সুচরিতা পর্ব-১২+১৩

0
683

#ধারাবাহিক গল্প
#সুচরিতা
পর্ব-বারো
মাহবুবা বিথী

সুচরিতা কিচেনে যাওয়ার পর আতিক হিমেলকে বললো,
——শুনলাম তোমার শ্বশুর খুব অসুস্থ?
——হুম। তবে এখন সামলিয়ে উঠেছে।
সোহেল সে সময় হিমেলকে বললো,
—–এখনও সেরকমভাবে সুস্থ হয়ে উঠেনি। আমি গতকাল গিয়ে দেখে এসেছি। এখনও বাঁ পাশটা কিছুটা অবশ হয়ে আছে।
—–তা ঠিক। তবে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি করলে সামলে উঠবে।
এ কথা বলে রোমেল কথার প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে সখিনাকে বললো,
——দেখতো সুচরিতার চা বানাতে আর কতক্ষণ লাগবে। আতিকদের দেরী হয়ে যাচ্ছে। আজ তো জুম্মাবার।
এমন সময় সুচরিতা চা নিয়ে আসলো। আতিকের হাতে চায়ের কাপ তুলে দিলো। উনি কাপে চুমুক দিয়ে সুচরিতাকে বললো,
—–তোমার বাবা নাকি খুব অসুস্থ?এখন কেমন আছেন?
——হুম। আগের থেকে অনেকটা রিকভারি করেছে।
——তা, তোমাদের সংসার চলছে কিভাবে? তোমার ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচ,সুসমিতার বিয়ের খরচ এসবতো পরে আছে। আবার তোমার বাবাও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ভাই দুটো নিজের পায়ে দাঁড়াতে বহুত দেরী। তোমার মা এসব ম্যানেজ করছেন কিভাবে?
আতিকের কথার সুত্র ধরে সুচরিতার শাশুড়ী হিমেলকে বললো,
——-হাসপাতালের খরচ তুই কিছু দিয়ে দিস। সওয়াব হবে।
——(একটু বিরক্ত হয়ে)না,মা আমাকে টাকা দিতে হবে না। আমার শাশুড়ী উনার জমি বিক্রি করে চিকিৎসার টাকা যোগাড় করেছেন। আর আমি দেবো কোথা থেকে?
সবার সামনে এভাবে ওর শ্বশুরবাড়িকে ছোটো করে কথা বলাতে হিমেল ওর মায়ের উপর বিরক্ত বোধ করলো। তাই একটু ঝাঁঝ নিয়ে বললো
—–মেজ ভাইয়ের বিদেশে যাওয়ার সমস্ত খরচ তো আমাকেই বহন করতে হলো। আমি টাকা পাবো কোথায়?
সুচরিতাও আচমকা আতিকের এসব কথা শুনে অবাক হয়ে গেল। মানুষ এতোটা কান্ডজ্ঞানহীন হয় কিভাবে? কোথায় কিভাবে কথা বলতে হয় সেই শিক্ষাটাও নাই। নিজেকে ওরা কি ভাবে? আর শাশুড়ী মাও এমনভাবে বললেন যেন করুণা করছেন। তার ছেলে দানখয়রাত করলে সওয়াব হবে। মানুষ মানুষকে করুণা করার প্রশ্নই আসে না। কারণ পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ একমাত্র আল্লাহপাকের করুণায় বেঁচে থাকে। এরমাঝে এটা ভেবে ভালো লাগছে হিমেল যে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে সেই বিষয়টা ও কাউকে জানায়নি। জানতে পারলে মনে হয় সুচরিতার অপমানের ষোলকলা পূর্ণ হতো। তাই ও মনে মনে ভাবলো সুযোগ পেলে এ বাড়ির মানুষগুলো যেমন ওকে অপমান করতে ছাড়ে না তেমনি ও আজ আতিককে একটা জুৎসই উত্তর দিবে।
——দুলাভাই আমার মায়ের সংসার কিভাবে চলবে সেটাতো আমার জানার কথা না। আর আপনিও তো আমার মায়ের সংসার দেখভাল করবেন না তাই আপনারই বা খোঁজ নেওয়ার দরকার কি? এছাড়া আমার মাতো আপনাকে বলেনি যে সে তার সংসার চালাতে পারছে না, তাই না?
—–তুমি মনে হয় আমার কথাটায় মাইন্ড করেছো। আসলে তুমি যেভাবে মিন করছো আমি সেভাবে বলিনি।
—–না আমি কিছু মনে করিনি। আপনি বললেন তাই আমিও উত্তরটা দিলাম।
কথার প্রসঙ্গ ঘুরাতে শাশুড়ীর দিকে তাকিয়ে সুচরিতা বললো,
——মা, আজকে দুপুরে কি রান্না হবে?
আতিককে বলা সুচরিতার কথাগুলো শুনে মনে মনে প্রচন্ড রেগে আছেন। হাজারো হোক আতিক এ বাড়ির জামাই। তাই একটু ঝাঁঝ নিয়ে বললেন,
——আজকে এতোদিন হলো এ বাড়িতে এসেছো কি রান্না হবে সেটাও শিখে উঠতে পারোনি। মাঝে মাঝে নিজের মতো করে রান্না করা জানতে হয়। সবসময় আমাকে কেন বলে দিতে হবে? বাপের বাড়ি থেকে কিছুই তো শিখে আসোনি। সব তো আমাকে শিখিয়ে নিতে হচ্ছে।
সুচরিতা আর কথা বাড়ালো না। শেষে না জানি অশান্তি লেগে গেলে হাসপাতালে যাওয়াটাই ভেস্তে যায়। ও নিজের রুমে চলে গেল। এমন সময় কারিমা বললো,
——মা,আপনার দুপুরের রান্না নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। আমি সামলে নিবো।
সোহেল কারিমার দিকে তাকিয়ে বললো,
—–বাজারের ব্যাগটা দাও। মায়ের জন্য টাটকা গরুর মাংস নিয়ে আসি। আতিক ভাই দুপুরে খেয়ে যান।
——আর একদিন এসে খাবো। আজ আমার একটু তাড়া আছে।
সাবেরার দিকে তাকিয়ে বললো,
—–তোমার গোছগাছ করা হয়েছে?
তুশি তাপসী তোমরা তোমাদের বইখাতা গুছিয়ে নাও। ভাবি রাজন কি ঘুমিয়ে আছে?
—–হুম। বাকি দিনগুলোতে স্কুল থাকার কারনে অনেক সকালে উঠতে হয়। তাই ছুটির দিনগুলোতে দেরী করে উঠে।
——ভাবি ওকে এখন ডেকো না।
——বেলা এগারোটা বাজে। সখিনা ওকে ডেকে তুলো।
—–সমস্যা নেই ভাইয়া। ছেলেটা ঘুমাচ্ছে। শুধু শুধু ঘুমটা ভাঙ্গিয়ে দিও না। এছাড়া ফোনে তো প্রতিদিন কথা হয়। আমরা এবার আসি। আতিক আবার জুম্মার নামাজ পড়তে যাবে।
কারিমার দিকে তাকিয়ে সাবেরা বললো,
—–তোমার মেয়েও কি ঘুমুচ্ছে।
—–হুম।
—–যতদিন স্কুল শুরু না হয় ততদিনই মজা। আরাম করে ঘুমাক। এরপর শুরু হলে তো একটানা চলতেই থাকবে।
রোমেল সবার দিকে তাকিয়ে বললো,
—-তোমাদের একটা কথা জানানো হয়নি। আমার অফিসার হিসাবে প্রমোশন হয়েছে।
——ভাইয়া এতো ভালো খবর।
—–সাবেরা আগে পুরোটা শোন। আমার যশোরে বদলি হয়েছে।
—–তুমি ভাবি আর রাজনকে নিয়ে যাবে?
—–তাতো অবশ্যই। আমার আলসার আছে। হোটেলের খাবার আমার সইবে না।
—–আমার তো আর চিন্তার শেষ নাই। একজন যাচ্ছে বিদেশে। একজন যাচ্ছে যশোরে।
—–মা মন খারাপ করো না। বদলি হতে চাইছিলাম না বলে প্রমোশন হচ্ছিলো না। তাই এবার আর না করিনি। এভাবে একপোস্টে কাজ করে আমি হাঁপিয়ে উঠেছি।
আতিক আর সাবেরা রওয়ানা দেওয়ার সময় সুচরিতার খোঁজ করছিলো। হিমেল সুচরিতার খোঁজে নিজের রুমে আসছিলো। সুচরিতা হিমেলের পায়ের শব্দে তাড়াডাড়ি চোখের পানি মুছে ফেললো। হিমেল ওর চোখের দিকে তাকিয়ে ঠিক বুঝে নিয়েছে। এতোক্ষণ ঘরে বসে ও কেঁদেছে।
—–আপু আর ভাইয়া চলে যাচ্ছে। তোমার খোঁজ করছে।
সুচরিতা বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ওদের বিদায় জানিয়ে আসলো। হিমেল ওদের বিদায় দিয়ে ওয়াশরুমে গোসল করতে ঢুকলো। আজ জুম্মাবার। নামাজে যেতে হবে। যতই মন খারাপ থাক সংসারের দায়িত্ব তো পালন করে যেতে হবে। সুচরিতা ভাবে ওর সাথেই কেন এমন হয়। এ সংসারে আরো তো মানুষ আছে। অথচ ওর বেলায় সবাই কেন এতো নেতিবাচক আচরণ করে। সমস্যাটা কি ওর? নাকি ওর ভাগ্যের। এসব ভাবতে ভাবতে ওয়াডোর্ব থেকে হিমেলের পাঞ্জাবী আর পায়জামা বের করে বিছানায় রাখলো। হিমেল ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে লুঙ্গিটা বারান্দায় মেলে দিলো। তারপর পাঞ্জাবী আর পায়জামা পড়ে সুচরিতাকে স্বাভাবিক করতে ওর দিকে তাকিয়ে বললো,
——আমায় একটু আতর লাগিয়ে দাও।
সুচরিতা পাঞ্জাবিতে আতর লাগাতে গেলে হিমেল ওর কোমরটা আলতো করে জড়িয়ে ধরে নাকে নাক ঘষে বললো,
——মহারানির মনটা কি খুব খারাপ?
—–চামচিকাও একটা পক্ষী আর আমিও একটা মানুষ। আমার তো মনই নাই। তার আবার ভালো খারাপ।
——শোনো বিয়ের পর দুটো মন দুটো শরীর যখন একসাথে মিশে যায় তখন একজনের মন খারাপ হলে আরএকজন ঠিক বুঝতে পারে। তেমনি আমিও ঠিক বুঝতে পারি কখন তোমার মন খারাপ হয়। কি করবে বলো,অন্তত আমার মুখের দিকে তাকিয়ে একটু মানিয়ে নাও।
—–তোমার নামাজে দেরী হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি মসজিদে রওয়ানা দাও।
হিমেল সুচরিতার কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে মসজিদের দিকে রওয়ানা হলো। সুচরিতা মনে মনে ভাবে ওতো সর্বক্ষণ মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু যেখানে সংসারের রাজনীতির বালির চর পড়ে সেখানে ভালোবাসার নদীর স্রোত ও কিভাবে আনবে? তাই সুচরিতার মনের ভালোবাসার পাড় গুলো ভেঙ্গে ক্ষোভের নদীতে বিলীন হলো। আর বিদ্রোহের ঢেউগুলো আস্তে আস্তে ফুঁসে উঠতে লাগলো। এখানে কোনো ভালো কাজের প্রশংসা হয় না। ও আরো অবাক হয় রান্না খারাপ হলে নিন্দে করতে এক মুহুর্ত দেরী হয় না। আবার ভালো হলে কারো মুখ দিয়ে এতোটুকু প্রশংসা বের হয় না। আর যদিও বা হয় সেটা শাশুড়ী মায়েরই প্রশংসা হয়।

নামাজ পড়ে এসে সবাই দুপুরে খেতে বসেছে। আজ দুপুরের সব রান্না কারিমা রেঁধেছে। কারিমা ওর রুমে বসে জেবাকে খাওয়াচ্ছে। আজ ছুটির দিন তাই সখিনাও ড্রইং রুমে রাজনকে খাইয়ে দিচ্ছে। রাজন কার্টুন দেখছে। সুচরিতা টেবিলে খাবার বেড়ে দিলো। খেতে বসে সোহেল ওর মাকে বললো,
——মা, দেখো কারিমা ঠিক তোমার মতো করে মাংস রান্না শিখে গেছে। একদম অমৃতের মতো লাগছে। আর কচুর লতিটা চিংড়ী মাছ দিয়ে রান্নার স্বাদ গালে লেগে আছে। সালাদটাও অপূর্ব হয়েছে। সালাদ আমি বানিয়েছি।
রোমেল খেতে খেতে বললো,
——স্বাদ হয়েছে ঠিক কিন্তু পুরোপুরি মায়ের মতো হয়নি।
ওদের কথায় বিরক্ত হয়ে সুচরিতার শাশুড়ী বলে উঠলো,
——খাওয়ার সময় এতো কথা কিসের। রান্না ভালো হয়েছে তো পেটপুরে খা। তোদের বকবকানি শুনে মাথাটা ধরে গেল।
হিমেলের প্লেটের দিকে তাকিয়ে বললেন,
——প্লেট তো খালি। তোকে আরো দুটো গরুর মাংস তুলে দেই?
——না,মা আর খাবো না। প্রেসারটা একটু বেড়েছে।
সুচরিতা ওর মেজ ভাসুরের মুখে নিজের বউয়ের রান্নার প্রশংসা শুনে মনে মনে ভাবলো এই একজন মানুষ এ বাড়িতে সব ক্ষেত্রেই তার বউকে উঁচুতে রাখা চাই। হিমেল কোনোদিনও এভাবে ওর রান্নার প্রশংসাতো দূরে থাক ওর কোনো কাজের প্রশংসা সবার সামনে করতে পারবে না। হিমেলটা যেন কেমন কখনই সুচরিতার কোনো প্রশংসা করে না। ওর সব প্রশংসা বেডরুমে। বড় ভাসুর সবার সামনে এভাবে ওর বড়জায়ের প্রশংসা করে না। তাও কালেভদ্রে করে থাকে। ওদের সবার খাওয়া হয়ে গেলে তিন জা খেতে বসলো। সুচরিতা ওর প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে গরুর মাংসের গন্ধ নিতে পারে না। তাই প্লেটে একটু কচুরলতি তুলে নিলো। পাশে একটু বেশী করে সালাদ নিলো। কারিমা ওকে সালাদ তুলে নিতে দেখে বললো,
——-খুব বেশী নিও না। তোমার ভাই আমার জন্য এই সালাদ বানিয়েছে।
সখিনা কারিমার কথা শুনে বললো,
——তুমি মনে হয় জানো না,যৌথ পরিবারে কারো জন্য কোনো কিছু একক বানানো যায় না।
——-জানি ভাবি। আমি যৌথ পরিবারেই বড় হয়েছি।আসলে আমারও শরীর ভালো না। জেবাটা সারা রাত বেস্ট ফিডিং করে। সকালে গলাটা শুকিয়ে আসে। তাই ডাক্তার বেশী করে সালাদ খেতে বলেছে। আমি বানানোর সময় পাই না বলে আপনার ভাই বানিয়ে দিয়েছে।
সুচরিতাকে এভাবে বলা ঠিক হয়নি এটা বুঝতে পেরে কারিমা আবার পালিশ দেওয়ার জন্য আদিখ্যেতা করে বললো,
——- সবাই আজ মাংসটা খেয়ে খুব প্রশংসা করেছে। সুচরিতা একটু খেয়ে দেখতে পারতে?
——-না মেজ ভাবি খাবো না। পরে বমি হলে শরীর দুর্বল লাগবে।
——কারিমা মাংসটা তেমন আহামরি হয় নাই। তুমি রেঁধেছো বলে তোমার বরের মুখে বেশী ভালো লেগেছে।
——ভাবি আপনার মনে হয় হিংসে হচ্ছে। (টিপ্পনী কেটে)
——হিংসে হবে কেন?তুমি তো সেদিন এ বাড়িতে বউ হয়ে আসলে। এতোদিন রান্না তো আমিই করেছি। মেজ ভাই তো ঠিকই পেটপুরে খেয়েছে। তখনতো এভাবে প্রশংসা করতে শুনিনি। তাই বললাম, তুমি রেঁধেছো বলে ওর মুখে অমৃতের মতো লেগেছে।

নিত্য খাবার টেবিলে এসব খুনশুটি হজম করে খাওয়া শেষ করতে হয়। সুচরিতা অবাক হয় একটু সালাদ না হয় প্লেটে বেশী তুলে নিয়েছিলো তাতেই ওর মেজ জা কিভাবে বললো ওর জন্যই নাকি সালাদ বানানো হয়েছে। এমন সময় হিমেল পানি খেতে খাবার টেবিলে এসে ওদের কথোপকথন শুনে বললো,
——তোমরা দেখি টেবিলে বসে শিখিয়ে দেওয়া বুদ্ধিজীবিদের মতো টক শো করছো। যে টকশোতে ক্ষমতার পাল্লাটাকে আরো ভারী করা হবে কিন্তু সাধারণ জনগনের কোনো উন্নতি হবে না। দ্রব্যমুল্যের দামের ঠেলায় নিম্মবিত্তের মানুষগুলোর ঘরে খাবার নেই সেখবর রাখার দরকার ঐ সব লেজুড়বৃত্তি বুদ্ধিজীবিদের দরকার নেই।

হিমেলের কথা শুনে সবাই চুপ মেরে গেল। সুচরিতাকে তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে রুমে আসতে বলে হিমেল চলে গেল। কারিমা সুচরিতাকে খোঁচা দিয়ে বললো,
——যাও যাও তাড়াতাড়ি যাও তোমার বরের তর সইছে না।
——আমার বরের যত আদর আহ্লাদ তো বেডরুমে আর তোমার বর সবখানেই তোমায় আদর দিয়ে বেড়ায়। খাবার টেবিল থেকে বাথরুম সব জায়গাতেই তুমি আদরে মাখোমাখো হয়ে থাকো।

এ কথা বলে সুচরিতা মনে মনে ভালো মানুষ এতো নিলজ্জ কিভাবে হয়। অথচ হিমেল ওর ভাসুরের বাইরে যাওয়ার সমস্ত খরচ বহন করলো। এ নিয়ে তো সুচরিতা কোনো উচ্চবাচ্য করলো না। সেই কারনে হলেও তো কারিমার উচিত না সুচরিতার পায়ে পা লাগিয়ে কথা শোনানোর চেষ্টা করা। আসলে সুচরিতা কখনও কারিমার মতো সংকীর্ণ মনের মানুষ হতে পারবে না। কাজের খালা এঁটো বাসনগুলো ধোয়ার জন্য তুলে নিয়ে গেল। কারিমা সুচরিতাকে কাজের খালাকে ভাত দেওয়ার কথা বলে নিজের রুমে চলে গেল। সুচরিতাও কাজের খালাকে ভাত দিয়ে রুমে চলে আসলো। ওকে তো আবার হাসপাতালে যেতে হবে।

একটু রেস্ট নিয়ে আসরের নামাজ পড়ে রেডী হয়ে শাশুড়ীর রুমে গিয়ে বের হওয়ার কথা বলতে গিয়ে দেখলো ওর মেজ ভাসুর আর জা শাশুড়ী মায়ের ঘরে বসে আস্তে আস্তে কথা বলছে। সুচরিতাকে দেখে চুপ হয়ে গেল। শাশুড়ী মায়ের ও মুখটা যেন আষাঢ়ের মেঘের মতো হয়ে গেল। ওর বুঝতে বাকি রইলো না এতোক্ষণ উনার ব্রেনটাকে ওর বিরুদ্ধে ওয়াশ করা হয়েছে। ও এসব গায়ে না মেখে শাশুড়ীকে বলে হিমেলের সাথে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। তবে এতোটুকু ও জানে বাড়ি ফেরার পর ওকে অনেক কিছুই ফেস করতে হবে। তবে ইদানিং এগুলো অনেকটা গা সওয়া হয়ে গেছে।

চলবে

#ধারাবাহিক গল্প
#সুচরিতা
পর্ব-তেরো
মাহবুবা বিথী

সুচরিতা আর হিমেল চলে যাওয়ার পর কারিমা ওর শাশুড়ী মাকে বললো,
——মা আপনি কি খেয়াল করেছেন ইদানিং সুচরিতা নিজের মতো চলতে পছন্দ করে? সকালে আতিক ভাই যখন রান্নার প্রশংসা করছিলো আমি সহজ সরলভাবেই ভাইয়ার কথায় সায় দিয়েছিলাম। আসলে আমি ভাবলাম সুচরিতা রান্না করা আর আমার রান্না করা সবই তো একই ব্যাপার। আমরাতো রান্নার ট্রেনিংটা আপনার কাছ থেকে নিয়েছি। আর আপনার ছেলেও তো বললো আপনার কাছেই আমাদের সবকিছু শেখা। আমরা আপনার ট্রেনিংটা কাজে লাগাতে পেরেছি এটা ভেবে আমাদের খুশী হওয়া উচিত। কিন্তু সুচরিতার এটা ভালো লাগলো না। কৌশলে এসে বুঝিয়ে দিলো খাবারটা ও বানিয়েছে। আগে তো আমার আর বড় ভাবির সাথে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করতো আর এখন ও আপনার সাথে ও টেক্কা দিতে চায়। খেয়াল করে দেখেন ও এখন আপনাকে ও ছাড়িয়ে যেতে চায়। আজকে তো মনে হয় আঙ্কেলকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিবে। ছোটো ভাই মুখে আপনাকে যাই বলুক শ্বশুরের চিকিৎসা খরচ ঠিকই দিয়েছে। মিলিয়ে নিয়েন আমার কথা।
—–মা, পাখি উড়ার আগেই ডানাটা ছেটে দিতে হয়। আমি ওর সাথে একমত। টাকা ও দিয়েছে কিন্তু তোমার কাছে অস্বীকার করেছে। তোমার ছোটো ছেলেটা একটা স্ত্রৈণ।
——কি সোহেল কার ডানা ছেটে দিবি?
——ভাইয়া তুমি কখন ঘুম থেকে উঠলে?
——আসরের আযান শুনে ঘুম ভাঙ্গলো। নামাজ পড়ে ভাবলাম অনেক দিন মায়ের সাথে গল্প করা হয় না। মায়ের সাথে একটু গল্প করি।
শাশুড়ী মা কারিমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
—–কারিমা,চা বানাও। সাথে মুড়ি মাখা দিও।
জেবার কান্না শুনে সোহেল বললো,
—-এই দেখতো, জেবার মনে হয় ঘুম ভাঙ্গলো।
কারিমা জেবাকে সোহেলের কাছে দিয়ে চা বানাতে চলে গেল। রোমেল সোহেলকে বললো,
——শোন, মেয়েরা বাঁকা হাড় দিয়ে তৈরী হয়। ওদেরকে কখনও সোজা করার চেষ্টা করতে হয় না। বরং বাঁকা থাকলেই ভালো। ওকে নিজের মতো থাকতে দিলে বেশী লাভ হয়। সোজা করতে গেলেই ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
——তুমি কার কথা বলছো আমি তো বুঝতে পারছি না?
—–তুই ঠিকই বুঝেছিস। মা আমি কি ভুল বললাম?
এতোক্ষণ ধরে কসরত করে কারিমা যে কান ভাঙ্গানি দিলো সেই কারনে সোহেলের মায়ের মেজাজ এমনিতেই বিগড়ে আছে। আসলে সকালে ঐ ভাবে আতিকের সামনে সুচরিতার এভাবে কথা বলাটা উনিও পছন্দ করেননি। তবে বিষয়টা নিজের মধ্যেই রাখতে চেয়েছিলেন। সুযোগ বুঝে উনি সুচরিতাকে বিষয়টা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কারিমা ঐ প্রসঙ্গটা এনে ছাই চাপা আগুনটাকে মনে হয় জ্বালিয়ে দিলো।
—–তোর কথা মানছি কিন্তু আমার ছেলেটা যদি হাতছাড়া হয়ে যায় তখনতো কিছু করার থাকবে না। আর তুই সুচরিতাকে যতটা সহজ সরল ভাবছিস ও কিন্তু ততটা নয়। নিজের বুঝটা ভালোই বুঝে। তুই যা কিছুই ওকে বলবি ও নিরবে শুনবে কিন্তু ও নিজে যেটা বুঝবে ও সেটাই করবে।
—–হিমেল যদি হাতছাড়া হতো তবে এতোদিনে হয়েই যেতো। আমাদের পরিবারের দায়িত্বগুলো তো ঠিকঠাক পালন করছে। সোহেল, তোর বিদেশ যাওয়া উপলক্ষে ও কতগুলো টাকা খরচ করলো।
—–ভাইয়া আমি তো ওর টাকা নেইনি। আমার ভাগের লাভের টাকা থেকে দিতে বলেছি।
——তোকে এটাও মানতে হবে ঐ ব্যবসায় পুরো শ্রমটা ও একাই দেয়। তারউপর তুই বউ বাচ্চা রেখে যাচ্ছিস। সেখরচটাও ওকে বহন করতে হবে।
রোমেলের কথাগুলো সোহেল কিংবা সুচরিতার শাশুড়ী দু,জনের কারোরই খুব একটা পছন্দ হয়নি। তাই ওদের মা খনার বচন কেটে বললেন,
“অতি বড় হইও না ঝড়ে পড়ে যাবে
অতি ছোটো হইও না ছাগলে মুড়োবে?
উনার দুই ছেলেই এই কথার অর্থ বুঝে নিলো। কারিমা আর সখিনা এমন সময় চা আর মুড়িমাখা নিয়ে শাশুড়ীর ঘরে প্রবেশ করলো।

ওদিকে সুচরিতা হাসপাতালে পৌঁছে ওর মায়ের হাতে বিশ হাজার টাকা তুলে দিলো। কিন্তু মায়ের মুখ দেখে ও ঠিক বুঝতে পেরেছে মা হয়তো আর একটু বেশী আশা করেছিলো। আসলে আইসিইউয়ের বিল তো বেশী আসে।তার সাথে পরীক্ষা নিরীক্ষা সব মিলিয়ে একলক্ষ টাকা বিল এসেছে। ওর বাবা রিটায়ার মানুষ। কোনো রকমে একটা মাথাগোঁজার ঠাঁই করেছে। তাও বাড়িটা পুরো কমপ্লিট করতে পারেননি। জিনিসপত্রের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। হুহু করে টাকা খরচ হয়ে যায় কিন্তু কাজের কাজ তেমন হয় না। এখন ব্যাপারটা এমন হয়েছে ব্যাগ ভর্তি টাকা আর পকেট ভর্তি বাজার। জীবন চালানো বড় মুশকিল। আশি টাকা দরে চাল খেতে হচ্ছে। ওর বাবা মোটা চাল খেতে পারে না। আবার প্রেসারের কারনে অলিভ ওয়েল দিয়ে তরকারি রান্না করতে বলেছে ডাক্তার। অথচ পার লিটার অলিভওয়েল বারোশত টাকা। তাই ওর বাবা ওলিভওয়েলের পরিবর্তে সানফ্লাওয়ার ওয়েল খায়। সেটাও পাঁচশত টাকা কেজি। মা কিভাবে এতো টাকা ম্যানেজ করছে কে জানে? ওর মাথায় কোনো কিছু কাজ করছে না। হিমেল কেবিনে সুচরিতার বাবার কাছে বসে হালকা পাতলা গল্প করছে। সুচরিতা একফাঁকে করিডোরে সুসমিতাকে জিজ্ঞাসা করলো,
—–মা,কি টাকা যোগাড় করতে পেরেছে?
—–হুম।
—–কিভাবে?
—-তুমি শুনে কি করবে?
——হয়তো কিছই করতে পারবো না কিন্তু শুনতে তো দোষ নাই।
—–আমার বিয়ের খরচের জন্য আব্বা যে এফ ডি আর করেছে ঐ টা ভেঙ্গে টাকা যোগাড় করা হয়েছে।
এ কথা শুনে সুচরিতার মনটা খারাপ হয়ে গেল। এ ছাড়া আর কিইবা করার ছিলো। টাকাতো যোগাড় করতেই হবে।
—–এই খোকন কি হাসপাতালে এসেছিলো?
—-না,আসেনি।
——মা কিছু বলেনি।
—–বলেছে, ওর পড়াশোনার ডিস্টার্ব হবে তাই আসার দরকার নেই।
সুচরিতার মনে মনে খোকনের উপর রাগ হলো। মনের মধ্যে বিষয়টা পুষে রাখলো। একদিন সুযোগ বুঝে মাকে জিজ্ঞাসা করবে। কারণ মায়ের চোখে খোকনের কোনো দোষ চোখে পড়ে না। বড় ছেলে হয়ে অসুস্থ বাবার কাছে আসলো না। এ কাজটাতো খোকন ঠিক করেনি। বিল পরিশোধ করে আসার পর শোভনকে করিডোরে ডেকে জিজ্ঞাসা করলো
—–এই খোকন হাসপাতালে একদিনও আসলো না কেনরে?
—–ওর নাকি হাসপাতালের গন্ধে বমি আসে।

সুচরিতা অবাক হলো ওর অসুস্থ শরীরে ও ঠিক আসতে পারলো অথচ ও শক্ত সামর্থ একজন মানুষ। ও আসতে পারলো না। যাইহোক হাসপাতালের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বাবাকে হুইল চেয়ারে করে গাড়ির কাছে নিয়ে গেল। ওকে দেখে ওর বাবার দুচোখে অঝরে পানি ঝরছে। কি যেন বলছে বুঝা যাচ্ছে না। কারণ কথাগুলো খুব জড়ানো। সুচরিতারও চোখদুটো ছলছল করছে। আজ হিমেল নিজেই গাড়ি চালিয়েছে। ড্রাইভারকে নেয়নি। কারণ হিমেল এখন বাসায় সুচরিতার পরিবারের অনেক কথা গোপন করে। সুচরিতা এটাও জানে ওর বাবাকে যে হিমেল পৌঁছে দিয়ে আসবে সেকথা ও বাড়িতে বলবে না। এটা একটা অতি সাধারণ ব্যাপার। অথচ বাড়ির মানুষগুলোর কূটকচালে অসাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। আর একটা ব্যাপারে সুচরিতা অবাক হয় ওর শ্বশুরবাড়িতে যা ঘটবে সব বিষয় ওর ননাস আর ননদের কানে চলে যাবে। সেটা নিয়ে আবার আর এক কাহিনী হবে। বাবাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে সুচরিতা আর হিমেলের বাড়ি ফিরতে রাত দশটা বেজে গেল। ততক্ষণে বাড়িতে সবাই রাতের ডিনার করতে বসে গেছে। হিমেলকে দেখে ওর মা বললো,
——কিরে এতো দেরী হলো কেন? তুই কি যাত্রাবাড়িতে গিয়েছিস?
—–না,আমি যাইনি। রাস্তায় জ্যাম ছিলো তাই আসতে দেরী হয়েছে।
——যা ফ্রেস হয়ে ভাত খেতে আয়।
এরপর সোহেলের দিকে তাকিয়ে হিমেল বললো,
——এক সপ্তাহ পর তোমার ফ্লাইট। আজ টিকিট কেটেছি। একলক্ষ টাকা লেগেছে।
এ কথা বলে হিমেল ফ্রেস হতে নিজের ঘরে চলে গেল।
—–তোর হাতে কিন্তু বেশী সময় নাই। সব কিছু গুছিয়ে নে।
—–হা ভাইয়া, সুটকেস গুছিয়ে রেখেছি। তুমি যশোর কবে যাচ্ছো?
——এ,মাসের তিরিশ তারিখে যাবো ভাবছি। এক তারিখ থেকে যেন অফিসটা করতে পারি। তোর ভাবি আর রাজনকে বাসা ঠিক করে নিয়ে যাবো।
—–ভালোই হলো আমি যাওয়ার পর পনেরোদিন মায়ের সাথে থাকতে পারবে।
সুচরিতার শাশুড়ী তার মেজছেলেকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় থাকেন। ছোটো বেলা থেকে এই ছেলেটা উনাকে জ্বালিয়ে মারে। পড়াশোনাটা ঠিকমতো করলো না। এখন চাকরিটাও ঠিক মতো না করে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। ওখানে গিয়ে আবার কি কাহিনী করবে কে জানে? তাই ছেলেকে গম্ভীর হয়ে বললেন,
—–এবার কাজটা মনোযোগ দিয়ে করিস। কোনো উল্টাপাল্টা যেন না হয়। আর নিয়মিত নামাজ পড়বি।
এরপর হিমেল এসে রাতের খাবার খেয়ে দ্রুত শুয়ে পড়ে। আগামিকাল শনিবার হলেও ওকে অফিসে যেতে হবে।

এদিকে সোহেলের যাওয়ার দিন ঘনিয়ে আসলো। বড় বোন সাবেরার সাথে দেখা হয়েছে। মেজবোন তাহেরা আর ছোটো বোন জোহরা সোহেল যাওয়ার আগেরদিন দেখা করতে মায়ের বাড়িতে চলে আসলো। তাহেরা কলেজে পড়ায়। আর জোহরা একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ম্যাথের শিক্ষক হিসাবে চাকরি করছে। দুপুরে দুজনেই টায়ার্ড হয়ে আসছে। সুচরিতা এসে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করে ওদের ফ্রেস হতে বলে টেবিলে ভাত বেড়ে দিতে চলে গেল। তাহেরা একটু আহ্লাদ করে মাকে বললো,
——মা,আমার খুব ক্লান্ত লাগছে। ওয়াশরুমে গিয়ে হাতমুখ ধুইতে ইচ্ছা করছে না।
সোহেল শুনে বললো,
——তোদের ওয়াশরুমে যেতে হবে না। আমি কারিমাকে পানি আর বালতি আনতে বলছি। তোরা মায়ের খাটে বসেই হাতমুখ ধুয়ে নে।
দুবোন খুশীতে গদগদ হয়ে গেল। কারিমার শাশুড়ী হাঁক দিয়ে বললো,
—–কারিমা জলদি মগে করে পানি আর বালতি নিয়ে আসো।
কারিমা আদিখ্যেতা করে মগ আর বালতি নিয়ে শাশুড়ী মায়ের ঘরে গেল। সুচরিতা এই বিষয়গুলো মেনে নিতে পারে না। ওর আত্মসম্মানে খুব লাগে। এমনিতেই আজ দু,দিন কাজের খালা আসে নাই। সংসারের সব কাজই কারিমা আর ওকে করতে হচ্ছে। কারিমা তাও জেবার সুবাদে ঘরে গিয়ে রেস্ট নিতে পারে। কিন্তু সুচরিতার তো সেই উপায় নেই। আর ও এসব ছলচাতুরীর সাথে অভ্যস্ত নয়। সুচরিতা এটুকু বুঝে ওযে আত্মসম্মানবোধ নিয়ে চলে ওর শ্বশুরবাড়ির মানুষগুলোর এটা পছন্দ নয়। এটাই ওর বড় দোষ। ওর ননদেরা এ বাড়িতে এসে মাঝে মাঝে এমন ভাব দেখায় ওদের ভাইয়ের বউগুলো যেন বউ নয়। এরা সব কাজের বুয়া। ওর বড় জা বড় বউ হওয়াতে তুলনামূলক ভালো পজিশনে আছে। আর কারিমা তো ছলচাতুরী কূটকচালীতে মাস্টার। যত সমস্যা সুচরিতার। ভাত টেবিলে বেড়ে ননদদের ডাকতে শাশুড়ী মায়ের রুমে গিয়ে বললো,
——আপু, টেবিলে ভাত বেড়েছি।
——টেবিলে গিয়ে ওরা খেতে পারবে না। আমার বোনেরা চাকরি করে এসে অনেক ক্লান্ত। তুমি বরং ভাত এখানে নিয়ে এসো।
কারিমা গলায় আর একটু মধু ঢেলে বললো,
——তাতো অবশ্যই। সুচরিতা তুমি দেখলে না আপুরা তো বাথরুমে গিয়ে হাতমুখ ধুতে পারলো না। আমি ঘরে পানি এনে দিলাম। যাও ভাত আর তরকারি এখানে নিয়ে এসো।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে