#গল্পঃ_সপ্নছোয়া
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াত
#পর্বঃ__৫+৬
পিচ্চিটার মুখে হটাৎ এমন আশ্চর্য মুলক কথা শুনে এক মুহুর্তের জন্য থমকে যায় সবাই। নিস্তব্দে ভরা পুরু বাড়ি। বাইরে থেকে মনে হবে এই বাড়িতে কেও নেই বুঝি।
তখনি মোহনের মা এসে তার কান টেনে ধরে।
—- হারামজাদা এতো পাকা পাকা কথা কোথায় শিখলি? কোখন কোথায় ফাজলামি করতে হয় জানিস না?
—- দেখো মা আমি মোটেও ফাজলামি করছিনা, আর এইযে কাজি সাহেব আপনিযে ঢেং ঢেং করে বিয়ে পরিয়ে দিচ্ছেন একবারো কি জানতে চেয়েছেন মেয়ে এই বিয়েতে রাজি কিনা? আর এইযে শ্রাবন ভাইয়া আপনি ও কি একবার জানতে চেয়েছেন, আপু আপনাকে পছন্দ করে কিনা?
বাড়ির জামাই বলে কথা, সবার সামনে মোহন তাকে এই ভাবে বলাতে তার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। লজ্জায় রুমাল দিয়ে মুখটা আড়াল করার চেস্টা করছে। তার কিসের অভাব যে মোহনা তাকে পছন্দ করবেনা? দেখতেও স্মার্ট। যে কেনো মেয়েই তাকে পছন্দ করবে। তাহলে মোহনার কেনো অপছন্দ?
—- কি আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছেনা তাইতো? তাহলে এক্ষিু আপুর হাত চেক করুন আপুর বাম হতে থাকা বিষের বোতলটা দেখতে পাবেন।
কথাটা শুনা মাত্রই শ্রাবনের মা মেঘলা চৌধুরি এক পায়ে দাড়িয়ে যায়। মোহনার কাছে গিয়ে হাতটা টান দিয়ে দেখে সত্যিই একটা বিষের বোতল।
— এই তাহলে তোর মেয়ের আসল পরিচয়? খুব করেতো গর্ব করে বলেছিলি আমার সোনার টুকরু মেয়ে। আমার কথার বাইরে কিছুতেই যাবেনা। এখন? ছি ছি লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে। এরকোম একটা মেয়েকে আমি আমার ছেলের বৌ বানাতে চেয়েছি। যেই মেয়ে বিয়ের আসরে বিষের শিশি নিয়ে বসে থাকে সুইসাইড করার জন্য। ছোট ভাইকে দালাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এতো আমার সংসারে আগুন লাগিয়ে দেবেরে।
মোহনার বাবা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। সে জানে তার বোন মেঘলা কেমন। ছোট বেলায় পুরু বাড়ি নাচিয়ে ছারতো সে, তাইতো কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দিলো।
ওই দিকে অনিকার গোমরা মুখটায় কিছুটা হাসির আভাস ভেসে আসছে। মনে হয় যেনো একটু আশার আলো দেখতে পাবে সে। আর যাই হোক ছোট মোহন আজ একটা কাজের মতে কাজ করেছে। একবার যেহেতু ভেমরুলের বাসায় ঢিল মেরেছে তার মানে বিয়ে ভাঙার সম্ভাবনা ৮০%। তবুও চিন্তা হচ্ছে বাকি ২০% এর জন্য।
মেঘলা চৌধুরি শ্রাবনের হাত ধরে বলে, চল শ্রবন এই বাটপারদের সাথে সম্পর্ক করার কোনো ইচ্ছেও আমাদের নেই। ওমা গো মা, যেই মেয়ে বিয়ের দিন এতো বড় বাটপারি করতে পারে না যানি, বাকি দিনতো পরেই রয়েছে।
পেছন থেকে আহান চৌধুরি ডাক দিয়ে বলে,
—- বুবু…..
—- কে তোর বুবু? বাড়িতে নিয়ে এসে সবার সামনে অপমান করলি এখনো তোদের স্বাদ মিটেনি? আজ থেকে তোদের সাথে আর আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ভেবে নিবো বাবা মায়ের মতো আমার দুই ভাইও মরে গেছে। শ্রাবনকে তোর মেয়ের পছন্দ নয় সেটা আগে বললেই পারতি তাহলে আমরা লোকজন নিয়ে এখানে অপমানিত হতে আসতাম না।
,
,
,
,
আহান চৌধুরি ও মোহনার বাবা আমান চৌধুরি বসে আছে সোফায় । সামনে দাড়িয়ে মোহন, মোহনা, আদিত্ব, অনিকা, অন্তরা বেগম ও অনামিকা বেগম।
নিরবতা ভেঙেই আদিত্বের বাবা আহান চৌধুরি বলে উঠলো,
—- ছেলেটা কে?
— কার কথা বলছো তুমি?(অনামিকা বেগম)
—- আমি তোমাকে জিঙ্গেস করিনি, ছেলেটা কে মোহনা? যার জন্য তুমি আমাদের মান সম্মান ধুলুর সাথে মিসিয়ে দিলে?(ধমকের সুরে)
মোহনা আড় চোখে আদিত্বের দিকে তাকায়। আদিত্বের বুকটাও মোচড় দিয়ে উঠে, কারন এই মুহুর্তে মোহনা আদিত্বের নাম বললে, আদিত্বের আস্ত রাখবেনা তার বাবা।
মোহনা মাথা নাড়িয়ে ইশারা করে কেও না।
—- তহলে শ্রাবনকে অপছন্দ করার একটা কারন দেখাও তুমি আমাকে।
সবার মাঝখানে মোহন বলে উঠে, আমি জানি ছেলেটা কে। আমাদের আদিত্ব ভাইয়াই। আমি কাল রাতেও আমি আপুকে কাদতে দেখেছি ভাইয়ার ছবি বুকে নিয়ে। কি না বাচ্চাদের মতো কেদেছিলো আমার তো এখনো হাসি পাচ্ছে।
—- চুপ কর হারাম জাদা তোর জন্যই আজ এতোকিছু হলো। আর মোহনা আমাদের একবার বললেই পারতি তুই আদিত্বকে পছন্দ করিস।
এর মাঝেই আদিত্ব সেখান থেকে উধাও হয়ে গেলো।
,
,
,
,
ওই দিকে অসহায়ের মতো বসে গভির চিন্তায় মগ্ন অনিকা। সম্পর্ক বিচ্ছেদের কারনে তার আর শ্রাবনের দুরুত্বটা বেরে গেছে আরো বেশি। আচ্ছা শ্রাবনের সামনে দারালে শ্রাবন কি তাকে গ্রহন করবে? নাকি মোহনার উপর রাগ করে ছুরে ফেলে দিবে। নাকি আরো অপেক্ষা করে চেষ্টা করতে হবে? শুনলাম মন থেকে কোনো জিনিস চাইলে তা এক সময় পাওয়া যায়, তাহলে আমি কি পাবো আমার শ্রাবন কে? নাকি অপুর্নই থেকে যাবে আমার সপ্ন। হয়তো ভাইয়ার আর মোহনার সম্পর্ক বাড়ির সবাই খুব সহজেই মেনে নিবে।
আমাদের টা তো দুই পক্ষের কেওই মেনে নিবেনা।
না আর না। নিরবতার মাঝে পাবনা আমি সুখের সন্ধান। এবার চেস্টা আমাকে করতেই হবে যত বাধা বিপত্বি আসুকনা কেনো।
পুরু বাড়িতে কান্নার রোল পরে গেছে। সামনে প্লোরে সুয়ে আছে মোহনার নিথর দেহটা একটা চাদর দিয়ে ঢাকা তার শরিল। পাসে বসে বসে চিৎকার দিয়ে কান্না করে যাচ্ছে অন্তরা বেগম।
শোকের ছায়ায় স্তব্দ হয়ে আছে পুরু বাড়ি। সুইসাইড করায় বাড়িতে পুলিশ এসেছে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আদিত্ব চোখ বেয়ে বেয়ে পানি পরছে। কেনো সে মোহনার ভালোবাসাটা বুঝলোনা। কিন্তু কেনো আজ সে কাদছে? সে তো কখনে ভালোবাসেনি মোহনাকে। তাহলে কেনো আজ তার বুকটা এভাবে জ্বলে পুরে ছাই হয়ে যাচ্ছ? বুকটা আজ খুব ফাকা লাগছে। কেনো সে মোহনাকে এতো অবহেলা করলো। তার এখন চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে। প্লিক মোহনা একবার ফিরে আয় দেখ আমি কি করে তোকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখি।
পোর্সমার্টামের জন্য নিয়ে যাচ্ছে মোহনাকে। কেনো যানি আদিত্বের মনে হচ্ছে আজ তার বুক থেকে কেও হৃদপিন্ডটা খুলে নিয়ে যাচ্ছে।
নাাা……………………….বলে একটা চিৎকার দিয়ে লাফ দিয়ে উঠলো আদিত্ব। এসির মাঝেও শরিলটা ঘামে ভিজে গেছে তার। ওয়াশ রুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে নিলো সে।
দৌড়ে মোহনার রুমের সামনে গিয়ে দাড়ায়। সেখানে গিয়ে একটা সস্থির নিশ্বাস ফেলে সে।
মোহনা ঘুমাচ্ছে পাশে বসে আছে আদিত্ব। তাকিয়ে আছে মোহনার ঘুমন্ত নিস্পাপ চেরারাটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে। খুব মায়াবি লাগছে আজ তাকে। ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরে অনেক গুলো চুমু খেতে। কিছুক্ষন পর চলে যাচ্ছে আদিত্ব। দরজা অব্দি গিয়ে কি মনে করে আবার ফিরে আসে। মোহনার কপালে তার ঠোট জোরা ছুইয়ে দেয়।
দ্রুত পায়ে হেটে নিজের রুমে চলে যায় আদিত্ব। মোহনা চোখ মেলে তাকায় একটা মুচকি হাসি দেয়।
আর যাই হোক মোহনা এটা আন্দাজ করতে পারছে যে আদিত্ব ধিরে ধিরে তার প্রেমে পরে যাচ্ছে। কিন্তু তাকে ভেঙে পরলে চলবেনা।
যতটা কষ্ট আদিত্ব তাকে দিয়েছে সব তাকে ফিরিয়ে দিবে। আদিত্বের বুঝতে হবে ভালোবাসার মানুষটার কাছ থেকে পাওয়া অবহেলাগুলো নিজেকে কতটা কষ্ট দেয়।
ওদিকে মোহন ধিরে পায়ে মায়ের রুমে প্রবেশ করে। দেখে মা ধুমুচ্ছে। আস্তে আস্তে পাস থেকে ফোনটা নিয়ে আসে সে।
ছাদে গিয়ে ফোন দেয় তার সাথে ক্লাস ২ তে পড়ুয়া গার্লফ্রেন্ড তানিশা কে।
ওপাস থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠে আওয়াজ আসে, হ্যালো।
— সরি বেবি ফোন দিতে একটু দেরি হয়ে গেছে। আসলে বাসায় একটা ঝামেলা ছিলো আজ। তাই আম্মু ঘুমাতে একটু দেরি করে ফেলেছে। রাগ করেনা ঠিক আছে? অনেক ভালোবাসিতো তোমায়। তুমি কি আআমার উপর ররাগ ককরে থাকতে পারো বলো। তো কি করছো বেবি?
—- তোমার বেবিটা খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছে। আমি ওর বড় বোন ঠিক আছে? তুমিও ঘুমিও পরো আব্বু।
—- এই নাওজুবিল্লাহ্ কি বলছেন আপনি? আপনি ওর আপু হলে আমায় আব্বু ডাকছেন কেনো?
—- ও তোমার বেবি হলে তুমিতো ওর আব্বুই হও সেই সুবাদে আমারো আব্বু।
— হ্যা, তাও ঠিক। না না না কি কি কি? হ্যালো, হ্যালো, ধুর।
সকালের মিষ্টি আলো চোখে পরতেই ঘুম ভাঙে মোহনার।
এদিকে সারা রাত টেনসনে ঘুমুতে পারেনি অনিকা। শ্রাবনের টেনশন তাকে পাগল করে দিচ্ছে।
ছাদের এক কোনে দারিয়ে আছে অনিকা। পাসে গিয়ে দাড়ায় আদিত্ব।
অনিকা আদিত্বের উপস্থিতি টের পেয়েই দ্রুত চোখের পানিগুলো মুছে ফেলে। তা আদিত্বর চোখ এড়ালোনা।
দুই কাধে হাত দিয়ে তার দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
—- কিরে কাদছিস কেনো তুই?
—- ভাইয়া সেই দিন না সুনতে চেয়েছিলি আমি কাওকে পছন্দ করি কিনা?
— হুম চেয়েছিলাম তো, খনো জানতে চাই কে সেই হত ভাগা?
—- বললে ওকে এনে দিতে পারবি?
—- তুই চাইলে তোকে আকাশের চাঁদটাও এনে দেওয়ার চেস্টা করবো।
—- চাঁদ এনে দিতে হবেনা ভাইয়া। আমি শ্রাবন ভাইকে ভালোবাসি ছোট বেলা থেকেই, কাওকে বলতে পারিনি। ওকে ছারা আমি বাচবোনা ভাইয়া। পারবি ভাইয়া শ্রাবনকে আমার জন্য এনে দিতে?
To be continue………….
বিঃদ্রঃ গল্পটা সম্পর্কে আপনাদের মতামত জানতে আগ্রহি। কেমন লাগছে আপনাদের? ভালো লাগলে কন্টিনিউ করার চেষ্টা করবে আর নাহয় খুব দ্রুতই শেষ করে দিবো।
#গল্পঃ_সপ্নছোয়া
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াত
#পর্বঃ__৬
আদিত্ব দুই হাত দিয়ে শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয় মোহনাকে। মোহনা ছাররা পপাওয়ার জন্য প্রান পন চেস্টা চালাচ্ছে। মোহনা যতই ছোটার চেস্টা করছে আদিত্ব ততই তাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিচ্ছে।
আদিত্ব তো এমন ছিলোনা, তাহলে কেনো এমন করছে?
মোহনার ভাবনার ছেদ ভেদ করে আদিত্ব তার ঠোট জোড়া চেপে ধরে নিজের ঠোট দিয়ে। মোহনার এবার দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। মনে হচ্ছে আদিত্ব তাকে আজ মেরেই ফেলবে বুঝি। তার ভয় হচ্ছে খোলা ছাদে দুজন অবিবাহিত ছেলে মেয়ে জড়িয়ে ধরে একে অপরের ভালোবাসা আদান প্রদানে ব্যস্ত। কেও দেখলে বেপারটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
আদিত্ব একটু নরম হতেই তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে নেয় নিজের কাছ থেকে।
এক রাশ ঘৃনা নিয়ে ঠাস করে আদিত্বের গালে একটা চর বসিয়ে দেয় মোহনা।
আদিত্ব এবার গালে হাত দিয়ে মোহনার দিকে তাকিয়ে আছে।
—- কি হয়েছে তোমার ভাইয়া এইসব অসভ্যতামির মানে কি? কেনো করছো আমার সাথে এমন? কোন অধিকারে কিস করলে আমায়।
—- ভালোবাসি তাই।
—- কি! এটা ভালোবাসা? ভালোবাসা মানে সুধুই কি দেহ ভোগ?
—- আমায় ভালোবাসা শেখাতে আসিস না, নাহেলে আমার মধ্যে নিজেকেই হয়রিয়ে ফেলবি?
—- আমিতো তোমাকে ভালোবাসিনা। ভালোবাসা শিখাতে যাবে কেনো?
—- গতকালও কিন্তু তুই বলেছিলি, আমায় ভালোবাসিস।
—- এখন আর বাসিনা। সেটা অতিত ছিলো।
—- এতো দিন ভালোবাসা দিয়েছিলি এবার নিতে শিখ।
কিছুক্ষন আগে দখিনা বাতাসে একরাশ কালোমেঘ এসে হাজির হয়েছিলো। এখন তা বিন্দু বিন্দু জল ফেটা নিক্ষেপ করছে তাদের দিকে। মোহনা দৌড়ে ঘরে চলে গেলো।
ছাদেদ কর্নিশ ধরে দাড়িয়ে আছে আদিত্ব, বৃষ্টি ফোটা আছড়ে পরছে তার গায়ে। ঝড়ের গতি এতোই ত্রিব্য ছিলো যে।
এক মুহুর্তের জন্য হলেও মনে হচ্ছে মেঘরাজ আজ তার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করে দিলো বুঝি।
কিছুটা ঠান্ডা অনুভব করতেই দুই হাত বুকের মাঝে গুটি শুটু মেরে দাড়িয়ে থাকে। শরিল কিছুটা কম্পন ধরে গিয়েছে ঠান্ডা বাতাসের হাওয়ায়। বৃষ্টি ফোটাগুলো শরিলে আছড়ে পরছেই তো পরছে। ঝড়ের গতি আরো বাড়তে থাকে। চোখ বন্ধ করে বৃষ্টি ফোটাগুলো অনুভব করে যাচ্ছে আদিত্ব।
হটাৎ খেয়াল করে তার গায়ে আর কোনো বৃষ্টি ফোটা আঘাত হানছেনা। মাথার উপর একটা ছাতা দিয়ে ডিপেন্স হিসেবে রক্ষা করে যাচ্ছে।
কে সে তা জানতে বাকি নেই আদিত্ব।
একটা ছাতার নিচে দাড়িয়ে মোহনা ও আদিত্ব একে অপরের চোখে চোখ রেখে দাড়িয়ে আছে।
যতই অভিমান করুক, কেনো যানি আদিত্বের উপরে রাগ করে থাকতে পারেনা মোহনা।
হটাৎ আকাশে একটা বিকট শব্দে হাত থেকে ছাতাটা ফেলে আদিত্বকে জড়িয়ে ধরে মোহনা।
আদিত্বও তাকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।
একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে ছাদে।
বৃষ্টির প্রতিটা ফোটা যেনো ফুলের মোতা আছড়ে পরছে তাদের শরিলে। নব জাগরিত ভালোবাসার অভিনন্দন জানাচ্ছে দুজন কে।
,
,
,
,
বিকেলে শ্রবনের রুমে বসে আছে আদিত্ব আর শ্রাবন। মেঘলা চৌধুরি একটা ককাজে ববাইরে গেছে। ফিরে আআসার আআগেই আআদিত্ব চলে যাবে। দেখলে হয়তো সিনক্রেট ককরতে পারে।
সেখানে শ্রাবনকে সব কিছু খুলে বললো আদিত্ব। শ্রাবন নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা সে।
আদিত্বের মুখে অনিকার ব্যপারে যা শুনলো, তাতে শ্রাবনের মনে হলো অনিকে তাকে প্রচন্ড ভালোবাসে। এই রকম মেয়েই তার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য। দেখতেও যথেস্ট সুন্দরি।
কিন্তু সে যেনে মেঘলা চোধুরি এটা কিছুতেই মেনে নিবেনা। তার জেদ সম্পর্কে শ্রাবনের যথেস্টা ধরনা আছে। একবার যা বলবে তাই করবে।
আদিত্ব শ্রাবনের দিকে চেয়ে আছে উত্তরের অপেক্ষায়।
মুহুর্তেই রুমে প্রবেশ করলো মেঘলা চৌধুরি।
তাকে দেখেই আদিত্ব বসা থেকে উঠেই দড়িয়ে যায়। হয়তো এখন মেঘলা চৌধুরি তার সাথে সিনক্রেট করবে। তার মতো রাগি মানুষের থেকে এটাই আশা করা যায়।
কিন্তু আদিত্বের ভাবনাকে মিথ্যে প্রমান করে মুখে একটা হাসি ফুটিয়ে মেঘলা চৌধুরি বলে উঠে, বসো।
আদিত্ব একটু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে, পুনরায় বসে পরলো।
— তোমাদের কথাপোকথন গুলো আমি সবটাই শুনলাম। আর আমার মনে হয় অনিকাই আমার ছেলের জন্য পারপেক্ট।
আদিত্ব এখনো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেঘলা চৌধুরির দিকে। তার হটাৎই এতো পরিবর্তন আদিত্ব কিছুতেই হজম করতে পারছেনা।
—- তোমার বাবাকে বলবে কাল আমাদের বাড়িতে আসতে। তার সাথে এই বিষয়ে কথা বলবো আমি। পুরুনো সম্পর্ক বাদ দিয়ে নতুন করে আত্বিয়তা করবো তোমাদের সাথে।
আদিত্ব একটু অবাক দৃষ্টিতে হ্যা সুচক জবাব দেয়।
,
,
,
,
আদিত্বের মাথায় কিছুই ঢুকছেনা। তার ফুফির মতো এতো কঠোর হৃদয়ের মানুষ এতো সহজে সব কিছু মেনে নিবে তা সপ্নেও ভাবতে পারেনি আদিত্ব।
আর যাই হোক সব কিছুতো সুন্দর ভাবেই মিটেছে। যে যাকে চাচ্ছে সে তাকেই পাচ্ছে। এর চাইতে খুশির দিন আর কি হতে পারে।
আদিত্ব সব থেকে দুর্বল হলো তার বাবার কাছে। আজ পর্যন্ত বাবার কথা অমান্য করার সাহস পায়নি সে।
আদিত্ব অনিকার রুমে যেতেই দেখে অনিকা বেলকনিতে দাড়িতে সেও গিয়ে অনিকার পাসে দাড়ায়।
—-শ্রাবনকে অনেক কষ্টে রাজি করলাম এবার খুশি?
—- অনিকা আদিত্বকে জড়িয়ে ধরে বলে, থ্যাংক ইউ ভাইয়া থ্যাংক ইউ সো মাচ।
—- পাগলি একটা।
,
,
,
,
আদিত্ব গিয়ে আহান চৌধরি মানে তার বাবার সামনে বসে। ফোনে কার সাথে কথা বলছে যেনো কার সাথে। আদিত্বকে দেখেই ফোনটা রেখে বলে,
—- কিছু বলবে?
—- হ্যা বাবা।
—- বলো কি বলবে?
আদিত্ব পরু বিষয়টা খুলে বলে।
—- তোমার নিশ্চই মনে আছে সেইদিনের কানিনিটা। তার পরও তুমি।
—- বাবা আমি যানি। কিন্তু অনিকা শ্রাবনকে ছারা আর কাওকে বিয়ে করবেনা।
—- সেটা ও বললেই হবে নাকি। আমরা ওর গার্জিয়েন্ট আমরা ডিসাইড করবো সব কিছু।
— কিন্তু বাবা সংসার টাতো সেই করবে, আমরা না। আর তা ছারা ফুফি যখন নিজ থেকেই বলেছে, আমার মনে হয় আমাদের আর রাগ করে থাকা উচিৎ নয়। অনিকার সুখের দিকে তাকিয়ে হলেও আমাদের অভিমান টা কে কি একটু সেক্রিফাইস করা যায় না?
—- ওকে বিষয়টা আমি ভেবে দেখছি। আরেকটা কথা,তোমার মামাতো বোন অর্পিতার কথা নিশ্চই তোমার মনে আছে? সে দেশে ফিরেছে, কাল তারা এখানে আসছে আর ওর সাথে তোমার বিয়েটা ছোটবেলা থেকেই ফিক্স করা।
আদিত্বর মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরলো। মেহনাকে দেখে দরজার পাসথেকে মুখ চেপে নিজের রুমের দিকে দৌড় দিলো।
এতো কাছে পেয়েও আবার হয়তো পারিয়ে ফেলতে হবে তাকে তার বুঝি ভাগ্যটাই খারাপ।
To be continue………