#সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_০৮(wedding special 🥳)
বাবার কথায় মলিন হেসে তার হাত দুটো ধরে আমান,
–নিশ্চিন্তে থাকো আমার মেঘ আর তোমার কিছু হবে না আমি আছি তো।
–তুমি আমার পৃথিবী আমান আমার পৃথিবীতে তুমি ছাড়া কেউ নেই নিজের বাবাকে এতিম আর নিঃসঙ্গ করে দিবি না তো।
–আমি বেঁচে থাকতে না বাবা।
আমানকে তার বাবা জড়িয়ে ধরে,
এদিকে,
দিন পেরিয়ে রাত হলো,
মাত্র এই রাত টার ব্যবধান আছে।
রাত টা পে-রোলে কাল আমার বিয়ে আমান স্যারের সঙ্গে।
জীবনের জন্য তার কাছে বাঁধা পরে যাবো।
না আমার এই অজানা ভালোবাসার কথা কেউ জানবে না কখনো এই অর্ধেক ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে।
অপূর্ণ ভালোবাসার হাত ধরে বেঁচে থাকতে হবে চিরকাল।
কথাগুলো জানালার কাছে বসে ভাবছি আর আকাশের বুকে থাকা ওই অর্ধেক চাঁদ টাকে দেখছি।
মনের আকাশে যতদুর পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে ধুধু কালো মেঘের আচ্ছন্ন।
তার কাছে আসা, তার ছোয়া, তার কথা সবি এখন স্মৃতি।
–মেঘ,
হটাৎ ঋতুর কন্ঠ পেয়ে কিছুটা কেঁপে উঠলাম।
–হুম।
–দোস্ত জানিস আমাদের জীবন টা না একটা বাইসাইকেল এর মতো।
Just control, look straight and run.
পেছনে অনেক কিছু হয়েছে।
হ্যাঁ অনেক কিছু হয়েছে কিন্তু তার দিকে তাকাবো না কারন পেছনে তাকাতে গেলে একটা দুর্ঘটনা ঘটবে।
আর একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের দুঃখের কারন।
সামনে এগিয়ে যা অনেক কিছু আছে যা পেছনে ফিরে তাকানোর কথা ভাবাবে না।
কখনো না।
তুই চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে আমার বিশ্বাস স্যার তোকে খুব বেশি ভালোবাসবে।
আর সত্যি বলতে এখন চাইলেও কিছু করা সম্ভব নয়।
আর তুই তো বলিস যা সম্ভব নয় তা করা উচিৎ না।
ঋতুর কথা গুলো মন দিয়ে শুনলাম।
তার পর ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
সত্যি ওর কথা গুলো মানতে হবে ও যেগুলা কথা বলল তা সব সঠিক।
আমার মন টা অনেকটা হালকা হলো।
তখনি মা খাবার নিয়ে এলো।
আজ মা নিজ হাতে আমাকে খাইয়ে দিলো।
বাবা এসে আমাকে বলল,
–রাজকুমারী কাল রানি হয়ে কারোর ঘরে প্রবেশ করবে।
আমি জানি এটা অনেক কঠিন হবে প্রথম প্রথম কিন্তু আমি জানি আমার রাজকুমারী সব কিছুকে আপন করে নিবে
মা বাবার চোখের পানি আর কথায় আজ বুঝতে পারলাম তারা আমাকে কতোটা ভালোবাসে।
কালকের পর থেকে আমি আর এ বাড়িতে থাকবো না আমি ঠিকানা বদলে যাবে।
আমার ২০ বছরের অবহিত জীবন এর স্মৃতি সব আমার মস্তিষ্ক এবং মনে থাকবে।
আমি কালকের পর থেকে কারোর স্ত্রী কারোী বৌ মা কারোর চাচি কারোর মামি কারোর ভাবি। ইত্যাদি আরো কতো সম্পর্কে পরিনত হবো।
আমার দাঁয়িত্ব অনেক।
ছোট্ট মায়ের মেঘ কাল বড়ো হয়ে যাবে।
তার সংসার হবে স্বামী হবে।
একটা মেয়ের জীবনের সব থেকে পরিবর্তন আসে যে সময় টায় কাল আমার জীবনে সেই সময় টা।
আমাকে ভুলতে হবে সব কিছু নতুন এই সম্পর্ক গুলাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
মা বাবা ঋতুর সাথে অনেক কথা হলো এ রাতে প্রায় রাত ১ টা বাজে।
তখন ঋতুর সাথে শুয়ে পরলাম।
সারা দিনের ক্লান্তি তাই ঘুমিয়ে গেলাম।
,
সূর্য তার আলোর বিস্তার করেছে চারিদিকে,
ফজরের নামাজ আদায় করে সকালের খাবার খেয়ে নিলাম।
বিয়ে বাড়ি মেহমানে ভরপুর।
আমি রুমের মধ্যে বসে আছি সবাই যে যার কাজে ব্যাস্ত।
ঋতু মাঝে মাঝে এসে টু টা দিচ্ছে।
বাকি সময় একা বসে থাকছি।
হাতের মেহেদী দেখছি মাঝে আমান নামটা লেখা আছে।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।
১২ টা বেজে ২০ মিনিট,
বিয়ের সাজ সাজানো শুরু হলো।
প্রায় ২ ঘন্টা পর লাল বেনারসি আর নানা রকমের জুয়েলারি তে সেজে উঠলাম আমি।
ঋতুও খুব সুন্দর করে সেজেছে,
বেনারসি টাইপ লাল শাড়ি কুঁচি করে পরে সেজেছে।
–আজ ভাইয়া জ্ঞান হারাতে বাধ্য।
–হুম স্যার ও।
স্যার কথাটা শুনে কিছুটা কষ্ট পেলাম।
যাকে কল্পনা করেছিলাম সে তো নেই।
–ওরে আমার কলিজা প্লিজ তুই আর এমন মুখ করিস না আমি আর এভাবে তোকে দেখতে পারছি না।
বুঝেছিস।
কথাটা বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমারা ছবি তুললাম কিছু।
,
,
,
ঋতু বাইরে কিছু ফুল সাজাতে বসেছিল এমন সময় কিরন তার পাশে এসে হুট করপ কানের কাছে বলল,
–হার্ট এটাক করানোর চিন্তা।
–ও মা তুমি কখন এলে (চমকে)
–এই মাত্র আমার বৌ টাকে দেখে তো আমি সত্যি জ্ঞান হারাবো।
–ইস রে ঢং।
–ধুর ঢং বলছো কিছু দিন পর আমিও তোমায় নিয়ে যাবো।
–হ্যাঁ হ্যা দেখা যাবে।
–আচ্ছা ওর কি খবর?
–কাল বুঝালাম সব ও বুদ্ধিমান মেয়ে ইনশাআল্লাহ বুঝবে।
–হুম সেটাই যেন হয়।
–তুমি দেখো তো বর আসছে মনে হয়।
–তুমি না গেটে দাড়াবা।
–হ্যাঁ তার জন তো ফুল সাজাইতেছিল।
–ওহ দেখো চলে আসছে মনে হয়।
কিছু সময় পর,
বর আসলো,
সব নিয়ম কানুন মেনে বিয়েটা সম্পূর্ণ হলো।
সব ধরনের খুনসুটি হলো ঋতু আর আমনের মাঝে।
মেঘের কোন কাছের বোন নেই যেহেতু ঋতুই সব করেছে।
মেয়ে দুইটার মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট।
★★★
গাড়িতে আমান স্যারের পাশে বসে আছি।
সব কিছুর পর বিয়েটা হলো।
খুব ভালো করেই মিটমাট হলো সব।
হয়ে গেলাম তার।
আমার স্বপ্ন তা তো স্বপ্ন ই থেকে গেল।
কিছু রঙিন স্বপ্ন কুরবানী হয়ে আজ জন্ম নিলো নতুন এক সম্পর্কের।
গাড়িতে আমান স্যার আমার সাথে একটা কথাও বলেন নি।
কিছু সময় পর আমরা তাদের বিশাল বাড়িতে চলে আসি।
এখানে আসতে সবাই আমাকে অভিনন্দন জানাতে ব্যস্ত।
ফুল ছেটাতে ব্যাস্ত।
ঘরের দরজার সামনে আসতে দেখি স্যারের বাবা (আজ থেকে আমাও বাবা) হাতে এক গুচ্ছ ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি আসতে আমাকে ফুল গুলে দিলেন,
–অভিনন্দন এ বাড়িতে কোন মেয়ে মানুষ নাই তুমি আজ থেকে এই রাজ্যের রানি মা।
বাবার মুখের হাসিটা দেখার মতো।
সে যে অনেক খুশি তা বুঝা যাচ্ছে।
সব আয়োজন শেষে আমাকে আমানের ঘরে বসিয়ে দেওয়া হলো।
এই ভারি সব কাপড় গয়না পরে খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। কিন্তু তাও কাপড় পরে বসে আছি তার জন্য।
কিছু সময় পর,
তিনি রুমে এসে কিছু না বলে আলমারির দিকে গেলেন,
একটা হালকা কম্ফোর্ট শাড়ি আমাকে দিলেন,
–এগুলা ছেড়ে গোসল করে নেও ভালো লাগবে।
আমি তার আচরণে মুগ্ধ।
তার হাত থেকে শাড়িটা নিয়ে তার বলা মতো কাজ করলাম
বাধরুম থেকে বেরিয়ে আয়নার সামনে চুল গুলা ছাড়াতে শুরু করলাম। ওরা চুল ফুলানোর জন্য চুল গুলালে এক দম বাজে বানিয়ে ফেলছে।
চুল গুলা ছাড়িয়ে উঠতে আমান আমার হাত ধরে বসালো৷ বিছনায়। —
–মেঘ আজ থেকে আমার স্বামী এবং স্ত্রী। খুব পবিত্র সম্পর্ক তৈরি হলো আজ।
আমি আমার বাবাকে খুব ভালোবাসি পৃথিবীতে উনি ছাড়া আমার কেউ নেই।
এক মাত্র দুনিয়া তিনি সে যেন কখনো তোমার থেকে কষ্ট না পান এটুকু আমি আসা করতে পারি?
–জি অবশ্যই।
–ঘুমিয়ে পরো।
আমার এক পাশে শুয়ে পরলেন তিনি।
আমিও আমার স্থানে শুয়ে পরলাম
এই যে পার্থক্য শুরু হচ্ছে।
কখনো এমন কল্পনা করি নি। আজ বিয়েটা আমার হয়েছে তার প্রমান সরুপ তিনি আমার পাশে শুয়ে আছেন।
আমাকে সব ভুলতে হবে এই সংসার আর পরিবার টাকে আপন করে নিতে হবে ❤️
চলবে,