সপ্নছোয়া পর্ব-১+২

0
2751

#গল্পঃ_সপ্নছোয়া
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াত
#পর্বঃ__১+২

পেছন থেকে কোমরটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই টি-শার্ট টা আলতো করে হাত দিয়ে উপরে সরিয়ে নিলো আদিত্ব ভাইয়া। থুতনিটা কাধে রেখে দুই হাত দিয়ে নগ্ন পেটে স্লাইড করে যাচ্ছে সে। মোহনা জমে পাথর হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এক হাত দিয়ে পেটে স্লাইড করে যাচ্ছে, অপর হাত দিয়ে চুল গুলো আলতে করে শরিয়ে গভির ভাবে চুম্বন করতে থাকে ঘারে। চুল পরিমান নরার শক্তি টুকু পাচ্ছেনা মোহনা। জমে পাথরের মুর্তির মতো রুপ ধারন করেছে সে।
ছাদে দাড়িয়ে দুজন। আকাশেও মেঘলা মেঘলা ভাব। এদিকে আদিত্ব আদরে আদরে ভরিয়ে দিচ্ছে মোহনাকে।
আকাশের বুক ছিরে বৃষ্টি কনা বেড়িয়ে আছরে পরছে দুজনার গায়ে। আদিত্ব মোহনাকে ঘুড়িয়ে নিজের মুখু মুখি করে নিলো। মুখের উপর পরে থাকা বৃষ্টি ভেজা চুল গুলো আঙুল দিয়ে আলতো করে সরিয়ে দিলো সে।
আদিত্ব পেছন থেকে চুল গুলো মুঠো করে ধরে ফেললো। ধিরে ধিরে মোহনার ওই গোলাপি ঠোট দুটুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সে।
মুহুর্তেই ঠোট দুটু দখল করে নিলো আদিত্ব।

মেঘের ঘর্ষনে বিকট একটা শব্দ করলো আকাশে। লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে মোহনা। তার মানে এটা সপ্ন ছিলো? কিন্তু শরিলটা এরকম ভেজা ভেজা গাগছে কেনো?
পাসে তাকাতেই দেখে মোহন(মোহনার ছোট ভাই, ক্লাস 2 তে পড়ে) দড়িয়ে আছে বিছানার পাসেই। হাতে একটা পানির গ্লাস। গ্লাসটা এখনো অর্ধেক ভরা আছে। কিন্তু অর্ধেক পানি দিয়েতো আর এতটুকু ভেজানো সম্ভব না। পাসে তাকিয়ে দেখে টেবিলে আরো তিনটা খালি গ্লাস পরে আছে। তার মানে মোহন পর পর তিন গ্লাস পানি আমার উপর বিসর্জন দিয়েছে?
মোহনের দিকে তাকাতেই দেখে মোহন রাগে ফুস ফুস করছে।

—- এই লাড্ডু এভাবে পানি মেরে ভিজালি কেনো?(মোহনা)

—- দেখ আপু সব সময় ফাজলামি ভালো লাগেনা, আমার একটা নাম আছে। আর আমি দেখতে হালকা মোটা হলেও আমায় এভাবে তোরা সবাই অপমান করতে পারিস না।

—- পানি মেরে তো সব ভিজিয়ে দিলি আবার উল্টা তেজ দেখাস।

—- কতক্ষন ধরে ডাকছি, কয়টা বাজে? মরার মতো ধুমাচ্ছিস। একের পর এক পানি মেরে যাচ্ছি উঠারতো নাম গন্ধও নেই, উল্টা বাহ্ কি সুন্দর মোচরা মুচরি করছিস। আচ্ছা এক মিনিট, তুই ঘুমের মাঝে কার সাথে কথা বলছিলি?

—- মোহনা এবার জিভ কামরিয়ে উঠে। আল্লাগো মোহন তাহলে সব শুনে ফেললো নাতো আবার?

—- আপু আমি কিন্তু সব কিছুই শুনেছি। এক্ষুনি গিয়ে আদিত্ব ভাইয়াকে সব কিছু বলছি।

—- আরে আরে আমার সোনা ভাই, তুই না ভালো? ইস কত্ত কিউট। বলছিলাম কি……

—- এত্তো ঢং না দেখিয়ে তারাতারি বল।

—- তুমি এতোক্ষন যা যা শুনেছো সব কিছু ভুলে যাবে।

—- বিনিময়ে কি পাবো?

—- এই ধর এক পেকেট চকলেট।

—- যাহ, সব কিছু হজম করে নিলাম। কিন্তু এটা বেরিয়ে আসার আগে যেনো চকলেটও হজম হয়।

—- আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে তুই এখন যা।
,
,
,
,
ফ্রেস হয়ে এসে আয়নার সামনে বসে চুলগুলো হাত দিয়ে আচড় কাটছে মোহনা। মাঝে মাঝে আদিত্বর কথা মনে করে মুচকি হাসছে। আয়নায় নিজের ঠোট দুটুর দিকে তাকাতেই, দুই হাত দিয়ে মুখটা ঢেকে নিলো। ইশ কি লজ্জা। কত কাছে এসেছিলো আদিত্ব ভাইয়া। ধুর ওই লাড্ডুর কারনে সব কিছু ভেস্তে গেলো। এখন আবার গোটা এক পেকেট চকলেটের দামও করায়। গন্ডায় ওসুল করে নিবে।
কিন্তু মি. আদিত্ব, আমার সপ্ন অতি দ্রুতই বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে। দেখি আমাকে কত্তো দুরে ঠেলে রাখতে পারো? এবার সুপারগ্লুর মতো তোমার পিছনে লাগবো। আমার মিশন আমি কমপ্লিট করেই ছারবো। আমার ডাকে সারা দেওয়ার জন্য রেডি থাকো আদিত্ব।

হাতে এক কাপ কফি নিয়ে ছাদে দাড়িয়ে গার্ল ফ্রেন্ড তৃষ্নার সাথে ফোনে কথা বলছে আদিত্ব। মাঝে মাঝে কফির কাপে চুমু দিয়ে একটা মৃদ হাসি দিচ্ছে আদিত্ব।
হাতে দুই কাপ কফি নিয়ে আদিত্বের কাছে গেলো কিছুক্ষন কথা বলার উদ্দেশ্যে।
দুর থেকে দেখে আদিত্ব হাতে কফি নিয়ে ফোনে কথা বলছে।
ধুর, এখন আর লাভ নেই তার কাছে গিয়ে।
অপেক্ষা করো চান্দু, আগে শুধু বিয়েটা হয়ে নিক তার পর যদি টাইট দিতে না পারি তাহলে আমার নামও মোহনা চৌধুরি না।
,
,
,
,
সন্ধায় মোহনা, অনিকা ও মোহন সামনে বসে আছে পড়ার টেবিলে। সামনে বসে টিচারের দায়িত্ব পালন করছে আদিত্ব। বাবার কড়া নির্দেশ সন্ধে বেলায় তাদের সবাইকে কম করে দুই ঘন্টা পড়াতে হবে। অনিকা হলো আদিত্বের ছোট বোন। আর মোহন ও মোহনা হলো আদিত্বের ছোট কাকার সন্তান।
আদিত্ব পড়াচ্ছে তিনজনকে। মোহনা এক হাত গালে দিয়ে হা করে তাকিয়ে আছে আদিত্বের দিকে। হয়তো গালের ভেতর থেকে মশারা ভ্রমন করে এলেও টের পাবনা মোহনা।
অনিকা হালকা করে একটা কাশি দিতেই ধ্যান ভাঙে মোহনার। মোহন মুখ চেপে মিঠি মিঠি হাসছে।

রাতে ছাদের কর্নিশ ধরে দাড়িয়ে আছে আদিত্ব। মোহনা দিয়ে পাসে দাড়ালো তার। আদিত্ব মোহনার দিকে একবার তাকিয়ে পুনরায় নিস্তব্দ শহরটার দিকে তাকিয়ে আছে।
মোহনা বার বার আড় চোখে তাকাচ্ছে, কি করে কথা শুরু করবে ভেবে পাচ্ছেনা সে।

—-কিরে কিছু বলবি?

—- না মানে…

—- কি বলবি বলে ফেল।

—- সত্যি করে বলোতো ভাইয়া আমি দেখতে খারাপ।

—- কে বলছে তোকে, মেরে নাক ফাটিয়ে দিবো। তুই দেখতে খুবই সুন্দর।

—- তাহলে তুমি কি আমার অনুভুতি গুলো একবারও বুঝার চেস্টা করোনা? তুমি কি বুঝনা আমি তোমায় কতো ভালোবাসি?

—- আর কিছু বলবি?

—- আমি না অসহ্য হয়ে গেছি। একটা মেয়ে কতটা বেহায়ামি করলে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে সক্ষম হয়? তুমি আমায় বার বার বকা দেওয়ার সর্তেও কেনো আমি সাজুগুজু করে তোমার সামনে পড়তে বসি? আমার সুন্দর্য কি এক মুহুর্তের জন্যও তোমার চোখে ধরা পরে না?
আমার কি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাগলামো গুলো এক মুহুর্তের জন্যও তোমার মনকে স্পর্স করেনা?

—- তুই সত্যিই একটা ছেছরা।

ঘরের দিকে হাটা ধরলো আদিত্ব। খোলা আকাশটার দিকে তাকিয়ে একটা দির্ঘশ্বাস ফেললো মোহনা। ভালোবাসার মানুষটার মুখ থেকে ছেছরা ডাকটা শুনা অনেকটাই কষ্টের। কিন্তু এখন মোটামুটি সয়ে গেছে তার। এর থেকেও বেসি ছেসরামি করতে রাজি আছে নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়ার জন্য।
,
,
,
,
পরদিন সকালে সবাই এক সাথে বসলো নাস্তা করার জন্য। আদিত্বের ছোট কাকা মানে মোহনার বাবা খাওয়ার মাঝখানেই বলে উঠলো,
—- ভাইজান, আমাদের মেঘলার ছেলে শ্রাবন আগামি মাসেই দেশে আসছে।

মুহুর্তেই যেনো অনিকার মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠলো।

—- শ্রাবন এলেই এবার মোহনা ও শ্রাবনের বিয়েটা সেরে ফেলবো।

কথাটা শুনা মাত্রই যেনো মোহনার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। খাবার টেবিল থেকে উঠেই দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো। আদিত্ব বেপারটা কিছুটা বুঝতে পারলেও চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে। এদিকে অনিকার মাথায় চেপে আছে ভিন্ন ধরনের এক টেনশন।

আজ কলেজে যায়নি মোহনা। ঘরে একা একা নিজের ঘরে বসে আছে।
মোহন গিয়ে বসলো তার পাসে। মোহনা মোহনের দিকে তাকিয়ে জোড় পূর্বক একটা হাসি দিলো।

—- আপু তোর কি মন খারাপ?

—- মোহনা ইচ্ছের বিরুদ্ধেও বললো, না আমি ঠিক আছি।

—- আর যাই বল, আমার না কি খুশি লাগছে তোর বিয়ের কথা শুনে।

—- তুই একটা কাজ করতে পারবি?

— অবশ্যই পারবো, বল কি কাজ?

— তোর আদিত্ব ভাইয়াকে একটু আমার কাছে ডেকে দিতে পারবি?

—- ভাইয়াতো বাসায় নেই। আসলে বলবো।

বিকেল হয়ে এলো এখনো আদিত্ব আসেনি। সন্ধেয় মোহনা বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে। পাসে অনিকা।

—- অনিকা তুই এখন এখান থেকে যা তো ভালো লাগছেনা।

বেলকনিতে একা দাড়িয়ে অশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে মোহনা।
ভিতরে গিয়ে ওয়াস রুমে চলে গেলো ফ্রেস হয়ে নিজেকে একটু হালকা করবে বলে।

নিচে সোপায় বসে বসে কার্টুন দেখছে মোহন। আদিত্ব বাড়িতে আসলো কিছুক্ষন আগে। ফ্রেস হয়ে এসে মোহনের পাসে বসলো।

—- ভাইয়া তোমাকে আপু তার সাথে দেখা করতে বলেছে।

—- কোথায়?

—- রুমে আছে আপু।

— আচ্ছা তুই বস আমি আসছি।

লম্বা একটা সাওয়ার নেওয়ার পর বেড়িয়ে এলো মোহনা। গায়ে একটা টাওয়াল পেচানো। ভেজা চুল গুলো সামনে এনে হাত দিয়ে পানি মুক্ত করার চেস্টা করছে।
আদিত্ব হাতে মোবাইল টিপতে টিপতে মোহনার ঘরের দিকে যাচ্ছে।

To be continue………..

#গল্পঃ_সপ্নছোয়া
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াত
#পর্বঃ__২

দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখে মোহনা অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় কাপর চেন্জ করছে। আদিত্বা সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে পাথরের মতো। চোখ দিয়ে যেনো আগুন ঝড়ছে। মোহনা দ্রুত কাপর দিয়ে নিজের শরিল ঢেকে নিলো। মোহনা লজ্জা মাখা দৃষ্টিতে আদিত্বের দিকে তাকিয়ে আছে।

—- বাহ্, এইটা বাকি ছিলো আর।

—- (চুপ)

—- ছি ছি ছি, আর কতটা নিচে নামবি তুই মোহনা? আমার ভাবতেও ঘৃনা হচ্ছে তুই এই বাড়ির মেয়ে। শেষ পর্যন্ত কিনা, নিজের শরিল দেখিয়ে আকৃষ্ট করতে চাচ্ছিস আমায়। আরে তুইতো অভিনয়ে পতিতাদেরও হার মানাবি।

—- ভাইয়া প্লিজ আমার কথাটা……

—- চুপ। তোর মুখ থেকে কোনো কথা শুনার বিন্দু মাত্র ইচ্ছেও আমার নেই। কি ভেবেছিলি তুই? মোহনকে আমার কাছে পাঠাবি আর তুই সব কিছু দেখানোর জন্য প্রস্তুত থাকবি। আর আমি এসেই তোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যাবো? না জানি এর আগে আর কত ছেলেকে পটানোর জন্য এসব করেছিস? ছি,

—- ভাইয়া প্লিজ চুপ করো,,,

—- কেনো গায়ে লাগে? তোকেতো এখন আমার কাকার মেয়ে কলতেও ঘৃনা হচ্ছে। আচ্ছা তোরা কি করে পারিস ছেলেদের ফাসানোর জন্য এভাবে নিজের শরিল দেখিয়ে বেড়াতে?

—- প্লিজ ভাইয়া চুপ করো আমি আর নিতে পারছিনা।

—- তোকে যেনো কারনে অকারনে আর কখনো আমার দুই চোখের সামনে না দেখি। কয়দিন পর তোর সাথে শ্রাবনের বিয়ে, আর তুই কিনা? ছি! এভাবে রাস্তায় গিয়ে দাড়া অনেক ছেলে পাবি, বেয়াদপ মেয়ে কোথাকার।

আদিত্ব দ্রুত পায়ে বাইরে চলে গেলো। নিজের ঘরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে আদিত্ব, খুব দ্রুত পায়ে। যে কেও দেখলেই বুঝে ঝাবে যে প্রচন্ড রেগে আছে সে।
মোহন আদিত্বের দিকে তাকিয়ে দেখে খুব রেগে আছে সে। কিন্তু এমন কি হলো, যার কারনে ভাইয়া এতো রেগে গেলো। ভাইয়াকেতো কখনো এই বেশে দেখিনি। ব্যাপারটা কি? না, গিয়ে দেখে আসি।

মোহন গিয়ে দরজার সামনে দাড়ালো। দেখে আদিত্ব দুই পা প্লোরে ছাড়িয়ে দিয়ে বিছানায় বসে আছে। মোহন গিয়ে তার পাসে দাড়ালো।

—- ভাইয়া কি হয়েছে, তোমায় এতো অস্থির দেখাচ্ছে কেনো?

—- আদিত্বা রাগি দৃষ্টিতে মোহনের দিকে তাকায়।

—- ভাইয়া বলোনা কি হয়েছে?

—- এখান থেকে যা,

—- প্লিজ ভাইয়া বলোনা।

—- তুই কি যাবি, নাকি কান বরাবর দুইটা থাপ্পর খেয়ে তার পর যাবি?

মোহন মাথা নিচু করে সেখান থেকে চলে গেলো।

মোহনা কোনো ভাবে শাড়িটা পরে খাটের এক কোনে প্লোড়ে বসে বসে কাদছে। অনেক আগে একবার শাড়ি পরেছিলো সে। তাও আবার তার মা পড়িয়ে দিয়েছিলো। আজ ভাবলো শাড়ি পরে আদিত্বর সামনে যাবে, তার আগেই এতো কিছু।

মোহন গিয়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে বললো, আপু আসবো?
মোহনা মাথা তুলে মোহনের দিকে তাকায়, তার রাগ এবার আরো দিগুন হয়ে গেছে। কারন মোহনের জন্যই এতকিছু।
মোহন এসে তার পাসে দাড়ালো, মোহনা বসা থেকে উঠেই মোহনের গালে একটা চর বসিয়ে দেয়। ছোট মোহন তাল সমলাতে না পেরে প্লোরে ছিটকে পরে। মোহনা রাগে ফুস ফুস করছে। থাপ্পরটা এতোই জোরে ছিলো পাঁচ আঙুলের দাগ স্পর্স ফুটে উঠেছে।

মোহন গালে হাত দিয়ে কান্না করতে করতে সেখান থেকে চলে গেলো।

ছাদের এক কোনে বসে বসে কাদছে মোহন। ওই দিকে মোহনা আদিত্বের কথায় যতটা কষ্ট পায়নি তার চেয়েও বেশি পাচ্ছে মোহনকে থাপ্পর দিয়ে। তার একটা মাত্র ভাই। তার যে কলিজার এক অংশ। হাতটা বারবার টেবিলের সাথে বাড়ি দিচ্ছে মোহনা। কেনো সে মোহনকে থাপ্পর দিলো। এই হাত আর রাখবোনা শেষ করে দিবো এই হাত।

ছাদের এক পাসে বসে মোহন এখনো টিপ টিপ করে চোখের পানি ফেলে যাচ্ছে। মোহন নিজেই বুঝতে পারছেনা কেনো আপু আমায় মারলো। আপুতো আমাকে এভাবে কখনো মারেনি। কতটা ভালোবাসে আপু আমায়।
অনিকা গিয়ে মোহনের পাসে বসলো।

—- কিরে তুই কাদছিস কেনো?

—- (চুপ)

—- বল আমাকে।

—- আপু আমাকে মারছে(একটু অভিমান নিয়ে)

—- কিহ্! কেনো।

—- আমি যানিনা, ভাইয়ার কাছে গেলাম সে আমাকে বকে তারিয়ে দিলো, আপুর কাছে গেলাম সে আমাকে থাপ্পর দিয়ে তাড়িয়ে দিলো।

—- এদিকে আয় আমার সাথে।

অনিকা মোহনের হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো মোহনার রুমে।

—- মোহনা এসব কি? এতো ছোট বাচ্চাকে কেও এভাবে মারে? গালের মধ্যে এখনো দেখ পাঁচ আঙুলের দাগ বসে আছে।

মোহনা দৌড়ে গিয়ে মোহনকে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো।
—- খুব লেগেছে তাইনা?

—- ছার ছার আমাকে তোর সাথে আর কোনো কথা বলবোনা আমি। তোর সাথে আমার আড়ি।

—- মোহনা এবার আরে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মোহনকে। প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দে আর কখনো তোকে এভাবে মারবো না।

—- ভাইয়ার কাছে গেলাম সেও বকে তাড়িয়ে দিলো, তোর কাছে আসলাম তুইও মারলি। আমি কি এতোই পচা হয়ে গেছি?

রাতে খাবার শেষে নিজের রুমে বসে আছে মোহনা। খাবার কোনো ইচ্ছেই ছিলোনা। না খেলেও মা কানের কাছে বক বক করবে কারনটা জানার জন্য। তাই এতো ঝামেলা না করে হালকা খেয়ে নিজের রুমে বসে আছে।

নিচে ফোনে কথা বলছে শ্রাবনের সাথে মোহনার মা অন্তরা বেগম। সিড়ি দিয়ে উঠে মোহনার রুমের দিকে অগ্রসর হচ্ছে সে।
হবু শাশুরির কাছে হবু বৌ এর সাথে কথা বলার ইচ্ছে পেশ করলো শ্রাবন।

অন্তরা বেগম মোহনার রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর ওই দিকে অনিকার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

অন্তরা বেগম রুমে গিয়ে দেখে বাইরের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে মোহনা।

অন্তরা বেগম একটা মুচকি হাসি দিয়ে মোহনার পাসে গিয়ে দাড়ায়।

—- এই নে শ্রাবন কথা বলবে তোর সাথে।

—-

—- তাকিয়ে আছিস কেনো ধর,

অন্তরা বেগম মোহনার হাতে ফোন তুলে দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।

—- হ্যালো।

—- আরে ম্যাডাম যে, কেমন আছেন? বলছিলাম হবু বর টার খোজ খবরকি একটু নেওয়া যায় না?

—- আছি ভালোই?

—- কি, মন খারাপ? সমস্যা নেই বিয়ের পর অলওয়েজ তোমার মনকে খুশি রাখার দায়িত্ব আমার।

মোহনা একটু বিরক্তির সহকারে ফোনটা কেটে দেলো।
টেবিলে ফোনটা রেখেই শুয়ে পরলো।

পর দিন সকালে মোহনকে নিয়ে বেড়োলো মোহনা। সামান্ন কিছু কেনা কারা করতে হবে।
গাড়ি থেকে নেমে শপিং মলের সামনে দাড়ালো দুইজন।
তার একটু দুরেই আদিত্ব তৃষ্নার হাত ধরে বের হচ্ছে একটা রেস্টুরেন্ট থেকে।

—- আপু দেখতো মেয়েটার হাত ধরে রেস্টুরেন্ট থেকে যে বের হচ্ছে সে আদিত্ব ভাইয়া না?

To be continue………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে