Monday, October 6, 2025







সে প্রেমিক নয় পর্ব-০৫

#সে_প্রেমিক_নয়
#Mehek_Enayya(লেখিকা)

#পর্ব ০৫

ভার্সিটির ক্যাম্পাসে বসে কিছু একটা ভাবছে আনাবিয়া। পাশেই দিলরাবা বসে চিপস খাচ্ছে। আজ বাদে কাল আনাবিয়ার বিয়ে আর সে কি না আজও ভার্সিটিতে এসেছে। ইসরাফ হয়তো বিয়ের কাজে ব্যস্ত। তাই আজ তাকে ভার্সিটিতে দেখা যাচ্ছে না। দিলরাবা খেতে খেতে বলে,

-আনু তুই কী সত্যিই ইসরাফকে বিয়ে করছিস?

-সত্যি মিথ্যার কী আছে? আগামীকালই আমার বিয়ে।

-বলি কী তুই ইসরাফকে বিয়ে করিস না। দেখবি বিয়ের পর ও আবার অন্য মেয়ের প্রতি আকিষ্ঠ হবে।

-হোক আমার কী! তার সাথে সংসার করার জন্য কী আমি বিয়ে করছি!

দিলরাবা ভেবছেঁকা খেয়ে যায়। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,

-সংসার করবি তো কী করবি? বিয়ের পর সবাই তো সংসার করে।

-ওহ হুম।

-মার্কেটিং করবি না?

-কাল ইসরাফের ফ্যামিলি বলেছিল মার্কেটিংয়ের কথা। কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। কাল বিয়েও আমি বোরখা পরে করব আর তাঁদের বাসায়ও বোরখা পরে যাবো।

-ওরের বোরখা লাভার!

আনাবিয়া প্রতিউত্তরে কিছু বললো না। হঠাৎই তীব্র আওয়াজ করে তার ফোন বেজে উঠে। আনাবিয়া ব্যাগ থেকে ফোন বের করে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। একটু কিনারে যেয়ে কল রিসিভ করে। হাসি মুখে বলে,

-হেই কিউটি, কেমন আছো?

ঐপাশের জন কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো। আনাবিয়া বুঝলো মানুষটি রেগে আছে। তাই একটু দুঃখী দুঃখী ভাব করে বলে,

-কিউটি আজ আমার সাথে কথা বলবে না?

এবার ঐপাশের জন চেঁচিয়ে বলে,

-কিউটি কিউটি বলো! ঐ দেশে গিয়ে তো কিউটিকে ভুলেই গিয়েছো! কোনো খোঁজ খবর নেও না!

দাদির অভিমান যুক্ত কথা শুনে মৃদু হাসে আনাবিয়া। একবার দিলরাবাকে দেখে বলে,

-কিউটি আমি অনেক ব্যস্ত ছিলাম এই কয়দিন তাই কল করতে পারিনি। আই এম সরি।

-হুম, এখন কেমন আছো আনা? ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করো?

-একদম পারফেক্ট আছি। আমার ডার্লিং কেমন আছে?

-তোমার ডার্লিং ভালো নেই। তোমাকে ছাড়া ঠিক মতো ঔষধ খায় না। দ্রুত এসে পরো তুমি।

-হ্যাঁ খুব দ্রুতই আসছি আমি।

-তোমার খালারা ভালো আছে?

-হ্যাঁ সবাই ভালো আছে। আচ্ছা কিউটি আমি তো এখন রাস্তায় বাড়িতে গিয়ে কল দেই?

-ঠিক আছে।

ফোন ব্যাগে রাখতে রাখতে আনাবিয়া দিলরাবার কাছে আসে। দিলরাবা এতক্ষন আনাবিয়ার সব কথাই শুনছিল। আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করে,

-আনু তুই এটা কোন ভাষায় কথা বললি? বাংলাও ছিল না ইংলিশও ছিল না!

-এটাকে রাশিয়ান ভাষা বলা হয়। রাশিয়ার অধিবাসীরা ইংরেজি ছাড়াও নিজ নিজ কিছু ভাষায় কথা বলে থাকে। এটা তাঁদের মধ্যেই একটা।

-তুই রাশিয়ার ভাষা কিভাবে জানিস?

-ইটস্ এ সিক্রেট।

-ভাই তুই জটিল মেয়ে খুব!

আনাবিয়া ক্রুটি হাসলো। কাঁধে ব্যাগ ঝুঁলিয়ে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে যায়। রাস্তা পাড় হওয়ার সময় অসাবধানতার কারণে আচমকা একটি গাড়ি সাথে ধাক্কা লাগে আনাবিয়ার। তাল সামলাতে না পেরে ছিটকে নিচে পরে যায়। বোরখার ওপর দিয়েই হাতে ব্যাথা পায়। আশেপাশে লোকজন দৌড়ে আসে। আনাবিয়াকে জিজ্ঞেস করে,

-আপা ঠিক আছে?

আনাবিয়া সবাইকে লক্ষ্য করে শান্ত কণ্ঠে বলে,

-জি আমি ঠিক আছি।

এতক্ষনে গাড়ির মালিকও গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে। আনাবিয়ার নিজের আঘাত প্রাপ্ত হাত দেখতে ব্যস্ত তখন। যারা সাহায্যের জন্য আনাবিয়ার নিকট এসেছিলো তারা একটু ভীত হয়ে দূরে সরে যায়। কয়েকজন আবার অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

-বেশি লেগেছে? আমার সাথে হসপিটালে চলুন।

পুরুষালি গম্ভীর কণ্ঠস্বর শুনে পাশ ফিরে তাকায় আনাবিয়া। চেনা মুখ দেখে চোখ ছোট ছোট হয়ে যায় আনাবিয়ার। মনে মনে বলে, “এটা তো সেইদিন লিফ্ট দেওয়া ভালো লোকটা!” সামনে দাঁড়ানো ইরানের হাবভাবও ঠিক আনাবিয়ার মতোই। আনাবিয়া উঠে দাঁড়ায়। পরিহিত বোরখা ঝেড়ে নেয়।

-আমি ঠিক আছি।

-দেখে তো লাগছে না ঠিক আছেন?

-আমার শরীর আমি ভালো জানি। আর আপনার উচিত ছিল গাড়ি দেখে শুনে চালানো।

-আপনারও উচিত ছিল চোখ খুলে রাস্তা পাড় হওয়া।

আনাবিয়ার রাগ উঠে যায়। তিক্ত কণ্ঠে বলে,

“মানে কী বলতে চান আপনি? আমি চোখ বন্ধ করে হাঁটি।

ইরান বুকে দুইহাত গুঁজে স্বাভাবিক ভাবেই দাঁড়ায়। দৃঢ় কণ্ঠস্বরে বলে,

-বলতে চাই না। আমি এক্সজেকলি এটাই বলছি।

ইরানের এইরকম খাঁপছাড়া কথা শুনে রেগে লাল হয়ে যায় আনাবিয়া। চোখ দিয়ে জানো তার অগ্নি বর্ষণ হচ্ছে। এতো মানুষজনকে দেখে আর বেশি কিছু বললো না।
ইরান আনাবিয়াকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে গাড়ির ভিতরে যেয়ে বসে। তারপর গাড়ি চালিয়ে নিজ গন্তব্যে চলে যায়। আনাবিয়া আহাম্মকের মতো চেয়ে থাকে। পাশে দাঁড়ানো একজন মহিলা আনাবিয়াকে জিজ্ঞেস করে,

-আপনি কী তাকে চিনেন?

-না, চিনি না তবে আগেও দেখা হয়েছে।

-কিছু হয় আপনার?

-এতো প্রশ্ন কেনো করছে? কে সে?

-উনি এখানকার এমপি।

-উনিই ইরান শেখ?

-হ্যাঁ।

আনাবিয়া হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে মহিলাটির দিকে। তার মানে সেদিন এই ইরান শেখই তাঁদের লিফ্ট দিয়েছিল! ইসরাফের ভাই আবার এতো ভালো কিভাবে হয়! আশ্চর্যজনক বিষয়!

ইরান ড্রাইভ করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। কোইন্সডেন্টলি এই মেয়েটার সাথে দুইবার দেখা হলো তার! যখনই দেখা হয় তখনই ইরানের অজান্তেই মন ভালো হয়ে যায়। আজ সকালেও ইসরাফের সাথে তার ঝগড়া হয়েছে। ইরান খুব জলদি আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। ইসরাফের সাথে থাকলে সে আর শান্তিতে থাকতে পারবে না।

__________________🌸

রাত সম্ভবত একটা। ঘুমে অচেতন আনাবিয়া। বিয়ে নিয়ে নাতো তার কোনো আয়োজন আছে আর নাতো মাথা ব্যাথা। খুব জলদি নিজের প্রতিশোধ নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারলেই হলো! এই দেশে থেকে ইসরাফের সাথে সুখে সংসার করার ইচ্ছে নেই তার।
ফোন বাজছে বেশ কিছুক্ষন ধরে। আলসেমির কারণে আনাবিয়া ফোন ধরছে না। লাগাতার পাঁচ মিনিট ধরে ফোন বেজেই চলছে। এবার না পেরে আদৌ আদৌ চোখ খুলে ফোনটা হাতে নেয়। লিলি নামটা দেখে সকল বিরক্তি গায়েপ হয়ে যায়। রিসিভ করে ফোন কানে দেয়। তাঁদের নিজস্ব ভাষায় বলে,

-হ্যাঁ বল,

-তুই কোনো কল টল দিস না? ঐখানে গিয়ে আমাদের ভুলে গেলি?

“উহুম ভুলিনি। তুই ভালো করেই জানিস আমি এখানে কেনো এসেছি।

-হ্যাঁ, কাজ কতদূর?

-কতদূর জানি না। তবে শিগ্রই ফিরছি আমি।

-ওওওও।

-এতো আওয়াজ কেনো আসছে? ক্লাবে তুই?

-আর কোথায় থাকবো! ইভানা, লুকাস, ক্রিস, জোবান আমরা সবাই একসাথে। তোকে ভীষণ মিস করছি। মিস্টার জোবান তোর জন্য সবসময় মনমরা হয়ে বসে থাকে।

লিলির কথা শুনে হাসতে থাকে আনাবিয়া। গোমড়া মুখে বলে,

-স্পিকারে দে।

-ওকে।

-কিরে কামিনা’স এন্ড কামিনী, কী খবর? (আনাবিয়া)

-একটুও ভালো খবর না!(সকলে একসাথে )

-কেনো ভালো না? বরং আমাকে ছাড়া তো তোদের ভালো থাকার কথা!(আনাবিয়া)

-অনেকদিন ধরে কেউ আমাদের জ্বালাতন করে না তাই ভালো লাগছে না। (লুকাস)

-আসলেই। জলদি আয় আনাবেবি।(ইভানা)

-হুমম। জোবান ব্রো সব ঠিকঠাক তোহ? (আনাবিয়া)

-তোর মাথা ঠিক।(জোবান)

-জোবানের কথা রাখ আজ সকালেই আমাদের ডার্লিং ক্রিসের ব্রেকআপ হয়েছে। (লিলি)

-আমি জানতাম, ও মন দিয়ে রিলেশন করে না। (আনাবিয়া)

-রিলেশন! সব কিছুই শুধু বিছানায় নিয়ে যাওয়ার ধান্দা। (লুকাস)

লুকাসের কথায় একসাথে সবাই হেসে দেয়। ক্রিস নামের ছেলেটা উদাসীন হয়ে বলে,

-গাইস আই রিয়েলি লাভ ডেট গার্ল।(ক্রিস)

-ওয়াও! নাইস জোকস সুইটহার্ট। (আনাবিয়া)

-আনা তুই পারিস ও!(লিলি)

-ইটস্ নট সো ফানি গাইস।(ক্রিস)

সবার হাসি জানো থামার নাম নেই। জোবান অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামিয়ে বলে,

-হয়েছে বাডি’স ক্রিস রেগে যাবে আবার!(জোবান)

-ওকে গাইস আমি তাহলে ফোন রাখি। এখানে এখন রাত একটার ওপরে বাজে। (আনাবিয়া)

-ঠিক আছে। (লিলি)

-বাই। (আনাবিয়া)

-বাই বাই ডার্লিং। (সকলে একসাথে)

ফোন বিছানার কিনারে রেখে উঠে বসে আনাবিয়া। তার পরনে ছেলেদের টাউজার আর টি-শার্ট। ওড়না গায়ে জড়িয়ে রুমের বেলকনিতে আসে। সব কিছু একটু জলদিই হয়ে যাচ্ছে না! টুং আওয়াজ করে আনাবিয়ার ফোনে একটা নোটিফিকেশন আসে। পর পর আরো দুইবার আওয়াজ আসে। আনাবিয়ার ফোনে সাধারণত দুইটা সিম। একটা এই দেশের আরেকটা বিদেশী। ফোনের লক খুলে দেখে তার হোয়াটস্যাপ নাম্বারে অচেনা বাংলাদেশি নাম্বার থেকে কয়েকটা ছবি এসেছে। আনাবিয়ার ললাটে দুই ভাঁজ পরে। কিছু সময় নিয়ে ছবিগুলো দেখলো। তার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে থাকলে এতক্ষনে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলতো। নিজের উল্ড বি হাসব্যান্ড অন্য একটি মেয়ের সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাঁটাচ্ছে এটা অবশ্য ছোট কোনো বিষয় নয়! কিন্তু আনাবিয়ার মধ্যে কোনো পরিবর্তন দেখা গেলো না। সে জানো আগের থেকেই এইসব দেখে অবস্ত!

🌸🌸🌸

ঘামাত্বক শরীর নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় ইসরাফ। সুবিশাল রাজকীয় বিছানায় বিবস্ত হয়ে শুয়ে আছে এক অপরূপ রমণী। ইসরাফকে ওয়াশরুম থেকে বের হতে দেখে মেয়েটি শরীরে চাদর জরিয়ে বিছানায় উঠে বসে। ইসরাফ কোমরে তৌয়ালে পেঁচিয়ে আয়নার সামনে যেয়ে দাঁড়ায়। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজেকে দেখতে থাকে। মেয়েটি মৃদু হেসে বলে,

-আর কত দেখবে নিজেকে? তুমি আগেও হ*ট এন্ড হ্যান্ডসাম ছিলে এখনও আছো জান।

ইসরাফ কিছু বললো না। কাবাড থেকে শর্ট পেন্ট বের করে পরে নেয়। মেয়েটির গা ঘেঁষে বসে একহাতে জড়িয়ে ধরে তার কোমর। রমণীও ইসরাফের মাঝে নিজেকে ঘুঁটিয়ে নেয়। ইসরাফের বুকে আঁকিবুকি করতে করতে বলে,

-শুধু শুধু ঐ ক্ষেত মেয়েকে কেনো বিয়ে করছো? আমি তো আছি তোমার জন্য।

ইসরাফ বাঁকা হাসে। মেয়েটির অধরে নিজের পোড়া অধর ছুঁয়ে দিয়ে বলে,

-তুমি হলে শুধু আমার শারীরিক চাহিদা। আর ঐ মেয়ে হবে আমার মানসিক শান্তি। তোমার জায়গা না ও নিতে পারবে আর তুমি নাতো ওর জায়গা নিতে পারবে।

-আমাকে বিয়ে করে তোমার মানসিক শান্তি বানিয়ে ফেলো? কসম এখনের থেকেও বেশি ভালোবাসবো তখন। তোমাকে প্রতি রাতে স্বর্গীয় সুখ এনে দেবো।

ইসরাফ হাসলো। সেই হাসিতে ছিল কামুকতা। ঠোঁটে ঠোঁট কামড়ে বলে,

-কখন দেখেছো একজন প্রস্টিটিঊডকে আদর্শ স্ত্রী হতে?

-ভুলে যেয়েও না এই প্রস্টিটিঊডই তোমাদের রাতের চাহিদা পূরণ করে থাকে।

ইসরাফ রমণীকে ছেড়ে দেয়। মাথায় হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পরে।

-তাই তো তোমরা হলে এক রাতের ওয়াইফ। বুঝলে?

হাসি হাসি মুখটা চুপসে যায় রমণীর। আহত হয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে ইসরাফের পানে। চোখের পানি মুছে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে যায়। ওয়াশরুমের মেঝেতে বসে অঝোরে কান্না করে মেয়েটা। কেনো প্রস্টিটিঊড হয়েছে বলে তার মনে ফিলিংস নেই? তার ফিলিংয়ের দাম নেই? ইসরাফের ছোঁয়া বেতীত অন্য কোনো পুরুষের ছোঁয়া আজ পর্যন্ত সে লাগতে দেয়নি নিজের শরীরে। সর্বদা সৃষ্টিকর্তার কাছে এই পুরুষটিকে নিজের করে চেয়েছে সে। এখন এটা কী কোনো পাপ! আগামীকাল ইসরাফের বিয়ে। বিয়ের পর হয়তো ইসরাফ আর তার কাছে আসবে না। অন্যকারো হয়ে যাবে তখন! এই বেদনা কিভাবে সহ্য করবে সে!

_________________🖤

সকালে শেখ বাড়িতে বিয়ের আয়োজন চলছে। ঘরোয়া ভাবে বিয়ে হলেও তাঁদের বাড়িতে তো কিছু আয়োজন আছে। মেয়ের বাসায় বিয়ে পড়ানো হবে। রাত আটটায়। ইরান ঘড়ি পরতে পরতে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে। ড্রইংরুমের সোফায় মাকে বসে থাকতে দেখে এগিয়ে যায় সেখানে। মায়ের পাশে বসে। দুইহাত টেনে নিজ হাতে নিয়ে আদরে ভঙ্গিতে ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়।

-আম্মা নাস্তা করেছো?

-হ্যাঁ বাবা করেছি। তুইও করে নে।

-তোমার ছোট ছেলের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর পরই আমি আমার বাড়িতে শিফট হয়ে যাবো।

-এতো তাড়া কেনো বাবা? এটাও তো তোর বাড়ি।

-এটা সবারই বাড়ি। তাছাড়াও আমি চাই তোমার নালায়েক বিয়ের পর ভালো মানুষের মতো সংসার করুক। জানোই তো এক রাজ্যে দুই রাজা হয় না?

-কিন্তু আমি যে চাই আমার সব পোলাপানদের একসাথে নিয়ে থাকতে?

-তোমার যেখানে মন চাইবে সেখানে থাকবে। আমরা কেউ জোর করব না।

উঠে দাঁড়ায় ইরান। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে রাকিয়াকে বলে,

-আম্মা তোমার নয়াবজাদা এখনও ঘুম থেকে উঠে নাই?

-কাল রাতে ফামহাউস গিয়েছে ইসরাফ।

পিছনের থেকে তনুসফার কথা শুনে ইরান পিছনে তাকায়। চুল ঠিক করতে করতে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

-আপা ওকে বলবেন অফিসের কাজে হাত লাগাতে। ওর বউকে কিন্তু আমি রোজগার করে খাওয়াবো না। ওর নিজেরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

-হুম, কাল রাতে বলেছি। ও বলছে পড়াটা শেষ হলেই ও অফিসে ঢুকে যাবে।

-বেশ তাহলে।

-তুই কবে বিয়ে করছিস বাবা?

রাকিয়ার কথা শুনে মুখে একরাশ বিরক্তি দেখা যায় ইরানের। চোখ বন্ধ করে আবার খুলে। শান্ত কণ্ঠে বলে,

-করব সময় হোক করব।

-সেই সময় কবে হবে এমপি ইরান শেখ?

-আপা আপনিও ফালতু কথা বলে সময় নষ্ট করিয়েন না। ও হ্যাঁ, এবারও মহিলা সদস্যের নেতি হিসেবে আপনাকে দেখতে চাই। সামনেই তো ভোট।

-হ্যাঁ। অনেক চিন্তায় আছি।

-চিন্তার কারণ নেই। এই পর্যন্ত আপনি জিতেছেন এবারও আপনিই জিতবেন।

-তুই যেহেতু বলে দিয়েছিস তাহলে তো
জিতবো-ই। পাঞ্জাবী পরে এতো রেডি সেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছিস?

-এলাকার চেয়ারম্যানদের সাথে একটু মিটিং আছে ভোট নিয়ে।

-ওহহ আচ্ছা। নাস্তা করে নে।

-হুম।

>>>চলবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ