সোনার কন্যা পর্ব-০২

0
444

#সোনার_কন্যা
#পর্ব২
#রাউফুন

নুরিশা ভাই রেহানকে দেখতেই কাঁন্না জুড়ে দিলো৷ বাইরে থেকে এসেই রেহান নুরিশার চোখে পানি দেখে বিচলিত হলো। বোনের কাঁন্না তার সহ্য হয় না।
মনে হয় বক্ষ পিঞ্জিরায় কেউ ধারালো ছু’রি ঢুকিয়ে দিয়েছে। ভেতরটা যেনো তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। সে অস্থির হয়ে বললো,

‘আরে কি হয়েছে নুরি? কাঁদিস কেন? কেউ বকেছে? কার এতো সাহস এই বাড়িতে যে তোকে বকে? আম্মা, আম্মা, ও দাদি, আব্বা, কই আপনারা? আমার বইনেরে কি বলছেন আপনেরা? সে কাঁন্দে ক্যা?’

‘আহা, দাদু ভাই, বাড়ির কেউ বকেনি। থামো তুমি!’ নুরিশা মাথা নেড়ে বললো।

‘তাহলে কাঁদিস কেন? তুই জানিস না ভাইয়া তোর চোখের পানি সহ্য করতে পারি না!’

‘একটা ধেড়ে দামড়া, গন্ডার মার্কা লোক, আমাকে রোজ বিরক্ত করে। সেজন্য কাঁদছি! স্কুলে যাওয়ার সময়, আবার স্কুলে থেকে আসার সময়। কোচিং-এ যাওয়ার সময় আবার আসার সময়। রোজ এমন করে বদমাশ টা! কেউ যদি রোজ আমার সঙ্গে এমন করে তো কাঁদবো না কি করবো?’

রেহানের চোয়াল শক্ত হলো। সে রেগে দাঁত খিঁচিয়ে বললো,’আমাদের এলাকার কেউ?’

‘হ্যাঁ!’

রেহান নুরিশার কথায় আশ্চর্য হলো। যে এলাকায় তাজফি ভাইয়ের মতো মানুষ আছে সেখানে তার বোনকে কে ডিস্টার্ব করছে রোজ? এমন তো হওয়ার কথা নয়৷

‘তুই তাকে চিনিস? নাম কি ওর?’

‘তাজফি নাম। হ্যাঁ তাজফি নামের ঐ বদের হাড্ডিটা আমাকে রাস্তা ঘাটে বিরক্ত করে।’

কিয়ৎক্ষণ চুপ থেকে হো হো করে হেসে উঠলো রেহান। বোনের মাথায় গাট্টা মে’রে বললো, ‘ধুর বোকা মেয়ে, তাজফি ভাই তোকে বিরক্ত কেন করবে? সে কি ওমন মানুষ নাকি? ভুলভাল বকিস না!’

‘তাজফি ভাই আমাকে বিরক্ত করে, রোজ রাস্তা ঘাটে সবার সামনে হরলিকস্ কিনে দেই, আবার যেখানে দেখে সেখানেই বালিকা, বালিকা বলে ছুটে আসে। আমি বুঝি না, আমি যেখানেই যাই সেখানেই কেন সে উপস্থিত থাকে?’

‘আরে বোন, তাজফি ভাই তো ভালো মানুষ। ওরে এতো ভয় পাওনের কিছু নাই। সেই যদি আমার এই চাঁদের মতো বোনরে আমার কাছে চাই তাও আমি চোখ বন্ধ কইরা দিয়া দিমু।’

‘দাদু ভাই, তুমিও আমারে সঙ্গ দিলা না? তোমার ঐ রাজনীতির জন্য আমাকেও দিয়ে দিবে? কেমন ভাই তুমি? আমাকে সে রোজ ডিস্টার্ব করে।’

‘ডিস্টার্ব কোথায় করে? বরং তুই যে শান্তিতে চলাফেরা করতে পারিস এটা একমাত্র তাজফি ভাইয়ের জন্য। তাজফি ভাইয়ের জন্য তোর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকানোর সাহস করে না৷ সে তোকে প্রটেকশন দেই। যখন যেখানে তোর সমস্যা তাজফি ভাই হাজির হয়। নিশ্চিত কোনো না কোনো ভাবে তোকে সাহায্য করতেই তাজফি ভাই সেখানে উপস্থিত থাকে। আর তোকে রোজ একটা হরলিকস্ এর বোতল কিনে দেই বলেই সে তোকে ডিস্টার্ব করে? এর মধ্যে তো আমি ডিস্টার্বের কিছু দেখছি না। তার তোর জন্য করা সকল কিছুর জন্য তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত নুরি!’

‘এহন বোঝছস, সে কি জন্য কাঁনতেছে? ভাই বোনেতে মিলে আমাদের হাড় মাংস ভেজে খাস না আর। এবারে ক্ষ্যামা দে তোরা। বোনকে আরও মাথায় তুলে রাখ।’ রিক্তা বেগম রান্না ঘর থেকে বললেন।

‘আমার কি দশ বারোটা বোন? মাথায় তুলে রাখবো না তো মাটিতে ফেলে রাখবো? তোমরা আমি বাঁইচা থাকতে কেউ আমার বোনকে কিছু বলতে পারবা না। ও আম্মা, দেও আমারে চারটে ভাত দেও খাইয়া কামে যামু!’

‘হো বেকার মানষের ম্যালা কাম!’

‘আম্মা, আমারে সব সময় বেকার কইবেন না তো। শরম করে। আমি রাজনীতি করমু। রাজনীতি তো খারাপ না৷’

‘হো, রাজা মশাই আসেন, চারটে গিলে আমাকে উদ্ধার করেন।’

আছিয়া বেগম লাঠিতে ভর দিয়ে বাইরে এলেন। সাদা নীল পাড়ের শাড়ী পড়েছেন তিনি। শাড়ীর কয়েক জায়গায় পানের পিক পড়াই লাল, ফোঁটা ফোঁটা দাগ দেখা যাচ্ছে। পানের খিলি দিয়ে যে কটা দাঁত আছে সেই দাঁত গুলো খোঁচাতে খোঁচাতে বললেন,

‘বউ, খাওন চাইলেই আমার নাতীরে ঐভাবে কইবা না৷ কামাই তুমি করো না, আমার পোলায় করে৷ হের বাপে করে৷ আমাগোর কম নাই যে তুমি তারে কামে পাডানির লাইগা কথা কইবা।’

‘আম্মা, সে বিগড়ে যাচ্ছে। আপনি আর লাই দিবেন না।’

নুরিশা খিলখিল করে হাসলো। রিক্তা তার মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলেন। সে লাল টকটকে একটা ফ্রোক পড়েছে। হাটু অব্দি ঢাকা সেই ফ্রোকে তার ন’গ্ন পা। কি যে সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। এই মেয়েটাকে নিয়ে তাদের যত ভয়। মেয়েটা এতো সুন্দর না হলেও পারতো। সুন্দর হয়েছে বলেই বুঝি এতো ভয় তার? নিজের ই নজর লেগে যাচ্ছে। তিনি চোখ ফিরিয়ে নিলেন। এতক্ষণে বাড়ির মেয়ের হাসি দেখে স্বস্তি পেলো সবাই। উফফ, বাড়ি যেনো অন্ধকার লাগছিলো একবারে।

‘দাদু ভাই, আমার তোমার কথা দারুণ লাগে। কি সুন্দর করে কথা বলো মাঝে মধ্যে!’

‘তোর ভাল্লাগে? তাইলে আমি প্রতি দিনই কমু!’

‘আচ্ছা দাদু ভাই!’

সবার মাথা থেকে যেনো ভারী কিছু নেমে গেলো। বাচ্চা মেয়েটার যতোই রাগ হোক, ভেতরটা যে একদম কোমল তা সবাই জানে। এখনি মেয়েটা গরীব দুঃখীদের জন্য কতটা ভাবে। এইতো সেদিন, ভাত রান্না করা নেই অল্প কিছু টা খাবার আছে বাকি গুলো শেষ হয়ে গেছে। স্কুল থেকে এসেই খেতে বসেছে। সেদিন রিক্তার শরীর টা খারাপ ছিলো বিধায় উঠে কাজ করতে পারেন নি। কাজের মেয়েটাও আসেনি। ঘরে রান্না করা আছে অল্প কিছু খাবার। মেয়েটা সবে মুখে একটু ভাত দিবে তখনই এক ভিক্ষুকের আগমণ। একেবারে বাড়ির ভেতরে চলে এসেছে দরজা খোলা পেয়ে৷ আছিয়া খাতুন বকাবকি করতে যাবেন ভিক্ষুককে তখনই ভিক্ষুক মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন বাড়ির দরজায়। নুরিশা ছুটে গেলো। অস্থির হয়ে কাঁন্না জুড়ে দিলো তখনি। চেনে না, জানে না তার জন্য মেয়ে বুক কেঁদে ভাসাচ্ছে? ছুটে গিয়ে পানি নিয়ে এলো সে। তাড়াহুরো করে জ্ঞান ফেরালো বৃদ্ধর চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে। ভিক্ষুক চোখ খুললে নুরিশা বললো,

‘আপনার কি হয়েছে দাদু? আপনার কি বেশি শরীর খারাপ?’

ভিক্ষুক কোনো রকমে জবাব দিলেন,’ আমি অনাহারে রয়েছি দুই রাত্রী হতে চললো। তাই শরীর টা খারাপ করেছে। ঘরে খাবার কিছু ছিলো না, খালি ভাত খেতে পারি না৷ চাল আছে, চাল ফুটিয়ে যে কেউ রেঁধে দেবে তেমন কেউ-ই নেই। তাই শরীর টা দূর্বল হয়ে গেছে!’

বৃদ্ধর কথা শুনে মেয়ের ঝরঝর করে কাঁদছে। নুরিশার কাঁন্না দেখে হতবিহ্বল সবাই। সে দ্রুত নিজের বেড়ে রাখা খাবার এনে বৃদ্ধ ভিক্ষুককে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে লাগলো। খাওয়াতে খাওয়াতে বললো,

‘শোনেন দাদু, আপনার যখনই খিদে পাবে আমাদের বাড়িতে চলে আসবেন। আমি নিজে যদি নাও থাকি আমার পরিবারের লোকজন থাকবে। তাদের বলবেন আপনাকে খাবার দেবে।’

ভিক্ষুক যেনো ভাবতেই পারেনি কেউ তার জন্য এভাবে কাঁদবে, তার যত্ন নিবে। তিনি অবাক হয়ে শুধু নুরিশাকে দেখছিলো। আজ তার নাত্নী থাকলে বোধহয় এমনই বয়সের হতো?

‘তুমি বড় ভালো মেয়ে, কতদিন আমাকে এতো আদর করে খাইয়ে দেইনি। আমার এতো নোংরা জামা কাপড় দেখে তো কেউ কাছেই আসতে চাইনি৷’

‘কি যে বলেন দাদু, নোংরা কাপড় কোথায় এটা তো পুরনো কাপড়৷ আমি আপনাকে নতুন কাপড় দিবো। আপনি বসুন।’

মেয়েটা ছুটে গিয়ে বাবার নতুন কয়েক সেট কাপড় এনে ভিক্ষুককে দিয়ে দিলো অনায়াসে। উঠোনে বসিয়ে বালতি ভর্তি পানি নিয়ে এলো। বৃদ্ধ মানুষটি যেনো একের পর এক কান্ডে অবাক হয়ে যাচ্ছিলো। নুরিশা বৃদ্ধকে গোসল করিয়ে দিলো নিজে হাতে। বৃদ্ধ নিজেই গা মুছতে চাইলো কিন্তু নুরিশা আগ্রহ নিয়ে নিজেই করলো। ভেজা কাপড় চোপড় বৃদ্ধ নিজেই বদলালো।

‘দাদু, শরীর টা এখন ঝরঝরে লাগছে তো?’

বৃদ্ধ হাউমাউ করে কেঁদে নুরিশাকে বুকে আগলে নিলেন। স্নেহের হাত মাথায় বুলিয়ে দিলেন। আরও কতক্ষণ বিশ্রামের পর চলে গেলেন তিনি। যতক্ষণ ছিলেন নুরিশা গল্প করছিলো বৃদ্ধর সঙ্গে।

আছিয়া খাতুন এবং রিক্তা মেয়ের এমন কাজে খুশি হোন। মেয়েটার এতো দয়ার শরীর কবে থেকে হলো? বউ শাশুড়ী দুজনের চোখেই পানি চিকচিক করছে। উনারা শুধু দেখতে চাইছিলেন নুরিশা কি করে!

নুরিশা সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে বাবার কাছে গেলো। মতিউর রহমান চা খাচ্ছেন আর খবরের কাগজ উল্টাচ্ছেন। ভাব এমন যেনো তিনি কাগজের একটা অক্ষরও পড়া বাদ রাখছেন না৷ অথচ তিনি খবরের কাগজের কিছু ছবি ছাড়া আর কিছুই দেখছেন না৷

‘আব্বা, আমাকে টাকা দেন!’

‘কত টাকা? কাল-ই তো তোমাকে এক সপ্তাহের টাকা দিয়েছিলাম!’

‘ওগুলো শেষ, আজকে আবার লাগবে!’

‘কত লাগবে?’

‘দেন এক হাজার।’

‘তুমি বাচ্চা মেয়ে, এতো টাকা দিয়ে কি করবে?’

‘দরকার ছাড়া চাইছি না আব্বা। আপনি কি টাকা দেবেন? আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে!’

‘আহা দিচ্ছি। রাগ করো না।’

‘আব্বা, আপনার যে ওষুধ শেষ হয়ে গেছে সে খেয়াল আছে? তা থাকবে কেন! আপনি তো বেঁচে যান ওষুধ না খেতে পারলে। আর আপনি বিরিয়ানির দোকানে রোজ যান৷ ওখান থেকে মিষ্টি খান লুকিয়ে লুকিয়ে। আমি কি আম্মাকে বলবো? আজকের পর যদি আপনি আর কোনো মিষ্টি খান দেখবেন কি হয়!’

মতিউর রহমান মেয়ের জোরে আওয়াজে কথা বলতে দেখে অবাক হলেন। যেনো তিনি একটা ছয় বছরের বাচ্চা, আর ইনি তার মা। মা হয়ে ছেলেকে বকাবকি করছেন এভাবে। আর তিনি যে বিরিয়ানির দোকানে গিয়ে রোজ মিষ্টি খান এটাই বা কিভাবে জানলো? আশ্চর্য, এটুকু মেয়ের এতো সব দিকে কেনো খেয়াল থাকবে? সবে ক্লাস এইটের ছাত্রী। তিনি সুরসুর করে মানি ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিলেন। নুরিশা চুপচাপ বেরিয়ে দাদির কাছে গেলো।

‘দাদি, ও দাদি।’

‘কি হইলো নুরি? ভিতরে আসো।’

‘আমার টাকা লাগবো দাদি!’

‘কই ট্যাকা?’

‘পাঁচশো দাও!’

‘কাল-ই যে টাকা দিলাম, আজ আবার?’

‘তুমি কি টাকা দিবা? নাকি চলে যাবো?’

‘দিতাছি এতো রাগ করো ক্যান?’

আছিয়া খাতুন নিজের কোমড়ের কাছে ছোট্ট ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিলেন।

‘শোনো নুরি, যাওয়ার সময় পথে যদি আমার কালাচাঁদকে দেখো তয় তারে কইয়ো আমার লগে যেনো দেখা করে আজই।’

‘পারবো না।’

‘মনে কইরা কইয়ো!’

নুরিশা চলে এলো। হিসেব করে দেখলো আরও এক হাজার, পাঁচশো টাকা বাকি। তিন হাজার লাগবে। মায়ের কাছ থেকে নিতে হবে। সে তার মায়ের কাছ থেকেও টাকা নিলো। বাড়ির সবার থেকে বিদায় নিয়ে স্কুলের যাওয়ার জন্য বেরিয়ে গেলো।

যাওয়ার সময় রোজকার মতোই পথে দেখা হলো তাজফির সঙ্গে। নুরিশা মুখ ফুলিয়ে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছে। সে জানে এখনি লোকটা আসবে আর বলবে,’বালিকা, স্কুলে যাচ্ছো? আমি রিকশা ঠিক করে দিচ্ছি, রিকশা করে যাও! আর রাস্তা ঘাটে কেউ কিছু বললে আমাকে জানাবা!’

নুরিশা যা ভাবছিলো তাই হলো। তাজফি এরকম ধরনের কথায় বললো। নুরিশা ক্ষিপ্ত হয়ে বললো,

‘আপনি রোজ এই একই কথা বলেন, জানেন তো আমি স্কুলে যায় এই সময়ে। রোজ একটা করে হরলিকস্ কিনে দেন, এটা কি কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ করতে পারে? আপনি টাকা কোথায় পান? আপনি তো মনে হয় না কোনো কাজ করেন। বেকার মানুষ। ভবঘুরের মতো ঘুরেন, ফিরেন, খান -দান, আড্ডা দেন। আজকে আমি জানতে চাই কেন এমন করেন আপনি!’

‘কিছু না, কোনো কারণ নেই। যাও স্কুলে যাও। আমি রিকশা ঠিক করে দিচ্ছি।’

‘আমি নিজেই পারবো।’

‘আচ্ছা! যদি কেউ কাচাল করে আমাকে জানাই দিবা কিন্তু। ওকে এঁফোড় ওঁফোড় করে দিবো। সাবধানে যাইয়ো বালিকা!’

‘এতো বলতে হবে না। ভাইকে বলবেন আব্বার ওষুধ শেষ,সে যেনো নিয়ে যায়। আর দাদি আপনাকে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন সন্ধ্যায়!’

নুরিশা ধুপধুপ আওয়াজ তুলে সামনে এগিয়ে গেলো। তাজফি হা করে তাকিয়ে রইলো নুরিশার যাওয়ার পানে। ব্যাগে কি? তাজফির আগ্রহ হলো। কিন্তু সে আর নুরিশার সামনে গেলো না।মেয়েটাকে আজ অনেক বড় বড় লাগছিলো।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে