়ে স্নিগ্ধতাকে নিজের সঙ্গে আবদ্ধ করে স্তব্ধ বলল,
– সে যাই হোক কে ডাকলো কে না ডাকলো তাতে কি আসে যায়, একটা জিনিস খেয়াল করেছ আজকের রাতটা অনেক সুন্দর।

– হুম চাঁদটা বেশি সুন্দর।

– কিন্তু আমার তো চাঁদের থেকেও অন্যকিছুকে সুন্দর লাগছে।

– কোনটাকে?

– তোমাকে।

লজ্জায় স্নিগ্ধতার গালে লাল আভা পড়েছে দৃষ্টি নত করে ফেলল।স্তব্ধ মুচকি হেসে বলল,
– তুমি তো দেখছি লজ্জা পেতে পেতে আমার হার্ট অ্যাটাক করিয়ে দিবে,জানো না লজ্জা পেলে তোমায় অনেক সুন্দর লাগে।

– আর আপনি লজ্জা দিতে দিতে আমার হার্ট অ্যাটাক করাবেন।

বলেই স্নিগ্ধতা উঠতে নেয় কিন্তু স্তব্ধ তার হাত টেনে পুনরায় নিজের সঙ্গে আবদ্ধ করে,
– আমার বউকে আমি লজ্জা দিব কার কি?

– কারো কিছু না ঘরে চলুন।

– উহু আজ সারারাত এখানে বসে আমরা গল্প করবো।

চলবে………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে