সত্য ঘটনা অবলম্বনে
আমার অধিকার তুমি
পর্ব : ১০
লেখিকা: Gangster queen(ছদ্মনাম)
বিকালে শপিং করে সন্ধ্যা নাগাদ সবাই বাড়ি চলে আসলাম ।তারপরে সবাই শপিং গুলো আবার খুলে দেখলাম। তারপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে গেলাম যেহেতু সবাই খুব টায়ার্ড ছিল।(শ্রাবণী)
পরের দিন সকালে উৎসব দের বাড়ি
আম্মু তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।(উৎসব)
হ্যাঁ বল কি বলবি (আম্মু)
বিয়ের আর পাঁচ দিন বাকি তো ভাবছিলাম শ্রাবণী পাসপোর্টের জন্য আজকে ছবি তুলতে যাবো (উৎসব)
ঠিক আছে করে আসিস। তা বিয়ের দুই সপ্তাহ পরেই যেতে হবে?(আম্মু)
হ্যাঁ আম্মু কি করবো বলো। তুমিও চলো না আমাদের সাথে (উৎসব)
নারে বাবা এত দূরে যেয়ে এতদিন থাকা আমার সম্ভব না তোরাই যা (আম্মু)
ঠিক আছে তাহলে আমি একটু পরে বেরিয়ে পড়ি ওকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিস যেতে হবে তো তাই (উৎসব)
ঠিক আছে যা ভালো মতো যাস (আম্মু)
শ্রাবণী দের বাসায় সকাল দশটা
সকালের নাস্তা খেয়ে আমার রুমে বসে বনু এর সাথে গল্প করছিলাম হঠাৎ করে কলিং বেল বেজে উঠলো (শ্রাবণী)
আমি গিয়ে দেখছি কে এসেছে। আরে ভাইয়া হঠাৎ আপনি তা কি মনে করে ?আর মাত্র 5 দিন এই তো এত ঘন ঘন আসলে কি চলবে বউ ছাড়া কি থাকা যাচ্ছে না নাকি? (প্রিয়া মজা করে)
আরে শালিকা বউর সাথে কাজের কথা জন্য এসেছি বুঝেছ তা-ও কোথায়? (উৎসব ঘরে ঢুকতে ঢুকতে)
আপনি এই সময় কিছু কি হয়েছে (শ্রাবণী)
শালিকা শোনো তুমি একটু পাশের ফ্ল্যাটে যাবা ওর সাথে আমার কিছু ইম্পরট্যান্ট কথা আছে (উৎসব)
ঠিক আছে ভাইয়া আপনারা বসে কথা বলুন আমি আপনার জন্য নাস্তা নিয়ে আসি (প্রিয়া)
আরে শালিকা নাস্তা করে আসছি একটু কাজ ছিল তোমার আপুর সাথে। তুমি রুমে যাও ওর সাথে একটু কথা বলি (উৎসব)
ঠিক আছে ভাইয়া (প্রিয়া বলে চলে গেল)
তা কি এমন ইম্পরট্যান্ট কথা ওর সামনে বলা যেত না! (শ্রাবণী)
তুমি বস মন দিয়ে শুনবে কোন কান্নাকাটি চলবে না বুঝেছ ।(উৎসব)
কি হয়েছে বাড়ির সবাই ভালো আছে তো ।আপনি এত টেনশনে দেখাচ্ছেন কেন আর কান্না কাটির কথাই বা কেন বললেন(শ্রাবণী উদ্বিগ্ন হয়ে)
পরীকে ধরে আমার পাশে বসালাম। আসলে পরী আমাদের বিয়ের আর পাঁচ দিন বাকি তার 15 দিন পরে আমরা আমি এবং তুমি ছয় মাসের জন্য আমেরিকা যাচ্ছি। আমার আমেরিকার অফিসে কাজের জন্য। (উৎসব)
আপনি আগে তো আমায় এটা বলেন নি ?এটা কেমন কথা বলেন তো আমি এতদিন সবাইকে ছাড়া থাকবো কি করে আমি পারবো না প্লিজ (শ্রাবণী কান্নাজড়িত কণ্ঠে)
কিছু করার নেই আমায় ক্ষমা করো প্লিজ। ওইখানের অফিস টাও আমায় দেখতে হবে ।আর আমি তোমাকে ছাড়া এখন যাও আছি তখন আমি একমুহুর্ত থাকবো না বুঝতে পেরেছো তুমি।আম্মু কে বলেছিলাম আমাদের সাথে যেতে আম্মু যেতে চায়না ।এত দিনের জন্য আর আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে চাই না ।তাই 6 মাস আমরা ঐখানে থাকবো একটু বোঝার চেষ্টা করো পরী(উৎসব)
আমি এতদিন কিভাবে সবাইকে ছাড়া একলা থাকবো (শ্রাবণী কান্না করতে করতে)
(পরীকে জড়িয়ে ধরে )প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো আমি তো তোমার সাথে থাকবো প্লিজ রাগ করোনা ছয় মাসের তো ব্যাপার তারপর আমরা চলে আসব। এখন প্লিজ জলদি রেডি হও পাসপোর্ট অফিসে যাব(উৎসব)
আমার পাসপোর্ট করাই আছে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে না। আর আপনি খুবই খারাপ একটা লোক (শ্রাবণী কান্না করে ছাড়ানোর চেষ্টা করে)
তাহলে তো ভালোই হলো তাহলে চলো তুমি আর আমি আজকে একটা জায়গায় ঘুরতে যাই (উৎসব আরেকটু জোরে জড়িয়ে ধরে)
না আপনি খুব বজ্জাত আপনার সাথে আমি যাব না। আপনি আমাকে সবার থেকে নিয়ে যাবেন তা এখানে থাকলে দেখা সাক্ষাৎ হতো ।সেই জায়গায় আপনি ছয় মাসের জন্য সেই বহু দূর দেশে নিয়ে যাবেন আমাকে আমি সবার সাথে কিভাবে দেখা করব (শ্রাবণী কান্না করতে)
তোমার কান্না থামাবে না মাথায় তুলে একটা আছাড় মারবো। কি হইছে আমি থাকবো না তোমার সাথে।নাকি তুমি চাচ্ছ আমি একলাই ছয় মাসের জন্য তোমার থেকে আলাদা থাকি ।তুমি কি আমায় একটু ভালোবাসো না? সত্যি একটা কথা বলবা তুমি আমায় মন থেকে ভালোবেসে বিয়ে করেছো তো নাকি আমার জোরাজুরিতে? (উৎসব ছেড়ে দিয়ে রাগ দেখিয়ে)
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আপনি আসলে একটা খারাপ লোক। এমনি আমার মনটা খারাপ করছে আবার উল্টাপাল্টা কথা বলছেন ভালোবাসি বলেই তো আপনার সাথে বিয়েটা করেছি না হলে আপনার মত বজ্জাত লোককে কে বিয়ে করত শুনি (শ্রাবণী হেঁচকি তুলে কান্না করে)
তুমি আমায় ভালবাসতা কবে থেকে আগে কান্না থামাও আরে বাবা সরি পরী আর বলবোনা সরি কান ধরছি দেখো।(উৎসব কান ধরে)
বলবো না আমি পচা লোক ,বজ্জাত লোক এখনই এতো কান্না করাচ্ছেন বিয়ের পর না জানি কি করাবেন(শ্রাবণী অভিমানী সুরে)
হঠাৎ করে ওকে টেনে আমার বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলাম থাক পরী মজা করছিলাম ।এমন করে কান্না করো না আমি কিন্তু এখন কান্না করে দেবো আমার কান্না করা শুরু করলে কিন্তু থামাতে পারবে না বলে দিচ্ছি(উৎসব মজা করে)
হয়েছে হয়েছে ঢং দেখলে বাচি না এই কান্না করাবে আবার এই আদর করবে গিরগিটি কোথাকার (শ্রাবণী রাগ মিশ্রিত কন্ঠে)
জলদি রেডি হও তো তোমাকে নিয়ে এক জায়গায় যাব (উৎসব)
পাসপোর্ট তো করাই আছে পাসপোর্ট করার দরকার নেই তো কই যাব তাহলে (শ্রাবণী প্রশ্ন করে)
প্রি হানিমুন করতে পরী(উৎসব চোখ টিপ দিয়ে)
মজা নিচ্ছেন আপনি আমার সাথে (শ্রাবণী অবাক হয়ে)
তুমি কি আমার বেয়ান লাগো না শালি লাগো মজা নিতে যাবো মজা তো তাদের সাথে নেওয়া হবে তোমার সাথে তো রোমান্স হবে রোমান্স (উৎসব আবার চোখ টিপ দিয়ে)
চোখ দুটো উঠিয়ে ফেলব আমাকে ছাড়া অন্য কারো দিকে তাকানো যাবে না লুচ্চু বেটা (শ্রাবণী রাগ দেখিয়ে)
ওরেব্বাবা আমার বউ এর দেখি আবার রাগ ও আছে ভাল ভাল খুবই ভাল এখন জলদি ব্লু কালার জামদানি টা পড়ো দেন চলো তোমাকে নিয়ে একটা যায়গায় ঘুরতে যাব (উৎসব)
শাড়ি পড়ে যাব বোরকা পড়ে যায়? (শ্রাবণী)
গাড়িতে করে যাব গাড়িতে করে আসবো তোমাকে বের করব না ঠিক আছে । বের হলেও যেখানে যাচ্ছি সেখানে কেউ নাই বুঝতে পারছ।একটু পড়ো না প্লিজ শাড়িটা। আর একটা ড্রেস নিয়ে নিও (উৎসব বর্ণনা শুনে)
কেন ড্রেস নিতে যাবো কেন আমরা তো আজকে চলে আসবো ড্রেস নিয়ে কি করব(শ্রাবণী অবাক হয়ে)
নিয়ে নাও আচ্ছা তোমাকে নিতে হবে না আমার হাতে দিও আমি নিয়ে নেব। (আজকে তোমাকে নিয়ে আর আসবোনা দুই দিনের জন্য হাওয়া হয়ে যাব ।আমার কতদিনের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে হবে না ।বিয়ের আগে বউকে নিয়ে পালাবো কি যে মজা লাগছে ভাবা যায় উৎসব মনে মনে) জলদি জলদি রেডি হও সময় নেই ফিরতে হবে জলদি আবার (উৎসব)
ঠিক আছে আপনি ওই রুমে যেয়ে বসেন আমি রেডি হচ্ছি(শ্রাবণী)
হও সমস্যা কই আমিই তো (উৎসব মজা করে)
আপনার সারাদিন ফাজলামো না করলে ভালো লাগেনা না। আম্মু কে জিজ্ঞেস করতে হবে কি খেয়ে আপনাকে পয়দা করছিল (শ্রাবণী এটা বলে জিভে কামড় দিয়ে) sorry রাগ করবেন না ভুলে বের হয়ে গেছে (শ্রাবণী)
উৎসবের চোখ বড় বড় হয়ে গেছে কথা শুনে হঠাৎ করে হো হো হো হো হো করে হেসে উঠলো। পরী তোমারও সেগুলো খেয়ে নিতে হবে কি বলো আমার বাচ্চারা তোমার মত হবে ৮টা আমার মত হবে ৭টা ভালো না (উৎসব)
আপনি ঘর থেকে বের হনতো বেশি বকেন কেন সবসময় (শ্রাবণী লজ্জা পেয়ে)
ঠিক আছে ঠিক আছে যাচ্ছি শাড়ি পড়ো আর একটা ড্রেস নিয়ে নিও সাথে (উৎসব )
উনি বের হয়ে গেলেন। আমি শাড়ি পড়ে চুলটাকে খোপা করলাম তারপরে কানে দুল ,হাতে ব্লু কালার চুরি ,লিপস্টিক ,কাজল ,আইলাইনার দিয়ে নিলাম ,হাতে দুইটা আংটি পড়লাম আমার সাজ কমপ্লিট ।জে থ্রি পিসগুলো দিয়েছিলেন তার মধ্যে একটা নিতে চাইলাম পড়ে একটা শাড়ি যেটা কলাপাতা কালার সেইটা নিলাম উনার সাথে শাড়ি পরলে আমাকে নাকি বেশি মানায়। না হলে উৎসবের সামনে আমাকে পিচ্চি পিচ্চি দেখায়। কারণ আমি 5 ফুট 1 ইঞ্চি লম্বা সে জায়গায় উনি 5 ফুট 8 ইঞ্চি। (শ্রাবণী)
তৈরি হয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। গাড়িতে আমি আর উনি আছি এই প্রথম আমি উৎসবের সাথে একলা বেরোলাম কোথাও।একটু ভয় ভয় লাগছে কিন্তু খুব মজা লাগছে এই মানুষটার সাথে আর পাঁচ দিন পরে সারা জীবনের জন্য একলাই তো থাকতে হবে। একটা দিনের জন্য প্র্যাকটিস করে নেই ভালোই হলো। (শ্রাবণী)
আমার পরী টা জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে সামনে একটা জামাই রাইখা। তা পরী সামনে এত হ্যান্ডসাম বর রাইখা বাইরে কি দেখগো (উৎসব)
ঘুরতে আসছি বাইরের পরিবেশ দেখব না আর আপনি তো আমারই সারা জীবনই দেখব তাই বাইরে দেখাই ভাল (শ্রাবণী বাইরে তাকিয়ে)
এটা কোন কথা পরী তোমার হ্যান্ডসাম বর রাইখা বাইরে টা বেশী ইনপরটেন হইল(উৎসব)
এই আপনি ড্রাইভিং এর সময় এত কথা বলেন কেন আমার এত জলদি মরার শখ নাই এত কথা বলেন এক্সিডেন্ট হবে আমার এখনো নাতি-নাতনির সাথে খেলা বাকি আছে। তাই সামনে তাকি আপনি ড্রাইভ করুন আমি একটু ঘুমাই।(শ্রাবণী)
গাড়ি হঠাৎ ব্রেক করে। পরী আগে বাসর হোক, বাচ্চাকাচ্চা হোক তারা বড় হোক তাঁদের বিয়ে দেব তারপর না হয় নাতি-নাতনি তুমি এখনই তাদের কথা ভাবছো। এদিকে যে তোমার ভালোবাসার অপেক্ষায় এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলে বুড়ো হয়ে যেইতেছে সেদিকে তোমার কোন নজর নেই(উৎসব অবাক হয়ে)
আপনি বেশি কথা বলেন কেন এত গাড়ি চালান গুড নাইট (শ্রাবণী)
এই ওয়েট ওয়েট গুডনাইট মানে কথা বলবো না ঠিক আছে ঘুমাবে সকাল বাজে 11 টা এখন গুডনাইট আসলো কোথা থেকে?(উৎসব অবাক হয়ে)
আচ্ছা সরি সরি ঘুমাই।আপনি ড্রাইভিং এ মন দিন যেখানে যাচ্ছি যাচ্ছি সেখানে চলেন।(শ্রাবণী)
সন্ধ্যা ছয়টা
হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি আমি খাটে শুয়ে আছি রুমটা অসম্ভব সুন্দর ।কিন্তু আমি তো গাড়িতে ছিলাম রুমে রুমে আসলাম কি করে আর আমি কোথায় উৎসব এই বা কোথায়!
উৎসব আপনি কোথায় আমার কিন্তু খুব ভয় করছে প্লিজ সামনে আসুন। (শ্রাবণী কান্না মিশ্রিত কন্ঠে)
Welcome to Cox’s Bazar my dear wife.(উৎসব জড়িয়ে ধরে)
Whattttttttttt. Are you kidding me?দেখুন একদমই মজার মুডে নাই আমার খুব ভয় করছে ।আমরা কোথায় আছি এখন জলদি করেন বাসায় যেতে হবে সন্ধ্যা হয়ে আসছে মনে হয় বাড়ির সবাই টেনশন করছে। (শ্রাবণী)
আমরা প্রী হানিমুনে আসছি আমার জানেমান। আমার খুব শখ ছিল পালিয়ে বিয়ে করার। কিন্তু তোমায় দেখে আটকে গেছি। তুমি যদি আমাকে না করতে ভেবেছিলাম তোমাকে কিডন্যাপ করে বিয়ে করবো ।তবে ভালই হয়েছে তুমি হ্যাঁ করে দিয়েছো আমাদের বিয়েটা হয়েছে। কিন্তু ভাবলাম আমার স্বপ্নটা কি একটু প্রাধান্য দিই তাই তোমাকে নিয়ে এইখানে আশা কেমন দিলাম সারপ্রাইজ। (উৎসব জড়িয়ে ধরে হাসতে হাসতে)
ফাজলামির একটা লিমিট আছে উৎসব।সবাই বাড়িতে টেনসনে আছে আপনার মজা সব সময় আমার ভালো লাগেনা(শ্রাবণী উৎসব কে ধাক্কা মেরে)
তোমার কি আমাকে এতটাই বুদ্ধি জ্ঞান হীন মনে হয়। তুমি আমাকে কোনদিন বুঝতে চাও না ।একটা সত্যি কথা বলতো আমি বিয়েতে জোর করেছি বলেই বিয়েটা করেছো নাকি আমাকে ভালোবেসেছো? আমি তোমার কাছে ভালোবাসা চাচ্ছি আমি তোমাকে ভালবাসতে চাচ্ছি আমার স্বপ্ন তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাচ্ছি সে জায়গায় তুমি আমার ওপর রাগ দেখাচ্ছো। তুমি নিজেকে খুব চালাক মনে করো আমি কি এতই বোকা তোমাকে নিয়ে আসছি কাউকে না জানিয়ে তোমার চাচি মাকে বলে এসেছি। আমার সাথে থাকতে হবে না তোমায় হোটেলের অন্য রুম বুক করে নেব আমি আর কালকে সকালেই চলে যাব থাকো তুমি (উৎসব রাগ দেখিয়ে বেরিয়ে গেল)
রাগের মাথায় ওনার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছি। আমার ওনার কাছে মাফ চাইতে হবে। জলদি করে বেরিয়ে গেলাম বেরিয়ে দেখি উনি হোটেলের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে আমি পেছন থেকে ওনাকে জড়িয়ে ধরে কয়েকবার সরি বললাম কিন্তু উনি আমার দিকে একবার ঘুরিয়ে তাকালেন না। প্লিজ মাফ করে দিন আর হবে না আমি বুঝতে পারিনি (শ্রাবণী কান্না করতে করতে)
তাও উনি আমার দিকে ঘুরে তাকাচ্ছেন না।তাই আমি নিজে থেকে ওনাকে ঘোরালাম উনিও কান্না করছে আমার জন্য আমি ওনাকে খুব কষ্ট দিয়ে ফেলেছি যে। প্লিজ মাফ করেন এই যে দেখুন কান ধরছি আর জীবনে এমন ভুল হবে না প্লিজ (আপনি কান্না করতে করতে)
ভালোবাসি তোমায় আমি শ্রাবণী। আচ্ছা আমি কি এতই খারাপ আমাকে একটু ভালোবাসা যায় না শ্রাবণী। তোমার ছবি দেখে তোমায় ভালোবেসেছি আমি। তোমাকে বিয়ের জন্য কত কষ্ট করতে হয়েছে জানো তুমি ।সবাই আর পরে বিয়েটা দিতে চাইছিল ।আমি ঐদিনই বিয়ের ব্যবস্থা করি তাও তোমার ও দুই ফ্যামিলির কথা ভেবে তোমার থেকে আমি এতদিন দূরে থেকেছি ।আমি আর পারছি না পরী আই ওয়ান্ট ইউ আই ওয়ান্ট ইওর লাভ প্লিজ #আমার_অধিকার_তুমি সেই অধিকারীই দাওনা আমায় প্লিজ (উৎসব কান্না করতে করতে)
এই প্রথম উনি আমাকে শ্রাবণী বলে ডাকলো ।আমি তো তার পরী তাই না খুব রাগ করেছে।(শ্রাবণী মনে মনে)
#আমার_অধিকার_তুমি ও #তোমার_অধিকারও_আমি সব কথা কি মুখে বলতে হয় তুমি কিছু বোঝনা(শ্রাবণী উৎসবের বুকে মুখ গুঁজে)
তারপর দুজন দুজনকে জড়িয়ে কান্না করে রুমে চলে আসলাম। তারপর রাতের খাবার খেয়ে দুজন শুতে গেলাম।
#(তারপরে_কি_হয়েছে_বলতে_আমার_লজ্জা_করে_আপনারা_বুঝে_নিয়েন_প্লিজ????)
সকালে
দুইজন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে ঘুরতে বেরোলাম। চকলেট,আচার,বাদাম আরো অনেক কিছু কিনলাম। দুপুরে লাঞ্চ করে হোটেলে ফিরে আসলাম রেস্ট করার জন্য। কিন্তু আমার ওয়ান পিস বর টা আমার রেস্টের বারোটা বাজায়ে দিল।
কি শুরু করছেন একটু ঘুমাইতে দেন দুষ্টামি লাগায় দিছেন কেন ভাই (শ্রাবণী)
পরী স্বামীকে কেউ ভাই বলে মাথায় তুলে একটা আছাড় মারবো ফাজিল মেয়ে। রোমান্টিক মুডে বারোটা বাজানো তোমার থেকেই শেখা উচিৎ (উৎসব)
আপনার সারাদিনই রোমান্স উটলে পরে না।(শ্রাবণী মুখ ভেংচি কেটে)
আমেরিকায় গেলে রোমান্সের জন্যই তারপর পেঁপে করে কান্না করব তখন কাজের চাপে আর এত রোমান্সের টাইম থাকবে না পরী।(উৎসব কোলে মাথা রেখে)
আমার বয়েই গেছে (শ্রাবণী মুখ ঘুরিয়ে মুচকি হেসে)
তারপরে দুজন রেস্ট নিয়ে সন্ধ্যায় আবার একটু সমুদ্রের পাড়ে ঘোরাঘুরি করে রাতের ডিনার করে রুমে চলে আসলাম। আচ্ছা পরী বলতো আমি কক্সবাজার কে কেন বেছে নিয়েছি (উৎসব প্রশ্ন করে)
আমি কি জানি (শ্রাবণী)
এই প্রী হানিমুনের দুইটা কারণ একটা আমার স্বপ্ন পূরণ 2 তোমার স্বপ্ন পূরণ। প্রিয়া একদিন বলেছিল তোমার নাকি কক্সবাজার হানিমুন করার খুব শখ। বিয়ের 15 দিন পরে আমেরিকা চলে গেলে ছয় মাসেও তো হানিমুনে আসতে পারবো না তাই কক্সবাজার বেছে নেওয়া বুঝতে পারছ এটা ।তুমি খুশি তো?(উৎসব)
খুব খুব খুব খুশি।#I_love_you Utsob(শ্রাবণী উৎসবের কানে ফিসফিসিয়ে)
কি কি কি বললা পরী আরেকবার বলবে প্লিজ।(উৎসব কোল থেকে বসে পড়ে)
আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি। উৎসবের বুকে মুখ গুঁজে (শ্রাবণী)
আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি আমার পরী টা (উৎসব জড়িয়ে ধরে)
রাতে ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়ল ঘুম কম রোমান্স বেশি যা হয় আরকি। সকালে উঠে ব্রেকফাস্ট করে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। উৎসব এসে বাসায় দিয়ে ওনার বাড়ী চলে গেল।
আসার পর থেকে বনু আমাকে পচাইতে পচাইতে শেষ। বলে আর তিনটা দিন অপেক্ষা করতে পারলাম না কি একটা অবস্থা। কেউ আর কোন প্রশ্ন করে নি আমাকে চাচিমা সবাইকে হয়তো বলেছেন কিন্তু আমার সবার সামনে যে তখন লজ্জা লাগছে এই লোকটার জন্য সবাই ভাবছে (শ্রাবণী মনে মনে লজ্জা পেয়ে)
দেখতে দেখতে তিনটা দিন চলে গেল হাসি মজা সবাইকে ছেড়ে যাওয়ার দুঃখে ।আচ্ছা কেন মেয়েদের এই নিয়মটা পালন করতে হয় কেন মেয়েরা এত কষ্ট সহ্য করে অন্যের ঘরে যেতে হয় ।হয়তোবা উৎসব আমাকে খুবই ভালবাসবে পরিবারের সবাই খুব ভালবাসবে কিন্তু সব মেয়ের কপালে তো সুখ থাকে না আল্লাহ জানেন আমার কপালে কি আছে।(শ্রাবণী মনে মনে ভেবে)
কালকে উৎসব দের হলুদ হয়ে গেছে আজকে আমার হলুদ হচ্ছে মিতু ,নিলয়, টিয়া ওরা এসেছে। আমার আত্মীয়-স্বজনরাও সবাই এসেছে সবাই হলুদ দিয়ে বাচ্চা-কাচ্চারা একটু নাচ গান করে এই বারোটা নাগাদ আমি ফ্রি হলাম। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ির সামনা-সামনি হওয়া তে সবাই চলে গেছে তাই আমার ঘরপুরাই ফাঁকা।আমি ভাবলাম যেই হলুদ মেখেছে এইভাবে আমার ঘুম হবে না তাই গোসল সেরে নেব যেই ভাবা সেই কাজ কিন্তু ঘরে ঢুকে আমি পুরাই অবাক এ আমি কাকে দেখছি। উৎসব তুমি এখানে কি করছ এত রাত্রে (শ্রাবণী অবাক হয়ে)
সারপ্রাইজ। এই ওয়েট ওয়েট তুমি আমাকে তুমি বলবা। নিজেই সারপ্রাইজ এতক্ষণ লাগে। (উৎসব)
তুমি আপনি মানে আপনি এখানে কি করছেন সেটা আগে বলেন(শ্রাবণী)
এমা সবাই আমার বউকে হলুদ দেবে আমি দিব না এটা হতে পারে আর কালকে আমার হলুদ হয়েছে। সারাদিন ফ্রি ছিলাম তাও তোমার সাথে তো কথা বলার কোনও জো নেই তাইতো আসলাম (উৎসব)
দেখুন এমনি হলুদ দিয়ে ভুত বানিয়ে ফেলছে এখন আপনি কি শেওরা গাছের পেত্নী বানাত আসছেন। তার উপর মাজার ব্যথা । বিয়েতে এত কষ্ট জানলে আমি অনুষ্ঠান করতে বারণ করতাম। সন্ধ্যা সাতটায় বসাইছে সবাই মিলা হলুদ দিছে তারপরে মেহেদি দিয়ে ২ ঘন্টা বসে থাকলাম মাজার পুরা বারোটা বেজে গেছে। এখন আমি গোসল করে একটু রেস্ট নিতে চাই প্লিজ (শ্রাবণ)
ঠিক আছে চলো তোমায় একটু হলুদ মাখিয়ে গোসল করিয়ে মাঝায় ওষুধ মালিস করে দেন আমি চলে যাই (উৎসব তাড়াহুড়ো করে)
এই না না না। কে শুনে কার কথা বাটি থেকে হলুদ নিয়ে একগাদা মুখে মাখিয়ে নিজেই আমাকে সুন্দর করে গোসল করে তারপরে মাঝায় ঔষধ মালিশ করে একটা কিস করে চলে গেল। আমার খুব ঘুম পাচ্ছিল আমিও ঘুমিয়ে গেলাম কারণ কালকে সারাদিন আবার বসে থাকতে হবে তাই রেস্ট নেওয়াটা খুবই জরুরী (শ্রাবণী).
.…….…….………………(চলবে)..……..……………..