গল্পের নামঃ- #সুখ_পাখি🕊️💖
লেখিকা- আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৮+০৯
বাতাস বইছে সুসু করে বৃষ্টি হওয়ার ফলে বাতাসটা ঠান্ডা লাগছে। মাঝে মাঝে দুইএকটা গাড়ি যাচ্ছে। মাহির আদারাকে এভাবে আকরে ধরেছে যে এটাই তার শত আবদারের ভান্ডার । আদারাও মাহিরকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে আছে। আদারা মাহিরের চুলের ভাজে একটা চুমু খেয়ে বলে
— চুপ করেন, এত কাঁদতে হয় না। মায়া আপনার ভাগ্য ছিলনা। সুসুসু চুপ। পিঠে হাত বুলাচ্ছে আর মাহিরকে এইসব বলছে আদারা। মাহির অনেক কষ্ট নিয়ে বলে
— সরি,,,,,, আমার জন্য,, মাহিরকে থামিয়ে বলে
— আমি আর এইসব ভাবতে চাইনা। যা হয়েছে তা হয়েছে। সব নতুন করে শুরু করা যাক। মাহির কিছু বলেনা সে আজ নিশ্চিুপ হয়ে গেছে। রাত ১২টার দিকে মাহির আর আদারা বাসায় ফিরে। আকাশ অনেক আগেই বাসায় ফিরে এসেছে। মাহির চুপচাপ নিজের রুমে গিয়ে। বিলকনির দোলনাটায় বসে পরে। আদারা রুমে এসে দেখে মাহির বেলকনিতে বসে আছে। সে নিচে গিয়ে খাবার নিয়ে আসে মাহিরের জন্য । আদারা গিয়ে বসে মাহিরের পাশে। মাহওর একবার আদারার দিকে তাকিয়ে আবার ভাবনা জগৎে ব্যাস্ত হয়ে যায়। আদারা ভাত মাখিয়ে মাহিরের সামনে ধরে। মাহির বলে
—- খাবো না ইচ্ছে নেই আমার। আদারা রেগে বলে
—- দেখেন একদম ন্যাকামি করবেন না। আপনার বউ মারা যায়নি, বেঁচে আছি আমি। আর ছ্যাকা খেয়ে বাকা না হয়ে আমাকে নিয়ে ভাবুন, যত্তসব। বলেই মাহিরের মু মুখে ভাত পুরে দেয়। মাহির ভাবতেই পারেনি এত কিছুর পরও আদারা তাকে এতটা আপন করে নিবে। বেলকনির সোনালী লাইটের আলোতে দুজন আলোকিত হচ্ছে। যানান দিচ্ছে শুরু হতে চলেছে এক নতুন অধ্যায়। মাহির শুধু আদারাকে দেখে চলছে এমন জীবন সঙ্গী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। একসময় মাহির বিষম খায় কারণ তার মনযোগ ছিল আদারের দিকে। আদারা দৌড়ে গিয়ে রুম থেকে পানি নিয়ে আসে। আর মাহিরে হাতে দেয় মাহিরও খেয়ে গ্লাসটা মূহুর্তের মাঝেই শেষ করে দেয়। তারপর দুজন একসাথে খেয়ে নেয়। খাওয়া শেষ আদারা কিচেন গিয়ে পেলেট টা রেখে আসে। আর মাহির কে বলে
—- চলেন ছাঁদে যাই। মাহিরের কেনো জানি আজ আদারার সব কথা শুনতে ইচ্ছে করছে।সেও কিছু বললোনা। আদারা মাহিরের সাথে ছাঁদে গিয়ে বলে
—- আমি রেলিঙে বসবো। হেল্প করেন। মাহিরও হেল্প করে। আদারা মাহিরের কাঁধ জড়িয়ে ধরে বসে আছে রেলিঙে। মাহিরও খুব করে আগলে রেখেছে। একসময় আদারা মাহিরের কাঁধ থেকে হাত নামিয়ে নেয়। মাহির বলে
— পরে যাবেতো। আদারা বলে
— যাক কথা বেড়হয়েছে। আমি তো ভেবে ছিলাম বোবা স্বামীকে নিয়ে আমার সংসার করতে হবে। আর পরবোনা আপনি আছেন তো। মাহির বলে
— এত কিছুর পরও এত বিশ্বাস? যদি ফেলে দেই? আদারা মাহিরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলে
— হুমম অনেক। আমিও যদি আপনার জায়গায় থাকতাম তাহলে হয়তো আমিরও এমনটাই করতাম, আর আপনারতো ভুলছিল না কোথাও। আপনাকে ভুলবুঝানো হয়েছে। বলেই মাহিরের কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয়। মাহির বলে
—- আমার,,,, আদারা বলে
—- জানি জানি বলবেন সময় লাগবে!!! থাক আর বলতে হবে না। আস্তে করে বলে মাহিষ একটা। সেটা মাহিরের কান এড়ায়নি। মাহির বলে
— কি আমি মহিষ? আদারা বলে
— যাক আলহামদুলিল্লাহ্ নিজের মুখে শিকার করলেন আপনি মহিষ। মাহির বলে
—- কোথায় বললাম? আদারা বলে
— এই মাত্র। মাহির বলে
— বাজে বকলে এখান থেকে ফেলে দিব। আদারা কিছু বলেনা। আজ অনেকদিন পর মাহিরের সাথে তার এতো সুন্দর করে কথা হয়েছে। সে মুচকি হাসি দেয় অন্য দিকে তাকায়। পিছন থেকে তাদের এই কাহিনী দেখছে সেই বিশাল চাঁদটা। একটু পর মাহির বলে
—- চল রুমে যাই। আদারা বলে
— No, never, kabi Nahi, চন্দ্র বিলাস করব আজকে। মাহির বলে
— চন্দ্র নামটা সুন্দর না? আদারা এক্সাইটেড হয়ে বলে
— ওকে আমাদের মেয়ে হলে নাম রাখব চন্দ্র। মাহির আদারার কথায় শুধুই হাসে। আদারা বলে
—- আপনার মতো খবিশ আমি দুইটা দেখিনাই। বলেই রেলিঙ থেকে নেমে দেওয়াল ঘেঁষে বসে পরে। মাহিরও তার পাশে গিয়ে বসে বলে
—- তাই তাহলে এই খবিশটাকে ছেড়ে দাও। আদারা মনটা মুহূর্তেই খারাপ হয়ে যায়। আদারা মাথা নিচু করে বলে
—- থাকতে কদর করুন এমন সময় না আসে যখন আপনার আমাকে খুব প্রয়োজন ঠিক আমার মতো করে। কিন্তু আমি মুখ ফিরিয়ে নেই আপনার থেকে। যানেন তো প্রকৃতির একটা নিয়ম আছে তুমি যা দিবে তার দিগুণ আপনার কাছে ফিরে আসবে। মাহির বলে
—- অভিশাপ দিচ্ছ? আদারা একটা হাসি দিয়ে বলে
—- নাহ, এটা অভিশাপ না এটাই সত্যি। রাত হয়েছে চলুন নিচে যাওয়া যাক। মাহির বলে
— কেন কি হয়েছে আরেকটু থাকি!!!ভালোই তো লাগছে। আদারা বলে
— তাহলে আপনি থাকুন আমি যাই। মাহিরকে কিছু বলতে না দিয়েই আদারা নিচে চলে আসে কিন্তু এবার সে আর মাহিরের রুমে যায় না সরাসরি গেস্ট রুমে চলে যায়, যেখানে সে আগে বেড়াতে আসলে থাকতো। খুব কান্না আসছে কেন মাহির তাকে বুঝেনা কেন সবসময় তার কথার অন্য দিকটা খুজে। একসময় কান্না করতে করতে আদারা ঘুমিয়ে যায়। মাহির রুমে এসে দেখে আদারা নেই। ভাবে হয়তো নিচে গিয়েছে। সে সোফায় বসে বসে আদারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগে কিন্তু আদারা আসে না। একসময় মাহিরও ঘুমিয়ে যায়। সকাল ৬টার দিকে আদারা রুমে চলে আসে দেখে মাহির সোফায় শুয়ে আছে। হয়তো ঠান্ডা লাগছে তাঁর। তাই আদারা এসিটা কমিয়ে মাহিরের গায়ে চাদর দিয়ে দেয়। তারপর ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। মাহিরের ঘুম ভাঙলো ৯টার দিকে তখনই আদারা আসে মাহির আদারাকে দেখে বলে
— গুড মর্নিং। আদারাও বলে
— গুড মর্নিং। মাহির বলে
— কালকে রাতে কখন এসেছ রুমে? আদারা কিছু বলে না হাতে রাখা কফির মগটা মাহিরের সামনে রাখে আর বলে
— আপনি ব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করবেন না। মাহির বলে
— কেন তাহলে কি দিয়ে করব? আর কেন।।আদারা দরজার কাছে গিয়ে বলে
— কারণ ঐটা দিয়ে আমি দেওয়াল পরিষ্কার করেছি কালকে। বলেই দেয় দৌড়। আর মাহিরের অবস্থা দেখার মতো ওয়াক ওয়াক করতে করতে বাথরুমে চলে যায়। নিশু তখন মাহিরের রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল মাহিরকে বমি করতে দেখে নিশু মাহিরের কাছে গিয়ে বলে
— আলহামদুলিল্লাহ্ আমি ফুপি হতে চলেছি। মাহির ভূত দেখার মতো অবাক হয়ে যায়। মাহির বলে
— কি বাজে বকছিস? পাগল হয়ে গিয়েছিস।। নিশু বলে
—- খারাপ কি বলেছি? তুই সকাল সকাল বমি করলি এর মানে কি ধরে নিব। মাহির বলে
—- কানের নিচে দিব একটা যা, তোর ভাবি কে উপরে পাঠা। নিশু বলে
—- তোর মতো জল্লাদ ভাই দুইটা দেখি নাই। এই একটু এইদিকে আয়তো। মাহির নিশুর কাছে যায়। নিশু মাহিরের পেটে হাত বুলিয়ে বলে
—- গুড মর্নিং ফুপি, জানিস তোর বাবাটা না খুব পঁচা শুধু বকে, তোর মা ঠিকই বলে মহিষ একটা। মাহির নিশুর কান ধরে বলে
—তোকে না বললাম আদারাকে ডেকে দিতে আর তুই তোর মতো বাজে কথা বলেই চলেছিস। নিশু নিজের কান ছড়িয়ে বলে
—- আমার কানটা সমানে লালে লাল করে দিলি হারামি মহিষ একাটা। বলেই নিশু দৌড়। নিশু নিচে গিয়ে আদারাকে বলে
—- ভাবি গো তোমাকে তোমার মহিষ হাসবেন্ড তোমাকে ডাকে। মাহিরের মা বলে
—- চুপ ফাজিল মেয়ে, আদারা যাতো মা দেখে আয় মাহির কি বলে। আদারা নিজের হাত মুছতে মুছতে বললো
চলবে
গল্পের নামঃ- #সুখ_পাখি🕊️💗
#পর্বঃ০৯
লেখিকাঃ- আইদা ইসলাম কনিকা
— ওকে মা আমি আসছি। আকাশ তখনই নিচে নামছিল। আকাশকে দেখে আদারা একটা হাসি দিয়ে রুমে চলে আসে। আদারা রুমে গিয়ে দেখে মাহির হাতের বেন্ডেজটা ভিজিয়ে বসে আছে, সেটা দেখে আদারা রাগী গলায় বলে
— আপনার কি সেন্স কমনসেন্স বলতে কিছু নেই?? হাতটা ভিজিয়ে বসে আছে। আদারা গিয়ে ফার্স্ট এড বক্সটা খুজতে লাগে। আদারা মাহিরকে জিজ্ঞেস করে
— ফার্স্ট এড বক্সটা কোথায়? মাহির ইশারা করে বলে ড্রসিং টেবিলের নিচের ড্রয়রে। আদারাও সেটা নিয়ে এসে মাহিরের সামনে রেখে চলে যেতে যেতে বলে
— বেন্ডেজটা করে নিচে খেতে আসুন। অফিস যাবেন না লেট হচ্ছে। মাহির বলে
— থাক থাক আর এতো বেশি ভাবতে হবে না যদি আমাকে নিয়ে সত্যি ভাবতে তাহলে বেন্ডেজটা নিজেই করে দিতে। ডান হাতে লেগেছে বাম হাত দিয়ে আমি কি ভাবে করি। আর আমি অফিস যাবো না কিছু দিন। আদারা মাহিরের কাছে আসতে আসতে বলে
— রাগ দেখিয়ে গ্লাস ভাঙতে কি বলেছিল আমি?, আর অফিস যাবেন না মানে!!! আর মাহিরের হাতের বেন্ডেজটা খুলতে লাগে মাহির বলে
— হুমমম,,,একটু বিরতি দরকার এইসব আর ভালো লাগছে না। যাই হোক খুব জলদি সবাইকে বলে তোমাকে মুক্ত করে দিব ৬মাসের মধ্যে । আর নিজে অন্য একটা ভালো ছেলের সাথে তোমার বিয়ে দিব। আদারা মূহুর্তেই রেগে গিয়ে বলে
— আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না। কালকেও আপনাকে বললাম কিন্তু আপনি আপনিতো আপনি। বলেই নতুন করে বেন্ডেজটা করতে লাগে। মাহির বলে
—- দেখ আদারা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ভালোবাসা লাগে আর আমি অন্য। আদারা বলে
— অন্য কাকে? কাকে মায়া আপুকে সে আপনার ছোট ভাইয়ের বউ। আর আপনি আমাকে মুক্তি না নিজের মুক্তির কথা বলছেন। মাহির বলে
— আদারা প্লিজ আমি এইসব কথা নিয়ে ভাবতে চাই না। আদারা বলে
— আচ্ছা ঠিজ আছে , আর জোর করবো না, আপনার কোনো ব্যাপারে নাক গলাবো না।
৬মাস ৬মাস পরত আমি চলে যবো তাই না!! মাহির চুপ হয়ে যায়। অপর দিকে আদারা মনে শুরু হয়েছে নতুন করে ঝড়। আদারা খুব কষ্ট করে বলে
—- আচ্ছা মাহির আপনি একটুও অবাক হননি মায়াকে সুস্থ দেখে মনে ও যাই করেছে,,, তখনই মাহির বলে
—- প্রথম দেখে মুখে একটা তৃপ্তির হাসি চলে এসেছিল কিন্তু যখন, আকাশকে আর মায়াকে জড়িয়ে ধরারটা মাথায় আসে, মাথা ঠিক ছিলনা আমার। আদারা
—- সত্যি খুব ভালোবাসেন মায়াকে? মাহির বলে
—- এটা ভালোবাসা কিনা জানিনা,,, কিন্তু কালকে আমার মায়ার জন্য না আকাশ আর তোমরা জন্য খারাপ লেগে। আচ্ছা সত্যিটা জানার পরও তুমি আমাকে এতো আগলে রেখাছো কারণ..? আদারা বলে
—- কারণটা আপনার অজানা নয়। ভালেবাসি, কালকে যখন আমাকে জড়িয়ে আপনি কেঁদে ছিলেন তখনই আমার রাগ অভিমান আর অভিযোগ সব কিছু শেষ হয়ে যায় । তখন আমাকে আপনার জায়গায় দাঁড় করিয়ে দেখি সত্যি বলতে দোষটা আপনার ছিলও না আবার ছিল। কারণ আপনি পয়েন্ট ওফ ভিউ টা একবার চেক করতেন তাহলে হয়তো এমনটা হতো না। আচ্ছা আমার কোন দিক দিয়ে কমতি আছে একটু বলবেন?। বেন্ডেজ করে উঠে দাড়ায় আদারা । মাহির বলে
— তোমার কোন দিক দিয়ে কমতি নেই। আদারা রেগে হাতের ফার্স্ট এড বক্সটা ছুড়ে মারলো আর নিজেকে আটকে রাখতে পারবেনা সে। মাহিরের গেঞ্জি টা টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে বলে
— সমস্যা কি তোর? কি এমন চেয়েছি তোর কাছে? সেই প্রথম দিন থেকে তোর সব অত্যাচার সহ্য করে এসেছি হ্যা মানি প্রতিবাদ করেছি কারণ আমি ঠিক ছিলাম। আর এতো মায়া মায়া করিস দুইদিন পর মায়ার বাচ্চা কাচ্চা তোকে চাচ্চু চাচ্চু বলে ডাকবে। আমার থেকে আমার পরিবারটা কেড়ে নিয়েছিস। আবার বলছিস তুই আমার জন্য ভালে ছেলে খুঁজে দিবো। এই হারামজাদা তোকে বলেছিলাম আমাকে বিয়ে কর? আমাকে যখন ফিরিয়ে দিয়েছিল আমি চলে যাইনি কেন আবার আসলি বমার জীবনটাকে নষ্ট করতে। আমিতো চেয়েছিলাম তোর জীবনটাকে জান্নাত করতে তুই কেন আমার জীবন টাকে জাহান্নাম করে দিলি। তোর কি মনে হয় সত্যিটা জানার পরও আমাকে সমাজ সেই আগের সম্মান দিবে? ঐটা গ্রাম আর এটা শহর আসমান আর জমিনের তফাত। নানান জনের মুখে আমাকে নিয়ে নানান কথা হবে। তোর কি তুই তো ছেলে। জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি তোকে নিজের আপন মনে করে। এবার আর একই ভুল আমি আর করব না। তুই তোর মতো আমি আমার মতো আর আমাকে নিয়ে তোর দরদ দেখাতে হবে না। কিন্তু সে দিন বেচ্শি বাকি নেই যেদিন তুই নিজে আসবি আমার কাছে, কিন্তু সেদিন আমি থাকবনা। বলেই চলে যায় আদার দরজটা খুলে দৌড়ে নিচে নেমে যায়। মাহিরও পিছন পিছন যায়। কিন্তু কাউকে কিছু না বলেই আদারা বাসা থেকে বেড়িয়ে যায় । মাহিরের মা তা দেখে আদারাকে ডাকে কিন্তু শুনেনা একটু পর মাহিরও দৌড়ে আসতে দেখে আদারার পিছন পিছন। সবাইতো অবাক কি হচ্ছে সব মাথার দুইহাত উপর দিয়ে যাচ্ছে। কিছু সময় আগ অব্দি তো ঠিক ছিল। মাহির বের হয়ে দেখে আদারা গেট খুলতে বলছে দারওয়ান চাচাকে কিন্তু মাহির পিছন থেকে চিৎকার করে না বলে দেয়। দারওয়ান চাচাও গেট খুলে না। মাহির এসে আদারার হাত ধরে বলে
—- বাসায় চল খাবা, সবাই অপেক্ষা করছে। আদারা চিৎকার দিয়ে বলে
—- আমার জন্য তোকে ভাবতে হবে না,,, আমাকে আমার মতো থাকতে দে। বাসার সবাই একসাথে তখন গার্ডেনে এসে পরে। মাহিরের মা আদারাকে এভাবে কথা বলতে দেখে বুঝতে পারলো অনেক বড় কিছু হয়েছে। নিশু বলে
—- কি হয়েছে আদারা, এমন করছিস কেন? আদারা রেগে গিয়ে বলে
—- কি হয়নি তাই বল। তোর এই ভাই মিস. মাহির আহনাফ আবিদ খান আর এই আকাশ আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল। সেতো আমাকে বিয়ে করেছিল প্রতিশোধ নিতে তার ভালোবাসা আর তোর ছোট ভাই আকাশের বউ এর জন্য । আকাশের বউ কথাটা শুনা মাত্র সবাই আরেক দফা অবাক হয়। মাহির বলে
— আদারা বাসায় চল। আদারা বলে
—কেন? কেন যাবো আমি? তোর দাসি হয়ে। তারপর আকাশ মায়া আর মাহিরের কালকের সব ঘটনা বলে । জানিস নিশু কালকে যখন সে নিজের ভুলটা বুঝতে পারলো আর আমাকে সরি বলেছিল সব ভুলে আপন করে নিয়ে ছিলাম। কিন্তু না সে বলছে আমাকে অন্য একটা ভালো ছেলের সাথে বিয়ে দিবে ৬ মাস পর আমাদের ডিভোর্স আর সবাইকে সময় মতো সত্যিটা বলবে!!! আমাকে সস্তা পেয়ে গিয়েছিল তাই যেমন খুশি তেমনি নাচিয়েছ। কিন্তু আমি আর পারবো না। আমাকে মাফ করো তোমারা। কাদঁতে কাদঁতে নিচে বসে পরে আদারা। তখনই মাহিরের বাবা এসে মাহিরের গালে একটা কষিয়ে চড় লাগায় বলে
—- তোকে এই শিক্ষা দিয়েছে তোর মা বল? মাহিরের মা আদারাকে গিয়ে ধরে আদারাকে। আকাশের বাবা তো রেগে বম হয়ে আকাশের দিকে তেড়ে যায়। কিন্তু আকাশের মা অনেক কষ্টে আটকায়। নিশু বলে বাসায় চল সবাই। কিন্তু আদারা যেতে নারাজ। অনেক জুড় করে আদারাকে বাসায় নিয়ে আসে সবাই। অপরাধীর মতো আকাশ আর মাহির দাড়িয়ে আছে। মাহিরের মা মাহির কে বলে
—- তোকে নিজের সন্তান বলতেও লজ্জা করছে। আদারা বলে
—- সবাই মাহির মাহির কেন করছ সব নাটের গুড় তো এই আকাশ। তোকে তো আমি নিশু এসে আদারাকে থামায়। আকাশের বাবা সরাসরি বলে দেয়
—- আকাশকে আমি তেয্য পুত্র করলাম, ওর আর এই বাসায় জায়গা নেই। ও ওর বউকে নিয়ে যেখানে খুশি থাক। বলেই উপরে চলে যায়। আকাশের মা বলে
— তোর মতো ছেলে আমারও চাই না একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে তোর একটুও খারাপ লাগলো না? যেখানে তোদের বাসায়ও তোদের আদরের বোন আছে। মাহির বলে
— এর জন্যই আমি এখন বলতে চায়নি। কিন্তু আদারা। আদারা বলে
—- আদারা আদারা কি? এই তুইতো একটা Selfish giant, নিজেরটা ভালো বুজিস তুই আমাকে কি ডিভোর্স দিবি আমি নিজে তোকে ডিভোর্স দিব। মাহিরের মা আদারাকে বলে
—- আদারা মা শান্তহ। আদারা বলে
—- আমি থাকবো না এখানে।
চলবে