Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"সেই তুমি পর্ব-০৯

সেই তুমি পর্ব-০৯

#সেই_তুমি?
#পর্ব_০৯
#Tabassum_Kotha

হাসপাতালে তুর্য রায়ানের সামনে বসে আছে। রায়ান মোটামুটি একটু সুস্থ আছে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে তুর্য বলতে শুরু করলো।

— লুক রায়ান! I need to know. হীরকে মেডিসিনগুলো কে দিতো আর কিভাবে দিতো। এজন্য আই নিড ইউর হেল্প।

— আমি সবদিক দিয়েই তোমার হেল্প করবো তুর্য। কিন্তু তার আগে আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর কি দিতে পারো?

— উত্তর দেওয়ার মতো হলে অবশ্যই দেবো।

— তুমি হীরকে তুলে নিয়ে রেপ কেনো করেছিলে তুর্য? হীর তোমার বিবাহিতা স্ত্রী , ওর সাথে এই ধরনের ব্যবহার করতে তোমার বিবেকে বাঁধলো না?

— কেউ আমাকে এই ধরনের প্রশ্ন করুক এটা আমার একদম পছন্দ নয় রায়ান। কিন্তু তুমি আমার হীরকে এতোদিন সেইফ রেখেছো এজন্য এতোটুকু তোমার জন্য আমি করতেই পারি।

হীরকে এতো কষ্ট দেওয়াতে আমিও কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু আমার কাছে আর কোনো পথ খোলা ছিল না। তোমার আর হীরের বিয়ে ছিল ২ দিন পর। আমি অনেক চেষ্টা করেছি এই ৩ মাসে হীরকে পুরোনো সব স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে কিন্তু দিন শেষে আমি ব্যর্থ ছিলাম। কিছুতেই হীরকে পুরোনো কথা মনে করাতে পারি নি। হীরের সামনে আমি অনেক বার গিয়েছি। অনেকবার ওকে সব বলেছি কিন্তু হীর ২/৩ দিন পর আবার আমার চেহারাটাও ভুলে যেতো।

নিরুপায় হয়ে একদিন রাহির সাথে যোগাযোগ করি। ওকে সব খুলে বলি। তখন রাহি আমাকে হেল্প করে তোমার কাছে থেকে হীরকে ফিরিয়ে আনতে। রাহি লুকিয়ে আমাকে হীরের সব তথ্য দিতো। তোমার আর হীরের বিয়ে থামানোর জন্য আমি মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু হীরকে আমি আমার ভালোবাসা দেখাতে পারতাম না। হীরের সামনে অতীতের কিছু বললেই হীরের মানসিক যন্ত্রণা শুরু হয়ে যেতো।
একটা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে তিনি বলেন হীরের প্রোপার চেকআপ ছাড়া তিনি কিছুই করতে পারবেন না। রাহিকে দিয়ে হীরকে বিয়েটা থামিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক বার বলিয়েছি কিন্তু হীর মানে নি। ইভেন ডাক্তারের কাছে আনারও অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নি। অবশেষে একটা প্ল্যান আমাকে বানাতেই হলো যার মাধ্যমে হীর নিজেই এ বিয়ে ভেঙে দেয়। অনেক ভেবে চিন্তে এই প্ল্যানটাই আমার মাথায় এলো। কারণ হীরকে আমি খুব ভালো করেই জানি। ও তোমাকে কখনই ঠকাবে না তাই নিজেই বিয়েটা ভেঙে দেবে। আমি জানি আমি যা করেছি সেটা অন্যায় কিন্তু হীরকে ফিরে পাওয়ার জন্য আমি সব করতে পারতাম।

এজন্যই আমার আর রাহির প্ল্যান অনুযায়ী সেদিন কলেজ ফাংশনের জন্য হীর একা বাসা থেকে বের হয়। আর আমি ওকে রাস্তা থেকেই তুলে নিয়ে যাই।

তারপর তাই হয় যা আমি চেয়েছিলাম। হীর নিজ থেকেই তোমাকে মানা করে দেওয়ার মন বানিয়ে নেয়। জানি না এটাকে ভাগ্য বলবো নাকি অন্য কিছু। সেদিন সকালেই তুমি ঢাকার বাইরে চলে যাও। যার জন্য আমি আরো একটা সুযোগ পাই হীরকে বিয়ে করে নেওয়ার। আমার বিশ্বাস ছিল যেকোনো উপায়ে হীরকে নিজের কাছে আনতে পারলেই ওর সমস্যা টা জানতে পারবো। হলোও তাই।

এতোটুকু বলে তুর্য থামলো। রায়ানের চোখে পানি টলমল করছে। কেনো যেনো তুর্যর জন্য আজ ওর খুব মায়া হচ্ছে। তুর্য আর রায়ান সমবয়সী। ছোট থেকে দেখে আসছে তুর্যকে সে। হীর যে তুর্যর কলিজা তাতে রায়ানের কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু হীরকে যে সে নিজেও অনেক ভালোবাসে। তাই তো এতোটা স্বার্থপর হয়ে গিয়েছিল সে। রায়ান একটু সামনে এগিয়ে এসে তুর্যকে জরিয়ে ধরে ক্ষমা চাইলো তার স্বার্থপরতার জন্য। তুর্যও আর কোনো অভিমান রাখলো না। রায়ানের এসব করার পিছনের কারণ টা সে ভালো করেই জানে। আজ এই ভালোবাসার জন্যই দুজনে সমান অপরাধে অপরাধী। রায়ান বলতে শুরু করলো,

— যেদিন ফুপি-ফুপা আর হীরের গাড়ি এক্সিডেন্ট করে আমরা তার ২ দিন পর খবর পাই। কারণ তারা চট্টগ্রামে এক্সিডেন্ট করেছিল। আমরা যাওয়ার আগেই ফুপা-ফুপি গুরুতর আহত হয়ে মারা যান। আর হীর কোমায় ছিল। যদিও ১১ দিন পর হীরের জ্ঞান ফিরে আসে, কিন্তু সে কাউকে চিনতে পারে না। স্মৃতি শক্তি হারিয়ে হীর একদম ছোট বাচ্চার মতো হয়ে গিয়েছিল। না ফুপা-ফুপির কথা মনে ছিল আর নাই তোমার কথা। আম্মু-আব্বু তোমাকে হীরের কথা জানাতে চেয়েছিল কিন্তু আমি বাঁধা দেই। আমার মনে হয়েছিল ভাগ্য আমার হীরকে আমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই এমনটা করেছিল।

নিজের স্বার্থের জন্যই আমি সেদিন হীরকে তোমার কাছে থেকে আলাদা করেছিলাম তুর্য। কিন্তু বিশ্বাস করো এই কয়েক মাসে একবারও হীর আমাকে ভালোবাসতে পারে নি। আমার বানানো ভালোবাসার গল্পই হীরের মনে গাঁথা ছিল শুধু।
আমিই হীরকে বলেছিলাম যে ওর বাবা মা ও ছোট থাকতে মারা গেছেন। আর আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ছোট বেলা থেকে। রাহি যে তোমার সাথে কথা বলতো সেটা আমি জানতাম না। আর হীরকে আমি কোনো ড্রাগস্ ও দিতাম না। কিন্তু হাসপাতাল থেকে আসার আগে ডাক্তার হীরকে কিছু ঔষধ দিয়েছিল। সেই ঔষধগুলোই হীর খায়। কিন্তু সেগুলো তো মাথা ব্যথার আর ঘুমের ঔষধ।

— এই ঔষধগুলো হীরকে কোন ডাক্তার দিয়েছে বলতে পারো?

— সেই ডাক্তার তো কয়েকমাস ধরে ঢাকাতেই আছে। আর সেই ডাক্তারকেই দেখায় হীর।

— পেয়ে গেছি।

— কি পেয়েছো?

— এই ডাক্তারই হীরকে ড্রাগস্ দেয়। আমার এই ডাক্তারের ইনফরমেশন চাই রায়ান। At any cost.

— বাসায় হীরের ঘরে থাকতে পারে প্রেসক্রিপশন। আমাকে একবার দেখতে হবে।

— তুমি দেখে আমাকে জানাও রায়ান। হীরের এই শত্রুকে শেষ না করতে পারলে হীর সেইফ থাকতে পারবে না।

— অবশ্যই।

তুর্য হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়িতে ঢুকতেই তুর্য সারপ্রাইজড্ হয়ে যায়। তুর্যর বেষ্ট ফ্রেন্ড রুহান দাড়িয়ে আছে তুর্যর সামনে।

— কি খবর দোস্ত, বিয়ে করে ফেললি আর আমাকে একটা বার বললিও না।

— আরেহ দোস্ত তুই! কবে ফিরলি লন্ডন থেকে?

— রাখ শালা তোর দোস্ত! আমাকে তো তুই ভুলেই গেছিস।

— আরেহ মামা তোমায় কি ভুলতে পারি বলো!

— এই কয়েক মাসে একটা খোঁজও নিস নি। কি মনে করবো আমি?

— সরি রে দোস্ত অনেক চাপের মুখে ছিলাম। আবার বিয়েটাও এমন হুট করে করেছি যে তোকে বলতেই পারি নি।

— হ্যাঁ হয়েছে, হয়েছে। ভাবি কোথায় ভাবির মুখদর্শন তো করা। আমিও দেখি কোন হুর পরী আমার দোস্তের মন কেড়েছে।

— অবশ্যই দেখাবো।

তুর্য একজন সার্ভেন্টকে পাঠালো হীরকে ডেকে আনতে।

হীর বিয়ের পর প্রথম আজকে লাল রঙের শাড়ি পরেছে। পাতলা লাল একটা শাড়ি পরেছে, সাথে মনের মাধুরী মিশিয়ে সেজেছে। যদিও সাজটা তুর্যর জন্য তুলে রাখা, আর হীর জানেও না নিচে কে এসেছে।
হীর সিড়ি দিয়ে নেমে নিচে আসার সময় তুর্যর চোখ আটকে যায় হীরের উপর। হীর এমনিতেও শাড়ি খুব বেশি একটা পরে না। আজ হঠাৎ পরাতে একটু ভিন্ন লাগছে। তুর্য ঘোর লাগানো চোখে তাকিয়ে আছে হীরের দিকে। হীর লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে। তাদের চোখাচোখির পাশে অন্য একজোড়া চোখ হীরকে নেশা ভরা দৃষ্টিতে দেখছে। রুহান মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখছে হীরকে। সে হয়তো জানে সে একটা নিষিদ্ধ আবেগকে প্রশ্রয় দিচ্ছে কিন্তু তার বেহায়া চোখ বাঁধা মানছে না। তনিমা বেগমের ডাকে সবার ঘোর কাটে।

রুহানে নিজের চোখ সরিয়ে নিলেও ওর মনে হীরের ছবি গেঁথে গেছে।

— কন্ট্রোল রুহান, ভাবি হয় তোর। তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড তুর্যর ওয়াইফ। নিজের চোখ সামলা রুহান। (বিরবির করছে কথাগুলো)

— কিরে কি বিরবির করছিস? (তুর্য রুহানকে হালকা ঝাকিয়ে প্রশ্নটা করলো)

— আরেহ কিছু না। বলছিলাম ভাবির সাথে পরিচয় না করিয়ে দিয়েই চোখে চোখে ইশারায় লেগে পরেছিস।

— দোস্ত! ও হচ্ছে হীর আমার বউ, আমার ভালোবাসা, আমার কলিজা, আমার জীবন, আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। আর হীর ইনি হচ্ছেন তোমার একটা দেবর। আমার বেষ্টফ্রেন্ড রুহান। সরি সরি রকষ্টার রুহান খান।

— কেমন আছো ভাবি? (রুহান)

— ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন ভাইয়া? (হীর)

— ভালো না থাকলেও এখন তোমাকে দেখে ভালো হয়ে গেছি। (রুহান)

রুহান ভাইয়ার কথাটা কেমন যেনো সহজভাবে নিতে পারলাম না আমি। তার চাউনিও কেমন অস্বস্তিকর ছিল। এসব নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করছিলাম তখন তুর্য আবার বলতে শুরু করলেন,

— জানো হীর, রুহানের সাথে আমার প্রথম দেখা লন্ডনে হয়। আমরা একসাথে থাকতাম সবসময়। গ্যাজুয়েশন শেষ করে দুজনে একসাথে মিউজিক কে প্রফেশন হিসেবে চুজ করি। আজ দুজনেই সমউচ্চতায় আছি।

— ভুল বললি দোস্ত, তুই আমার থেকেও অনেক বেশি সাকসেসফুল আর পপুলার। And I am proud of that.

তুর্য আর রুহান কথা বলছে আজ এতোদিন পর তাদের দেখা হয়েছে। আমি কিচেনে চলে গেলাম আম্মুর হেল্প করার জন্য। সবাই একসাথে খাবার পর্ব শেষ করে আড্ডা দিতে বসলো। আমি আর তুর্য একসাথে বসে আছি আর তুর্য এক হাত দিয়ে আমার হাত চেপে ধরে আছে। কি মুশকিল বাসার সবাই দেখছে আর মুখ টিপে টিপে হাসছে। আমার তো লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু তুর্য বেশ আরামেই আছে মনে হচ্ছে।
রুহানের দৃষ্টি কেনো যেনো আমার ভালো মনে হচ্ছে না। এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে যে আমার অস্বস্তি হচ্ছে। সবার জন্য চা আনার বাহানা দিয়ে সেখান থেকে উঠে পরলাম। যদিও রুহান তুর্যর বেষ্টফ্রেন্ড তার সম্পর্কে এসব ভাবা আমার উচিত না। কিন্তু আমার ষষ্ঠ ঈন্দ্রীয় আমাকে জানান দিচ্ছে খারাপ কিছু হতে চলেছে। আমার কি তুর্যকে জানানো উচিত রুহান ভাইয়ার কথা? তুর্য আবার আমাকে ভুল বুঝবেন না তো?

রাতে রুহানকে তুর্যর পাশের রুমটাতে থাকতে দেওয়া হয়, যেই রুমের ব্যলকোনি থেকে তুর্যর রুমের ব্যালকোনির সব দেখা যায়।

হীর ব্যালকোনিতে দাড়িয়ে রুহানের ওভাবে তাকিয়ে থাকার কথা চিন্তা করছে। আকাশে মেঘ করেছে, দমকা হাওয়ায় হীরের চুলগুলো এলোমেলো ভাবে উড়ছে। তুর্য কাঁচের সাথে হেলান দিয়ে হীরকে দেখছে। তার মায়াবতীর মায়ায় নতুন করে জড়াচ্ছে। পাশের রুমের ব্যালকোনিতে দাড়িয়ে আছে রুহান। তার দৃষ্টি বরাবরের মতো হীরের উপর। না জানি কি মাদকতা আছে হীরের মধ্যে যা বারবার রুহানকে এক নিষিদ্ধ আবেগের দিকে টানছে। নিজের চোখকে থামাতে পারছে না সে। বন্ধুর বউকে এই নজরে দেখা তার অন্যায় হচ্ছে কিন্তু সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। যে করেই হোক একবারের জন্য হলেও হীরকে সে পেতে চায়। রুহানের ভাবনায় তখনই ছেদ পরে যখন তুর্য এসে হীরকে জরিয়ে ধরে। রুহানের অজান্তেই তার কপালের রগটা ফুলে উঠে রাগে। তুর্য তার মনে সুখে হীরকে আদর করছে। হীরও সমানভাবে তাল মেলাচ্ছে তুর্যর সাথে। রুহান রক্তচক্ষু নিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। তার চিন্তা শক্তি বলছে সে যা ভাবছে তা ঠিক না কিন্তু মনকে সে মানাতে পারছে না। একপর্যায়ে তুর্য হীরকে কোলে তুলে ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়ে লাইট অফ করে দেয়। রুহান কিছুক্ষণ এভাবে থেকে স্মোক করা শুরু করে দেয়। সেদিন রাতে আর রুহানের ঘুম হয় না।

সকালে ঘুম থেকে উঠতেই নিজের উপর ভারী কিছু অনুভব করলাম। চোখ মেলে দেখি তুর্য ঘুমিয়ে আছে আমার বুকের উপর। তাকে এভাবে দেখে পুরোনো কথা মনে পরলো। এর আগেও একদিন তুর্য এভাবেই আমার উপর ঘুমিয়ে ছিলেন। সেদিন তাকে দেখে আমার ঘৃণা হচ্ছিল আর আজকে তাকে এভাবে দেখে অনেক ভালো লাগছে। সত্যি হয়তো আমি তুর্যকে ভালোবেসে ফেলেছি। তুর্যর মুখটা আমার অনেক পরিচিত মনে হয়। কেনো যেনো মনে হয় এই মুখটা আমার সারাজীবনের চেনা। আমি কি আগে থেকে তুর্যকে চিনতাম? কোথাও কি দেখেছি তাকে? কিছু মনেও করতে পারছি না। জানি না কি হচ্ছে আমার সাথে এসব। বেশি কিছু ভাবতেও পারি না মাথায় ভীষণ যন্ত্রণা হয়। তুর্যর কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলাম। তাকে আস্তে করে নিজের উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে নিচে পরে থাকা শাড়িটা কোনোমতে গায়ে জরিয়ে নিলাম।

ওয়াশরুমে গিয়ে পরলাম বিপদে। জামা আনা হয় নি, আর বাতরোবটাও পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে টাওয়াল জরিয়েই বের হলাম। ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখি তুর্য উঠে পরেছে। এই লোকটা একটা অসভ্য এমনিতে কখনও তাড়াতাড়ি উঠবে না। আজকে আমি এই অবস্থায় আছি আর আজকেই উনার তাড়াতাড়ি উঠতে হলো।
তুর্য আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমার ভীষণ লজ্জা হচ্ছে, তাকাতে পারছি না তার দিকে। ভেজা চুলের পানিতে মেঝে ভিজে যাচ্ছে তাই তাড়াতাড়ি করে আলমারি খুললাম। পিছন থেকে তুর্য এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো। জানতাম এমনই কিছু হবে এখন।

— এটা কি হচ্ছে! ছাড়েন আমাকে রেডি হয়ে নিচে যেতে হবে।

— না ছাড়া যাবে না। আর তুমি নিচে গিয়ে কি করবা! বাড়িতে এক ডজন সার্ভেন্ট আছে।

— লুচুগিরি বন্ধ করেন আর যেতে দিন। এমনিতেও রাতে ঘুমোতে পারি নি। মাথা ব্যথা করবে।

— দোষটা তোমার। এতো সুন্দর হতে বলেছিল কে শুনি! তুমি এতো সুন্দর না হলে তো আর বারবার রোমান্স করতে মন চাইতো না।

— এখন সব আমার দোষ!!

— Of course. এখন এতো কথা না বলে আমাকে রোমান্স করতে দাও।

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই তুর্য আমার ঠোঁট দুটো তার দখলে নিয়ে নিলেন। তার এক হাত আমার কোমড় আকড়ে ধরে রেখেছে আর অন্য হাত আমার চুলের গভীরে বিচরণ করছে। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর তুর্য আমার ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর আমাকে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে নিজের ভর আমার উপর ছেড়ে দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরলেন। আমিও তাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম।





সবাই একসাথে বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছে। আমি আর আম্মু সার্ভ করছি। তখন রুহান বললো,

— দোস্ত তুই তো বিয়ে করে নিলি। আমি আর কতোদিন এভাবে থাকবো! একা একা আর ভালো লাগে না।

— তো বিয়ে কর না। একটা সুন্দরী ভাবি আসুক আমার।

— হ্যাঁ এইবার তো করতেই হবে। একটা পরীর দেখা পেয়েছি। পরীটাকে আপন করে পেতেই হবে।

— বলিস কি মামা! কোথায় পেলি পরী ভাবিকে?

— পেয়েছি সময় হলে সব বলবো। কিন্তু এখন শুধু এটুকুই বলবো যে তোদের বাড়ি এসে আমার ভাগ্য খুলে গেছে।

— তাই নাকি। যাক আমার বন্ধুর ভাগ্য খুলেছে তাতেই আমি খুশি।

খাওয়া শেষে রুহান কোথাও বেরিয়ে গেলো। তখনই রায়ান সেখানে এসে পৌঁছালো।

রায়ান ভাইয়া এসেছে দেখে আমার খুশিও হচ্ছিল আবার ভয়ও হচ্ছিল। না জানি সেদিনের কথায় ভাইয়া কি মনে করেছে। ভয়ে ভয়ে তুর্য আর রায়ান ভাইয়ের সামনে গেলাম। রায়ান ভাই আমাকে দেখে একগাল হেসে বললেন,

— কেমন আছিস হীর?

— ভালো আছি। তোমার এই অবস্থা কিভাবে হলো? এক্সিডেন্ট করলে কিভাবে?

— সে কিছু না, একজন সাইকো লাভার আমার এই দশা করেছে। (তুর্যর দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে কথাটা বললেন)

রায়ান ভাইয়া কি বললেন আমি কিছুই বুঝলাম না।

— হীর তুমি রায়ানের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করো। (তুর্য)

— জ্বি আসছি আমি।

হীরকে ভিতরে পাঠিয়ে দিয়ে তুর্য বলতে শুরু করলো।

— কিছু কি পেয়েছো?

— হ্যাঁ। হীরের ঘর থেকে ডাক্তারের প্রেশক্রিপশন পেয়েছি। এখানে ডাক্তারের ইনফরমেশন আছে।

চলবে..

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ