সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-০২

0
2412

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥
#পর্ব_০২
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
হটাৎ পেছন থেকে কেউ এসে আমাকে ধরে বসে।
তৎক্ষনাৎ আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখি একটা মুখোশ পরা লোক আমার হাত দুটো সামনের দিকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে,
–কে আপনি? মা মা
–চেচিও না তোমার মা এখন নাই চেঁচালে কিন্তু সমস্যা হবে।
ভয়ে চুপচাপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম ।
ডাকাত নিশ্চিত কি করব চিৎকার দিবো কিন্তু ভয়ে গলা দিয়ে সাউন্ড বার হচ্ছে না।
লোকটা তার পকেট থেকে একটা লকেট সহ চেইন বার করে আমার গলায় পরিয়ে দিলো।
কি ব্যাপার ডাকাত তো নিতে আসে এ লোক কি আমাকে দিতে আসছে নাকি।
–এটা সব সময় পরে থাকবা। খুললে খবর আছে।
কথাটা বলে আমাকে ছেড়ে দিলো।
কিছু সময় এভাবে তাকিয়ে রইলাম লোকটার কাছে আসা ভয় দিচ্ছে, কিন্তু কেন জানি না ভালো লাগা কাজ করছে।
কিছু সময় এভাবে তাকিয়ে থাকার পর লোকটা দৌড়ে জানালা দিয়ে লাফ দিলো।
আমি আয়নার সামনে পাথরের নেয় দাঁড়িয়ে রইলাম।
কিছু সময় পর হুস আসতে দৌড়ে জানালা বন্ধ করলাম
হচ্ছে টা কি এসব আমার সাথে।
গলায় হাত দিয়ে লকেট টা দেখলাম
এটা পাথরের সেই লকেট টা যেটা আমি ৫০ টাকার জন্য কিনতে পারি নি। কিন্তু আমার খুব বেশি পছন্দের ছিল।
কিন্তু উনি কে ছিল এভাবে কি করে আসলো আর এটা বা কেন দিলো।
ধুর সব কেমন গুলায় যাচ্ছে। কিন্তু সত্যি বলতে লকেট টা খুলতে ইচ্ছে হচ্ছে না মোটেও৷
লকেট টার দিকে তাকিয়ে কিছু সময় বসে রইলাম তার পর বই নিয়ে আবার বসলাম

অনেকটা সময় পড়ালেখা করার পর উঠে বাইরে এলাম।
মায়ের ডাক শুনতে পেয়ে,
,
এদিকে,
সেই মুখোশ পরা লোকটা তার ল্যাপটপ এর স্ক্রিনে মেঘের সব কান্ড দেখে হাসছে
–একটা বাচ্চা মেয়ের প্রেমে পরছি আমি।
সত্যি মেয়েটা আমার জীবনের উপর যেভাবে প্রভাব ফেলেছে ওকে ছাড়া বাঁচা সম্ভব না।
–স্যার আপনার খাবার সময় হয়ে গেছে। বড়ো স্যার আপনাকে ডেকেছেন ডাইনিং টেবিলে
–হুম আসছি,
,
,
অন্য দিকে,
আমান তার বাবার সাথে বসে গল্প করছে
–আমান বিয়ের সময় হইছে বাবা।
বিয়ে কথাটা শুনে আমান কিছু সময় চুপ থেকে উত্তর দিলো,
–বিয়ের সময় কি আদোও হবে বাবা কখনো
কথাটা বলে মাথা উঁচু করে বাবার দিকে তাকিয়ে হেঁসে দিলো আমান,
আমনের হাসির গভীর মানে টা তার বাবা বুঝতে পেরে তার ঘাড়ে হাত দেয়,
–মহান আল্লাহ তায়লা চাইলে সব হবে।
–আমি জানি বাবা কিন্তু তুমি তো জানো যে,
–স্যার ক্ষমা করবেন আপনাদের মধ্যে চলে আসলাম আসলে বাইরে এক জন বৃদ্ধ মহিলা এসে বার বার আমান স্যারের কথা বলছে,
আমান কথা থামিয়ে গার্ড এর সাথে সেই বৃদ্ধ মহিলার কাছে চলে এলো,
বৃদ্ধ মহিলা আমানকে দেখে খুব খুশি হলেন,
–আমার আকাশের চান্দ তুই আইছিস বাবা এখানের কেউ আমাকে তোর কাছে যেতে দেয় না রে বাপ।
–দাদি মা তুমি কি দরকার বলো।
ওনাকে ছাড়ো।
গার্ড রা মহিলাকে ছেড়ে দিলো,
–বাবা আমার একখান নাতনী ছিল যে পাতানো মনে আছে তোর?
–হ্যাঁ মনে আছে,
–ওর না ভিশন জ্বর অনেক নুন পানি মিশিয়ে পোট্টি দিছি কিন্তু কাম হয় না তুই যদি ওরে একটু হাসপাতালে নিতি তাহইলে মনডা কয় নাতনী আমার বাঁইচা যাইতো বাপ।
–তুমি চিন্তা করো না দাদি মা আমি দেখছি।
আমান সেই মহিলার সাথে কিছু লোক পাঠায় তার নাতনী কে হসপিটালে নিতে এবং কিছু টাকা দিয়ে দেয়
বৃদ্ধ মহিলা খুবই খুশি হয়।
,
,
,
রাতে মেঘ বিছনায় শুয়ে শুয়ে বার বার সেই মুখোশ পরা লোকটার কথা ভাবছে আর তার হাতটা ঠিক সেই লকেট টায়।
তার স্পর্শ কোন মতেই ভুলা সম্ভব না।
ঘুমই হচ্ছে না মেঘের।
খুব কষ্টে নিজেকে সামলে ঘুমিয়ে পরে,
এদিকে,
এগুলা দেখছে সেই অচেনা আগন্তুক,
–আমার বোঝা হয়ে গেছে যতোটা আমি তোমাকে চাই ততোটা তুমিও আমাকে চাও।
ভালোবাসার কমতি হবে না।
,
,
,
সকালে সূর্য উঠেছে চারিদিকে পাখির কিচিরমিচির ডাকে মেঘের ঘুম ভেঙে যায়,
ঘুম ভাঙতে উঠে তার নামাজ শেরে মর্নিং ওয়াক এ বের হয় ।
–ধুর এই ঋতু রোজ লেট করবে করবে তো করবেই ওকে আমি ধরে মারব।
কথাটা বলতে বলতে ঋতুকে ফোন করলাম,
–হ্যালো।
–হ্যা হ্যালো দোস্ত এই তো দুই মিনিট।
–তোরে আমি,
–সরি দোস্ত সরি,
–জলদি আয়,
–হ্যা এই তো তোর পেছনে,
পোছনে ফিরে দেখি ঋতু সাথে কিরন ভাইয়া।
ওদের দু’জন কে মানাই ভালো
কিরন ভাইয়া পুরো নাম কিরন দত্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ডিপার্টমেন্ট এর স্টুডেন্ট, চিকুন চাকান ফর্সা ৫ ফুট ৯ ইঞ্চির এক জন লম্বা ছেলে। আমার বান্ধবি কিন্তু কম সুন্দর না। হলুদ ফর্সা ভাইয়ার মতোই চিকুন চাকান একটা মেয়ে। ওদের দু জন কে খুব বেশি মানায়।
সত্যি বলতে দু জন দু’জন কে ভিশন ভালোবাসে।
–কিরে চল (ঋতু)
–হুম দুই প্রেমের পাখিদের সাথে আমার কাজ নাই তোমরা আগে হাঁটো আমি পেছনে হেডফোন কানে হাটবো।
–কি যে বলো বোন (কিরন ভাইয়া)
–কি বলব বলেন ভাইয়া বলতে তো অনেক কিছু ইচ্ছে হয় (দাঁত কটা বের করে কথাটা বললাম)
–মেঘ মার খাবি। (ঋতু)
–না বেব মার খাবো না।
–আপু কালকে জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
–বাদ দিন ভাইয়া কালকের কথা না মনে করি।
–হুম চলো হাটি।
–হুম চলুন,
ওরা সামনে আর আমি পেছনে কানে হেড ফোন গুঁজে হাটছি।
বেশ কিছুটা সময় পর আসছে এলটা গোলি এটা পার হলে উল্টো দিকে ঘুরে বাসার দিকে রওনা হবো।
তখন ভাইয়া বলল,
–মেঘ তুমি সামনে এসো এই যায়গা টা ভালো না।
–না ভাইয়া সমস্যা নাই হাঁটেন আমি আপনাদের পোছন পেছনই আসছি।
–সত্যি তো।
–হ্যাঁ ভাইয়া।
ওরা হাঁটছে আমি পেছন পেছন।
হটাৎ করে হাতে হেঁচকা টানে পাশের একটা দোয়ালের আড়াল হয়ে গেলাম।
আমি চিল্লাতে যাবো তখনি সামনে থাকা মানুষ টা আমার মুখ চেপে ধরল,
চোখ তুলে তাকিয়ে দেখি সেই মুখোশ পরা লোকটা,
–উম উম
–কি উম উম তোমায় দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিল এর থেকে ভালো জায়গা পাই নি তাই চলে এলাম।
মাতুব্বরি করে ভাইয়াকে সামনে পাঠালাম এবার যদি এই ব্যাটা কিছু করে ভেবেই কলিজা কেঁপে উঠছে রে।
আমি সমান তালে ছুটাছুটি করছি কিন্তু লোকটা আমাকে ছাড়ছেই না।
কিছু সময় পর ক্লান্ত হয়ে লোকটার দিকে তাকালাম।
লোকটা পলক হিন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখে কোন খারাপ মানসিকতার ছাপ দেখছি না আমি দেখতে পাচ্ছি খুব বেশি ভালোবাসার ছাপ।
আমি আবার শব্দ করে উঠলাম
এবার লোকটা আমাকে ছেড়ে দিলো,
–যাও,
আমি দৌড়ে বের হলাম।
এসে দেখি ভাইয়া আর ঋতু আমাকে খুঁজছে,
আমাকে দেখে ঋতু এসে জড়িয়ে ধরে,
–গেছিলি কই গাধি।
–কোথাও না রে,
–মার খাস নি অসভ্য ভয় পাইছি জানিস।
–সরি।
–চল আর হাঁটতে হবে না বাসায় যাবো ক্লাস আছে আজকে।
–হুম চল।
ভাইয়া আমাদের দু’জন কে বাসায় পৌঁছে দিলো
বাসায় এসে গোসল করে খেয়ে রেডি হলাম ভার্সিটির জন্য।
কাজ আমি কাজের মতো করছি কিন্তু বার বার সুধু সেই অচেনা লোকের মুখোশ পরা মুখটা আমার সামনে ভেশে উঠছে।
কথাটা কাউকে বলতে তো পারছি না কিন্তু আমার কেন জানি না বার বার সেই লোকটার কথাই ভাবতে মন চাইছে,
চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে