#সাপলুডুর_সমাপ্তিতে- ০১
তন্বী ইসলাম
দুই বছরের ফুটফুটে মেয়েটার লাশ সামনে নিয়ে যখন আমি হাউমাউ করে কাঁদছিলাম ঠিক তখনই আমার মুখের উপর ডিভোর্স পেপারটা ছুড়ে মারলেন শাশুড়ি। আমি হতভম্ভের মতো তাকালাম শাশুড়ির দিকে। একেতো মেয়েকে হারিয়েছি কিছুক্ষণ আগেই, এখন আবার স্বামী সংসারটাও হারাতে বসেছি।
শাশুড়ি সোফায় বসে পায়ের উপর পা তুলে মিষ্টি জর্দা দেওয়া পানের খিলিটা মুখের ভেতর পুরে চিবোতে থাকলেন। আমি কোন ছাড়, নিজের রক্তের নাতিনের জন্যেও তার বিন্দুমাত্র কষ্ট হচ্ছে না।
পাশেই দাঁড়িয়ে আছে সেই মানুষটা, যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। মেয়ের জন্য হয়তো কিছুটা কষ্ট পাচ্ছেন তিনি, কিন্তু আমার ব্যপারে বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই উনার।। শাশুড়ির ঠিক পাশেই উনি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন
আমি কান্নাভেজা চোখে একবার মেঝেতে তাকালাম। আমার ফুটফুটে মেয়েটার প্রাণহীন দেহটা পরে আছে মেঝেতে। গা বেয়ে পানি চুইয়ে চুইয়ে পরছে এখনো, পুকুরে ডুবে মারা গেছে যে। কিছুটা সময় আগেও মেয়েটা তার আধো আধো গলায় আমাকে মা বলে ডেকেছিলো, মুহূর্তটা মনে পরতেই আমি আবারও হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম।।
ঠিক তখনই গর্জে উঠলেন শাশুড়ি। রুক্ষ গলায় বলে উঠলেন…
“আধিখ্যেতা দেইখা বাচিনা। আমার বাড়িতে চিল্লাপাল্লা চলবে না কইয়া দিলাম। কাগজটায় সাইন কইরা আমারে আর আমার পুলাডারে উদ্ধার কর। হেরপর যেইখানে খুশি যেইখানে গিয়া চিল্লাপাল্লা করিস।
আমি কান্না জড়িত গলায় বললাম
“আমার মেয়েটা মারা গেছে আম্মা, আমার বুকের মানিকটা আর নাই। আপনি কি দেখতেছেন না চোখে? কেমনে আমার সাথে এইসব বলতেছেন আপনি? সে তো আপনারও নাতী, একটুও দয়ামায়া নাই আপনার মনে?
শাশুড়ী আবারও তিরিক্ষি হয়ে ছেলের দিকে তাকালেন। অভিযোগের স্বরে বললেন
“তোরে সামনে থুইয়া ওই মাইয়া আমারে কেমনে কইলো আমি চোক্ষে দেখিনা? তুই কিছু কইবিনা মৃদুল?
আমি রাগে দুঃখে মৃদুলের দিকে তাকালাম। কান্নাজড়িত গলায় চাপা আক্রোশে বলে উঠলাম
“সে আর কি বলবে, সে তো আপনার বানানো একটা চাবির পুতুল। আপনি যেভাবে চাবি ঘুরাবেন, সে তো ঠিক সেভাবেই নাচবে।
“মুখপুরি, তোর এতো সাহস হয় কেমনে আমার পুলারে নিয়া এইসব বলার?
“আপনার ছেলে আমার স্বামী, তাই সাহসটা না দেখিয়ে পারলাম না আম্মা।
শাশুড়ি আবারও চেচিয়ে তার ছেলেকে বলে উঠলো
“তুই এখনো কিছু কইবিনা বাপ?
এতক্ষণ মৃদুল চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেও এবার সে নড়েচড়ে উঠলো। রক্তচক্ষু নিয়ে সে আমার দিকে তাকালো। আমি ঘৃণায় চোখ সরিয়ে নিলাম। প্রাণহীন নিথর মেয়েটাকে টেনে বুকের সাথে মিশাতে যাবো ঠিক তখনই মৃদুল আমার চুলের মুঠি ধরে হ্যাচকা টান দিলো। আমি না চাইতেও আমার হাত থেকে মেয়েটা নিচে পরে গেলো। প্রচন্ড ব্যাথায় ককিয়ে উঠলাম আমি। তবে ব্যাথাটা আমাকে কাবু করতে পারেনি, এ ব্যাথা মেয়েকে হারানোর ব্যাথার চাইতে কোনোদিক দিয়েই বেশি নয়। তবে রাগ হলো আমার, আকাশ ছোঁয়া রাগ। আমার চুলগুলো এখনো মৃদুলের হাতের মুঠোয় বন্দী।
আমি প্রচন্ড রেগে চেচিয়ে বলে উঠলাম-
“তোমরা মা ছেলে চাইছো টা কি মৃদুল? আমার মেয়েটা আমার একার নয়, তোমাদেরও.. তোমরা কি করে আজ এমনটা করতে পারছো? তোমাদের মনে কি একটু মায়া নেই? অমানুষ তোমরা? চেয়ে দেখো তোমার মেয়ের দিকে, এই সেই মেয়ে সে তোমাকে বাবা বাবা বলে ডাকতো, ছোট ছোট পা দিয়ে কেপে কেপে সারা বাড়িটা হেঁটে বেড়াতো। ওর লাশটা সামনে নিয়ে কি করে এমনটা করতে পারছো তোমরা?
আমি কেঁদে চলেছি অবিরামভাবে। মৃদুল বলে উঠলো
“আমার মেয়েকে আমি তোর দোষে হারিয়েছি, তুই মেরেছিস আমার মেয়েকে। আমার জীবন থেকে আমার মেয়েটা হারিয়ে গেছে, তাহলে তোকে রেখে কি করবো আমি? ভালোই ভালোই ডিভোর্স পেপারে সাইন করে চলে যা এখান থেকে, যদি নিজের ভালো চাস তো।।
আমি ঘৃণায় বললাম
“আজকের দিনটায় অন্তত পশু না হলেও পারতে মৃদুল।।
মৃদুল ওর শক্ত হাতের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে আমার গালে প্রচন্ড জোরে চর বসালো। চরের জোর এতটাই ছিলো যে মুহূর্তেই গালে পাঁচ আঙুলের দাঁগ বসে গেছে। আমি গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম, চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে। শাশুড়ি সোফায় বসে পান চিবোচ্ছে আর খানিক বাদে বাদে আমার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসি হাসছে।
মৃদুল ওর চাপা গলায় আবারও বললো
“আমি তোকে ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম, যদি কখনো তোর বড় কোনো অন্যায় আমার চোখে পরে সেদিনই তোর আর আমার সম্পর্কের ইতি হবে। আজ সেই দিন, তুই মেরে ফেলেছিস আমার মেয়েকে। এর চাইতে বড় ভুল আর কি হতে পারে?
আমার আর সহ্য হলো না। নিজের মেয়েকে মারার অভিযোগ তুলছে সে আমার উপর। আমি রাগে দুঃখে বলে উঠলাম..
“একজন অবৈধ বাচ্চার মা ছাড়া কোনো মা ই তার সন্তানকে মারতে পারেনা মৃদুল, আর আমি তো অবৈধ বাচ্চার মা না। তোমার বিয়ে করা বউ আমি। আমি কি করে আমার বাচ্চাকে মারতে পারি?
“তাহলে আমার মেয়েটা মারা গেলো কি করে?
আমি তীব্রভাবে ঘৃণার সাথে তাকালাম শাশুড়ির দিকে। উনার ঠোঁটের কোনে এখনো সেই বাকা হাসিটা লেগে আছে। আমি চাপা আক্রোশে বলে উঠলাম
“শেষ বার আমার মেয়েটাকে তোমার মা ডেকে নিয়ে গেছিলো।
শাশুড়ির মুখের হাসিটা মুহুর্তেই উধাও হয়ে গেলো, সেই সাথে চোখেমুখে প্রচন্ড রাগের লেলিহান শিখা জ্বলে উঠলো। উনি হুংকার করে মৃদুলকে বলে উঠলেন
“আর কত সহ্য করবি বাপ, তোর বউ শেষে কিনা আমার খুনী বানাইতে চায়।
মৃদুল ঘৃণার সাথে বলে উঠলো
“ছিঃ! তুই খারাপ জানতান, কিন্তু এতোটাও খারাপ জানতাম না। শেষে কিনা তুই আমার মায়ের উপরে আঙ্গুল তুলিস।
আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম। মৃদুল আমার চুলের মুঠি আবারও শক্ত করে ধরে বললো
“তোর মত কালসাপিনী যতদিন আমার ঘরে থাকবে ততদিন আমার জীবনে শান্তি আসবে না। এক্ষুনি ডিভোর্স পেপারে সাইন দিয়ে এখান থেকে চলে যা।
এই যে সে বার বার ডিভোর্স এর কথা বলছে, আমি তাতে একটুও অবাক হচ্ছিনা। কারণ এটাই হবার ছিলো। আর ডিভোর্স পেপারটাও ওরা মা ছেলে মিলে আগেই রেডি করে রেখেছিলো, এতদিন একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো শুধু।।
আমি একবার মেঝেতে তাকালাম। মেয়েটার শরীর ততক্ষণে ফ্যাকাসে হতে চলেছে। প্রচন্ড কান্না পেলো আমার, বুকে যেনো কেউ আঘাত করছে। সেই আঘাতে বার বার জর্জরিত হচ্ছি আমি। এবার অসহায়ের মত করে মৃদুলের দিকে তাকালাম। অনুনয়ের স্বরে বললাম
“তোমার আমার মধ্যে যত বুঝাপড়া আছে সব পরে হবে মৃদুল। আগে আমার মেয়েটাকে দাফনের ব্যবস্থা করো প্লিজ। দেখো, মেয়েটার শরীর কালছে হয়ে যাচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার মেয়েটার।।
মৃদুল শক্ত গলায় বললো
“ডিভোর্স পেপারে সাইন দে।
“তুমি যা বলবে তাই হবে, আগে মেয়েটার দাফনের ব্যবস্থা করো প্লিজ। তোমার পায়ে পড়ি মৃদুল।
প্রচন্ড হুংকারে মৃদুল বললো
“ডিভোর্স পেপারে সাইন দিতে বললাম না?
আমি নিজের যায়গায় থেমে গেলাম। মুখ দিয়েও আর কোনো কথা বের হচ্ছেনা আমার। শুধু তার প্রতি আমার একরাশ ঘৃণাই ঝরছে।।
আমি এবার মেঝেতে পরে থাকা মেয়েটার দিকে তাকালাম। এরপর চোখ সরিয়ে আবারও মৃদুলের দিকে তাকালাম। ওর হাতে ডিভোর্স পেপার আর একটা কলম। আমি এবার তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলাম।। ঘৃণার সহিত কান্না বিজড়িত গলায় বলে উঠলাম..
“আমার জীবনে থাকার মতো কোনো যোগ্যতাই তোমার মাঝে নেই।।
মৃদুল কোনো উত্তর দিলো না, কিন্তু রাগী চোখে তাকালো আমার দিকে। আমি আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ওর হাত থেকে কাগজটা টেনে নিয়ে নিলাম। শাশুড়ি যেখানটায় বসে আছে তার সামনেই একটা ছোট্ট টি টেবিল আছে। আমি সেখান টায় গিয়ে টেবিলের উপর কাগজটা রেখে যখন সাইন করতে যাবো তখন শাশুড়ি ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো
“কইছিলাম না, আমি তোরে এ বাড়িতে থাকতে দিমুনা। এবার বুঝলি তো, আমার কত দম।
আমি আঁড়চোখে শাশুড়ির দিকে তাকালাম, উনি বিশ্বজয়ের হাসি হাসছে। আমিও হাসলাম, নিঃশব্দে। উনার মত ফিসফিসিয়ে আমিও বললাম
“দম সবারই থাকে আম্মা, ফেরাউনেরও ছিলো। এখন কিন্তু উনার কঙ্কালটা ছাড়া আর কিছুই নাই।
দেখলাম উনার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো হঠাৎ। প্রচন্ড রেগে গিয়ে মৃদুলের দিকে তাকিয়ে বললো
“এই ডাইনীরে তারাতাড়ি বাইর কর মৃদুল।
ডিভোর্স পেপারটা আমার মুখে যেভাবে ছুড়ে মেরেছিলেন উনি, আমিও ঠিক সেভাবেই উনার মুখের উপর সেটা ছুড়ে বললাম
“আপনার ছেলেকে কষ্ট করে আমাকে বের করতে হবে না, সব যখন শেষ হয়েই গেছে তখন আমিই বের হয়ে যাবো। দরজা দিয়ে বের হবার জন্য আল্লাহ আমারে দুইটা পা দিয়েছে আম্মা।
উনি মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। আমি এগিয়ে গেলাম মৃদুলের দিকে। কয়েক সেকেন্ড ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললাম
“বড্ড ভালোবাসছিলাম তোমারে, তোমার কারণে নিজের ফ্যামিলি ছাড়ছি, নিজের পরিবার থেকে বিতাড়িত হইছি। তারপরও তোমারে ছাড়ি নাই। আজ ভালোবাসার উপহার দিলা আমারে, আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আমার মত অবস্থা যেনো তোমার না হয়।
আমি এগিয়ে গেলাম মেয়েটার দিকে। যখন মেয়েটাকে কোলে নিতে চাইবো ঠিক তখনই বাধ সাধলো মৃদুল। আমি হতবাক হয়ে তাকালাম তার দিকে। সে শক্ত গলায় বললো
“আমার মেয়েকে নিয়ে যাবার সাহস দেখিও না। আমি এটা বরদাস্ত করবো না।
আমি হতভম্বের মত বললাম
“মানে?
সে আবারও শক্ত গলায় বললো
“আমার মেয়ের সমাধি আমার বাড়িতেই হবে। আমি চাইনা আমার মেয়েটাকে নিয়ে তুমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরো…। তুমি জাহান্নামে যাও, আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমার মেয়ের এই পরিণতি আমি মেনে নিবো না। আর তাছাড়া আমার মেয়েটাকে তো তুমিই মেরেছো, এরপর আমার মেয়েটার লাশ তোমায় নিয়ে যেতে দেবো ভাবলে কি করে?
আমি কান্নাজড়িত গলায় বললাম
“আমাকে ডিভোর্স দিয়ে তারপর মেয়ের লাশের দাবী করছো?
মৃদুল চোখ সরিয়ে নিলো।
আমি আরেকবার মেয়েটার দিকে তাকালাম। মেয়েটা যেনো এখনো আমাকে মা মা বলে ডাকছে। আমি হাউমাউ করে কাঁদলাম। কিন্তু মেয়েকে নিয়ে যাবার আর নাম নিলাম না।।
এখানে যদি মেয়ের সমাধি হয় তো হোক, মেয়ের নিজের বাড়িতেই তো থাকবে। আর তাছাড়া আমারও যাবার মতো কোনো যায়গা নেই, নিজের কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। মেয়ের লাশটা দাফন করার মতো যায়গা জুটাতে পারবো কিনা সেটাও অজানা। মৃদুল আমার সাথে যাই করুক, মেয়ের দাফনটা নিশ্চয়ই ঠিকঠাক ভাবেই করবে। মেয়েটাকে সেও বড্ড ভালোবাসতো।
আমি আর দাঁড়ালাম না সেখানে।। পা বাড়ালাম সদর দরজার দিকে। দরজা বরাবর এসে আবারও থমকে দাড়ালাম।। ফিরে তাকালাম পুরো বাড়িটার দিকে। আহ! এটাই সেই বাড়ি, যে বাড়িতে আমি একটু একটু করে সংসার সাজিয়েছিলাম। আজ সেই সব অতীত, আজ থেকে সব আমার জন্য পর। হয়তো এ ঘরে কিছুদিন পর অন্য কারো রাজত্ব হবে।। বুকে কাটা দিয়ে উঠলো হঠাৎ। হাত দয়ে চেপে ধরলাম সেখানটায়। মৃদুলের দিকে চোখ পরতেই দেখলাম সে শক্ত দৃষ্টিতে মেঝেতে পরে থাকা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের কোনে কয়েক ফোঁটা পানি চিকচিক করছে।
আমিও আরো একবার দেখে নিলাম মেয়েটাকে। এমন সময় শাশুড়ি আবারও চেচিয়ে বলে উঠলেন
“এখনো যাচ্ছিস না কেন মুখপুরি। আমার ছেলেটার দিকে আর বদনজর দিস না, এবার একটু শান্তি দে।
আমি উনার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলাম শুধু। এরপর পা বাড়ালাম অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে।
রাস্তায় হাঁটছি আমি, কোথায় যাবো জানিনা। চোখ বেয়ে পানি ঝরছে অনবরত। একেতো এতোদিনের সংসার, ভালোবাসার মানুষটাকে হারিয়েছি, তার উপর কলিজার টুকরো মেয়েটা আর নেই। ইচ্ছে করছে কোথাও গিয়ে আত্মহত্যা করি, কিন্তু এটা যে মহাপাপ। একটা রেললাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছি আমি। দেখলাম একজোড়া ছেলে মেয়ে হাত ধরাধরি করে হাঁটাহাটি করছে। বোধহয় ভালোবাসার কপোত-কপোতী। ভালোবাসা কথাটা মনে হতেই বড্ড ঘৃণা হলো আমার। এ ভালোবাসাটাকে যতবার বিশ্বাস করেছি, ঠিক ততবারই ঠকেছি আমি।
আমি চোখ সরিয়ে নিলাম তাদের দিক থেকে।। এমন সময় ট্রেনের শব্দ কানে এলো। পাশের রেললাইন দিয়ে একটা ট্রেন ঝরের বেগে আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। আমি একভাবে তাকিয়ে রইলাম সে ট্রেনটার দিকে। মুখে হঠাৎ তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠলো আমার। কারণ, এ ট্রেনই আমাকে সর্বপ্রথম ভালোবাসা শিখিয়েছিলো। এ ট্রেনের বদৌলতেই আমি ভালোবাসা নামক শব্দটার সাথে মিশে গিয়েছিলাম, ভালোবাসা নামক নরকের গভীরে পা বাড়িয়েছিলাম।
নয় বছর আগে…….
চলবে…