সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-১৬

0
1612

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_১৬
ঋতুর ইশারায় মালি আমানকে দেখলো।
তার মুখে অবাকের দৃশ্য স্পষ্ট।
আমি কিছু মালি দাদার কাছে প্রশ্ন করব তার আগেই আমান চলে এলেন আমার আর প্রশ্ন করা হলো না।
–মেঘ বাসায় যাবে না।
–না।
–মানে (ভ্রু কুচকে)
–মানে আজ ঋতুকে দেখতে আসবে আমি ওর বাসায় যাবো।
–ওহ সালিকা আপনাকে দেখতে আসবে আপনি আগে বলবেন না।
–জি আসলে হুট করেই ঠিক হলো।
–তো পাত্র কে আমাদের করিন মহাশয়।
–জি। (কিছুটা লজ্জা পেয়ে)
–আচ্ছা তাহলে তোমাদের আমি পৌঁছে দেয়।
–আচ্ছা (ঋতু)
গাড়িতে আমান আর ঋতু বেশ গল্প করল কিন্তু আমি কেন জানি না আর সে দিকে মন দিতে পারলাম না আমার মন টা মালি দাদার কথায় আটকে গেল।
কোথাও একটা খটকা রয়েছে খুব বেশি।
মনের মাঝে হাজার প্রশ্ন আমি জানি ওনাকে প্রশ্ন করলে কোন উত্তর পাবো না তাই নিজের মতো করেই খুঁজতে হবে।
ঋতুদের বাসায় পৌছে আমান আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
–ফেন করো নিতে আসব।
আমিও হাসি দিয়ে তাকে বিদায় জানালাম।
লোকটা কিছু ঘন্টা আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
মুখটা চুপসে আছে।
আমি ঋতুর সাথে ভেতরে গেলাম
আন্টি অনেক কাজ করছে।
ঋতুর ভাই অভিজিৎ দাদা আমাকে দেখে বললেন,
–কেমন আছো আপু?
–এই তো ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ আপনি?
–এই তো ভালো করেছো এসে।
–হ্যাঁ বান্ধবীর এতো বড়ো একটা দিন আসবো না।
আন্টিও আমাকে দেখে খুশি হলেন।
যাজ আন্টিকে সাহায্য করতে বসব এমন সময় ঋতুর চিৎকার।
–কিরে পাঠার মতো চিল্লাস কেন?
–তুই ওখানে কি করছিস আমি শাড়ি পড়বো আমাকে হেল্প কর।
–তাই বলে চিল্লাবি?
–দেখ মা সামলে নিবে তুই আমাকে হেল্প কর।
–আচ্ছা ওকে দাড়া্ বাবা।
ঋতুর মার অবস্থা হলো আমার মায়ের মতো কেউই নেই দাদা, ঋতু, আঙ্কেল আর আন্টি থাকেন।
আন্টিকে হেল্প করার মত কেউ নেই।
আমার মাকে ঋতু হেল্প করেছিল।
আমি ও করতে গেলাম কিন্তু ছ্যেমড়ি করতে দিলো না।
যাক ওর সাজা শাড়ি পড়াতে হেল্প করলাম।
আর আমার হাতে চুড়ি পরে নিলাম
আমাকে চুড়ি পরতে দেখে ঋতু বলল,
–কিরে হটাৎ চুড়ি?
–চমি বিবাহিত তা তে বুঝাই যাচ্ছে না চুড়িটা পড়লে হয় তো যাবে।
–ও বাবা মেয়ের আবার বুড়ি সাজার ইচ্ছে জাগে?
–হয় রে।
দু জনে হেসে দিলাম ।
কিছু সময় পর কিরন ভাইয়া তার মা বাবা আর কিরন ভাইয়ার ভাই এলেন,
ওরা আসার পর ঋতুর সাথে কিরন ভাইয়ার মা কথা বললেন,
আন্টি ভালো মানুষ খুব।
সব কথা বার্তা শেষে বিয়ের দিন ফেলা হলো।
আগামি সপ্তাহের শুক্রবারে।
তার আগে বাকি অনুষ্ঠান।
আমি খুবি খুশি ছিলাম।
কিন্তু মনের মাঝে কোথাও মালি দাদার কথা গিলো বেশ নাড়া দিচ্ছে।
আমি ঠিক করলাম এখান থেকে বেরিয়ে সোজা ভার্সিটি যাবো চজ ৪ টা পর্যন্ত মালি দাদা ভার্সিটি তে থাকবেন ওনার থেকে জানতে হবে সব।
–ঋতু আমি এখান আসি।
–ভাইয়াকে ফোন করবি না?
–আব না আমি চলে যাবো সমস্যা নেই।
–সিওর?
কিরন কে বলি?
–আরে না যবো তুই থাক আর কি কি করবি ঠিক আর।
–হুম তুইও।
–হুম আসি আন্টি আসি,
–আসিস মা আবার।
–জি আন্টি বিয়ের আগে হলে তো আজকেই থেকে যেতাম।
–পুতুল মেয়ে একটা যা। অভিজিৎ এগিয়ে দিবে।?
–না আন্টি চলে যেতে পারব।
–আচ্ছা।
সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এলাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে,
জলদি করে ভার্সিটি তে পৌঁছে সোজা মালি দাদার কাছে গেলাম,
এদিকে,
আমান বিকাল ৪ টা বেজে গেছে দেখে মেঘকে ফোন করে।
কিন্তু ফোনে পাচ্ছে না।
মেঘ ফোন তুলছে না।
তাই ঋতুকে ফোন করে,
–হ্যালো ভাইয়া।
–হ্যাঁ মেঘ কই ঋতু?
–ভাইয়া ও তো বেরিয়ে গেছে এতো সময় তো চলে যাবার কথা।
–বেরিয়ে গেছে মানে আমি তো ওকে বেরোনোর সময় ফোন দিতে বলেছিলাম

–ও বলল চলে যেতে পারবে দাদা বলেছিল এগিয়ে দিবে তার পর কিরন বলল কিন্তু ও বলল ও যেতে পারবে।
–ওহ কতো সময় আগে বের হইছে?
–প্রায় ৩০ মিনিট এতো সময় চলে যাবার কথা বোধহয় জ্যামে ফেঁসেছে।
–তাও হতে পারে আচ্ছা রাখছি।
–জি ভাইয়া।
আমানের চিন্তা হতে শুরু করলো।
ফোন কেন ধরছে না মেয়েটা।
বলেছিল ফোন করতে মাতুব্বরি করেছে।
আমানের মনে হলো কিছু সময় দেখা যায়,
এদিকে,
–দাদা থ্যাংক গড তুমি আছো,
–কি হইয়াছে মা তুমি এমন হাঁপাচ্ছো কেন?
–তুমি আমাকে সকালে যা বললে না যে কোন ৪০-৪৫ বছরের কোন প্রোফেসর আসতে চাইছিল?
–হ্যাঁ।
–তুমি তাকে দেখেছিলে?
–হ্যাঁ আমাকে স্যার একটা ফাইল দিতে কইছিল সেই ফাইলে ছবি ছিল।
–তুমি দেখো তো এই লোকটা নাকি (আমি বাবার ছবি দেখিয়ে বললাম)
–না গো মা তুমি কি করবা আমার হয়ত ভুল হইছে।
–না আমার লাগবে মালি দাদা তুমি দেখাতে পারো আমাকে তার ছবিটা?
–হ্যাঁ কিন্তু ৬ মাস নেই তো কোথায় ঠিক ব
কইতে পারুম না।
ভালো কইরা দেখতে হইবো।
–আচ্ছা তুমি যাও দেখো খোঁজ।
–আইচ্ছা তুমি বসো।
মালি দাদা লাইব্রেরির দিকে চলে গেল। আমি বসে রইলাম।
কেন জানি না শান্তি পাচ্ছি না কোন এক অজানা ভয় ভেতরে গ্রাস করেছে।
সব কিছু ধুয়াসা লাগছে।
বেশ কিছুটা সময় কেটে গেল আমান বার বার ফোন দিতে আছে ৫০ বারের উপরে ফোন দিছে আমি পিক করছি না।
কোন মতে মালি দাদার থেকে লোকটাকে দেখতে পারলে হয়।
আমি যখন অস্থির হয়ে আছি তখন দেখলাম লাইব্রেরি থেকে মালি দাদা বের হইছে হাতে একটা কাগজ নিয়ে
দেখে শস্তি পেলাম।
দাদার আমার প্রায় অনেকটা কাছে চলে এসেছে।
আমি উঠে দাঁড়াতে হটাৎ আমাকে কেউ পেছন থেকে হেঁচকা টান দিলো।
পেছনে ফেরার আগে গালে খুব তিব্র আকারে সামনে থাকা মানুষ টার ৫ টা আঙুল পড়লো।
ঘটনা এতো দ্রুত হয়ে গেছে যে কিছুই বুঝে সামনে তাকানোর আগে সামনে থাকা মানুষ টা আমার দুই বাহু ধরে তার দিকে ফেরালো।
সামনে তাকিয়ে আমান কে দেখে অবাক ভিশন রাগ হচ্ছে তার হলুদ ফর্সা মুখ খানা রাগে লাল হয়ে আছে।
আমি গালের ব্যাথা ভুলে ভয়ার্তক দৃষ্টিতে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
ও আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কিছু একটা চেক করে একটা আছাড়ে ফেনটা ফেলে দিলো মাটিয়ে।
সেটা টুকরো হয়ে গেছে,
–ফোন হাতের মধ্যে কি সো অফ করার জন্য থাকে নাকি একটা মানুষ ফোন দিলে সেটা তুলতে হয় এই জন্য থাকে (চিৎকার করে বলল)
ওর চিৎকার শুনে ভয়ে আরেক দফা পিছিয়ে গেলাম
আমাকে পেছোতে দেখে ও এগিয়ে এলো,
–বাসায় আসার আগে ফোন দিতে বলেছিলাম ফোন দেওয়া তো দুরে থাক ১০০ বার ফোন দিয়েছি সেটাও তোল নি হাতের মধ্য ফোন রেখে।
সব বাদ দিলাম বাসায় যাবার কথা ৪ টার দিকে সেখানে এখন বাজে ৬ঃ৪০ সন্ধ্যার আজান দিয়ে দিছে।
ঋতুর বাসা থেকে বের হয়ে গেছ।
তাহলে কোথায় আছো?
নিজের বাসায় ও নেই।
তাহলে কোথায় আছো?
পাগলের মতো বিকাল ৪ঃ৩০ থেকে কোথায় কোথায় খুঁজে বেড়াচ্ছি ।
কোথাও নেই আমি তো ভেবেছি ফোন মনে হয় হারিয়ে গেছে কিন্তু এখানে এসে দেখি তো না আমার স্ত্রী দিব্বি তার হাতের মাঝে ফোনটা রেখে আমার ফোন ইগনোর করছে।
সমস্যা কি মেঘ তোমার কেন করেছো এমন।
কেন আমাকে এতো চিন্তার মাঝে রেখেছো।
বলো! (চিৎকার করে)
কি বলব দিশা পাচ্ছি না এখন সে সন্ধ্যা হয়ে গেছে এটা খেয়াল ই করি নি।
ও যে এতো রেগে যাবে ভাবি নি দোষ টা আমারি বলা উচিৎ ছিল এখন কি করব।
–তুমি এখানে আসবে ওকে ঠিক আছে আমাকে এক বার বলবে না?
তুমি বোঝ নি আমি চিন্তায় থাকবো।
কি বলব বুঝে পারতেছি না আমি,
চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে