সুখ পাখি পর্ব-১১

0
1801

গল্পের নামঃ- #সুখ_পাখি🕊️💖

লেখিকাঃ- আইদা ইসলাম কনিকা

পর্বঃ১১,

মাহির বলে

— অনেক গরম লাগছে। বলেই চলে যায় কোনটা নিয়ে। মানে কি আদারা মাহিরের এমন হঠাৎ পরিবর্তন মেনে নিতে পারছে না। নিশ্চিত এর পিছনে কোনো কারণ আছে। মাহির নিজের রুমে এসে একাই হেসে ফেলে। ভাবে ডোসটা হয়তো একটু বেশিই হয়েগেছে… মাহির ভাবছে হ্আজ দুপুরের কথা। হঠাৎ করেই মায়া তার সাথে দেখা করতে আসে। মাহির দেখা করতে না চাইলেও একপ্রকার জোর করেই কথা বলে। মায়া বলে

— জানি আমরা ক্ষমার অযোগ্য, হয়তো কোনো দিন তুমি আমাদের ক্ষমা করবেও না। সেটাই স্বভাবিক। জানোতো মাহির যখন আমরা ভাবি আমরা তাকে ছাড়া বাঁচবো না তখন সৃষ্টি কর্তা আমাদের থেকে সেই জিনিসটা কেড়ে নেয় আর এট বুঝিয়ে দেয় যে কেই কারো জন্য বাঁচে না বা মরেনা। সব কিছু আগে থেকেই লিখা। তোমার আর আমার কাহিনী টা ঠিক তেমন। কিন্তু আমার আর আকাশের ভুলের মাশুল আদারা কেন দিবে বলতে পারো? আদারার তো কোন ভুল নেই!! আদারাতো তোমার সামনে নিজেকে উপস্থিত করেছে একটা খুলা বইয়ের মতো। সে চায় তুমি তাকে পড় তার ভিতরে গল্পটাকে আঁকড়ে ধর। মাহির সময় থাকতে কদর করতে শিখ নয়তো এমন দিন না আসে তুমি আদারাকে খুব করে চাইবে কিন্তু পাবে না। আজ আসি অনেক কথা বললাম,,, ক্ষমা চপয়ার সাহস আমার নেই। দেখা হবে আবার এখনতো রোজই দেখা হবে সপ্তাখানিক বাদেই আমকে আকাশ বাসায় নিয়ে যাবে। বলেই মায়া চলে যায়।

মাহিরও ভাবে মায়া তাকে ধোঁকা দিয়েছে এতে তার খারাপ লাগেনি বরং সে যে আদারাকে কষ্ট দিয়েছে তাতে তার খারাপ লাগছে। হয়তো তার মনেও আদারাকে নিয়ে কিছু আছে হ্যা সত্যি আছে নয়তো আদারার করা ইগনোরে তার এত খারাপ লাগতো না। মাহির আদারা প্রেমে পরে গেছে। কিন্তু মাহির ভাবে এই মেয়ে যেই জোরে থাপ্পড় মারে মাথা ঝিম ঝিম করে। সেইদিনের থাপ্পড়টার কথা মনে পরতেই গালে হাত চলে যায় মাহিরের। মাহিরের খুদাও লাগছে তাই আইসক্রিম টা শেষ করে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় রাত তখন ১ টা বাজে। নিশু আর মিলি ঘুমিয়ে পরেছে। আদারার খুব পানি তেষ্টা লাগায় সে নিচে নামে পানি খেতে কারণ রুমে পানি নেই। ঠিক তখনই দেখে মাহিরও আসছে । কিন্তু সে মাহিরকে দেখেও না দেখার ভাঙ করে পানি খেয়ে চলে যেতে নিলে মাহির বলে

— #সুখ_পাখি খুদা লাগছে কি খাবো? বাচ্চাদের মতো করে। আদারার এই ডাক অপেক্ষা করার ক্ষমতা নেই, কিন্তু রাগী ভাবটা বজায় রেখেই বলে

— ফ্রিজে খাবার রাখা আছে। মাহির বলে

— না, অন্য কিছু খাবো। আদারা বলে

— অন্য কিছু কি খাবেন? মাহির বলে

— আসো আমরা কিছু রান্না করি। আদারা বলে

— যা খুশি করেন বলে চলে যেতে চাইলে মাহির আদারার হাত ধরে কিচেনে নিয়ে যায় , আদারা আরেক দফা অবাক হচ্ছে টাকি এইসব। কিচেনে টেবিলে অনেকটা জায়গা খালি ছিল সেখানে মাহির আদারাকে কোলে তুলে বসিয়ে দেয়। আর বলে

— আমার সাথে এখানে বসে থাকবে,,, আমি সুপ বানাবো। আদারা হেসে দেয় এইবার। কারণ সুপ বানানো অনেক ইজি গরমপানি সাথে সবজি আর প্যাকেট সুপ। আদারাকে হাসতে দেখে মাহির সবজি কাটতে কাটতে বলে

— হাসবে না বলে দিলাম। আদারা আঙ্গুল নিজের ঠোঁটে রেখে আবারা হেসে দেয়। অসাবধনতার কারণে মাহিরের আঙুল কেটে যায় কিন্তু তেমন না হালকা। আদারা মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। ব্রেন বলছে উঠে চলে যেতে মন বলছে থেকে যেতে সময়টা সত্যি অদ্ভুত। মাহির সুপ তো বানিয়েছে কিন্তু সেটা খাওয়ার অযোগ্য। আদারা এবার আর না পেরে হুহু করে হেসে দেয় আর মাহির এক মনে তাকিয়ে আছে আদারার দিকে। আদারা টেবিল থেকে নেমে ফ্রিজে রাখা খাবার গরম করে দেয় মাহিরকে। মাহির বলে

— আমি খেতে পারবো না হাত কেটে গেছে আর আগের ক্ষতটাও এখনো আছে। আদারা বলে

— চামচ দিয়েই তো খাবেন। মাহির বলে

— হাত দিয়ে খেতে ইচ্ছে করছে, আজ যদি হাতটা ভালো হতো। আদারা বলে

— সমস্যা কি, মাহির ভাবে আদারা তাকে খায়িয়ে দেওয়ার কথা বলবে কিন্তু না সে বলে

— হাত ঠিক হলে খাবেন। কাল ভার্সিটি আছে। বলেই আদারা চলে যেতে চাইলে মাহির গিয়ে বলে

— কেমন মেয়েগো তুমি হাসবেন্ড অফিস থেকে এসেছে আর একটু আদর আপ্যায়ন করবে কি তুমি তা না!!! আদারা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে

— হাসবেন্ড!!! হাসালেন। মাহির বলে

— সরি আদারা,,, আমাকে কি ক্ষমা করে নতুন অধ্যায় শুরু করা যায় না? আদারা

—- যখন আমি আপনাকে চেয়েছিলাম তখন কেথায় ছিলেন? আপনি তো আমাকেই ভালোই বাসেন না আর সারে ৫ মাস পর আমাদের ডিভোর্স তাই এসব না বলাই ভালো আপনি আপনার রাস্তা যাবেন আর আমি আমার রাস্তায়। মাঝে রয়ে যাবে কিছু না বলা ভয়ংকর অন্ধকার। মাহির বলে

— এর মানে কি ধরে নিব?তুমি আর আমাকে চাও না? আদারা উপরে যেতে যেতে বলে

— চাইলেই তো সব কিছু পাওয়া যায় না। একটা কথা আছে যদি সব ইচ্ছে পূর্ন হয়ে যায় জীবনে তাহলে তামান্না করবে কিসের জন্য, কিছু অপূর্ণ ইচ্ছেই বাঁচতে আমাদের সাহায্য করে আমি ঠিক তেমন। আর হঠাৎ এমন পরিবর্তন ঠিক মানতে পারছি না!! মাহির বলে

— মায়া এসেছিল অফিসে তারপর মাহির আদারাকে সব কিছু বলে। আদারা বলে

— অন্যর কথায় না যেদিন নিজে বুঝতে পারবেন সেদিন এসেন। মাহির বলে

— কারো কথায় আমি কিছু বলেনি বা করেনি। মায়া এখন আমার ছোট ভাইয়ের বউ। আদারা মিচে নেমে এসে বলে

— হুমম আমি জানি।আর কিছু? মাহির কিছু না বলেই নিজের রুমে চলে যায়। আদারার খারাপ লাগে কারণ একটু আগেই মাহির বললো তার খুদা লেগেছে এখন আবার না খেয়েই চলে গেলো। আদারা প্লেট খাবার নিয়ে মাহিরের রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে আছে রুমটায় প্রবেশ করে না অনেক দিন। যাবে কি যাবে না ভাবছে। রুমটা সম্পূর্ণ অন্ধকার করে রাখা আদারা রুমের লাইট ওন করে দেখে টাই এক জায়গায় মুজা এক জাগায় আর শার্ট এক জাগায়। আদারা বরাবরই গোছানো একটা মেয়ে তার এমন নোংরা ভালো লাগেনা। সে খাবারটা টি টেবিলে রাখে আর তখনই বেলকনিতে থেকে মাহির আসে। হাতে সিগারেট। আদারার সিগারেটর গন্ধ টায় অনেক খারাপ লাগছে। মাহির আদারা কাছে এসে তার মুখে ধোঁয়া দিয়ে বলে

— এখানে কি চাই? আদারা বলে

— আপনার খাবার। মাহির

— খেতে পারি এক শর্তে সেদিনের মতো খায়িয়ে দিতে হবে!! আদারা বলে

— পারবো না। মাহির

— আমিও খাবো না। আদারা শেষে না পেরে হাত ধুয়ে এসে খাবার তুলে দেয় মাহিরের মুখে। মাহির বলে

— ওহু এভাবে না। হাত দিয়ে খাবো। আদারা খাবর ধরে মাহিরের মুখের কাছে মাহিরও খেতে লাগে। মাহির এবার ইচ্ছে করেই আদারার হাতে কামড় দেয়। আদারা ব্যাথা পেলেও কোনো রিকেয়শন দেয় না । আবারও মাহির একই কাজ করে আদারা এবার হালকা চিৎকার দেয়। মাহির বলে

— তুমি খাচ্ছ না কেন? আদারা বলে

— আপনি খান। কিন্তু দয়া করে আমার হাত না ভাত খান। মাহির বলে

— হ্যা আমি জানি আমি খান। এবার তুমিও খাও। আদারা

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে