#সাপলুডুর_সমাপ্তিতে
তন্বী ইসলাম
০৭
সে আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে মৃদু গলায় বললো
“আজকের রাতটাই তো, একটু কষ্ট করে সয়ে নাও। কাল থেকে তো আমরা আমাদের রুমেই থাকবো। ছোট বোনের আবদার, ফেলি কি করে বলো।
আমি মৃদু কন্ঠে বললাম
“সে নাহয় থাকলাম, কিন্তু তুমি একটা কথা বলো তো। মা যখন বলল আমি উনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছি, তুমি কি সেটা সত্যিই বিশ্বাস করেছো?
সে হাসলো। আমাকে টেনে আলতো করে বুকে জরিয়ে ধরে বললো
“আমি জানি তুমি এমন কিছুই করো নি, মায়ের মাথা এখন বিগড়ে আছে, তাই রাগের বশে এমনটা বলেছে। তুমি কিছু মনে করো না, মা আগের দিনের সহজ সরল মানুষ তো, তাই অনেক সময় না বুঝেই অনেক কিছু বলে বসে।
আমি জুরে নিশ্বাস ছেড়ে বললাম
“তুমি যে আমাকে অবিশ্বাস করো নি, এটাই অনেক।
সেদিনের পর থেকে নতুন এক জীবন যুদ্ধে নেমেছিলাম আমি। বিয়ের পরদিনই শাশুড়ি আমার হাতে হাড়ি তুলে দিয়ে বলেছিলো
“আজ থেকে লেখাপড়া বন্ধ, কোনো লেখাপড়া নাই তোমার।
আমি শান্ত গলায় বললাম
“আমার বাবা মা এতো কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছে আমায়, শেষ মুহূর্তে এসে কি করে সেটা ছেড়ে দিতে পারি?
তিনি তিরিক্ষি হয়ে বললেন
“আগে নাহয় তোর বাপ মা পড়াইছে, এখন তোর কোন বাপ মা পড়াইবে শুনি?
উনার বলা কথাটা বড্ড বিশ্রী শুনালো আমার কাছে। তবে আমি কিছু না বলে ফিরে আসলাম আমাদের শোবার ঘরে। ততক্ষণে আমরা মৃদুলের রুমটাতে গিয়েই শিফট হয়েছি। মৃদুল ঘুমোচ্ছে। আমি গিয়ে তার পাশে বসতেই সে নড়েচড়ে উঠলো। আমার হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চাইলো। আমি বাধ সাধলাম তাতে। মন খারাপ বুঝতে পেরে সে উঠে বসে নরম কন্ঠে বললো
“কি হয়েছে তোমার?
“মা বললো আমাকে নাকি আর লেখাপড়া করতে দিবে না, কিন্তু আমি আরো পড়ালেখা করতে চাই।
সে মুচকি হেসে বললো
“পড়বে, সমস্যা তো নেই। মায়ের কথায় কান দিও না। উনি যা খুশি তা বলুক। আর হ্যাঁ, কখনোই মায়ের মুখে মুখে তর্ক করবে না, মা কিছু বললে আমায় এসে বলবে।
আমি মাথা নাড়ালাম।
যেহেতু সংসারী হয়েছি, তাই মৃদুল আগের চেয়ে এখন অনেক বেশিই কর্মঠ হয়েছে। ইদানিং ব্যবসাতেও বেশ মন দিয়েছে। প্রতিদিন সকালে বেরোয়, আর আসে সেই রাতে।
সারাটা দিন আমি নিঃসঙ্গতায় ভুগী। রান্না বাড়া, ঘড় বড়ি ঝাট দেওয়া, বাসন কোসন ধোয়া, ঘর বাড়ির সমস্ত কাজ আমাকেই করতে হয়। আমার সমান দুইটা ননদ, কিন্তু কেউ এক জগ পানিও এনে সাহায্য করেনা আমায়। আমি বুঝতে পারি সব, কিন্তু কিছু বলি না। তখনও আমি নতুন বউ কিনা।
সেদিন শাশুড়ী হুকুম দিলো আমি যেনো মরিচ বেটে রান্না করি। আমি বললাম
“সেল্ফে বয়াম ভর্তি মরিচের গুড়া আছে তো আম্মা।
তিনি হুংকারে বলে উঠলেন
“যা বলছি তাই কর, ওই বয়ামে হাত দিবি না বলে দিলাম।
আমার কপালে ভাজ পরলো, ইচ্ছে করলো দুটো কথা আমিও শুনিয়ে দেই। কিন্তু পারলাম না, বরের নিষেধ আছে যে মায়ের সাথে তর্ক করার। জীবনে কখনো মরিচ মেখে ভর্তাও করিনি, হাত জ্বালাপোড়া করে। আর এখন প্রতি ওয়াক্তে মরিচ বেটে রাধতে হয়।।ছোট ননদটাকে জিজ্ঞাসা করলাম
“তোমরা কি সবসময় এভাবে মরিচ বেটেই রান্না করতে?
সে বললো
“আগে তো করতো না। আপনি আসার পর থেকেই এভাবে রান্না হয়।
আমি আর কিছু বললাম না।
রাতে সে ফিরে এসে দেখলো আমি ঠান্ডা পানিতে হাত চুবিয়ে বসে আছি। সে প্রশ্ন করলো
“কি হয়েছে তোমার হাতে?
“ইদানিং মরিচ বাটতে হচ্ছে, প্রচন্ড জ্বালা করছে হাতে। অন্যদিনও করে, তবে আজ একটু বেশিই বেটেছিলাম কিনা, জ্বালাটা কমছেই না।
সে অবাক হয়। প্রশ্ন করে
“ঘরে মরিচের গুড়া নেই?
আমি নত গলায় বললাম
“আছে, তবে সেগুলো দিয়ে রান্না করতে মানা করেছেন আম্মা।
মৃদুল তৎক্ষনাৎ তার মায়ের কাছে চলে গেলো। সামান্য ক্ষোভ নিয়ে বললো
“আগে তো কখনো তোমরা মরিচ বেটে রান্না করো নি মা, তবে এখন কেন প্রতিদিনই মরিচ বাটতে হয়?
তিনি হঠাৎ ফুসে উঠলেন। রুক্ষ গলায় বলে উঠলেন
“তুই বাড়ি আসতে না আসতেই তোর কানে আমার নামে আগুন ঢাইলা দিছে তাইনা? কি মন্ত্রণা দিছিস তুই আমার নামে? তোর সাহস কেমনে হয় আমার নামে আমার ছেলের কাছে নালিশ দেওয়ার?
আমি চুপ করে বসে রইলাম নিজের ঘরেই। মুখ দিয়ে উত্তর বেরিয়ে আসতে চাইছে, তাও মৃদুলের দিকে তাকিয়ে চুপ রইলাম। মৃদুল নিরীহ গলায় বললো
“ও আমারে নালিশ করে নাই মা। মরিচ বাটার কারণে ওর হাত গুলা জ্বলতেছে অনেক। আমি নিজে থেকেই আসছি তোমারে জিজ্ঞাসা করতে।
উনি তখন নরম গলায় ছেলেকে বলতে লাগলেন
“শোন বাপ, তুই হঠাৎ কইরা বিয়া করার কারণে আমার মাথা ঠিক ছিলো না, তাই ওর সাথে আর তোর সাথে খুব রাগারাগি করছিলাম। কিন্তু এখন বিশ্বাস কর, তোর বউ রে এখন আমি অনেক আদর করি। ওরে কোনো কাজ করার জন্য দেই না, সব কাজ আমি আর দুই মাইয়া মিইলা করি, তাও ওই কত্ত বড় মিথ্যা কথা কইলো তোরে আমার নামে। আমি নাকি ওরে মরিচ বাটাইয়া রান্দাইছি। তুই কো বাপ, ঘরে বয়াম ভর্তি মরিচ থুইয়া কেউ মরিচ বাইটা রান্দে? এইটা বিশ্বাসের কথা?
মৃদুল তখন কিছুটা চিন্তার স্বরে বলল
“তাহলে ওর হাত জ্বলতেছে কেন মা?
উনি মরাকান্না জুড়ে দিয়ে বললেন
“তুই বুঝোস না কেন এমন করছে? আমারে খারাপ বানানোর লাইগা। তোর চোখে যেনো আমি খারাপ হই সেই কারণেই সে এমন কথা কইছে তোরে। আমি বুঝি বুঝি, সবই বুঝি।
এবার আমার আর সহ্য হলো, বার বার উনি আমার নামে যা নয় তাই বলে যাচ্ছে। আমি এবার নিজ যায়গায় বসে থেকেই উত্তর দিলাম
“এতো বড় মিথ্যা কথা মানুষ কিভাবে বলতে পারে আম্মা?
ওপাশ থেকে উনি গলা ফাটিয়ে বলে উঠলেন
“আমি মিছা কথা কই? এই কথা তুমি কইতে পারলা বউমা? শোন মৃদুল, তোর বউ এর কথা শোন, আমি বলে মিথ্যাবাদী। এই দিনটাও আমার দেখা লাগলো জীবনে। উনি আবারও মরা কান্না জুড়ে দিলেন।
মৃদুল এবার কিছুটা রেগে গেলো আমার উপর। সে সামান্য ক্ষোভ নিয়ে বলে উঠলো
“তোমারে না মানা করছি মায়ের মুখে মুখে কথা বলার জন্য? তাও কেন তুমি কথা বললা তনু?
“তোমার মা বার বার আমাকে নিয়া যা নয় তাই বলে যাচ্ছে, উনি কি করে বলতে পারেন আমারে দিয়ে কোনো কাজ করায় না? আমি আসার পর থেকে উনাদের কাউকেই দেখি নাই একটা জগ ভরে পানি আনতে। তাও আমি তোমারে কিছু বলি নাই, তার পরও এতো অভিনয় কি করে পারেন উনি?
সেদিন বেশ কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হলো আমার আর উনার মাঝে। উনি বেশ বিশ্রী ভাবে আমাকে কথা শোনালেন। কিন্তু মৃদুলের চোখে সেই আমিই দোষী হলাম। আমার দোষ, আমি কেন উনার কথায় উত্তর দিলাম। তার কথা হলো, উনি আমাকে যাই করুক, আমার উত্তর দেওয়া বারণ। সবকিছু মাথা পেতে মেনে নিতে হবে আমাকে।
মৃদুলের সাথেও এ নিয়ে আমার মনোমালিন্য হলো। দিন যাচ্ছিলো এভাবেই। আমার শাশুড়ি নামক অভদ্র মহিলা সারাদিন আমাকে দিয়ে খাটিয়ে মারতো, আর দিনশেষে ছেলের কাছে সেই আমার নামেই মন্দচারি করতো। আমি নাকি কিছু করি না, সারাদিন শুয়ে বসে থাকি৷ কোনো কাজই ধরে দেখি না। প্রতি বেলার ভাতগুলোও নাকি ওরা আমাকে বেড়ে বেড়ে খাওয়ায়। মৃদুল তো তার মায়ের উপর বেজায় খুশি, মা তার বউকে এতো আদর করে, কিন্তু আমার উপর সব রাগ। আমি কেন কিছু করিনা, তার মা বোনেদের কেন এভাবে খাটাই এ নিয়ে তার রাগারাগির শেষ নেই। আমি যতই বুঝায়, আমি সব কাজ করি, বরং উনারা কিছুই করে না, এইসব কথা মৃদুলের কান দিয়েও ঢোকে না। ইদানিং মায়ের দোষ তার চোখে পরেই না
এর মাঝে একদিন বুঝতে পারি আমি অন্তঃসত্ত্বা। খবরটা পেয়ে মৃদুল বেশ খুশি হয়।
কিন্তু আমার শাশুড়ি তেমন খুশি হলো না। দাদী হবে এই খরব পেয়েও কোনো দাদী কি করে খুশি না হয়ে থাকতে পারে আমার জানা নেই। ইদানিং মৃদুল আবারও আমার প্রতি খুবই কেয়ারিং হয়ে উঠেছে৷ যতক্ষণ বাড়িতে থাকে, ততক্ষণ আমার অনেক সেবাযত্ন করে, ফলমূল এনে খাওয়ায়। ব্যাপারটা হজম করতে পারেনা আমার শাশুড়ি। ননদদেরও দেখি এই নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। সেদিন এক ননদ তার ভাইকে বলেই বসলো
“বউ এর জন্য দেখি তোমার এতো দরদ, কই আমাদের জন্য তো কোনো দিন এতো আদর দেখি নাই। নাকি ভাবিরে পাইয়া এখন আমরা বোনেরা পর হয়ে গেছি
মৃদুল হেসে হেসে বোনদের সাথে বললো
“আমি কিন্তু তোদেরও অনেক আদর করি, তোদেরকেও অনেক কিছু এনে খাওয়াই।
ননদী আমার মুখ বাকিয়ে উত্তর দিলো
“হো খাওয়াইতা, সে তোমার বিয়ার আগে। বিয়ের পর থেইকা তো ভাবিরে ছাড়া কিছু দেখোই না।
মৃদুল আবারও হাসে, সে কি হাসি। তবে আমার রাগ লাগে। ছোট বোনেরা পর্যন্ত তাকে অপমান করে এতো কথা বলে আর সে চুড়ি পরে বসে থাকে। প্রেগ্ন্যাসিরর কয়েক সপ্তাহ বাদে মৃদুলকে বলি আমাকে একটু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবার জন্য। সে রাজি হয়। সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বলে যায় কিছুক্ষণ পর সে আবার আসবে, আমি যেনো রেডি হয়ে থাকি।
বাইরে তখন তার মা বোনেরা বসে ছিলো। মৃদুলকে এই কথা বলতে শুনে তার মা প্রশ্ন করে
“কই যাইবি বাপ?
“তনু রে নিয়া একটু ডাক্তারের কাছে যাবো মা।।
উনি আবারও মুখ বাকালেন।
“আমরাও পুলাপাইন পয়দা করছি, একটা দুইটা না, কয়েকটা করছি। কই আমরা তো কোনো দিন ডাক্তরের ধারেকাছেও যাই নাই। আমার স্বামীর কি টাকা পয়সার অভাব ছিলো নাকি, তাও যাই নাই। তোর দুইটা টাকা হইছে, টাকাগুলান রে শেষ করোন লাগবো তো নাকি।
আমি তখন উত্তর দিলাম
“আপনাদের সময় আর এখনকার সময় এক না আম্মা। বার বার আমার সাথে আপনার তুলনা দেওয়া বন্ধ করেন এইবার।
উনি রেগে গিয়ে মৃদুলের দিকে তাকালেন। বললেন
“দেখছোস মৃদুল, তোর বউ এর কান্ডখানা দেখছোস? আমি কথা কইতাছি তোর লগে, আর তোর বউ কিনা আমারে এতগুলা কথা শুনাইতাছে। তুই কিছু কইবিনা?
মৃদুল সামান্য বিরক্ত হয়ে আমাকে বললো
“আহ তনু, তোমার কি মায়ের সাথে এভাবে কথা না বললে হয় না? কেন তুমি এমন করো?
আমি ক্ষোভ নিয়ে বললাম
“তোমার কানে শুধু আমার কথাগুলোই যায়? তোমার মা যে সবসময় আমাকে ছোট করে কথা বলে সেগুলো তুমি শুনতে পাও না?
মৃদুল এবারেও আমার কথা শুনে রেগে যায়। ওর মা ওকে বার বার উউস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে। এরপর ওর মাকে আমি শক্ত করে দুটো কথা বলি।
ঘরের দেওয়ালের সাথে একটা ছোটখাটো বাশ দাঁড় করানো ছিলো। উনি চট করে বাশটা হাতে নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসে, আমাকে মারবে বলে। আমি দুপা পিছিয়ে যাই। এই অবস্থায় এ বাশের একটা বাড়ি আমার গায়ে লাগলে আমার কিচ্ছু হবেনা, কিন্তু আমার পেটের মানিকের ক্ষতি হবে নিশ্চিত। পিছিয়ে যাবার কারণে উনি আমাকে মারতে পারেনা। তবে আমাকে অশ্লীল গালাগাল করতে থাকে। আমি বিস্মিত চোখে মৃদুলের দিকে তাকাই। ক্ষোভ ভরা গলায় বলি
“তোমারই সামনে তোমার মা আমাকে মারতে আসলো, তাও এই অবস্থায়…তুমি তো কিছু বললে না মৃদুল।
সে আমার উপরই ক্ষেপে গেলো। হুংকারে বলে উঠল
“তোর চরিত্রের কারণে মা তোকে মারতে গেছিলো, তুই উত্তর দিতে আসলি কেন? তোকে কেউ দাওয়াত দিতে আসছিলো কথা বলার জন্য? বার বার মানা করছি মায়ের কথায় কোনো উত্তর দিবি না! সামান্য বাঁশই তো হাতে নিছিলো কারার জন্য, মারে তো আর নাই। এতো লাফাইতেছিস কেন তুই?
মৃদুলের এমন ব্যবহারে আমি যেনো হতভম্ব হয়ে গেলাম। এ কোন রুপ দেখছি এ মানুষটার?
সেদিন আমি বেশ করে বুঝতে পেরেছিলাম, মৃদুলের মনে যেটা আছে সেটা মায়ের প্রতি ভালোবাসা নয়, সেটা হলো অন্ধভক্তি। ভালোবাসা আর অন্ধভক্তি দুটো দুই জিনিস। যে ঘরে মায়ের প্রতি ভালোবাসা থাকবে সে ঘর থাকবে জান্নাতের মতো সুন্দর, আর যে ঘরে মায়ের প্রতি অন্ধভক্তি থাকবে, সে ঘরে কখনোই শান্তি আসবে না। আমি বুঝে গেছিলাম, কপালে বোধহয় শান্তি আর আমার হবে না।
আমি সেদিন থেকেই প্রতিবাদ করা ছেড়ে দিয়েছি। শাশুড়ি তার ছেলের আড়ালে আমাকে বলেছিলো, এ বাড়িতে আমাকে টিকতে দিবেন না উনি। আমি হজম করেছিলাম সবটা। তার ছেলেকেও আর বলি নি কিছু। বললেও লাভ কিছু হত বলে মনে হয় না।
এভাবেই চলছিলো আমার দিন। পেটে বাচ্চা নিয়েও সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করি, আর দিনশেষে নাম হয়, কিছু করি না আমি। বসে বসে খাই শুধু। এ নিয়ে মৃদুলেরও আমার প্রতি অভিযোগের শেষ নেই।
আগে লোকে বলতো, প্রেমের বিয়েতে নাকি সুখ নেই। মনে মনে ভাবতাম, প্রেম করে, ভালোবেসে বিয়ে করে মানুষ কি করে অসুখী হতে পারে? এইসব লোকেদের শুধুমাত্র মন গড়া কথা। প্রেমের বিয়েতেই সবচেয়ে বেশি সুখ।
কিন্তু এখন আমি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি, প্রেমের বিয়েতে সত্যিই কোনো সুখ নেই। বাবা মায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেম করে বিয়ে করা মানে, নিজের পায়ে নিজে কুড়োল মারা।
চলবে……