সে পর্ব-৩

0
966

সে পর্ব-৩

#গল্পপোকা_ধারাবাহিক_গল্প_প্রতিযোগিতা_২০২০
সানজিদা তাসনীম রিতু

–“আপনার মায়ের কথা অনুযায়ী, সেদিন সকালে আপনাকে ডেকে সারা না পেয়ে দরজা ভাঙা হয়েছিলো, উনার চিৎকার শুনে ভাড়াটিয়ারা আসে তারপর আপনাকে দ্রুত হাসপাতালে আনা হয়, আর তারপরই আমাদেরকে জানানো হয়।” কথাগুলো বলে থামলেন পুলিশ ইন্সপেক্টর রাফিউল।
আমি বিছানায় বালিশে হেলান দিয়ে বসে আছি, উনি আমার সামনে চেয়ারে বসে আমার মুখোমুখি।উনার দিকে তাকাতে আবার বলে উঠলেন-
–“আপনার ঘরের সবকিছুই ঠিকঠাক ছিলো শুধু পুরো বিছানাময় রক্ত আর অসংখ্য চুল ছিলো।”
চকিতে ডান পাশের দেওয়ালের আয়নায় চোখ গেলো, অধিকাংশ চুল নাকি টেনে ছেড়ার মতো ছিলো তাই পুরো ন্যাড়া করে দিয়েছে।
–“ব্লাড আর চুলের স্যাম্পল থেকে শুধু আপনাকেই সনাক্ত করা গিয়েছে,তাছাড়া দ্বিতীয় কোনো মানুষ বা সত্তার কোনো চিহ্নই পাওয়া যায়নি।” একটু থেমে- “ম্যাম, আপনি কি প্লিজ ব্যাপারটা খুলে বলবেন?”
-“আমি যেটুকু জানি বা দেখেছি আপনাকে তো বলেছি, জানেন তো আমার অবস্থা, আমার কি কিছু লুকানো উচিৎ?”
–“কিন্তু ম্যাম, এগুলা তো বিশ্বাসযোগ্য কথা না।”
-“কেনো?”
–“কারণ কোনো এভিডেন্স নেই ম্যাম।”
-“রাফিউল সাহেব, এভিডেন্স খোঁজা তো আমার কাজ না, তাই না? তাছাড়া আমার মনে হয়না এর কোনো প্রমাণ আদৌ পাওয়া যাবে।”
খেয়াল না করার মতো হালকা হাসি দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন তিনি, “তবে চলি ম্যাম, সাবধানে থাকবেন। যেকোনো প্রয়োজনে আমাকে কল করতে পারেন আমার কার্ড রেখে যাচ্ছি।” এটুকু বলে মানিব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে সাইড টেবিলে রেখে আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে পিছ ঘুড়ে যেতে যেতে অস্ফুট স্বরে যেনো বললেন- “আবার হয়তো দেখা হবে খুব শীঘ্রই।”
-‘কিছু বললেন?” উনি কিছু না বলে দ্রুত চলে গেলেন।
কিছুক্ষন উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ঘরের দরজাটা পুরো খুলে দিলাম। বাগানের কিছু অংশ আমার ঘর থেকেই দেখা যায়। গোধুলির হলুদাভ আলোতে বাগানের ফুলগুলো কি অপূর্ব সুন্দর লাগছে। আমি একমনে তাকিয়ে ছিলাম, আচমকা ফোনের ভাইব্রেশনে তাকিয়ে দেখি রিশাদ কল দিচ্ছে।
-“বলো”
–“কি করছো বুড়ি?”
-“কিছুনা, বাগান দেখছিলাম।”
–“ছাদে একটু হাঁটাহাঁটি করো ভালো লাগবে।”
-“আচ্ছা, পরে কথা বলি তাহলে?”
-“হ্যা, আমার কিছু কাজ আছে, আমি পরে তোমাকে কল দিবো” বলে ও কল কেটে দিলো।
সেরাতে বাসায় যাওয়ার পথে রিশাদকে কিছু চোরাই ব্যবসায়ী ধরেছিলো। যারা শরীরের বিভিন্ন পার্টস আলাদা করে বিক্রি করে। প্রায় তিনদিন ওকে না খাইয়ে বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছিলো, অনেক কষ্টে ও সহ আরো দুজন সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছিলো। হাসপাতালে বসে একদিন এই কথাগুলো বলেছিলো আমাকে।
ফোনটা রেখে আনমনে চুল ঠিক করতে মাথায় হাত দিতেই চোখ জ্বলে উঠলো। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঝাপসা চোখেই নিজেকে দেখতে থাকলাম।কেমন অদ্ভুত লাগছে দেখতে, ডান হাতটা সামনে তুলে কুঁচকানো চামরাগুলোতে হাত বুলালাম। উফফ আর সহ্য হচ্ছে না, আমি দুহাতে মুখ ঢেকে বসে পড়লাম বিছানায়….

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share