সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-১০

0
1817

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥
#পর্ব_১০
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
সব কিছু খুব সুন্দর করে কাটছে।
মা বাবা খুব খুশি।
সবার আনন্দ আর হাসি খুশি মুখটা দেখে আমিও খুব বেশি খুশি হয়ে গেলাম।
ওদের আনন্দ আর খুশিতেই আমার শান্তি।
আমানও সবার সাথে মিশে গেছে।
ওকে দেখে বার বার মনে হচ্ছে এমন এক জন কেই তো প্রয়োজন ছিল যে কিনা আমার সব আপন মানুষ দের আপন করে নিবে।
আমার ভালোবাসা নয় এক পাশে থাক।
আমি আমানের সাথে সবাইকে হাসতে দেখছিলম তখন হটাৎ করে লাইট অফ হয়ে গেল।
তার পর একটা আলো আমার উপর এসে পরলো,
আমি অবাক হয়ে গেলাম কিছুটা।
–আমার জীবনে আমার ঘরে আমার অস্তিত্বে তোমায় সাগতম জানাচ্ছি মিসেস.আমান খান

আমান কথাগুলো বলে আমার দিকে এগিয়ে এলেন,
–আমার বৃদ্ধ বয়সে আমার পাশে থেকে পাকা চুল গুনে দিও।
আমার বাচ্চা গুলোকে মায়ের স্নেহ দিও।
আমার বাবাকে তার প্রাপ্য ভালোবাসা টুকু দিও।
আর আমাকে তোমার মনের ওই গভীরের সব টুকু জায়গা দিও।
ব্যাস আর কিচ্ছু চাই না তোমার থেকে।
আমার সব থেকে বড়ো প্রাপ্তি তুমি।
আমার ঘরের আলো।
আমান হাঁটু গেড়ে একটা আংটি পরিয়ে দিলো।
–তুমি আমার তুমি নামক প্রাপ্তি❤️আমার এই ছোট্ট ঘরে তোমায় সাগতম জানাচ্ছি ছোট্ট এলটা উপহার দিয়ে। ❤️
আমি মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
যে লোকটা সব সময় নিজের চেহারাটাকে শক্ত করে রাখতো।
সেই ছেলেটা আমাকে এতো ভালোবাসা দিচ্ছে।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
আশে পাশে সবাই হাতে তালি দিচ্ছে।
আমি আর কিছু ভাবতে পারলাম না তাকে উত্তর দিলাম,
–ধন্যবাদ মি.খান আপনার সব প্রাপ্তির কারন আমি হবো ইনশাআল্লাহ।
যদি ওয়াদা করেন এক সাথে চুল পাকা পর্যন্ত থাকবেন তাহলে।
আমান এক আকাশ সমান হাসি মুখে নিয়ে আমার হাতে চুমু খেলেন।
আর তখনি লাইট জ্বলে উঠলো।
সবার মুখে হাসি।
এই আনন্দে মধ্যে দিয়ে কাটলো সন্ধ্যা।
সবাই চলে গেছে প্রায়।
মা বাবা আর ঋতু আছে রওনা দিবে।
বাবা কিছু খাবার পাঠালেন তাদের সাথে।
কিরন ভাইয়া ঋতুকে নিতে এলেন।
তার একটা কজের জন্য সে রিসিপশনে আসতে পারে নি।
কাজ শেষ করে যাবার সময় ঋতুকে নিয়ে গেলো।
ঋতু যাবার সময় আমাকে বলল,
–,দোস্ত আমন ভাইয়া তোকে অনেক ভালোবাসবে।
সব পুরোন কথা ভুলে যাবি কথা দে আমাকে আর ভাইয়াকে তার অধিকার। অধিকার মানে তুই বুঝতে পারছিস আমি বুঝাতে চাইছি?
–হুম।
–সব অধিকার তাকে দিয়ে দিস। এখন তুই তার। অন্য কারোর কথা ভাবিস না সোনা।
–হুম ঠিক আছে
ঋতু আমায় জড়িয়ে ধরল।
–আমার বুঝমান বেবু। টাটা।
–টাটা।
সবাই চলে গেছে
বাবা টায়ার্ড রুমে রেস্ট করছে
আমিও নিজের ভারি কাপড় খুলে কম্ফোর্ট এলটা জামা পরে নিলাম।
অনেক ধকল গেল।
আয়নার সামনে বসে চুল বাধছি।
ঘরটাকে সুন্দর করে সাজানো হইছে
আন্টি (আমানের মামি হন সম্পর্কে) আমাকে আমন না আসা পর্যন্ত সেজে থাকতে বলেছিল কিন্তু আমি তা করি নি।
কেন করি নি তা আমি নিজেও জানি না।
চুল বেঁধে উঠতে যাবো তখন ঘরে আমানের আগমন।
আমাকে দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
–বাহ বাসর ঘরে বৌ এর এমন ন্যাচারাল সাজ ই ত দরকার।
আমি একটু লজ্জা পাইছি কিন্তু ওনাকে দেখাই নি।
তিনি এসে সোজা বাধরুমে চলে গেলেন।
ফ্রেশ হয়ে বের হলেন,
–নামাজ পড়তে হবে।
–,ওহ হ্যাঁ পড়তে তো হবে চলো এক সাথে পরি।
–হুম চলুন।
তার সাথে এক সাথে নামাজে দাঁড়ালাম
নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম,
–আমাকে সব ভুলিয়ে এই মানুষ টার সাথে জীবন কাটানোর তৈফেত দান করো ।
আমি তাকে ভালোবাসতে চাই।
,
নমাজ শেষ হলে আমান বলল,
–তুমি শুয়ে পরো অনেে টায়ার্ড দেখাচ্ছে তোমায়।
আমার কিছু কাজ আছে।
–আচ্ছা।
সত্যি খুব ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমিয়ে গেলাম শোয়া মাত্র।
মেঘ ঘুমোতে তার নিষ্পাপ মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে আমান।
একটা মেয়ে যার মায়াবি চোখের পলক হিন চাহনি গে আটকে যাওয়া যায় ১০০ বার।
একটা মেয়ে যার হাসিতেই হার্ট ১০০০ থেেে বেশি স্পন্দন এর শিকার হয়।
তুমি হলে হৃদয় পুরির রানি।
সত্যি বলতে মায়াবিনী তুমি আমার কল্পনার সে অর্ধাঙ্গিনী❤️।
–আমি জানি না আমাদের সম্পর্কের পরিনতি কি।
আমার ভয় হয় তোমায় নিয়ে কিন্তু আমি এটা জানি আমি তোমায় হৃদয়মাঝে রাখবো সব সময়।
আমি যতোই কনফিডেন্স হই না কেন ভেতরে ভেতরে ভয় টা কেমন আটকে ধরছে চারি পাশ দিয়ে আমাকে।
মেঘ পারব তো সব কিছু সঠিক করে করতে।
কথা গুলো বলে মেঘকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরে আমান।
আমানের ভয়ের কারন টা কিন্তু অজানা কোন রহস্যের মাঝে আছে।
,
,
,
সকালে সূর্য তার কিরন দিলো।
মেঘ উঠে আমানকে নিয়ে নামাজ আদায় করে নেয়।
তার পর সকলের জন্য নাস্তা তৈরি করতে লাগে।
কেউ তাকে বলে নি সার্জেন্ট রা বার বার বারন করা স্বত্তেও মেঘ বসেছে রান্না করতে।
সুন্দর করে সব রান্না করেছে খুবই আদর আর পরম যত্নে।
রান্না গুলো সাজিয়ে রাখার সময়।
আরিফ খান বাইরে এলেন সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে সরু চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে রইলেন,
–কি ব্যাপার রাজকুমারী তুমি রান্না কেন করেছো?
–বাবা আসলে,
–থাক কোন কথা বলো না একটা কথা মা এখন তোমার পড়ালেখার সময়। তুমি মাত্র ১ম বর্ষে এখনো অনেকদুর যেতে হবে আমি চাই না পড়ালেখা শেষ না হবা পর্যন্ত তুমি এসব গিন্নি দের কাজ করো।
এগুলা করার জন্য সার্ভেন্ট আছে।
বাবার কথায় অফুরান্ত হাসি দিলাম
বাবা খেতে বসে বললেন,
–আমান কই?
–এই যে বাবা আমি।
আমানও শিড়ি বেয়ে নেমে আসলো।
–মেঘ তুমি ফ্রেস হয়ে কাপড় পাল্টে নেও তোমাকে নিয়ে ভার্সিটি যাবো।
–সে কি কাল বাড়িতে অনুষ্ঠান হলো আজই যাবে।
–হ্যাঁ বাবা এই অনুষ্ঠানের জন্য হয় তো ওর মাথায় যা কিছু ছিল তাও ফাকা হয়ে গেছে।
–আপনি এমন কেন বলছেন আমি যথেষ্ট পড়াশোনা করি।
–হ্যাঁ ক্লাসে দেখা যায়।
–বাবা তোমার ছেলে আমাকে অপমান করছে।
–হ্যাঁ আমন তুমি আমার মেয়েকে এমন বলবা না।
–তোমার মেয়েকে একটু পড়ালেখা করতে বলো বলব নানে।
–হুহ যুধিষ্ঠি আমার আমি ভালো করেই পড়ালেখা করবোনি।
–করলেই ভালো আমরা অপেক্ষা করছি যাও রেডি হয়ে এসো।
আমি একটা ভেংচি কেটে চলে এলাম।
সব সময় এমন বলে আমি কি পড়ালেখা এক দম করি না নাকি আজব।
ফ্রেশ হয়ে একটা জাম রঙের থ্রি-পিস আর হাতে ঘড়ি লাগিয়ে চুল গুলে সামনে থেকে বেঁধে নিচে এলাম।
আমি আসায় সবাই খাবার শুরু করলো

বাবা আমার রান্নার প্রশংসা করলেন।
খেয়ে বেরিয়ে গেলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্য
আমান আর আমি গাড়িতে ছিলাম।
আমান চুপচাপ ছিল।
ভার্সিটি তে পৌঁছে ঋতুর সাথে দেখা।
আমান গাড়ি পার্ক করে লাইব্রেরি তে চলে গেল আমি ঋতুর কাছে,
–দোস্ত বাসর রাত কেমন কাটলো (চোখ মেরে)
–মার খাবি?
–ধুর এমন করিস কেন বল না।
–অন্য দের থেকে আলাদা।
–ও আচ্ছা তাই।
–হয় তোমার আর ভাইয়ার বাসর ঘরে আই সিসিটিভি রেখে দিবো হাজার হোক প্রেমের বিয়ে বলে কথা।
–দোস্ত তোর না বিয়ে হয়ে গেছে তাও ফাজলামি কমাবি না।
–না কমাবো না (দাঁত বার করে)
চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে