সিক্রেট গ্যাংস্টার পর্ব-১২

0
1781

#সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
#পর্ব_১২
–এই যে মিসেস.খান পড়তে বসুন আমার কাছে।
–এখন!
–হ্যা এখন সকালের পড়া ভালো হয়।
–ইয়ে মানে এখন না ইচ্ছে হচ্ছে না।
–লাঠি ধরলে ইচ্ছে হবে।
–ও মা আপনি মারবেন আমাকে?(করুন শুরে)
–হ্যাঁ যদি পড়ালেখা না করতে চান তবে অবশ্যই।
–আপনি ভিশন খারাপ।
(মুড নিয়ে)
–এ মা মাত্র জানলে নাকি আমি তো জানতাম অনেক আগে থেকে জানো।
–কল থেকে বসি।
–মেঘ বিয়ের সময়টায় এমনি পড়ালেখা করো নি আর এখনো যদি না না করো তবে হয় বলো
–ইয়ে মানে আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে কঔি বানিয়ে আনেন তাহলে পড়বো।
–কফি আচ্ছা ওয়েট।
আমান বাইরে গিয়ে সার্ভেন্ট দের বলে দিলো।
তার পর রুমে এলো,
–বসো নিয়ে আসছে।
ধুরে যাহ ভালো লাগে না সারা দিন পড়ালেখা করতে ভালোলাগে নাকি।😑
–কি ভাবছো?
–কিছু না (মলিন শুরে)
–বিকালে বাইরে নিয়ে যাবো সুন্দর একটা যায়গান ঘুরতে।
–সত্যি (হেসে)
–হ্যাঁ সত্যি।
–৩ সত্যি।
–ওরে হ্যাঁ রে পিচ্চি ৩ সত্যি।
আমি খুব খুশি হয়ে গেলাম
,
মেঘের খুশি দেখে আমান মনে মনে বেশ খুশি হলো আর ঠিক আগের মতোই পিচ্চি বলে মনে করছে।
সত্যি মেয়েটা পিচ্চি ছোট ছোট কিছুতে আনন্দ খুজে নিবার চেষ্টা করে।
–বসো পড়তে।
–হুম।
আমি ওনার কাছে পড়ে নিলাম।
পড়া শেষ করে নিচে গেলাম।
বাবা আমি আর আমান খেয়ে নিলাম
বাবা অফিস চলে গেল আর আমি আমনের সাথে ভার্সিটি।
,
,
–কি ব্যাপার কিরন তোমায় এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?
–একটা চাকরির অফার আসছে আমি ইন্টারভিউ দিতে তো গেছি পরিক্ষায় টিকার পর ভাইবা হলো।
এখন আজ জানাবে চাকরি টা হইছে কি না।
–তুমি চাকরি নিয়ে চিন্তিত কেন?
–এই চাকরি টা পেলে তোমার বাসায় বিয়ের কথা বলব ঋতু।
ঋতু কথাটা শুনে কিছুটা হেসে বলল,
–আরে পড়ো ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।
–হ্যাঁ তাই যেন হয়।
–ভাইবা কি ভালো হয়েছিল।
–হুম হয়েছিল।
–তাহলে চিন্তা কিসের।
–আসলে আমি তো টাকা বা ঘুষ পছন্দ করি না সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায় চাকরিটা পেতে চাই।
–তা এটা তো ভালো কথা।
–কিন্তু বর্তমান যা অবস্থা তাতে তো মনে হয় না,
–আরে ধুর বেশি চিন্তা করো না,
তোমার শূন্য পকেটে আমি তোমার সাথে হাঁটতে রাজি আছি এতোটা সময় কষ্ট করেছি আর না হয় একটু করি।
আর তা ছাড়া ভালোবাসা অপর নাম অপেক্ষা বুঝলা মিস্টার।
আর আমি তোমায় ভালোবাসি সব সময় পাশে পাবে আমাকে।
–তাই সত্যি আমার খুব বেশি ভালো কাজের ফল সরুপ উপর ওয়ালা আমাকে তোমার মতো এক জন কে দিয়েছে।
–আচ্ছা প্রেম বিনিময় শেষ হয়েছে আপনাদের।
হটাৎ পেছন থেকে মেঘের কন্ঠ শুনে কিরন পেছনে তাকালো।
–আরে মেঘ আপু কেমন আছো?
–এই তো ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ আপনি কেমন আছেন?
–এই তো ভালোই। তোমার বান্ধবীর সাথে খুব বেশি ভালো আর কি।
–হ্যাঁ আমি জানি আমার বান্ধবী যে।
–আচ্ছা ক্লাস শুরু হবার দেরি আছে কির তুমি একটা গান শুরু করে আমরা শুনবো কি মেঘ,
–হ্যাঁ দারুন আইডিয়া ভাইয়া অনেক দিন আপনার কন্ঠে গান শোনা হয় নি।
–গাইবো আসলে অনেক দিন গাওয়া হয় না কিন্তু তোমরা যখন বলছো গাওয়া যায়,
–ওকে শুরু করেন,
–আচ্ছা,
ভাইয়া গিটার হাতে নিলেন,
তোমার এলোমেলো চুলে, আমার সাদা মনে
হারিয়ে যেতে চাই
কোন হুটতোলা রিকশায়
এক মুঠো প্রেম নিয়ে,
আমার শূন্য পকেটে
হারাতে দ্বিধা নাই
অচেনা গলিতে

এক শহর ভালবাসা দিতে চাই

এই নরম বিকেলে
মুখোমুখি দাড়িয়ে
শুধু বলতে ভয়, ভালোবাসাতে চাই
দ্বিধার আদরে

আমি খুব সাধারন
সাদামাটা একজন
মরতে পারি, বাঁচতে শিখি
তা দ্বিধা ছাড়াই

তোমার সাথে, এই পথটি যেন আজ শেষ না হয়
এমন করে, তোমার নরম হাতের ঐ ছোঁয়ায়
ইচ্ছে করে, জমা চায়ের কাপে বৃষ্টি নামুক
হোক সন্ধ্যা রাত, তবু এই সময় থেমে থাকুক

বুলিয়ে দাও রাঙিয়ে, ঐ মায়া যাদুহাতে
কি সুখ লাগে

এক শহর ভালবাসা দিতে চাই

এই নরম বিকেলে
মুখোমুখি দাড়িয়ে
শুধু বলতে ভয়, ভালোবাসাতে চাই
দ্বিধার আদরে

আমি খুব সাধারন
সাদামাটা একজন
মরতে পারি, বাঁচতে শিখি
না দ্বিধা ছাড়াই

ও…
তোমার…
ভাইয় খুব সুন্দর গান করলেন আমারা খুব উপোভগ করেছি৷
ঋতুর চোখ উজ্জ্বল তারা মতো দেখাচ্ছিল।
আসলে এরা দুজন দু’জনের জন্য যে এ পৃথিবীতে এসেছে তা কিন্তু মিথ্যা নয়।
ওদের ভালোবাসায় কোন ঘাটতি নাই।
,
আমরা সব ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে এলাম।
আমান আমাকে বাসায় দিয়ে কোথাও একটা গেলেন কোন কাজ আছে নাকি।
আমি গোসল করে খাবার সামনে নিয়ে ওনাকে ফোন করলাম,
–হ্যালো মেঘ,
–হ্যা আমান আপনি কই?
–আমি এই বাসার সামনে।
–ওহ জলদি আসুন খাবো।
–আসছি।
আমান বাসায় এসে সোজা গোসলে গেলেন ছেলেটা সকালে এক বার গোসল করেছে এখন আবার।
গোসল শেষ করে আমার সাথে খেয়ে নিলেন,
–বিকালে রেডি থেকো।
–আপনি কই যাবেন?
–আমি বাইরে থাকবো আর তোমায় ফোন দিলে তুমি নেমে আসবে।
–আচ্ছা।
–হুম,
দেখতে দেখতে বিকাল হলো,
মায়ের সাথে কথা বলতে গিয়ে ভুলেই গেছিলাম বাইরে যাবার কথা।
আয়নার সামনে দেখি একটা শাড়ি রাখা আছে,
বুঝলাম মহাশয় সেটাই রেকমেন্ড করেছেন।
আমি শাড়িটার কাছে এগোতে একটা চিরকুট পাই,
–প্রিয় তুমি যা পরবে তোমায় তাতেই ভালোলাগবে।
আমি এটা বলছি না এই শাড়িটা পরো কারন সেটা ভুল হবে কারন আমার কাছে তুমি সুন্দর তুমি কি পরেছো তার উপর তোমার সুন্দর নির্ভর করে না।
এটা শাড়ি কিন্তু আলমারি তে অনেক কিছুই আছে যা তোমার ইচ্ছে তাই পরবে।
আমি চিঠিটা পড়ে খুব খুশি হলাম।
সত্যি এমন করে কেউ ভালোবাসতে পারে জানা ছিল না।
এক শহর ভালোবাসা।
যদিও অনেক কিছুই ছিল কিন্তু চমি সেই শাড়িটাই পরলাম,
আর একটু সাজুগুজু করে নিলাম।
তখন আমান ফোন করল,
–রেডি।।
–হ্যাঁ
–তাহলে চলে এসো।
আমি ফোনটা রেখে নিচে চলে এলাম।
গাড়িতে মহাশয় অপেক্ষা করছেন আমি আসতে খুলে দিলেন।
ভেতরে বসলাম।
যে রাস্তা দিয়ে আমারা যাচ্ছি সেটা প্রকৃতি দ্বারা আবৃত ।
বেশ সুন্দর পরিবেশ।
আবহাওয়া বেশ ঠান্ডা কারন মেঘ করেছে আকাশে।
–কোথায় যাচ্ছি?
–সারপ্রাইজ বলা যাবে না।
–আচ্ছা।
অনেকটা সময় ট্রাভেল করলাম।
তার পর চলে এলাম একটা প্রকৃতি পরিবেশে একটা নদী যার পানিটা ভিশন নীল।
আমি তো অবাক।
এটা কই নিয়ে এলে আমাকে সত্যি অসাধারণ সুন্দর একটা যায়গা৷
আমান আমার হাত ধরে আমাকে নদীর পারে নিয়ে এলো।
সবুজ গাছ গুলো নতুন পাতা ধরেছে।
কচি পাতা নিচে গাড়ো সবুজ।
নদীর পানিটা।
বাতাস আর উপরের কালচে মেঘ।
বাতাস বইছে একাধারে।
আমান আমাকে একটা সাইডে বসালেন।
আর নিজে আমার পাশে বসলেন।
আমার হাতে হাত দিলেন।
–এই হাতটা ছাড়তে চাই না।
–আমিও।
উনি আমার কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে দিলেন।
সত্যি এই মুহুর্ত টা বেস্ট আমার জীবনে এতো সুন্দর মুহূর্ত কখনো আসে নি।
চলবে,
(বানান ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে