#সূর্যস্নান
#পর্ব_অন্তিম পর্ব(প্রথমাংশ)
#Nishat_Tasnim_Nishi
জীবনপর ধূসর রং গুলো উড়ে গিয়ে রঙিন রং ঠাই করে নিয়েছিলো। সেখানে যাওয়ার প্রথম দিনেই শুরু হয়েছিলো আমার নতুন যাত্রা,!জীবনের সত্যিকার অর্থ তখনই বুঝেছিলাম,! নিশ্বাস নিলেই বেঁচে থাকা যায় না, বাঁচারও অনেকগুলো ধরন রয়েছে,!গত কয়েক টা মাস মৃতদের মতো জীবিত ছিলাম,অর্থাৎ নামমাত্র বেঁচে ছিলাম। মানুষ কতভাবেই বাঁচতে পারে,সবসময় তো আর জীবনে এক রকম পরিস্থিতি থাকে না। নানান রকরকম পরিস্থিতি চলে আসে জীবনে, প্রত্যেক টা পরিস্থিতির সাথেই খাপ খাইয়ে চলতে হয়,! আয়ানও আমার জন্য এক বিচিত্র পরিস্থিতি, আয়ানকে যেমন দেখতাম উনি মোটেও এমন নয়। মনে হয় যে উনার উপর আলাদা কোনো এক আস্তরণ রয়েছে যার কারণে উনার আসল অস্তিত্বকে চিনতেই পারি না। মাঝে মাঝে মনে হয় উনাকে আমি চিনি একদম রগে রগে চিনি,কিন্তুু আবার হঠাৎ মনে হয় উনাকে আমি মোটেও চিনি না,কখনো পরিচিতি ই হয় নি,! আমাদের বিয়ে টা দেখতে স্বাভাবিক হলেও আমাদের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিলো না। উনি স্বাভাবিক ছিলেন কিন্তু আমি নই। আমার আর উনার মধ্যে বিস্তর তফাৎ, একদম আকাশ-পাতালের মতো। আমার মনে সবর্ক্ষণ বিস্তার করতো নিদ্র,যে ছিলো আমার প্রথম ভালোবাসা ও স্বামী।উনাকে ভুলা আমার জন্য অসম্ভব,একদম অসম্ভব।আমি কখনো উনাকে ভুলতে পারবো না।
বিয়ের প্রথম দিনেই আয়ান আমাকে বলেছিলেনন,,’নূপুর, আমি সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করি।তোমার অতীত-বর্তমান সব আমার জানা,তুমি কেমন সেটাও আমার জানা। আমি এটা বলবো না যে নিদ্রকে ভুলে যাও কারন টা আগেই বলেছি আর সেটা হলো তুমি কেমন সেটা আমার জানা। আর মোস্ট ফেক্ট হলো আমি চাই না তুমি ওকে ভুলে যাও,ভালোবাসা ভুলা এতটাও সহজ নয়,!সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি, কারন রাত-দিন এক করেও তোমাকে ভুলতে পারি নি,উল্টো তোমাকে আরো বেশি মনে পড়েছে। ভালোবাসা কেনো এমন হয়? আর তোমার সাথে যা হয়েছে সেটা ছিলো তোমার নিয়তি, এরপর যা হবে সেটাও তোমার নিয়তি। তুমি ছিলে আমার ভাগ্যে তাই হয়তো এতকিছুর পরেও তুমি আজ আমার সাথে,!’ওই যে কথায় আছে না, যদি থাকে কপালে এমনিতেই আসিবে,!’নিদ্র তোমার কপালে ছিলো না,ছিলাম আমি। সেজন্যই হয়তো এত ট্র্যাজেডির পর আমি আর তুমি এক হয়েছি।।আর আমার মনে হয় আমাকে গ্রহণ করাই তোমার জন্য বেস্ট অপশন হবে,এমন নয় যে আমরা প্রেমিক-প্রেমিকা,আমরা কিন্তুু লিগ্যাল হ্যাসবেন্ড-ওয়াইফ। তাই তুমি ভাবো,সময় নেও,আমি অপেক্ষা করবো।
এটকু বলে উনি থামলেন,নিশ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক করে উনি আমার চোখে গভীর দৃষ্টি রেখে বললেন,,,
—“জানো,অপেক্ষা খুব খারাপ,!একদম অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করে না,!কিন্তু তাই বলে আমি তোমার জন্য এতবছর অপেক্ষা করেও আর এখন বুঝি তুমি আমার এত কাছে থাকা স্বত্বেও অপেক্ষা করতে পারবো না।
আমি সবসময় তোমার অপেক্ষায় থাকবো,! আর কী বলোবো,তুমি যথেষ্ট শিক্ষিত এবং ম্যাচিউর,!তাই একটু জ্ঞান প্রয়োগ করে ভেবে দেখো,! আর হ্যা,আমি তোমার প্রতি করুণা দেখাচ্ছি কী না সেটা সেদিন আমার দেওয়া উপহার টা খুললেই বুঝতে,!”
শেষ এটুকু বলেই উনি চলে যান আর বেশি কথা বলেন নি। সেদিন সারাক্ষণ ভেবেছিলাম উনি যা বলেছে সেসব ই তো ঠিক বলেছে,! সব বুঝেও স্বাভাবিক হতে পারলাম না।কেমন দ্বিধা কাজ করতো,! সবকিছু কী এত সহজ?
মাঝো মাঝে কষ্ট হয়,খুব কষ্ট হয়,!
এর কয়েকদিন পর, বাড়ী ফিরেই আয়ান এসে আমার সামনে দাড়ালেন,উনার হাতে ছিলো একটা শপিং ব্যাগ। ব্যাগের মধ্যে ছিলো দুটো নিল আর সাদা শাড়ী সাথে ছিলো দু ডজন ম্যাচিং চুড়ি,! আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম এসব কেনো?উনি জবাবে বলেছিলেন, ‘কোনো কারন নেই।আমার শখ ছিলো বিয়ের পর বউকে মাঝেমধ্যেই নীল শাড়ী কিনে দিবো তাই কিনে দিয়েছি। ”
—“তাহলে সাদা শাড়ী কেনো?”
–“তোমাকে খুশি করার জন্য,!মানে আমি যদি নীল শাড়ী দেই তাহলে আমি খুশি আর যদি সাদা শাড়ী দেই তাহলে তুমি খুশি।সেজন্য আমি দুটোই নিয়ে এসেছি,এখন তুমিও খুশি, আমিও খুশি।”
আমি তীক্ষ্ণ গলায় বললাম,,”সাদা শাড়ীর সাথে আমার খুশির কীসের সম্পর্ক?”
উনি পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বললেন,,”নিজেকে প্রশ্ন টা করলে জবাব পেয়ে যাবে।” আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম,পরে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমি সাদা জামা পরেছি।আর এতদিন সব সাদা জামা-কাপড় ই পড়েছি,! হঠাৎ কেমন অপরাধবোধ হচ্ছিলো,! সেদিনেরর পর আমি আর সাদা জাম পরি নি,ডিপ কালারের জামা পরেছিলাম।তবে শাড়ী দুটোর একটাও পরি নাই,! দেখতে দেখতে অনেকগুলো দিন কেটে গিয়েছিলো,এর মধ্যে আমাদের সম্পর্কটা কিছুটা স্বাভাবিক।আমি স্বামীর মতো উনার সাথে আচরণ না করলেও নরমাল আচরন ঠিকই করতাম। এর মধ্যে উনি আমার জন্য সেদিনের মতো এমন হাজারো জিনিস নিয়ে এসে এসে উনার ইচ্ছার কথা বলতেন।যেমন,মাঝরাতে আমাকে রেডী হয়ে রাস্তায় নিয়ে যেতেন,এরপর আইসক্রিম কিনে আমার হাতে ধরিয়ে অন্য হাত ধরে অনেক রাত পর্যন্ত হাটতেন।আমার কাছে বিষয়গুলো একদম অবাক লাগতো তবে ইন্টারেস্টিং ও লাগতো তাই কিছু বলতাম না। প্রায়ই উনার মধ্যে আমাকে পাওয়ার আকুলতা দেখতাম।সব বুঝেও চুপ করে থাকতাম।ধীরে ধীরে উনার প্রতি আমার মনের কোনে এক অনুভূতির জন্ম নেয় যার নাম মায়া। মায়া জিনিসটা খুব খারাপ,তবুও সেটাতে জড়িয়ে পরেছিলাম। মাস খানেক পেরিয়ে যায় আমাদের নতুন দাম্পত্য জীবনের,! আমাদের সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন না দেখে উনি একদিন নিজ থেকে বললেন তুমি কী আমার বন্ধু হবে?বন্ধুত্বের বন্ধনের কারনে হয়তো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। হয়েছিলোও ঠিক তাই উনার সাথে আমার আর কথা বলার সময় জড়তা কাজ করতো না, খুবই মিশুক হয়ে গিয়েছিলাম।
সেদিন সকাল ভোরেই উনি আমাকে টেনে বসিয়ে দিলেন।ঘুমঘুম চোখে উনার দিকে তাকালাম,! উনি অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে বললেন,,”তুমি সত্যিই আজকে কাঁদো নি,!ও মাই গড বিশ্বাস ই হচ্ছে না?”
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম,,”কী হয়েছে?”
উনি কেমন অঙ্গভঙ্গি করে বললেন,,”প্রতিদিন শেষ রাতেই তুমি নিদ্র বলে ফুফিয়ে কেঁদে উঠো।বিলিভ মি একটা রাত ও বাদ যায় নি,তুমি প্রতিদিনই কেঁদেছিলে,কিন্তুু কাল রাতে একটুও কাঁদো নি।আই কান্ট বিলিভ,হাউ ইস দিস পসিবল?”
আমি কিছুক্ষণ উনার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম,এরপর কোনো কথা না বলেই চুপ-চাপ উঠে চলে যাই। এ প্রথম আমি জানলাম যে আমি প্রতিদিন মাঝরাতে নিদ্রের জন্য কাঁদি,উনি আমাকে একবারও এ বিষয়ে বলেন নি। আচ্ছা,উনার কেমন লাগতো যখন আমি উনার সামনে নিদ্রের কথা বলতাম?নিশ্চই খারাপ লাগতো,হয়তো খুব খারাপ লাগতো,!
এরমধ্যেই একদিন উনার বন্ধুদের দাওয়াত দিয়েছিলেন বাড়ীতে আসার জন্য,,সেদিন আমি নিজ হাতে সব রান্না করেছিলাম আর সেটাই প্রথম ছিলো,আমি এর আগে (বিয়ের পর) রান্না করি নি। ভয়,জড়তা সব মিলিয়ে অন্যরকম টেনশনে ছিলাম।উনি কিন্তু আমাকে প্রত্যেকটা কাজে সাহায্য করেছিলেন,! সেদিন উনি সেই নীল শাড়ী টা বের করে আমার হাতে দিয়ে বলেছিলেন যে আজকে যেনো ওই শাড়ী টা পরি। আমি কিছু একটা ভেবে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলাম,এরপর সেদিন শাড়ী টা পরে ছিলাম সাথে হালকা পাতলা সাজগোজ ও দিয়েছিলাম। তৈরী হয়ে রুমে আয়নার সামনে দাড়িয়ে ছিলামম তখনই উনি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে ছিলেন।আমার দিকে উনার নজর পড়তেই উনি থমকে গিয়েছিলেন,উনি ধীরে ধীরে এক পা এক পা করে আমার সামনে এসে দাড়ালেন।আমি উনার দিকে তাকাচ্ছিলাম না কেমন জড়তা কাজ করছিলো,উনি তখন আমার হাত চেঁপে ধরলেন,আমি সাথে সাথে উনার দিলে তাকালাম। আমার হাত ধরে উনি রুমের বাহিরে নিয়ে যাচ্ছিলেন, আমি বারবার জিজ্ঞেস করতে যেয়েও করতে পারি নি,গলা দিয়ে কথা ই বের হচ্ছিলো না।
উনি কোনো কথা না বলে সোজা আমাকে নিয়ে ছাদে চলে আসলেন,তখন কড়া রোদ পড়ছিলো।আমাকে ছাদের দোলনাতে বসিয়ে দিলেন,এরপর চুলের খোপা খুলে দিলেন, আমি শুধু অবাক নয়নে উনার কান্ড দেখছিলাম।উনি ফোন বের করে ফটাফট দুটো ফটো ক্লিক করে নিলেন,! এরপর ফোন ঘাটাঘাটি করে বিরবির করে বললেন,পারফেক্ট! আমি উঁকি দিতেই দেখলাম ফোনের মধ্যে আমার একই পোজের দুটো ছবি।একটা এ মাত্র তোলা,আর দ্বিতীয় টা অনেক অনেক আগের। গায়ের জামা টা দেখে মনে হলো এটা হয়তো আমার ক্লাস এইটের সময়ের,!আমি আরেকটু ঝুঁকতেই উনি ফোন সরিয়ে ফেললেন। আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,,”এটাতো আমার ছোটবেলার ছবি,!আপনি এটা কোথায় পেলেন আর এমন কোনো ছবি আমি তুলেছি বলে তো মনে হয় না।”
উনি কথাটা এড়িয়ে যাচ্ছিলেন দেখে আমি জোরাজুরি করলাম,উনি তখন এদিক-ওদিক তাকালেন।চোখ বন্ধ করে গাঢ় নিঃশ্বাস ফেললেন,আমার চোখে চোখ রেখে বললেন,,
—“আমি যখন টিনেজের ছিলাম তখন এক মায়াপরীর গভীর মায়ায় জড়িয়ে গিয়েছিলাম। যে দেখতে একদম জান্নাতের হূরের মতো। জানো কখন তার গভীর প্রেমে পড়েছিলাম,!এক রৌদ্রময় দুপুরে ছাদে গিয়েছিলাম জামা কাপড় নিয়ে আসার জন্য,কে জানতো সেদিন আমার কপালে সর্বনাশ ছিলো। ছাদের শেষ সিড়িতে পৌঁছাতেই থমকে গিয়েছিলাম,সেখানে যেতেই দেখেছিলাম ছোট্ট এক পরী নীল জামা পরে ছাদে বসে গায়ে রোদ মাখছে,সূর্যের ঝলমলে আলো সরাসরি ওর ওপর পড়ছিলো। আমি ভালো করে তাকাতেই দেখেছিলাম ও চুলগুলো এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে বসে আছে,চুলগুলো পিঠ ছাড়িয়ে কোমড় অবধি ঠেকিয়েছে। ওকে দেখে মনে হয়েছিলো ও হয়তো সূর্যের আলোয় গোসল করছে।আমি এক ছুটে নিচে চলে এসেই আম্মুর ফোন নিয়ে আবারো এক ছুট দিয়ে ছাদে চলে আসি।আর তখন সে পরীর সে অবস্থার ছবি তুলে নিয়েছিলাম,ব্যাস!”
আমি অবাক হয়ে উনার কথা শুনছিলাম,,উনার কথাগুলো শুনতেই আমার মষ্তিষ্কে সেদিনের ঘটনা টা অস্পষ্টভাবে নাড়া দিয়ে উঠলো।আমি ক্ষীণ কন্ঠে বললাম,,
—“বাকিটুকু বললেন না?পরীটার সুখ আপনার সহ্য হয় নি তাই ওই পরীকে ধমক দিয়ে নিচে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন,!”
উনি হেসে দিলেন,হাসিমুখেই বললেন,,
—“আরে আমি কী করবো?পাশের বাসার ছাদ থেকে কয়েকটা ছেলে তখন তোমার দিকে কুদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো,!চোখ দিয়েই গিলে খাচ্ছিলো,তাই তো তোমাকে ধমক দিয়ে নিচে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।”
আমি মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকালাম,তখন উনি পিছন থেকে আমার কানের কাছে এসে বললেন,,”রাগ করে কোনো লাভ নেই,আমি কোনো তোমার রাগ ভাঙ্গাবো না!”
উনার কথা শেষ হতেই কানের মাঝে অদ্ভুত সুর ভেসে আসলো,দ্বিতীয়বার শুনতেই বুঝতে পারলাম যে কেউ মুখ দিয়ে শিশ দিচ্ছে।দুজনেই চমকে পিছনে ফিরতেই দেখলাম যে কতগুলা ছেলে-মেয়ে একসাথে শিশ বাজাচ্ছে,উনার মুখে তখন লজ্জার আভা আর আমার মুখে অবাকতা,!উনারা সবাই একসাথে বলে উঠলো,,–“কি মাম্মা,কী চলে?আমরা এসে আপনাদের পুরো ঘর হন্নহন্ন হয়ে খুজতেছি আর আপনারা এখানে র-র-রোমেন্স করতেছেন,কাহিনী কী,!”
উনি সম্পূ্র্ণ কথাটা এড়িয়ে গিয়ে উনাদের বললেন,,”কীরে তোরা চলে এসেছিস,তাও এত বাহিনী নিয়ে?তোদের দেখে মনে হচ্ছে তোরা যদি পারতি তাহলে রাস্তা থেকেও তুলে আনতে,!পুরো ভার্সিটির পোলাপাইন নিয়ে এসেছিস নাকি?”
উনারা সবাই একসাথে কথা বললেন, এত জন একসাথে কথা বলায় ঠিক বুঝতে পারলাম না,মনে হচ্ছিলো যেনো ঝগড়া করছে। উনি সবাইকে হাত উঠিয়ে থামিয়ে বললেন,,”চুপ কর,প্লিজ।মানুষ দেখলে ভাববে পাওনাদার রা হানা দিতেছে।”
উনি ইশারায় আমাকে নিচে আসতে বলে উনাদের কথার ভাজে ফেলে নিচে চলে আসলেন,! সেদিন উনাদের সবার সাথে আমি খুব আনন্দ করেছিলাম,সবাই এত মিশুক আর দুষ্টু যে বলার বাহিরে,!সেদিন আমি নিজেকেই চিন্তে পারি নাই,অনেকদিন পর সেদিন মন খুলে হেসেছিলাম।উনার এত এত ফ্রেন্ডস এসেছিলো,আমি সবার সাথেই কথা বলেছিলাম, এমনকি ছেলেদের সাথেও। ছেলেগুলোর মধ্যে যে কয়েকজনের স্বভাব-চরিত্র বাজে ছিলো সেটা আমি জানতাম না।যে যেটা বলতো সেটাই শুনতাম,এটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাড়ায়,! চিকন গড়নের একটা ছেলে এসে আমাকে বললো, ভাবি দুই গ্লাস জুস আনুন।খেতে খেতে আপনার সাথে পরিচিত হবো,!’ আমি আচ্ছা বলে আনার জন্য উঠতেই উনি আবারো বললেন,,”আরে ভাবি যাওয়ার দরকার নেই।এখানেই তো আছে,!’ এ কথা বলে উনি আমার হাতে এক গ্লাস জুশ দিয়ে উনি আরেক গ্লাস হাতে নিলেন,! জুশটুকু মুখে দিতেই অন্যরকম স্বাদ অনুভব করলাম। আমি গ্লাস টা রাখতে নিতেই উনি জোরাজুরি করে পুরো জুশ খাইয়ে দিলেন,! সবটুকু খেতেই আমার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো, আমি নেশাক্ত চোখে সামনের ছেলেটির দিকে তাকালাম, ছেলেটির মুখে অন্যরকম হাসি দেখছিলাম। আমি হাত উঠিয়ে ওর গালে রাখলাম,গোর লাগা কন্ঠে বললাম,,”উফফ,কী সুন্দর আপনি,আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে।আপনার গাল দুটু টেনে দিতে ইচ্ছে করতেছে,!”
ছেলেটি হেসে বললো,,”চলো তোমার সব ইচ্ছা পূরন করে দিবো। ওইদিকে আসো,!”
আমি খুশিতে গদগদ হয়ে ওর হাত ধরে স্টোর রুমের দিকে হাটা দিলাম।
.
.
.
.
চলবে?