Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"সে প্রেমিক নয়সে প্রেমিক নয় পর্ব-৪০+৪১

সে প্রেমিক নয় পর্ব-৪০+৪১

#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ৪০

রাত দশটা। জুম করে বৃষ্টি পরছে বাহিরে। ঝড়োয়া হাওয়া তো রয়েছেই। কিছুক্ষন পর পরই আকাশ চমকে বজ্রপাত হচ্ছে। গাড়িতে বসে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে ইরান। তার পাশেই তাজীব ল্যাপটপের সাহায্যে কিছু করছে। রাকিয়াকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আনাবিয়ার খোঁজে বের হয়েছে তারা। ইরানের সন্দেহ আনাবিয়াকে ইসরাফই কিডন্যাপ করেছে। আনাবিয়া বেকুব নয় যে পালিয়ে যাবে! এখন ইসরাফের নাম্বার ট্র্যাক করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু সিম বন্ধ দেখায়। পরে ইরান ইসরাফের ফ্রেন্ড সুবহার থেকে ইসরাফের পার্সোনাল নাম্বার সংগ্রহ করে। এখন সেটা ট্র্যাক করে ইসরাফের লোকেশনে যাচ্ছে ইরান। ইসরাফকে চাইলে সে অনেক আগেই মেরে ফেলতে পারত। কিন্তু এক জায়গায় আটকে আছে সে। মাকে ওয়াদা দিয়েছিল ইরান ইসরাফের কোনোরকম ক্ষতি সে করবে না। ইসরাফ আপন ছেলে না হলেও রাকিয়ার কাছে ইসরাফ তারই রক্ত। ইসরাফ ইরানকে একসমান ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছে সে। মা কষ্ট পাবে, কাঁন্না করবে এই ভয়েই ইরান ইসরাফকে মারতে চায় না।

-স্যার,

-বলো তাজীব?

-স্যার লোকেশন তো শুধু সামনেই এগিয়ে চলছে!

-এখানে সবচেয়ে সামনের জায়গার নাম কী তাজীব?

-স্যার আর দুই ঘন্টা জার্নি করলে রাঙামাটি পৌঁছে যাবো। আমার মনে হয় ইসরাফ স্যার ম্যামকে সেখানেই নিয়ে যাচ্ছে।

-রাঙামাটিতে তো ইসরাফের ফ্রেন্ডের একটা হোটেল আছে। তবে কী সেখানেই যাচ্ছে?

-হতে পারে স্যার।

-তোমার ম্যামের নাম্বারে ট্র্যাক করা যাচ্ছে না?

-না স্যার নাম্বার বন্ধ।

-আমি চিন্তায় পাগল হয়ে যাবো তাজীব! তোমার ম্যাম সেই দুপুরে খেয়েছিল এখন পর্যন্ত না খাওয়া সে! আবার অসুস্থ না হয়ে পরে।। তার কিছু হলে আমার কী হবে!

-ধয্য রাখুন স্যার। ম্যামের কিছু হবে না।

_________________🌸

ইরানের ধারণা ঠিক আনাবিয়াকে ইসরাফই কিডন্যাপ করেছে। ইসরাফ জানে ইরান তাকে পেলে জিন্দা মাটিতে ঘেঁরে ফেলবে তবুও মনে একটুও ভয় নেই ইসরাফের। একরাত আনাবিয়ার সাথে কাটাতে পারলেই হলো। তারপর একজন রে*পিস্ট মেয়েকে কে নিজের স্ত্রী বলে পরিচয় দেবে? অবশ্য ইরানও আনাবিয়াকে তখন ঘৃণা করবে এবং ছেড়ে দেবে। একটা হোটেলের সামনে গাড়ি থামায় ইসরাফ। এই হোটেলের ওনার তার অতি পরিচিত। এখানে অনেকবার এসেছে ইসরাফ। গাড়ির পিছনের সিট্ খুলে অজ্ঞান আনাবিয়াকে নিজের কোলে তুলে নেয়। দ্রুত পায়ে হোটেলের ভিতরে চলে যায়।
এখানে আগের থেকেই তার দুইজন বন্ধু উপস্থিত ছিল। রুম বুক করে রেখেছে তারা। ইসরাফ আনাবিয়াকে একটি রুমে নিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে দেয়। ইসরাফের বন্ধু নোমান আর সাফি আনাবিয়াকে দেখে শয়তানি হাসি দিয়ে বলে,

-বন্ধু মা*ল তো সেই আমাদেরও একটু ভাগ দিস। (নোমান)

-হো আমি নিউজ চ্যালেনে দেখেছিলাম এই মেয়েটাকে তোর ভাইয়ের সাথে। মেয়ের সৌন্দর্য দেখে সেদিনই পাগল হয়ে গিয়েছিলাম আমি। (সাফি)

-কিন্তু আমি তো ওকে ভালোবাসি! তোদের ভাগ দেওয়া যাবে না। (ইসরাফ)

-এই তোর ফ্রেন্ডশিপ? বেস্টফ্রেইন্ড বেস্টফ্রেইন্ড বলিস আর এভাবে ফ্রেন্ডশিপ পালন করবি?(নোমান)

-আচ্ছা যা তোরাও ভাগ পাবি বাট শুধু একবার। (ইসরাফ)

-আচ্ছা আচ্ছা চলবো। (সাফি)

মুখে বাতি চকচকে আলো পরতেই নিজের হুশে ফিরে আসে আনাবিয়া। কয়েকজন ছেলের কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়ে সম্পূর্ণ চোখ খোলে না সে। পিটপিট তাকিয়ে সবটা পরোক্ষ করে নেয়। তার মানে তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে তাও তার চরিত্রে দাগ লাগানোর জন্য। আনাবিয়া মনে মনে ভাবতে থাকে নিজেকে কিভাবে রক্ষা করবে এই শয়তানগুলো হাত থেকে। ওরা তিনজন অন্যদিকে ফিরে নিজেদের মতো কথা বলছে এই সুযোগে আনাবিয়া চেষ্টা করে মাথার একটা ক্লিপ খোলার। দুইবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অতঃপর তৃতীয়বারে সফল হয় সে। হাতের মুঠোয় পুরে নেয় ক্লিপটা।

কথা শেষ হলে ইসরাফ এগিয়ে আসে আনাবিয়ার কাছে। এক গ্লাস পানি ঢেলে দেয় আনাবিয়ার মুখে। ধরফড়িয়ে উঠে বসে আনাবিয়া। হাত দিয়ে মুখের পানি সরিয়ে সামনে তাকায়। ইসরাফকে দেখে বলে,

-আমি কোথায়? আপনিই আমাকে কিডন্যাপ করেছেন?

ইসরাফ বাঁকা হাসে। আনাবিয়াকে ঘুঁটিয়ে ঘুঁটিয়ে দেখতে দেখতে বলে,

-আমি ছাড়া আর কারো সাহস আছে তোমাকে কিডন্যাপ করার!

-কেনো কিডন্যাপ করেছে আমাকে? কী চাই আপনার?

-এক্সজেকলি আমার তোমাকে চাই। বেশি কিছু না একরাত আমার সাথে কাটাও।

আনাবিয়া ঘৃনীত চোখে ইসরাফের দিকে তাকায়। এক দলা থু থু ছুঁড়ে মারে ইসরাফের মুখে। রাগী কণ্ঠে উঁচু স্বরে বলে,

-তোর মতো কুত্তার সঙ্গে আমি তো কী আমার জুতাও রাত কাটাতে চাইবে না!

ইসরাফ মুখ পরিষ্কার করে ঠাটিয়ে চড় বসিয়ে দেয় আনাবিয়ার গালে। গাল লাল হয়ে যায় কিন্তু আনাবিয়ার মধ্যে ব্যাথার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। রাগে জ্বলজ্বল করছে তার আঁখিজোড়া। নোমান ভয় পেয়ে যায় আনাবিয়ার রূপ দেখে। ইসরাফ চিৎকার করে বলে,

-মুখ কম চালাবি। বিদেশে না জানে আরো কত নষ্টামী করেছে এখন আমাদের সামনে ভালো সাজে! তোর এই রূপ, যৌ*বন সব শেষ করে দিবো আজ।

আনাবিয়ার মনে হলো ইসরাফ কোনো জোকস বলছে। একা একাই হাসতে হাসতে বলে,

-তোর কী মরার ভয় নেই? আমার হাসব্যান্ড তোকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলবে শয়তান।

-আগে তোকে নষ্ট করব তারপর তোর হাসব্যান্ড যা মন চায় তাই করুক কোনো সমস্যা নেই।

ইসরাফ আনাবিয়ার পাশে বসে লোলুপ দৃষ্টিতে আনাবিয়ার সমস্ত শরীর দেখতে থাকে। কিড়মিরে উঠে আনাবিয়া। পর পুরুষের এইরকম চাহনি বিষের থেকেও বেশি বিষাক্ত লাগছে তার।

-আমার সামনে আসবি না ইসরাফ। দূরে সরে যা আমার থেকে শয়তান।

-দূরে সরলে কিভাবে হবে!

ইসরাফ আনাবিয়ার কাঁধে শাড়ীর আঁচলে হাত দিতে যাবে তার আগেই আনাবিয়া সেই ক্লিপ দিয়ে ইসরাফের চোখে খোঁচা মারে। চোখ ধরে উঠে দাঁড়ায় ইসরাফ। জ্বালাতন করতে থাকে তার এক চোখ। ব্যাথায় চেঁচাতে থাকে ইসরাফ। নোমান ইসরাফের চোখে পানি দিতে থাকে। এই সুযোগে আনাবিয়া শাড়ী ঠিক করে উঠে দাঁড়ায়। দৌড়ে দরজা খুলতে নেবে তখনই সাফি তার একহাত চেপে ধরে। আনাবিয়া সাফি থেকে ছোটার আপ্রাণ চেষ্টা করে। সাফি আনাবিয়ার পেট নিজে হাত ধারা খামচে ধরে। শরীরে অন্য পুরুষের ছোঁয়ায় নিজের প্রতি নিজেরই ঘৃণা হয় আনাবিয়ার। পিছনে থেকে সাফির পায়ে লাত্থি দিয়ে সরিয়ে দেয় তাকে। এতক্ষনে ইসরাফের চোখ ঠিক হয়েছে। রেগে আনাবিয়ার হাত ধরতে নেয়। কিন্তু আনাবিয়া কায়দা করে দূরে সরে যায়।
ইসরাফ এবার রেগে অগ্নিমূর্তি হয়ে আনাবিয়ার শাড়ীর আঁচল নিজের হাতে পেঁচিয়ে নেয়। আনাবিয়া এখন আর নড়াচড়া করতে পারে না। ইসরাফের ও তার বন্ধুদের মুখে নিকৃষ্ট হাসি। আনাবিয়া মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। ইসরাফ বড় একটি হাসি দিয়ে বলে,

-এবার তোকে কে বাঁচাবে? কই আসলো না তোর ইরান?

পুনরায় একসাথে হাসতে থাকে তিনজন। আনাবিয়া তবুও নরম হয় না। বাঘিনীর মতো চিৎকার করে বলে,

-আমার শাড়ী ছাড় জা*নো*য়ারের বাচ্চা। যদি একটুও মরার ভয় থাকে ছেড়ে দে আমাকে।

-কে মারবে আমাদের? তোর ইরান? সে তো জানেই না আমরা কোথায়! (নোমান)

নোমানের কথায় অট্টহাসিতে ফেটে পরে সবাই। ইসরাফ বাঁকা হেসে আনাবিয়ার শাড়ীর আঁচল ধরে টান দেয় নিজের সর্বশক্তি দিয়ে। সাথে সাথেই বক্ষ থেকে সরে যায় আঁচল। শাড়ীর অর্ধেকের বেশি অংশ ইসরাফের হাতে চলে যায়। সাফি হাসতে হাসতে বলে,

-বা রে ইসরাফ! তোর ভাই তো ভালোই খা*সা মা*ল পেয়েছিল রে! আমাদের কপালেই এইরকম জোটে না!

-আসলেই। এইরকম নারী আমার হলে আর কোনোদিন অন্য নারীর দিকে চোখ তুলে তাকাতাম না ভাই!(নোমান)

-এতটুকেই এতো কমপ্লিমেন্ট! আরেকটু ওয়েট করে দোস্ত সামনে আরো মজা!(ইসরাফ)

আনাবিয়া শাড়ীর শেষের অংশটুকু শক্ত করে ধরে রেখেছিল। ইসরাফ টান দিতেই আনাবিয়াও শাড়ীর সাথে ইসরাফের স্মুখীন চলে যায়। ভেজা ভেজা চোখে আনাবিয়া ইসরাফের দিকে তাকায়। ফর্সা মেয়েদের লাল চোখে আসলেই ভয়ংকর দেখায়! ইসরাফ আনাবিয়ার গালে ছুঁতে যাবে তার আগেই আনাবিয়া ইসরাফের গালে থাপ্পড় দেয়। নরম হাতের থাপ্পড়ে কিছুই হয় না ইসরাফের। আনাবিয়ার অতি নিকটে যেতে নেবে তখন পুনরায় আনাবিয়া ইসরাফকে থাপ্পড় দিয়ে থু থু ছুঁড়ে মারে।
ইসরাফের ধয্যর সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে আনাবিয়া। রাগ মাথায় উঠে যায় ইসরাফের। আনাবিয়াকে ধাক্কা দিয়ে দূরে ছুঁড়ে ফেলে ইসরাফ। কমজোর হয়ে পরেছিল আনাবিয়া। এতো জোরে ধাক্কা খেয়ে তাল সামলাতে পারে না। তার পিছনে কাঠের দরজা ছিল তাহলে স্বাভাবিক সেটার সাথেই বারি খাবে আনাবিয়া। ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে সে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে দরজার সাথে বারি খায় না আনাবিয়া। নিজেকে কারো বাহুডোরে অনুভব করে সে। চোখ খুলে হাতের অধিকারী ব্যক্তিতে দেখতে চায় আনাবিয়া। কিন্তু সেটা আর হয় না। ভয়ে ও দুর্বল হওয়ার কারণে জ্ঞান হারায় আনাবিয়া।

__________________🌸

সারারাত অঝোরে বৃষ্টি হয়ে সকালে উজ্জ্বল রোদের দেখা মিলেছে। গাছের পাতায় বিন্দু বিন্দু পানির কণা জমে আছে। মানুষজন ব্যস্ত হয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে। হসপিটালে তিনতালার বাড়িন্দায় দাঁড়িয়ে জালানা দিয়ে সবটা দেখছে ইরান। মানুষ কতই না বিচিত্র! এইযে রিকশা চালক একটু পেয়েই হাসি মুখে বাড়ি ফেরে। অথচ বড় বড় ব্যবসায়ী এতো শত কামিয়েও তাঁদের মন ভরে না। যত পায় ততই চায়! ইরানের মতে গরিব মানুষরাই ভালো। তাঁদের শত শত টাকা পয়সা না থাকলেও মানুষত্ববোধ আছে। অন্যকে সম্মান করতে জানে তারা। আর ধনীদের তো অহংকারে মাটিতে পা-ই পরে না।

-মিস্টার ইরান আপনার পেশেন্টের জ্ঞান ফিরেছে।

নার্সের কণ্ঠস্বর শুনতেই বাহির থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ফেলে ইরান। হালকা হেসে নার্সকে বলে,

-জি। ধন্যবাদ।

ক্যাবিন রুমে প্রবেশ করতেই ইরানের নজর পরে ধবধবে সাদা হসপিটাল বেডে শুয়িত আনাবিয়ার ওপর। ইরান মৃদু পায়ে এগিয়ে যেয়ে একটি চেয়ার নিয়ে পাশেই বসে। পেটের ওপরে রাখা আনাবিয়ার হাত ধরতেই চোখ খুলে আনাবিয়া। ইরানকে দেখে নজর সরিয়ে ফেলে। ইরান কী বলে কথা শুরু করবে বুঝতে পারছে না। ধীরে ধীরে আনাবিয়ার কাঠিন্য মুখশ্রী নরম হয়ে যায়। চোখ দিয়ে এক ফোটা দু ফোটা করে পানি গড়িয়ে পরতে থাকে। অথচ ঠোঁটে তার হাসি। স্মিত হেসে মৃদু কণ্ঠে বলে,

-জীবনে অনেক বড় গুনাহ করেছিলাম আমি। তাই সৃষ্টিকর্তা আমাকে শুধু কষ্টই দেয়!

শক্ত মনের মানুষ ইরানও আজ দুর্বল হয়ে পরেছে। আনাবিয়ার দিকে তাকানোর সাহস হচ্ছে না তার। আনাবিয়ার এতো অসহায়ত্ত্বা তাকেও অসহায় করে দিচ্ছে। আনাবিয়া করুণ স্বরে বলে,

-আমি বুঝি না আমার সকল প্রিয় মানুষই আমার থেকে দূরে কেনো চলে যায়! কেনো আমি সারাজীবনের জন্য কাউকে পাই না! কেনো?

>>>>চলবে।

#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ৪১

নীরবতা বিরাজ করেছে দুইজনের মধ্যে। আনাবিয়া চোখ বন্ধ করে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে। ইরানও চুপচাপ। আনাবিয়া ইরানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। নিজ পেটে হাত দিয়ে শান্ত স্বরে বলে,

-আমার বেবি ঠিক আছে?

-হ্যাঁ। আল্লাহর রহমতে সুস্থ আছে সে।

স্বস্তির নিঃশাস ছাড়ে আনাবিয়া। হটাৎ করেই তার মুখের ভঙ্গিমা পরিবর্তন হয়ে যায়। চোখের পানি মুছে রুক্ষ কণ্ঠে ইরানকে বলে,

-আমাকে তো আপনি ভালোবাসেন তাই না?

ইরান হ্যাঁ বোধক মাথা নারায়। আনাবিয়া ইরানের দিকে তাকিয়ে বলে,

-তো আমি চাই আমার সামনে আপনি আপনার ভাইকে ভয়ংকর মৃত্যুদন্ড দিবেন। দিবেন তো?

ইরান মাথা নিচু করে ফেলে। আনাবিয়া হতাশ হয়ে ইরানের দিকে তাকিয়ে থাকে। বিচলিত কণ্ঠে বলে,

-দিবেন তো ইরান?

ইরান পুনরায় আনাবিয়ার হাত চেপে ধরে। রাগের কারণে কাঁপতে থাকে তার হাত। দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বলে,

-ওকে এমন শাস্তি দেবো তোমার রূহও কেঁপে উঠবে ভয়ে। আমার স্ত্রীর গায়ে হাত দেওয়ার পরিনাম ও ভুগবে।

-আপনি কিভাবে জানলেন ও আমাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল?

-সব কথা এখানে বলা যাবে না। এখন বাসায় চলে তারপর ধীরেসুস্থে বলছি।

-হ্যাঁ।

একজন নার্স এসে আনাবিয়ার হাতের ড্রিপ খুলে দেয়। উঠে বসে আনাবিয়া। নিচে পা রাখতেই আচমকা পরে যেতে নেয় সে। ইরান আনাবিয়ার দু কাঁধ ধরে গম্ভীর হয়ে বলে,

-নিজেকে এতো শক্তিশালী ভাবা বন্ধ করুন। মাঝে মাঝে অন্যের সাহায্যও নিয়ে নেন।

-আনাবিয়া একাই একশো।

-সেটা আমিও জানি। আফটার অল তন্নী ফারুকের মেয়ে দুর্বল হবে না।

-তবুও তো কাল রাতে দুর্বল হয়ে পরেছিলাম!

কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে কথাটা বলে আনাবিয়া। মুখে অন্ধকার নেমে আসে তার। ইরান আনাবিয়ার সামনের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বলে,

-জাস্ট বেড ড্রিম ভেবে ভুলে যাও।

-সব কিছু ভোলা যায় না ইরান। আপনার আর আপনার পরিবারের দেওয়া আঘাতের কথা চাইলেও ভুলতে পারব না আমি।

___________________

বাসায় এসে মাত্রই বিছানায় বসেছে আনাবিয়া। রাকিয়া আগের থেকেই বাসায় উপস্থিত ছিল। আনাবিয়ার চিন্তায় ঐ বাসায় আর থাকতে পারেনি সে। ইরানকে বার বার জিজ্ঞেস করছে আনাবিয়াকে কে কিডন্যাপ করেছিল। ইরান কোনো উত্তর দেয়নি। ইসরাফের কথা বলতে চাচ্ছে না ইরান রাকিয়াকে। রাকিয়া আনাবিয়াকে স্যুপ খাইয়ে দিচ্ছে এই এটা সেটা জিজ্ঞেস করছে।

-ইরান ডাক্তার কী বললো? বাচ্চা ঠিক আছে?

-হ্যাঁ আম্মা ঠিক আছে।

-কয়মাস চলছে?

ইরান আনাবিয়ার দিকে তাকায়। চোরা চোখে নজর সরিয়ে ফেলে আনাবিয়া। ইরান কপালে হাত দিয়ে বলে,

-রিপোর্ট অনুযায়ী দুইমাসে পরবে সামনে।

-এই সময়টা নিজের অনেক যত্ন নিতে হয় মা। নয়মাস বেশি বেশি করে খেলে বাচ্চা সুস্বাস্থ্য হয়।

-জি মম।

-তোমরা বসো আমি আনাবিয়ার জন্য কিছু বানিয়ে নিয়ে আসি।

-এখনই তো স্যুপ খেলাম আর কত কিছু খাওয়াবে মম!

-কী বললাম বেশি বেশি খেতে হবে। আসছি আমি।

রাকিয়া বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। আনাবিয়ার কপালে চুমু দিয়ে চলে যায়। ইরান দরজা লাগিয়ে আনাবিয়ার পাশে বসে পরে। আনাবিয়া ইরানকে দেখে দূরে সরে বসে।

-এখন শুরু থেকে সবটা বলুন?

-ইসরাফের নাম্বার ট্র্যাক করে খুঁজেছি তোমাদের। ঐ হোটেল আমার আগের থেকেই চেনা।

-ওহ আচ্ছা! তারপর!

🌸ফ্লাসব্যাক🌸

হোটেলের সামনে আসতেই গাড়ি থামায় তাজীব। তখনও প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। ইরান ছাতা রেখে বড় বড় পা ফেলে ভিতরে ঢুকে। হোটেলের মেনেজার তাকে দেখতেই ভয়ে ঢোক গিলে।

-স্যার আপনি!

-ইসরাফ এসেছে এখানে? ইয়েস ওর নো?

-জি স্যার এসেছে।

-রুম নং?

-১৩৬।

ইরান আর কিছু না বলেই ভিতরে ঢুকে যায়। পিছনে আরো পাঁচ ছয়জন বডিগার্ড ছিল। মেনেজার তাঁদের দেখে বলে,

-রাতের বেলা এতো মানুষ নিয়ে ভিতরে যাওয়া এলাও নয় স্যার।

ইরান পিছনে ফিরে তাকায় না। তাজীব শসানোর স্বরে মেনেজারকে বলে,

-নিজের জানের ভয় থাকলে আমাদের পথে আসার চেষ্টা করবি না। বুঝা গেলো?

-জজজি স্যার।

-রুমের সিক্রেট চাবি আছে তোর কাছে? কুইকলি দে।

মেনেজার তাজীবের হাতে বন্দুক দেখে ভয়াত হয়ে পরে। কাঁপাকাঁপা হাতে চাবি এগিয়ে দেয়। ১৩৬ নং রুমে আসতেই দাঁড়িয়ে যায় ইরান। একজন বডিগার্ড বলে,

-স্যার দরজা ভাঙবো?

-দরজা ভাঙার প্রয়োজন নেই আমি চাবি নিয়ে এসেছি।

পিছন থেকে তাজীবের কথা শুনতেই বডিগার্ড দূরে সরে যায়। অস্বাভাবিক ভাবে হাত পা কাঁপছে ইরানের। তাজীব চাবির সাহায্যে দরজা খুলতেই ইরান সম্পূর্ণ দরজা উম্মুক্ত করে। যেই ভিতরে পা বাড়াবে ওমনেই আনাবিয়া ছিটকে তার ওপরে এসে পরে। কায়দা করে আনাবিয়াকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে ফেলে ইরান। অর্ধবস্ত আনাবিয়াকে দেখে রক্ত হিম হয়ে যায় ইরানের। টগবগ করতে থাকে শরীরের রগগুলো। অস্থির হয়ে কয়েকবার ডাক দেয় আনাবিয়াকে। কিন্তু ততক্ষনে জ্ঞান হারায় সে।

ইসরাফ ও তার বন্ধুরা ভয়ে সিটিয়ে যায়। ইসরাফ বন্ধুদের ফেলে জালানা দিয়ে পালিয়ে যেতে নেয় তার আগেই বডিগার্ডরা তাঁদের তিনজনকে ধরে ফেলে। তাজীব মাথা নিচু করে মেঝেতে পরে থাকা আনাবিয়ার শাড়ী এগিয়ে দেয় ইরানকে। ইরান শাড়ী দিয়ে আনাবিয়াকে পেঁচিয়ে কোলে তুলে নেয়। একবারও শ*য়তান গুলোর দিকে তাকায় না ইরান। তার সমস্ত ধেন এখন আনাবিয়ার মধ্যে। তাজীব বলে,

-স্যার আপনি ম্যামকে নিয়ে হসপিটালে চলুন আমি ওদের নিয়ে আমাদের স্টাইলে খাতিরযত্ন করি।

-হুম।

ইরান আর এক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়ায় না। আনাবিয়াকে নিয়ে বেরিয়ে পরে হসপিটালের উদ্দেশ্যে।

🌸বর্তমান🌸

শান্ত ভঙ্গিতে সবটা শুনে আনাবিয়া। ইরানও চুপচাপ বসে আছে। আনাবিয়া পাংসুটে মুখে বলে,

-সত্যি এরফান শেখের রক্ত দিয়ে এর থেকে ভালো আশা করা যায় না! সব অমানুষ সৃষ্টিকর্তা শুধু তার ঘরেই দিয়েছে! বাহ্!

আনাবিয়ার কথায় ইরানের নিজের প্রতি নিজেরই ঘৃণা হয়। পাগলদের মতো হাসতে থাকে আনাবিয়া। নিজের পেটে হাত দিয়ে বলে,

-যার বংশ খারাপ সে কী ভালো হবে? আমি কী তাহলে একটা অমানুষকেই জন্ম দেবো? তাই আমি বলি এই বাচ্চা চাই না আমার।

-কথা বুঝে শুনে বলো আনাবিয়া। আমাকে যা মন চায় বলো বাট আমাদের বেবিকে কিছু বলবে না।

আনাবিয়া বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। রাগে দুঃখে তিরতির করে শরীর কাঁপছে তার। উত্তেজনা চেঁচিয়ে বলে,

-তো কী করব আমি? একটা খারাপ অবস্থায় বেবি কখন ভালো হবে না। ওর মধ্যেও আপনার রক্তই থাকবে। সেও এইরকম ভাবেই মানুষ খুন করবে!নির্দোষ মানুষদের মেরে তাঁদের আপনজন ছিনিয়ে নেবে। না আমি এইরকমটা হতে দিবো না। আরেকটা ইরানকে জন্ম দেবো না আমি।

রাগে হাতের সামনে যা পাচ্ছে তাই ছুঁড়ে ফেলছে আনাবিয়া। ইরান রাগ সংযোগ করে আনাবিয়াকে সামলাতে নেয়। কিন্তু আনাবিয়া ইরানকে ছুঁতে দেয় না নিজেকে। একসময় আনাবিয়া বেডের সাথে পেটে বারি খায়। ব্যাথায় মৃদু কুঁকড়ে উঠে আনাবিয়া তবুও ইরানকে সামনে আসতে দেয় না। আনাবিয়ার এহেন আচরণে ক্ষেপে যায় ইরান। বড় বড় নিঃশাস নিয়ে রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে অসক্ষম হচ্ছে সে।
টেবিলের ওপরে ফল কাটার চাকু ছিল। আনাবিয়া ধপ করে সেটা হাতে নিয়ে নেয়। ইরান আনাবিয়ার হাতে চাকু দেখে জ্ঞানশূন্য হয়ে পরে। শান্ত স্বরে বলে,

-আনাবিয়া, দেখো আনাবিয়া উল্টাপাল্টা কিছু করো না। তোমার সব কথা শুনবো আমি প্লিজ কিছু করো না।

-আমি বাঁচতে চাই না।

-তোমাকে বাঁচতে হবে। ডিভোর্স চাও তো? ঠিক আছে আমার বাচ্চা আমাকে দিয়ে তুমি ডিভোর্স দিয়ে চলে যেও।

ইরান কথার জালে ফেলে এগিয়ে যায় আনাবিয়ার কাছে। আনাবিয়া প্রতিউত্তরে কিছু বলবে তার আগেই ইরান আনাবিয়াকে ধরে তার হাত থেকে চাকু নিয়ে নেয়। তারপর ছেড়ে দেয় আনাবিয়াকে। আনাবিয়া রাগে শিরশির করে বলে,

-আমি বাঁচ,,,,,,,,,,

কথা শেষ করতে পারে না আনাবিয়া। ইরান শক্তি দিয়ে থাপ্পড় মারে আনাবিয়ার গালে। তাল সামলাতে না পেরে গাল ধরে নিচে বসে পরে আনাবিয়া। আনাবিয়াকে যে হাত দিয়ে মেরেছিল সে হাত মুঠো করে ফেলে ইরান। উঁচু স্বরে চিৎকার করে বলে,

-ব্যাস অনেক বলেছো! কী মনে করো মরা অনেক সহজ? তুমি চাইলেই মরতে পারবে এটা ভাবো তুমি? বাট ইউ ফুল! মরব মরব বলা অনেক সহজ কিন্তু করা কঠিন। পেটে ঢুকিয়ে দেবে চাকু। অনেকগুলো রক্ত বের হবে, বাচ্চা মারা যাবে, নিজের ক্ষতি হবে কিন্তু তুমি মরবে না। তখন আরো বেশি কষ্ট ভোগ করবে তুমি।

দম নেয় ইরান। দেয়ালে মুঠি করা হাত বারি মারে। পর পর তিনটা বারি দিতেই হাতে বিন্দু বিন্দু রক্ত জমাট বাধে। রাকিয়া এতক্ষনে চলে আসে। দরজায় টোকা দিয়ে দরজা খুলতে বলে। ইরান আনাবিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,

-এই মরার থেকে তো ভালো তুমি পালিয়ে যাও। বাট সেটাও করলে না! কাল শুধু তোমার কথা ভেবেই আমি তোমাকে পার্টিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। কী মনে করো তুমি আমাকে? যদি তোমাকে সারাজীবনের জন্য বন্দি রাখার ইচ্ছে আমার হতো তাহলে তোমাকে আর এই রুমের বাহিরে পা রাখতে দিতাম না? অনুতপ্ততে পুড়ে যাচ্ছি আমি। তাই কাল ভেবেছিলাম তোমাকে সেখানে নিয়ে যাবো যদি তোমার মন চায় তাহলে পালিয়ে যেও। বাট না পালালে না তুমি! আর পালাবেই বা কেনো? একজন খুনির সন্তান নিয়ে কারো পালাতে মন চায়?

বিস্মিত নজরে আনাবিয়া ইরানকে দেখছে। পাগলের মতো ব্যবহার করছে ইরান। শেষে না পেরে হাঁটু ঘেরে মেঝেতে বসে পরে ইরান। চুলগুলো মুঠি করে ধরে বলে,

-আমি মানি আমি তোমার পরিবারের খুনি। তোমার কাছে আমি অপরাধী। প্লিজ আনাবিয়া তুমি আমাকে মেরে ফেলো তবুও আমার সন্তানকে মারার কথা বলো না।

-এখনও আপনি সত্যিটা লুকাবেন ইরান?

ছলছল দৃষ্টিতে আনাবিয়া ইরানের দিকে তাকায়। চমকিত হয়ে ইরান মাথা তুলে আনাবিয়ার দিকে তাকিয়ে মূর্তি হয়ে যায়। আনাবিয়া চোখের পানি মুছে দৃঢ় কণ্ঠে বলে,

-আমি জানি আমার মা জীবিত আছে। কেনো আমার থেকে সত্যিটা লুকাচ্ছেন ইরান? এতো করেও আমি পারছি না আপনার মুখ থেকে সত্যিটা জানতে! আসলে আপনি আমাকে কখন ভালোই বাসেননি! যদি বাসতেন তাহলে এভাবে মিথ্যে বলে আমাকে কষ্ট দিতেন না ইরান!

-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,।

-সত্যিটা বলুন ইরান। কিছু তো বলুন?

-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

-ইরান?

-হ্যাঁ তন্নী ফারুক বেঁচে আছে। কিছু হতে দেইনি আমি তাকে। বেঁচে আছে তোমার মা।

>>>>চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ