সে পর্ব-২
#গল্পপোকা_ধারাবাহিক_গল্প_প্রতিযোগিতা_২০২০
সানজিদা তাসনীম রিতু
-“রিশাদ ভাইয়াকে তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা কোথাও।”
নিতা পাশে বসতেই ওকে ইশারা করতে ও আমাকে একটা কাগজ আর পেন দিলো, আমি লিখতে গিয়ে প্রচন্ড জ্বালা অনুভব করলাম হাতে, শুধু রিশাদ নাম টাই লিখতে পারলাম। ও তা দেখে এই কথা বললো।
হঠাৎ আমি অস্থির হয়ে গেলাম, কিছু যে বলবো সেই উপায় নেই, জোর করে বলতে গেলাম আর নল বেয়ে রক্ত বের হওয়া শুরু করলো, আমি অসহায় চোখে তা দেখে চোখ বুজলাম।
-“কথা বলার চেষ্টাও করিস না। আমি বলছি তুই শোন।” বলে নিতা মায়ের দিকে তাকালো। মা কি বুঝলো জানি না উঠে বাইরে গেলো।
-“তোর এই অবস্থা দেখে ভাইয়াকে অনেকবার ফোনে ট্রাই করেছি, বন্ধ দেখায়। তুহীনদের বলেছি খোঁজ নিতে, ওরা জানালো ভাইয়াকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। বাড়ির লোকেরাও কিছু জানে না। ওদিন রাতে বাড়িতে ফেরেনি আর তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।”
অজানা আশঙ্কায় আমি কেঁপে উঠলাম,তবে কি…
ওইদিন আমি একবার চোখ খুলেছিলাম,কয়েক সেকেন্ডের জন্যেই, যে বীভৎসতা দেখেছি তা দেখে কেউই সজ্ঞানে থাকার সাহস রাখেনা।
দেখেছিলাম…
ডাক্তার এসেছেন দেখতে, বললেন আমাকে প্রায় মাসখানেক এখানেই থাকতে হবে। সাথে দেখলাম পুলিশও। চোখে কৌতূহল খেলা করলো।
–“ম্যাম, আমি রাফিউল, আপনাকে দেখতে আসলাম। আপনি তো কিছু বলতে পারবেন না, তাই আমরা কিছুই করতে পারছি না। আপনি একটু সুস্থ হয়ে নিন, দেখা হইবে।” বলে পুলিশটা চলে গেলো।
-ডাক্তার বললেন- “আমি জানি না আপনি কতোটুকু জানেন, রিপোর্ট অনুযায়ী আপনার ঘাড়ের আর পিঠের হাড় ভেঙে গেছে, পেটের একপাশের মাংস খুবলে তোলা হয়েছে আর আপনার একহাত আর পুরো বুক ঝলসানো। আর…” থেমে গেলেন তিনি।আমি তাকাতে আবার বললেন- “আপনার যোনিপথটাও ঝলসানো, আপনাকে ধর্ষণ করা হয়েছিলো।” ডুকরে কেঁদে উঠলাম, হঠাৎ আবার মনে হলো, আমি দেখেছিলাম সেই বীভৎস চেহারা, মুখ দিয়ে লালা বের হয়ে টপ টপ করে পড়ছিলো আমার মুখের উপর, সে কি ভয়ংকর শীতল চাহনী…
-“ফরেনসিক রিপোর্টে আমরা যেই স্যাম্পল পেয়েছি তাতে কিছুই পাওয়া যায়নি কিন্তু ভিতরটা একদমই ঝলসানো আর ক্ষতবিক্ষত।” ভাবনায় ছেদ পড়ল, আমি ডাক্তারের দিকে করুন চোখের তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছু বলতে পারলাম না। উনি বলতেই থাকলেন-
-“বেশ কয়েকটি সার্জারি করা লেগেছে, আপনার সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে। চিন্তা করবেন না, সব কিছুই সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যায়।” বলে উনি চলে গেলেন।
আমার খুব অসহায় লাগছে সাথে অস্থিরতা তো আছেই। রিশাদের কি তবে…নাহ, আর ভাবতে পারছিনা, আমি চোখ বুজে পড়ে থাকলাম অচল মাংসপিণ্ডের মতো।
৪৫দিন পর
মেরুদণ্ডের হাড় টাতে আবারও সার্জারি করা লেগেছিল, এখন ঠিক আছে, কিন্তু ঘাড়েরটাতে রড ঢোকানো লেগেছে, নাড়াচাড়া করতে পারিনা বেশি।ক্ষত গুলো পূরণ হয়েছে ঠিকই কিন্তু দাগগুলো ওদিনের কথা ভুলতে দিচ্ছেনা। আজকে ডিসচার্জ করবে আমাকে।
-“আন্টির শরীরটা ভালোনা, তাই নিতা নিষেধ করেছে আসতে।” আমি উঠে দাঁড়াতেই আমার হাত ধরে রিশাদ বললো কথাটা।
–“আন্টি আসলে তো আপনি আসতে পারতেন না ভাইয়া। জানেন তো আন্টি কতটা কনজারভেটিভ টাইপের।” আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে কথাগুলো বললো নিতা।
……
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share