#সাদা_মেঘের_আকাশ
(৫)
লেখক: হানিফ আহমেদ
নিয়াজ মনে মনে ভেবেই নিয়েছে। সে শাস্তি দিবে ওই মানুষগুলোকে। যারা কেড়ে নিয়েছে তার সব প্রিয় মানুষকে। সেও এবার এক কঠিন খেলায় মেতে উঠতে চায়। সেই রাতটা এবার সে ওদের ফিরিয়ে দিতে চায়। খু’নের বদলে এবার খু’ন হবে। নিজের সুন্দর নাম নিয়াজ নাবীল থেকে এবার খু’নী নিয়াজ নাবীল হবে। চুপ থেকেও যখন শুধু হারাতেই হচ্ছে, সেখানে চুপ থাকা বোকামি। মশা কামড় দিলে যেভাবে হাত দিয়ে মা’রতে হয় মশাকে, সেভাবেই এবার প্রতিশোধ নিবে মশার মতো মে’রে।
নিয়াজ কাপড় পরে বড় ভাইয়ের রুমে যায়। আদিবের স্ত্রী মিনহাকে রুমে একা শুয়ে থাকতে দেখে প্রথমে রুমে ঢুকার অনুমতি চায়। মিনহা মিষ্টি হেসে অনুমতি দেয়।
ভাবি ভাইয়া কোথায়?
তোমার ভাইয়া তামিকে নিয়ে ছাদে গিয়েছে৷ ছেলেটা কান্না করছে ছাদে যাওয়ার জন্য।
নিয়াজ আজকাল অল্পতেই খুব রেগে যায়। মিনহার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে বলল,
এই শরীর পোড়া রোদে কেন ছাদে যাবে ওরা?
মিনহা হাসলো। আর বলল,
আমাকে রাগ না দেখিয়ে যাও ওদের ছাদ থেকে নিয়ে আসো।
কেমন স্ত্রী তুমি? স্বামীকে রোদে ছেড়ে দিয়েছো। কেমন মা তুমি? সন্তানকে রোদে ছেড়ে দিয়েছো।
নিয়াজ কথাটি বলে, ছাদে যাওয়ার জন্য রুম ত্যাগ করে।
মিনহা বিছানায় বসে পা নাড়াচ্ছে৷ দুই ঠোঁট নাড়িয়ে শুধু একটি বাক্যই বলল, এতো রাগ যে কোথা থেকে আসে ওর।
নিয়াজ ছাদে যাওয়ার সময় দেখল নাওশিন রুমে চোখ বন্ধ করে বসে আছে। নিয়াজ সেই দিকে আর দৃষ্টি দিলো না। এখন তার গন্তব্য হলো ছাদ, গন্তব্য ঠিক করে নিলে আশেপাশে তাকাতে নেই।
ভাইয়া তুমি এই রোদে ছেলেটাকে নিয়ে ছাদে এসে বসে আছো, কেমন বাবা তুমি?
নিয়াজের কথা শুনে আদিব হেসে বলল,
তোর ভাতিজার নাকি রোদ ভালো লাগে। দেখ কীভাবে রোদের মধ্যে খেলা করছে।
ওর ভালো লাগল, তাই তুমিও পা পা করে ছাদে চলে আসলে।
আদিব হাসলো। কেমন বড়দের মতো তাকে শাসন করছে সে।
নিয়াজ তামিকে কোলে তুলে নেয়। ৫বছরের তামির সাথে এটা ওটা গল্প করে নিচে আসতেছে। আদিব যেন বাঁচলো, তার গরমে শরীরটা ঘেমে গিয়েছে। কিন্তু ছেলেটা বল নিয়ে এই রোদে খেলবে, কোনো ভাবেই বুঝাতে পারছিল না। ছেলেকে কাঁদিয়ে যে নিচে নিয়ে যাবে সেটাও তার ভাল লাগছিল না। নিয়াজ এসে তাকে বাঁচিয়ে দিলো।
আদিব বিছানায় বসল। মিনহা গোসল করতে ওয়াশরুমে ঢুকেছে।
তুই কোথাও যাচ্ছিস নাকি?
ভাইয়ের প্রশ্নে নিয়াজ শুধু বলল,
হ্যাঁ ভাইয়া।
তামিকে নিজের বুকে বসিয়ে ছোট ছোট হাতজোড়া ধরে নাড়াতে নাড়াতে বলল,
আচ্ছা সাবধানে থাকিস। সন্ধ্যার পূর্বেই যেন বাসায় আসা হয়।
নিয়াজ মাথা নাড়ায়।
সে রুম ত্যাগ করে। এসছিল কিছু বলতে, কিন্তু মনের কথা মনের মধ্যেই রেখে দেয়। কিছু কথা অপ্রকাশিত থাকুক।
ভাইয়ের থেকে বিদায় নেওয়ার পর নিয়াজ সাইফের রুমে যায়।
সাইফকে পড়তে দেখে তার পাশে যেয়ে বসে।
সাইফ পড়ার টেবিলে বসে পড়ছিল। সামনে তার পরীক্ষা। কিন্তু তার পড়ায় একটুও মনোযোগ নেই। তার ভাইয়েরা তাকে মজা করে ডক্টর বলে ডাকে। অথচ তার পড়া এখনো শেষ হয় নি। তার ভাইয়েরা তাকে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দিবে, সাইফ একজন ডক্টর। রবিন তো প্রায়ই বলে থাকে, তোকে আমরা ডক্টর ডাকি। তুই যেন আমাদের ডাকে উৎসাহিত পেয়ে ভালো ভাবে পড়তে পারিস।
তবে বাসায় কারো প্রাথমিক চিকিৎসা সাইফের মাধ্যমেই হয়ে যায়।
ভাইয়া কিছু বলবে?
নিয়াজ ছোট্ট করে শুধু প্রশ্ন করে,
আমার সাথে ঘুরতে যাবি?
ভাইয়া সামনে আমার পরীক্ষা। আচ্ছা চলো।
নিয়াজ চোখ কঠিন করে উচ্চস্বরে বলল,
মন দিয়ে পড়ালেখা কর। কোথাও যাওয়া লাগবে না তোর।
সাইফ হুম বলে মনে মনেই হেসে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে। এতো রেগে যায় কেন মানুষটা। সাইফ বইয়ের দিকে তাকিয়ে গুনগুন করে পড়তে শুরু করে।
নিয়াজ নিজের রুমে যায়। রুমের মধ্যে কিছুক্ষণ পায়চারি করে। তার মনের ঘরে আগুন জ্বলছে। কোনো ভাবেই শান্ত হতে পারছে না সে।
তার মনে একটি বাক্যই বারবার আসছে, এবার প্রতিশোধ নিতে হবে।
নাওশিন আবারও পালানোর চিন্তা করে। সে এমন কোথাও যেতে চায়, যেখানে কেউ তাকে চিনবে না। সেও কাউকে চিনবে না। নতুন এক জায়গা। যেখানে কোনো রহস্য থাকবে না। কিছুটা হলেও সুখ পাবে। একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকা যাবে। কেউ কোনো প্রশ্ন করবে না, দিবে না অপবাদ।
পরক্ষণেই আবার ভাবে, এমন জায়গা কোথায় আছে? তার চেয়ে এখানেই থাকা ভালো। অন্তত নিরাপদে থাকা যাবে।
নাওশিন যখন এসব ভাবনায় মগ্ন, তখন তার রুমে কেউ আসে। একজন মেয়ে, মেয়েটির নাম এখনো তার জানা হয় নি। তবে সে জানে এই মেয়ে সামিন ভাইয়ার স্ত্রী। এখনও আরো দুজনের সাথে তার কথা বলা হয়নি, তারা হলেন জাহেদ এবং রবিন ভাইয়ার স্ত্রী।
তুমি একা বসে আছো, ভাবলাম তোমাকে সঙ্গ দেই। এতে তোমার ভালো লাগবে।
নাওশিন কিছু বলল না, এই বাসার সবাই কতো ভালো। কতো তাড়াতাড়ি মিশে যাচ্ছে তার সাথে।
নাওশিনকে কিছু বলতে না দেখে সে আবারও বলে,
আমি তানিশা, তোমার সামিন ভাইয়ার স্ত্রী। আমাদের বিয়ের ৭মাস হয়েছে।
এবারও নাওশিন চুপ। সে এসব কথার কী উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। কীভাবে কথা বলা শুরু করবে বুঝতে পারছে না। তানিশা আবারও বলল,
দেখো মেয়েটা কীভাবে চুপ করে আছে। এভাবে মন খা’রাপ করে থাকলে চলবে নাকি।
নাওশিন এবার বলল,
হুম বলুন আপা।
কতো মিষ্টি মেয়ে তুমি। এভাবে মন খা’রাপ করে থাকলে ভালো লাগে বলো?
নাওশিন কিছু বলল না। সে মন খা’রাপের দেশের রাজা। তার কী সেখানে আর মন খা’রাপ করতে হয়। এমনিই মনটা খা’রাপ থেকে যায়। আর মন ভালো হয়ে যাওয়া মানে রাজত্ব চলে যাওয়া।
তানিশা হাল ছেড়ে দেওয়ার মানুষ না। নাওশিনের মনটা একটু ভালো করতে চায় সে। মানুষ যে ভাবে একটু একটু করে কষ্ট পেয়ে বিশাল কষ্টের পাহাড় বানিয়ে ফেলে। সেও ঠিক সেভাবেই একটু একটু করে মন ভালো করে কষ্ট দূর করে দিবে নাওশিনের।
তানিশা বলল,
তুমি জানো তুমি কতোটা সুন্দর? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখবে, নিজেকে নিজেই ভালোবেসে ফেলবে।
নাওশিন চুপ। তানিশা এবার কিছুটা মন খা’রাপ করল।
মেয়েটা এতো চুপ থাকলে তো অসুস্থ হয়ে যাবে। এবার দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল সে,
আমার কথায় মনে দাগ পড়ে নি বুঝি। এই কথা যদি আজ কোনো ছেলে বলত, তাহলে তোমার শরীর শীতল হয়ে যেতো। মনে প্রেমের ঢেউ উঠত। মুখটি লজ্জায় লাল হয়ে যেত। আজ আমি এক মেয়ে বলে, তোমার কাছে পাত্তাই পেলাম না।
নাওশিন এবার হেসে দেয়।
আসলে আপা আমি কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছি। এর বাহিরে কিছুই না।
তানিশা হাসলো, যাক কাজে এসেছে এবার।
লজ্জা পাওয়ার কী আছে? তুমি কী নতুন বউ?
নাওশিন বুঝতে পারছে, এবার কথা না বললে এভাবেই থাকে লজ্জা দিবে এই মেয়ে। তাই সে বলল,
আপা আমায় এক কাপ চা করে দিবেন?
তানিশা হুম বলে হাসি মুখে চলে যায় নাওশিনের জন্য চা তৈরি করতে।
নাওশিন যেন বাঁচলো। চা শেষ কবে খেয়েছিল, সেটা তার মনে নেই। চা এর কথা বলা তো শুধু তানিশার থেকে বাঁচার জন্য। সে বুঝতে পারছে, তার মন ভাল করার জন্যই মেয়েটি এসেছিল। কিন্তু সে কখনো কোনো মানুষের সাথে এভাবে কথা বলে না অনেক বছর হলো।
রাত ৮টার পর হঠাৎ জাহেদ খুশি মনে বাসায় ঢুকে চিৎকার করে বলতে শুরু করে, ভাইয়া তোমরা কোথায়?
সবাই জাহেদের এমন চিৎকার শুনে একত্রিত হয়।
রবিন জিজ্ঞেস করে,
কী হয়েছে ভাইয়া?
জাহেদ খুশিতে আত্মহারা হয়ে বলল,
তোমরা জানো, মানিক চৌধুরীকে কেউ খু’ন করেছে। তাকে খুব নিষ্ঠুর ভাবে কারা যেন মে’রেছে। দুই হাত, দুই পা শরীর থেকে আলাদা। মুখটা ছাড়া সব কিছু ক্ষ’তবিক্ষত। আমার যে কি আনন্দ লাগছে তোমাদের বুঝাতে পারবো না।
মিফতা আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠল। আদিব আঙুলের রেখা ধরে গুনে বলল।
তাহলে আমাদের পরিবারের খু’নির ৩য় জন দুনিয়া ত্যাগ করল। দুইজনকে দেশের আইন ফাঁ’সিতে ঝুলালেও, এই মানিককে কে খু’ন করল।
মিফতা বলল,
ভাইয়া ওদের পা’পের পাল্লা ভারি হয়েছে। হয়তো কেউ অ’ত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মে’রে দিয়েছে মানিককে।
রবিন বলে উঠল,
ভাইয়া আমরা যে এতো খুশী হচ্ছি। কিন্তু এটা তো একটি ফাঁদ হতে পারে।
আদিব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,
কিসের ফাঁদ?
ভাইয়া বুঝতে পারলে না। এই মানিকের বয়স ৭০এর অনেকটা কাছে। যদিও এতো বয়স বুঝা যায় না, কিন্তু আমরা তো জানি তার বয়সটা। যতোটা জানি মানিক চৌধুরী আজকাল এতোটা সুস্থ না। তাহলে তাকে হয়তো তার আপনজন মে’রেছে। ভাইয়া ওরা প্রভাবশালী। এই মানিককে খু’ন করে আমাদের ফাঁসানোর একটি বড় চেষ্টা হতে পারে।
সবার মুখ কালো হয়ে যায়।
আদিব সবার দিকে তাকায়।
নিয়াজ এখনও বাড়ি ফিরেনি?
সাইফ বলল,
ভাইয়া তো ঘুরতে গিয়েছে। এতক্ষণে তো এসে যাওয়ার কথা।
আদিব চিন্তিত হয়ে বলল,
ও জানে না আমাদের কতো শত্র। রাত ৮টার উপর চলল, কিন্তু ও এখনো বাহিরে কী করে?
কেউ কোনো কথা বলছে না। সবাই চুপ।
একটু পূর্বেও সবাই খুশী হয়েছিল। কিন্তু রবিনের কথা শুনে সবারই মুখটি কালো হয়ে যায়। সে যে কথাগুলো বলেছে। তা তো ফেলে দেওয়ার মতোও না। নিশ্চয় ওদের কোনো ফাঁদ।
মিফতা বলে উঠল,
ভাইয়া নাওশিনকে আর এই বাসায় রাখা যাবে না। সকাল হলেই, কিংবা রাতেই পুলিশ চলে আসতে পারে৷ রবিনের কথাটা বুঝতে পেরেছো? আমাদের ফাঁসানোর জন্যই এই খু’ন। নাওশিনকে যদি পুলিশ দেখে আমাদের বাসায়, তাহলে ওকে নিয়ে যাবে। নিরীহ একটি মেয়েকে এভাবে তো আমরা ছেড়ে দিতে পারি না ধ্বংসের মুখে।
চিন্তার উপর চিন্তা। আদিবের সব কিছু কেমন অন্ধকার অন্ধকার লাগছে। দু’চোখে পথ খোঁজে পাচ্ছে না সে। তাদের জন্য কি শান্তি নামক শব্দটি এই পৃথিবী থেকে ছুটি নিয়েছে।
নাওশিন এখন কোথায়?
তানিশা বলল,
ভাইয়া ও তো বিকেলে ঘুমিয়েছে৷ শরীরে দেখলাম হালকা জ্বর।
আদিব মন খারাপ করে বলল,
কী বলো এসব। এই মেয়েকে নিয়ে এখন কী করব আমরা। এভাবে তো ছেড়ে দিতেও পারি না আমরা। এই শহরের কোথায় যাবে ও। কিছুই তো চিনে না।
সবার মুখটাই মলিন হয়ে আছে। সবাই এখন নাওশিনকে নিয়ে ভাবছে। কী হবে নাওশিনের?
রাত ১০টা, সাত ভাই খাবার টেবিলে বসেছে খাবার খাওয়ার জন্য। সাইফ ভাত নিয়ে সোফায় যায়, সেখানে বসে খাবার খাচ্ছে। বাকি ছয়জন টেবিলে বসে আছে। নাওশিন মিনহার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তার ভীষণ ভালো লাগছে, এভাবে সবাইকে একসাথে খাবার খেতে দেখে। এদের পর সব বাসার মেয়েরা খাবে। কতোই না সুন্দর!
নাওশিন জানেনা ওই খু’নের কথা কিছুই। তাকে একটু পূর্বেই মাত্র টেনে তোলা হয়।
আদিব নিয়াজকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করল।
নিয়াজ কোথায় গিয়েছিলি তুই? সন্ধ্যার পূর্বে ফেরার কথা বলছিলাম আমি।
নিয়াজ চুপ। আদিব আবারও বলল,
তুই জানিস মানিক চৌধুরীকে কেউ খু’ন করেছে?
খাবার মুখে দিতে দিতে বলল,
হ্যাঁ শুনেছি। খাওয়া শেষে বড় ভাবি ফ্রিজে যদি মিষ্টি থাকে, তাহলে আমাদের দিয়ো তো। ভালো খবরে মিষ্টি মুখ করতে হয় তা জানো না তোমরা।
আদিব কিছু বলল না। ওরে কিছু বললেই রাগ দেখাবে। আদিব খাবার খাওয়ায় মন দিলো।
নিয়াজ কোথায় গিয়েছিলি তুই?
মিফতার প্রশ্নে ছোট্ট করে উত্তর দেয় সে।
শহরটা ঘুরে দেখতে বের হয়েছিলাম।
সত্যি তো?
নিয়াজ মুচকি হেসে বলল,
মিথ্যা বলতে যাবো কেন?
আর কেউ কোনো কথা বলল না। সবাই নিজেদের খাওয়া শেষ করল।
আজ নাওশিন একটু হলেও পেট ভরে ভাত খেতে পেরেছে।
সে এখন অপেক্ষায় আছে এই মানিক কে, যদিও বুঝতে পারছে খা’রাপ কেউ হবে। হয়তো এই পরিবারের খু’নি।
তাইতো ওরা খুশি।
নাওশিন যখন খাবার টেবিলে বসে এসব ভাবছিল। তখন আদিব এসে নাওশিনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
নাওশিন তৈরি থেকো, রাত একটায় তোমাকে এই বাসা থেকে আমরা অন কোথাও নিয়ে যাবো।
নাওশিনকে কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়েই আদিব রুমে চলে যায়।
নাওশিন নিজের আশেপাশে শুধু একমাত্র সামিনকে আবিষ্কার করল।
ভাইয়া আদিব ভাইয়া কী বলে গেলেন ওই কথা? আমি তো কিছুই বুঝিনি। কোথায় নিয়ে যাবেন?
সামিন এই প্রথম নাওশিনের সাথে কথা বলছে। সেদিন ওই পাঁচজনের মধ্যে সামিনও একজন ছিলো।
বোন রে তুমি এই বাসায় নিরাপদ না। এখন রুমে যাও৷ বিশ্রাম নাও। রাতে তোমায় নতুন কোথাও নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই তোমায় থাকতে হবে।
কথাটি বলে সামিনও নিজের রুমে চলে যায়।
নাওশিন রুমে যায়। তার সব কিছু অন্ধকার লাগছে৷ মাথা ঘোরাচ্ছে। তাকে কোথায় নিয়ে যাবে এরা। কিছুই বুঝতে পারছে না সে।
এখানেই তো মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। তাকে কোথায় নিয়ে যাবে গভীর রাতে। আবার কী অপেক্ষা করছে তার জন্য? মনে অনেক প্রশ্ন এসে জমা হচ্ছে। কিন্তু কাকে করবে এই প্রশ্ন? তার হয়তো আর ভালো থাকা হবে না। জীবনটা এতো প্রশ্নময় আর রহস্যে ভরা কেন।
নাওশিন এখন শুধু ১টার অপেক্ষায়। মনে আসা প্রশ্ন গুলোর উত্তর তখনই পাবে।
চলবে,,,