#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#পর্ব_১৫
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
মা বাবা আমাদের দেখে মহা খুশি।
আমিও অনেক দিন পর ওদের পেয়ে ভিশন খুশি।
মা আমার পছন্দের খাবার রান্না করেছে দেখে আরোও খুশি।
দুপুরে খাবার শেষে সবার সবাই এক সাথে অনেক গল্প হলো।
এর মধ্যে আবার বাবাও চলে এলেন।
মা বাবাকে খেতে দিলেন।
বাবাও খেয়ে আমাদের অন্য একটা রুমে রেস্ট করতে গেলেন।
মা বাবা তাদের রুমে আর আমার রুমে আমি আমানকে নিয়ে এলাম।
রুমে এসে খাটের উপর বসে পেছনে মাথা দিলাম।
ক্লান্ত লাগছে আর এই শাড়ি ইচ্ছে হচ্ছে খুলে ফেলি।
–খুব বেশি টায়ার্ড লাগছে মনে হচ্ছে।
–হুম ভিশন।
–শাড়ি প্যারা দিচ্ছে?
–হুম ভিশন।
–তাহলে খুলে ফেল।
–কাপড় আনি নি।
–কেন এখানে নেই?
–হুম আছে তো কিন্তু বাসায় বাবা আছে কি ভাবে পরি সেটা বলুন।
–কেন তুমি বাসাশ কি পরো।
–স্কার্ট প্লাজো আর গেঞ্জি
–আচ্ছা তাহলে তো সমস্যা।
–হুম সমস্যা।
–তাহলে বাসায় যাবো আমরা রাতে?
–মায়ের হাতে খাবার খেয়ে(চোখ বন্ধ করে বললাম)
–হুম তা তো খাবো কিন্তু,
–কিন্তু।।
–আজ চ্যালেঞ্জ মনে হয় আমি জিতেছিলাম তাই না?
ওনার কথায় মৃদু চোখ খুলে বললাম,
–হ্যাঁ তো (ভাব নিয়ে)
–হ্যাঁ তো আজকে দিনে আমি যা বলব তাই হবে।
–আমার ঘুম পাচ্ছে
বলে শুয়ে পরলাম,
–তবে রে তোমায় ঘুমাতে আমি দিবো না।
–এই আমি কিন্তু মায়ের কাছে দৌড় দিবো।
–দরজা বন্ধ, (দাঁত বার করে বলল আমাম)
–পাজি। (ভ্রু কুঁচকে।)
–হ্যাঁ তোমারি তো।
,
এভাবে দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসা বিনিময়ে আর আমানের এক কথায় অত্যাচারে আক্রান্ত আমি।
পাজি ভিশন পাজি।
ও জিতেছে বলে আমাকে দিয়ে আজ কি কি না করালো।
রাতে খাবার খেয়ে মা বাবাকে বিদায় জানিয়ে বাসায় চলে এলাম।
বাবা আগে চলে এসেছিলেন তাই মা বাবার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিয়েছে ।
বাসায় এসে বাবাকে খাবার দিয়ে বাবার খাবার শেষ হলে রুমে গেলাম।
মহাশয় বসে বসে ফোন টিপছেন।
আজ বহুত জ্বালিয়েছে আমিও এখন জ্বালাবো।
দাঁড়াও মাথায় কি সুন্দর সুন্দর বুদ্ধি বার হচ্ছে।
একটা একটা কাজে লাগালে হয়।
চুপি চুপি গিয়ে ওর থেকে ফোনটা ছো মারলাম।
আমি ফোন নিতে তিনি তাকালেন,
–কি চলে?
–কাজ আর কি?
–কোন কাজ নাই এখন আমার সাথে বেলকনিতে চাঁদ দেখতে যেতে হবে।
–লক ডাউন দিয়ে দিচ্ছে সরকার ভার্সিটি বন্ধ হবে কাল থেকে সো আমাকে কিছু পুরোনো কাজ সাবমিট করতে হবে আজ আমি এখন কিছু করতে পারবো না মেঘ কাল চাঁদ দেখবো।
–আপনি এমন কেন আমি না আপনার মিষ্টি একটা লাল টুকটুকে বৌ।
এতে মিষ্টি করে বলছি যাবেন না।
কিছুটা কন্না ভাব নিয়ে.
–আরে পাগলি তা না আমার সত্যি কাজ আছে।
–আপনার কাজে গুলি মারি।
–এই মা এটা কি হলো।
–সত্যি যা হবে ভালো হবে চলুন না প্লিজ।
–আচ্ছা চলো।
আমান উঠে আমার সাথে বেলকনিতে গেলেন আমি তার কাঁধে আরামছে মাথা দিয়ে চাঁদ দখছি।
ওয়াহ কি সুন্দর এ মুহুর্ত।
আমান মেঘের বাচ্চামি দেখে মিষ্টি হাসি দিলো।
যে হাসি তে কোন নেই কোন খাদ নেই কোন আক্ষেপ নেই কোন জ্বাল।
এ হাসি নিজের স্ত্রী এর মুখের হাসি থেকে উৎপন্ন হয়।
যা হাজার হাসিকে হার মানাবে।
আজ নিরব পরিবেশ এর মিষ্টি বাতাস জানান দিচ্ছে আমন মেঘকে কতোটা ভালোবাসে।
আকাশে থাকা চাদ বুঝতে পারছে তার আলোতে দুটো প্রেমের পাখি নিজেদের প্রেম বিতরন করছে।
এটা সেই মুহুর্ত যা সব দম্পতির কাছেই স্পেশাল হয়।
এটা সেই ভালোবাসা যার একটা অন্য গল্প লেখা হয়।
এটা কোন চেহারার মোহ না এটা কোন টাকার দম না এটা শুধু ভালোবাসার বুনা জ্বাল যা চারিদিকে এক মোটা আস্তরণ ফেলেছে।
মেঘ আমনের কাধেই ঘুমিয়ে যায়।
আমান তা দেখে তাকে কোলে করে রুমে আসে, আর শুইয়ে দেয়।
মিষ্টি এই মুখটা যেখানে হাসি ফুটাতে হাজার টা কঠিন কাজের সম্মুখীন হতে রাজি আমান।
এ তো তারি ভালোবাসা তার জীবনের সব থেকে সুন্দর পাওয়া।
কিন্তু এসব ভাবতে ভাবতে মনের মাঝে হটাৎ এক অজানা ভয় গ্রাস করতে আমনের মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়।
সাথে সাথে সে ঘুমন্ত মেঘকে জড়িয়ে ধরে।
–কিছু হতে দিবো না তোমায়।
তুমি এভাবে আমার বুকের মাঝে থাকবে সব সময়।
তোমার কুছু হলে আমি বাঁচবো না।
কিন্তু এ ভয়টা যে কি তা কারোরই জানা নেই।
,
,
,
এদিকে,
ফোনে এক টানা কতোগুলো ঘন্টা কথা বলে চলেছে কিরন আর ঋতু।
কাল ঋতুকে কিরনের পরিবার দেখতে আসবে।
ওদের বিয়েটা হবে হবে বলছে
ঋতুর মুখে সেই কনে কনে হাসি।
কিছু দিন পর তাদের এতো বছরের ভালোবাসা যে পূর্ণতা পাবে এটা ভেবেই ঋতুর ভালো লাগছে।
আর কিছু বলার নেই।।
–ঋতু রাত হয়েছে ঘুমোবে না।
–হুম ঘুম তো পাচ্ছে তুমি তো ফোন কাটো না।
–আচ্ছা ঘুমাও।
কাল ভার্সিটির শেষ দিন পরে লক ডাউন পরবে তুমি কিন্তু কাল এসো।
–হ্যাঁ হ্যাঁ আসবো মেঘের সাথেও দেখা করে কথা বলতে হবে।
–আচ্ছা রাখো।
–হুম টাটা।
,
,
সকালে,
সকালের সমস্ত কাজ মিটিয়ে ভার্সিটির জন্য রেডি হয়ে নিলাম
আমান ও রেডি হলেন খুব সুন্দর দেখাচ্ছে অন্য দিনের তুলোনায় তাকে।
আমি দেখে বললম,
–কি গো আপনাকে আজ দেখি একটু বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে?
আমান আমার কথায় ভ্রু কুঁচকে বললেন,
–তোমার কাছে আমাকে সুন্দর দেখাচ্ছে তাহলে না জানি আজ কি হবে।
–মানে কি!
–মানে কি চলো দেরি হচ্ছে।
উনি আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।
আমরা ভার্সিটি তে পৌঁছে আমান সোজা লাইব্রেরি তে গেলেন আমি ঋতুর কাছে।
–দোস্ত আজ কিরনের পরিবার আমাকে দেখতে আসবে।
–ওয়াউ সত্যি।
–হ্যাঁ।
–বিয়েটা কবে হচ্ছে?
–আজ ঠিক হবে।
–বাহ বাহ আমি থাকবো আজ।
–সেটাই তো বলছি স্যার কি মানবে।
–মানবে না মানে মুখের কথা নাকি তুই ছিলি না আমার সময় ও কিছু বলবে না।
–হ্যাঁ তাও ঠিক।
–আচ্ছা কাল থেকে লকডাউন পরছে।
–হুম।
–তাহলে কি হবে,
–জি হবে,
–চল আক ক্যাম্পাসে ভালো মতো ভোজ করি আবার কতদিন পর খুলবে কোন গ্যারান্টি নাই।
–আচ্ছা চল।
আমি আর ঋতু গেলাম ক্যাম্পাসে আমাদের খুব পছন্দের কিছু খাবার খেয়ে এলাম।
ক্লাসে।
ক্লাস করে বের হলাম তার পর ঘুরা শুরু করলাম।
আমানের একটু কাজ আছে তাই ঋতুর সাথে বসে রইলাম।
তখনি হটাৎ আমাদের ক্যাম্পাসের মালি দাদার সাথে দেখা।
ওনার সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক কিন্তু উনি ৬ মাসের জন্য কোথাও ছিলেন ভার্সিটি তে আসতেন না।
–কি গো মালি দাদা তুমি।
–এই তো মা ঠাকুরনেরা চইলা আইলাম তোমাগো ছাড়া ভালো লাগে না।
(মালি দাদ হিন্দু)
–তা ছুটি কেমন কাটলো দাদা তোমার ছুটির মাঝে তোমার মা ঠাকুরনের তো বিয়ে হয়ে গেল। (ঋতু)
–আসিব্বাদ আমার সব সময় তোমাগো সাথে আছে।
তা আমাগো মায়ের কার লগে বিয়া হইলো।
–তুমি চলে যাবার আগে শুনেছিলেন আমান খান নামে কোন স্যার আসবে? (ঋতু)
–হ হ শুনছিলাম। –
–হুম সেই স্যার এর সাথেই (ঋতু)
–সে কি গো আমার এতো সুন্দর মিষ্টি ফুটফুটে একটা মা ঠাকুরোনের সাথে কোন ৪০-৪৫ বছরের বুড়ার বিয়া হইছে?
মালি দাদার কথায় আমরা দু’জন ই অবাক,
–কি বলো দাদা তোমার জামাই এর বয়স ২৬ বছর আমার থেকে ৫ বছরের বড়ো বেশি বড়ো না।
–কি বলো মা আমি যে স্যার কে দেখেছিলাম তিনি তো অনেক বড়ো।
আমরা মালি দাদার কথায় কিছুটা অবাক হলাম।
তখনি ঋতু বলল,
–ও তুমি স্যারের বাবাকে দেখেছিলে মনে হয় ওই দেখো আমান স্যার।
রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছে আমান তাকে দেখিয়ে ঋতু কথাটা বলল,
চলবে,
( সময় হতে চলেছে রহস্য সমাধানের। বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন,)