#সম্পর্ক
#Tasfiya Nur
#পর্বঃ৫
ক্লাসরুমে এক কোর্ণারে দাড়িয়ে সেপ্টিপিন লাগাচ্ছিলাম আচলে কিন্তু পিছন সাইড ওত দূর হাত পৌছাচ্ছিলো না হঠাৎ ই বলিষ্ঠ দুটো হাত সেপ্টিপিন টা লাগিয়ে দেয়। আমি অবাক হয়ে পিছনে তাকাতে দেখতে পাই একজন শ্যামলা বর্ণের পুরুষ না উনাকে কালো বলা যায় না ফর্সা এর মাঝামাঝি উচ্চতায় ৫’ ৮” হবে আমি বাচ্চা মেয়ে ৫’৪” মেয়ে মাথা উচু করে শুধু তাকে দেখে যাচ্ছিলাম ফরমাল গেটআপ এ হাসিমুখে তাকিয়ে ছিলেন।আমি আমতাআমতা করে ভীতু কণ্ঠে তাকে জিগাসা করেছিলাম কে আপনি?
উত্তরে সে বলেছিলো আমি সাগর চৌধুরী তোমার গানের গলা কিন্তু জাস্ট ওয়াও কিভাবে শিখলে এত ভালো গান আমাদের এই সাদামাটা গ্রামে তো গান শেখার উপায় নেই। আমি উনার কথা শুনায় খেয়াল করিনি আমার খেয়াল ছিলো অন্যদিকে আমাদের এভাবে এক রুমে দেখলে গ্রামের মানুষের কথার মুখোমুখি হতে হবে আমি বেখেয়ালি হয়ে জবাব দেই ওহহ জমিদারের মেঝো ছেলে নাম শুনেছিলাম আজ দেখলাম। কথাটা বলে উঁকিঝুকি দিয়ে আমি আশেপাশে দেখায় ব্যস্ত হয়ে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে ধরলাম।সে সেদিন সামনে এসে পথ আগলে ধরে বলেছিলো নামটা তো বলে যাও এট লিস্ট আমি তারাহুরা করে বলেছিলাম আমি মহুয়া আসছি পথ ছাড়ুন।সে পথ না ছেড়ে আবার প্রশ্ন করে বাবার নাম কি তোমার বাড়ি কোন পাড়ায়? আমি কোনোরকম দেরি না করে চটপট জবাব দেই, দেখুন আপনার সাথে এভাবে একরুমে দেখলে নানান কথার গুজব ছড়াবে আপনার কিছু হবে না কারণ আপনি বড়লোক বাবার আদরের সন্তান যত কথা আমার শুনতে হবে লোকে বলবে গরিব কৃষকের মেয়ে সুযোগ পেয়ে জমিদারের ছেলেকে ফাসাতে চাচ্ছি।উত্তরে সে বলেছিলো লোকের কথায় কি আসে যায় লোক তোমাকে ভাত না কাপড় দেয়?
আমি অসহায় চোখে তাকে বলি দয়া করুন পথ ছাড়ুন আমার লোকের কথায় সত্যিই আমার কিছু যায় আসেনা কিন্তু আমার বাবা আমরা গরিব আমাদের কাছে সম্মানই সব, সবার সব কথা সহ্য করার মতো সহ্য ক্ষমতা আল্লাহ সবাইকে দেয়না সমাজ বলে যে জিনিসটা তাদের কথায় কান না দিতে চাইলেও কান চলে যায় উঠতে বসতে সমাজের মানুষ হেয় করে কারণ অন্যের ভালো এই সমাজ দেখতে পারেনা এই সমাজ বড় মানুষকে টেনে হিচরে নিচে নামায় আর যারা নিচে থাকে তাদের মাটিতে মিশিয়ে দিতে দুবার ভাবেনা আমরা যে মানুষ এটা এই সমাজের বাকি মানুষ গুলো ভাবেই না মানবতা বলে যে জিনিস এটা কেউ বুঝতেই চায়না সবার চোখে পট্টি পড়া আছে অহংকারের অন্যকে কথা শুনাতে পারলে এই সমাজের মানুষ শান্তির ঘুম দিতে পারে অন্যের ঘুম হারাম করে তাই সমাজে যখন থাকি সেহেতু সমাজের ধার ধারতেই হবে সমাজ না দিলো ভাতকাপড় কিন্তু নিজের খেয়ে অন্যের কথা শুনার পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি করবো।কথাগুলো এক নাগারে বলে থেমেছিলাম আমি এর পর সে বলেছিলো বাহ তোমার তো কথা বলার ধরণ টা খুব ভালো গ্রামের মেয়ে বলে মনেই হলোনা। আমি আর কথা না বাড়িয়ে ধাক্কা মেরে চলে আসছিলাম কারণ সে পথ ছাড়েনি আমার।
এই পর্যন্ত বলে থামলো মহুয়া,রাহাত মহুয়ার পানে আগ্রহসহিত তাকিয়ে সব শুনছিলো মহুয়া থামতেই উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন করলো,কি হলো মহুয়া থামলে কেন?
গাড়ি স্টার্ট করো রাহাত বাসায় যেতে কম কর হলেও তিনঘন্টা লাগবে শহর থেকে অনেকটা দূরে চলে আসছি যেতে যেতে বলি।মৃদুস্বরে কথাটা বললো মহুয়া।
মহুয়ার কথায় রাহাত কোনো শব্দ না করে গাড়ি চালাতে শুরু করে। মহুয়া তিথিয়ার দিকে তাকিয়ে একবার দেখে নিয়ে সীটে মাথাটা হেলান দিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। রাহাত একপলক মহুয়াকে দেখে নিয়ে চুপ করে রইলো সে বুঝতে পারে মহুয়ার ইচ্ছে হলে এমনিই সব বলা শুরু করবে।
খাটের উপর এলেমেলো হয়ে শুয়ে আছে সাগর।তার মাথায় একটা কথাই ঘুরছে,আমার ভাইয়ের সঙ্গে যে মেয়ের বিয়ের কথা হচ্ছে তাদের কথা তো জানতাম আমি সবাইকে মোটামুটি একবার দেখেছিলাম এর আগে কিন্তু মহুয়া নামের কেউ তাদের পরিবারে আছে সে এটা জানতাম না। মেয়েকে আংটি পড়ানোর সময় বারবার রেহানা আন্টি রাহাতকে মহুয়া নামের কাউকে ডাকার কথা বলছিলো রাহাত তো অবিবাহিত তাহলে কে এই মহুয়া আমার মহুপাখি তো নয় কারো সাথে শেয়ার করতে পারলে একটু শান্তি লাগতো।একমনে মাথার উপর ঘুরা ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে ভাবছে সাগর। বাড়ির সবাই এই দুপুর রাতে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে কেউ তার কথা শুনার জন্য নিশ্চয় জেগে বসে নেই এই কথা ভেবেই বিছানা ছেড়ে সে পা বাড়ায় বাসার ছাদে যাওয়ার জন্য রাতের অন্ধকার আজকাল তার বড্ড ভালো লাগে জীবনটা মহুয়াকে হারিয়ে আর তাকে অপবাদ দেওয়ার অনুশোচনায় সে আজ দগ্ধ হতে হতে পোড়া ছাই হয়ে যাচ্ছে। কিছু সময় আসে জীবনে খুব করে একজনকে দরকার পরে যাকে বিশ্বাস করে সব বলা যা এতে অন্তত কষ্টের দমবন্ধ অনুভুতি কিছুটা কমে।যার জীবনে এমন মানুষ আছে সে নিঃসন্দেহে ভাগ্য বান, ছাদে দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো ভেবে যাচ্ছে সাগর।
রাতের আধারে রাস্তায় গাড়ি চলছে নিজ গন্তব্যে যাওয়ার পথে গাড়িতে দুটি মানব-মানবী যে যার মতো চুপচাপ কারো মুখে আওয়াজ নেই। রাতের রাস্তায় জ্যাম কম এই ঢাকা শহরে রাতের আধার গভীর ভাবে দেখাও ভাগ্যের ব্যাপার রাত যতই হোক সবসময় লাইট জ্বলছে এতে রাতের গভীরতা উপলব্ধি করা কঠিন।মৌনতা কাটিয়ে মহুয়াই আবার বলতে শুরু করে
জানো রাহাত স্কুলের সেই ঘটনার পর স্কুলে যাওয়ার পথে সাগর চৌধুরী স্কুলে যেতে একটা বটগাছ পরতো সে গাড়ি নিয়ে দারিয়ে থাকতো যেতাম বান্ধবীদের সাথে সে অপলক তাকিয়ে থাকতো কিছু বলতোনা কখনো।আমার কিশোরী মনে তখন একটা ভালো লাগা কাজ করতে শুরু করে তবু নিজের অনুভূতিকে পাত্তা দিতাম না কারণ আবেগের বয়স ওটা কাটিয়ে উঠতে হবে নয়তো এই আবেগে গা এলিয়ে দিলে মুখ থুবরে পরতে হবে যেমনটা আজ দেখো সে পাশে নেই। কথাগুলো বলে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো মহুয়া।রাহাত মহুয়ার দিলে তাকালো তারপর বললো,
পরে কি হলো?সে প্রপোজাল দিয়েছিলো।রাহাতের প্রশ্নে মহুয়া একটু হাসলো মহুয়া আবারও বলতে লাগলো,
প্রপোজ সে কয়েকদিন পর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয় বাবা বড় ভাই নিয়ে।আমার বাবাও জমিদার বাড়ির বউ হবে মেয়ে সুখে থাকবে ভেবে রাজী হয় কিন্তু আমি রাজী ছিলাম না ভাইয়াও আমার সাপোর্ট এ ছিলো তার বোনের বিয়ে হবে তার বোনের থেকে দশবছরের বর একজনের সাথে এটা মানতে ভাইয়া নারাজ ছিলো বাবা মা ভাইয়ার আমার কথা গ্রাহ্য করেনি।যতই ভালো লাগা হোক তেলজল কখনো এক হয়না কথা শুনতেই হয় অন্যের।শেষে বাবা কসম দিয়ে রাজী করায় সে প্রস্তাব আনার একসপ্তাহ পরই বিয়ের ডেট ফিক্সড হয়। জমিদারের ছেলের বিয়ে আমাদের মাঝারি গ্রামটার সব মানুষকে দাওয়াত করে জমিদার সাহেব আমার শ্বশুড়মশাই খাওয়ায় অনেক ধুমধাম সহিত বিয়ে হয়। গায়ে হলুদ বৌভাত ভালোয় উৎসব হয়।আমার কাকা ফুফু কাজিনরা যাদের কখনো দেখিনি জন্মপর পর তারা শহরে থাকার দরুণ গ্রামেও আসতো না সেই হিসেবে তারা এসেছিলো কিন্তু বিয়ের ঝামেলায় ভালোভাবে পরিচিত হতে পারিনি পরে তারা চলে গেছিলো বৌভাত শেষ হতেই।আমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ি বড় জা ভাসুর দেবর সবাই অনেক ভালোবাসতো আমায় ছোটো মানুষ বলে আদর করতো অনেক।যে যখন কাের জন্য বাইরে যেত আসার সময় আমার জন্য কিছু না কিছু আনতো। বিয়ের পর এসএসসি পরিক্ষাটা দেওয়া অব্দি গ্রামে ছিলাম। সাগর সেবার মাস্টার্স ফাইনাল এক্সাম দেয়। এক্সামের সময়টা ঢাকায় ছিলো সে আমি গ্রামে। ফোনে কথা বলতো। সারাদিন জা শ্বাশুড়ি ভাসুরের ছোটো ছেলেকে নিয়ে দিন ভালোভাবেই যাচ্ছিলো বিয়ের পর বাবা মাও এসে দেখে যেতেন আমি অভিমান করে যেতাম না আমার মতের বাইরে বিয়ে দেওয়াতে।ভাইয়াও হোস্টেলে চলে যায় আসেনি পরে আর ফোন দিতো মাঝে মাঝে পরিক্ষা শেষে বাবার ঢাকার অফিসের দায়িত্ব সে নেয়।আমাকেও সবাইকে রাজী করিয়ে ঢাকয় নিয়ে যায় পড়াশুনার কথা বলে।আমার শ্বাশুড়ি এতে নারাজ ছিলেন তিনি বলতেন বাড়ির বউ বাড়িতে থেকে পড়ুক।কিন্তু ছেলের জেদের কাছে হেরে যান তিনি।বিয়ের একবছরের মাথায় পা দেই ঢাকা শহরে।যদি জানতাম এই শহর আমায় সবকিছু থেকে হারিয়ে দিবে পা দিতাম না। ঢাকার সাভারে তার বাসা ছিলো অফিসটাও সেখানে, সারাদিন সে অফিসে রাতে আসতো।আমায় কলেজে এডমিশন করিয়ে দেয় গানের ক্লাসে ভর্তি করিয়ে দেয় তখন আমার বয়স সতেরো বছর চলে। সবসময় আগলে রাখতো বিয়ের একবছর হয়ে গেলেও স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক যে হয় ওটা আমাদের ছিলোনা সে বলেছিলো সময় আসলে সে নিজেই কাছে আসবে পিচ্চি বউটা বড় হোক আগে।সাভারেই আমার নিজের ফুফুর বাসা আছে কাকারাও থাকতেন এটা বাবার কাছে শুনেছিলাম আমার বাবারা তিনভাই বোন ছিলেন সবাই গ্রামে দিন ভালো যেত না বলে সব বিক্রি করে ঢাকায় পাড়ি জমায় সেই হিসেবে সবার সাথে অতটা মিল ছিলো না জন্মের পর কাউকে দেখিনি আমি তবুও বিয়ের ভিতর যাওয়ার সুবাদে ফুফু ফুফা আর কাকা কাকীকে চিনতাম। সারাদিন কলেজ শেষে বসে থাকা বোর লাগতো বাবাকে কল করে নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করে সাগরকে বলে ফুফু কাকাদের বাসায় যাওয়া আসা করতাম।কাকাইয়ের দুই মেয়ে ছিলো। ফুফু ছিলেন বাবার বড় কাকা বাবার ছোটো। ফুফুর তিন ছেলে মেয়ে ছিলো দুই মেয়ে একছেলে।যাওয়া আসি করার দরুণ সবার সাথে একটা ফ্রি মাইন্ডেড সম্পর্ক হয়ে যায়, বিকেলটা বেশির ভাগ সময় ফুফুর বাসাতেই কাটতো। রাতে সাগর অফিস থেকে আসার সময় নিয়ে আসতো। ফুফুর ছেলেই ছিলো বড় নাম হলো আরাফাততার সাথে বপশিই ফ্রি ছিলাম আমি অনেক আনদার করে জ্বালাতাম ভাইয়া তখন অনার্স লাস্ট ইয়ারে পড়তো। আমি ফাজলামি করে আরু ভাইয়া ডাকতাম। আপু দুটোর নাম ছিলো জেসমিন বড় আপু ছোটোটা আমার বয়সী নাম নাতাশা।ফুফুর বেস্টফ্রেনৃড শিরিন আন্টি ফুফু তাদের অফিসে কাজ করতো আমার ফুফু একদিন শিরিন আন্টির জীবন বাঁচাতে সাহায্য করেছিলো কিভাবে করেছিলো তা কেউই বলেনি তাই জানিনা সেই থেকে তারা বেস্টফ্রেন্ড, বেশিরভাগ সময়ই শিরিন আন্টি ফুফুর বাসায় আসতো সন্তানহীন বলে আমাকে মেয়ে ভেবে নিয়েছিলো যার ফলশ্রুতিতে আজ তারাই আমার পাশে আছে । সারাদিন কলেজ সকালে গানের প্রাক্টিস বিকেলে কাজিনদের সাথে আড্ডা দিনশেষে সাগরের ভালোবাসা আর বাবা মা ভাইয়ের সাথে কথা বলতাম শ্বশুবাড়ির সবার সাথেও কথা বলতাম শ্বশুড়মশাই তখন গ্রামের বাড়ির সব সামলাতো। দিনদিন মানুষটার উপর দুর্বল হতে থাকি স্বামী আমার হারাবো এই চিন্তা ছিলোনা তাই দুর্বলতাকে সায় দেই আজও মরণফাদ থেকে বেরুতে পারিনি।ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে উঠতেই সাগর পূর্ণরুপে স্ত্রীর সম্মান দেয়। সময় চলে যেত সুখেই কিন্তু বেশি সুখ কপালে সয়নি কথায় আছে অতিরিক্ত কিছু ভালো না আমার সবটাই ছিলো অতিরিক্ত এজন্য সময়ের সাথে সাগরও পাল্টায় ভুল বললাম সাগর পাল্টায়নি ওর কেয়ার ভালোবাসা পাল্টে যাচ্ছিলো তখন আমি ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষ পরিক্ষা দিবো। সাগর কেমন রাত করে ফিরতো কথা বলতো না মাঝেমধ্যে ড্রাংক হয়ে বাসায় এসে আমার উপর চিল্লাতো।আমিও ভেঙে পরেছিলাম খুব পরে ভেবেচিন্তে খোজ নিতে থাকি ওর অফিসের ম্যানেজার কাকা মাঝেমধ্যেই বাসায় আসতো আমায় খুব ভালোবাসতো মেয়ের মতো।তার থেকে পরে জানতে পারি সাগরের অফিসের নতুন একজন মেয়ে এমপ্লয়ি জয়েন হয়েছে নাম রুমাইশা দেখতে শুনতে আমার থেকেও বেটার এজন্যই হয়তো সাগর তার প্রতি ঝুকেছিলো কারণ ছেলেমানুষ যে সৌন্দর্যের পুজারী।তারা ঘুরতে বের হয় কাজের ফাঁকে ফাঁকে। ম্যানেজার কাকা আমি কষ্ট পাবো বলে জানাতে চায়নি কিন্তু আমি দেখা করে জোড় করে সব জানি।দিন যত বাড়তে থাকে অবহেলা বেড়েই যাচ্ছিলো সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি ঢুকলে সেই সম্পর্কে বিশ্বাস ভরষা ভেঙে যায় আমারও সাগরের প্রতি ঘৃণা আসতো দিনে বাইরে অপর মহিলার সাথে কাটিয়ে রাতে বাসায় এসে স্ত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহার আবার নিজের চাহিদা পূরণে ব্যবহার একপ্রকার নিজের প্রতিই আমার কেমন ঘৃণা লাগতো তবুও চুপ থাকতাম বিশ্বাস ছিলো সাগর ভালো হয়ে যাবে।ভালোবাসি কি করতাম ছারতেও তো পারিনা। যারা মন থেকে ভালোবাসে তারা মরে কোনো না কোনো ভাবে সেই মানুষটা মরেই জিন্দালাশ হয়। আমার সাগরকে হাতেনাতে ধরার জন্য প্রমাণ লাগতো তাই নিজেকে শক্ত করি নিজের সাহস নিজে হই। ভাবনা ছিলো আমার যে পরিক্ষা শেষে নামবো সাগরের পিছে।কারণ সাগরকে কিছু বললেই এড়িয়ে যেত।এক বাড়িতে থেকেও কখনো কখনো চোখের দেখাও পেতাম না।দিন যায় মাস যায় আমার পরিক্ষা শেষ হয়, পরিক্ষা শেষ হওয়ার পনেরো দিন পর জানতে পারি আমি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিরিয়ড হচ্ছিলো না খাওয়া অরুচি মোটকথা প্রেগ্ন্যান্সির লক্ষণ দেখতাম তাই টেস্ট করি রেজাল্ট পসিটিভ আসে।আমার মা বলতো ছেলেরা বিয়ের ওর সন্তান পেলে মনস্থির হয় সংসারের প্রতি তাই সাগর আমায় জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ দিলেও খাইনি আমি কিছু দিন। যার ফলাফল তিথিয়া।আরও সিওর হতে আরাফাত ভাইয়ার সাথে হসপিটাল যাই ফুফুকে বলে। সব সিওর হয়ে আমি সাগরকে বলতে চাই সারপ্রাইজ দিতে উল্টে সাগরই আমায় সারপ্রাইজ দেয় জীবনের সবথেকে বড় শকটা সেদিনই পেয়েছিলাম।
কথাগুলো বলতে বলতেই চোখ বেয়ে মহুয়ার অঝোর ধারায় পানি পরছিলো।মহুয়ার বাসার সামনে এসে গাড়িটা ব্রেক করে রাহাত এতেই থেমে যায় সে।রাহাত তিথিয়াকে কোলে নিয়ে মহুয়াকে বলে বাইরে আসতে, কাদতে বারণ করেনা সে কাদুক কাদলে হালকা হবে মেয়েটা।এপারমেন্টের দারোয়ানের সাথে কথা বলে ভিতরে ঢুকতে যায় মহুয়া রাহাত পিছন ফিরে ডাকে মহুয়াকে।ডেকে বলে,
বাকি কথা কাল কনসার্ট শেষে শুনবো মহু প্রিপারেশন নিও কনসার্ট এর কাল এসে নিয়ে যাবো তোমায়। মহুয়া কিছু বলেনা পিছন ফিরে চলে যায় ভিতরে।
চলবে?
(আসসালামু আলাইকুম, ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন)