সত্য ঘটনা অবলম্বনে | আমার অধিকার তুমি পর্ব: ৩

0
3794

সত্য ঘটনা অবলম্বনে

আমার অধিকার তুমি
পর্ব: ৩

লেখিকা: সুরভী শেখ

আমার পরীটা তো পুরাই ক্ষেপে গেছে।‌‌ খেপলে তো সেই সুন্দর লাগে। পিছন পিছন দিয়ে দেখি পরী আমার কই যায়।

আবারও মনে হচ্ছে পেছনে পেছনে কেউ আসছে। পেছনে তাকিয়ে দেখি সেই ছেলেটা।এই ছেলে আপনার সমস্যা কি । পিছু নিয়েছেন কেন আপনার কি মার খাওয়ার শখ হয়েছে নাকি ডাকবো মানুষজন।
তোমার পিছু নিতে যাব কেন এই রাস্তাদিয়ে আমি সামনে যাবো সেজন্য যাচ্ছিলাম।তুমি কি নিজেকে বিশ্ব সুন্দরী মনে করো নাকি যে তোমার পিছনে তে যাব আমি।
কি অসভ্য ছেলে রে বাবা এইভাবে কেউ ইনসাল্ট করে যা যেখানে মন চায় সেইখানে যা জাহান্নামে যাক (মনে মনে)

এই বোনু চল তাড়াতাড়ি চল ফুচকা খেয়ে বাড়ি যেতে হবে। দুপুরের টিফিন খেয়েছিস।
হ্যাঁ আপু খেয়েছি আমি কিন্তু আজকে দুই প্লেট ফুচকা খাবো তার বিল কিন্তু তুমি পে করবে।
আগে চল তারপর দেখা যাবে কত খেতে পারিস।
ঠিক আছে চলো।

এখন আর ওর সামনে যাওয়া যাবে না, না হলে সন্দেহ করতে পারে ।থাক দূর থেকে আমার পরীটাকে দেখি কি করে।এই তো দেখি একটা ছোট্ট মেয়ের সাথে কথা বলছে মনে হয় আমার শালি হবে। শালি টা তো সেই কিউট ।
ও তারা ফুচকা খেতে যাবে আমিও যে একটু খাই দেখি।এই খানের ফুচকা কতটা ভালো ।অনেকদিন এই টাইপের খাবার খাওয়া হয়না ।কলেজে বন্ধুদের সাথে মাঝে মধ্যে একটু খেতাম এখন আর তেমন খাওয়া হয়না দেখি খেয়ে।

মামা 2 প্লেট ফুচকা দেন বোম্বাই মরিচের ঝাল দিয়ে দেবেন কিন্তু আর আমারটায় শুকনা মরিচ দিয়েন ‌।
ঠিক আছে মা ।তো অনেকদিন পরে আসলে যে।
আসলে মামা এদিকে তেমন আসা হয় না তো তাই দেন দেন জলদি ফুচকা দেন খেয়ে বাসায় যেতে হবে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

আচ্ছা বানিয়ে দিচ্ছি একটু অপেক্ষা করো।
ঠিক আছে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
এই মামা এক প্লেট ফুচকা দেন তো।
জি স্যার দিচ্ছি একটু অপেক্ষা করুন ওনাদের টা দিয়ে নেই।
ঠিক আছে।

এই বেটার এইখানে এসেই ফুচকা খেতে হল। নাকি আমাকে ফলো করছে যাগ্গে যাক যা মন করুক তাতে আমার কি।(মনে মনে)

এই নাও তোমাদের দুই প্লেট।
দিন মামা।
আপু ফুচকা টা সেই হইছে না ?আমার কিন্তু খুব মজা লাগছে।
হুম মজা হয়েছে । কথা না বলে জলদি খা বাড়ি যেতে হবে। মামিঃ না হয় আবার বকাবকি করবে।
ঠিক আছে খাচ্ছি তো।
এই নেন স্যার আপনার ফুচকা।
দিন ,তা মামা কেমন বেচা হয় আপনার। একদিনের যা বেচেন তাদিয়ে সংসার চলে।
যায় এক রকম। আপনি মনে হয় নতুন স্যার এখানে।
না একটা কাজে আসছি লাম অনেকদিন ফুচকা খাওয়া হয় না তাই খেতে আসলাম। খুব ভালো লাগলো ফুচকাটা ধন্যবাদ।
ঠিক আছে স্যার খান।

ফুচকা খাচ্ছি আর আমার পরীটাকে দেখছি যদিও বা একটু আড়চোখে দেখছি সরাসরি তাকালে যদি আবার চেতে যায় তার জন্য। ঝালের কারণে নাক ও ঠোট পুরাই লাল হয়ে আছে। তাও খেয়ে যাচ্ছে কিযে কিউট লাগছে। মন চাচ্ছে এখনই বিয়ে করে ফেলি। আচ্ছা ছোট বাবাকে কি বলব সামনের সপ্তাহে না এসে কালকে চলে আসতে। না থাক এটা একটু বেশি বেশি হয়ে যায় আর কয়টা দিন ঘুরি না আমার পরীটার পিছে। একটু ভালোমতো জেনেশুনে নেই তারপর সারা জীবনের জন্য তো পরীটা আমারই থাকবে। (মনে মনে)

এই নেন মামা 5 টাকা আসি মামা ভাল থাকবেন।
ঠিক আছে আবার এসো মা।
আচ্ছা মামা আসসালামু আলাইকুম।
অলাইকুম আসসালাম মা।

চল বনু একটা আইসক্রিম খাবো খুব ঝাল লেগেছে।
চলো চলো আমার ঝাল লেগেছে কেন যে 2 প্লেট খেতে গেলাম একটু পরে না পেট ব্যাথা শুরু হয়ে যায়।
একটু কম খেতে পারলি না যদি পেট খারাপ করেছে না মামি আমায় বকবে। চল এখন।
আপু সামনে লটারি আইসক্রিম বসেছে চলোনা একটু লটারি খেলি।
চল।
ইয়ে তিনটা পেয়েছি আমি আপু তুইও খেলনা দেখ না কয়টা পাস।
এত আইসক্রীম দিয়ে কি করব এই তিনটা তেই হবে।
প্লিজ প্লিজ কর না যা তোর যেগুলো হবে সেগুলো আমায় দিয়ে দিস।
আচ্ছা ঠিক আছে ।দুইটা পড়েছে।
ইয়েস ইয়েস এতগুলা আইসক্রিম খাবো।
এই নেন মামা 2 টাকা। আচ্ছা খাস এখন চল বাড়ি চল ‌।

তারা দেখি রাস্তার খাবার খেয়ে যাচ্ছে এদের পেট খারাপ হয়না নাকি ।এই আইসক্রিম খাওয়ার কোন মানে হল যদি ঠাণ্ডা লেগেছে। কিছু তো বলতেও পারছি না একবার বিয়ে হোক তখন বাইরের খাবার খাওয়া ছুটাচ্ছি তোমার। পরী (মনে মনে)

এতক্ষণ কোথায় ছিলে তোমরা।এতক্ষণ কোথায় ছিলি রে পিয়া। পড়াশোনা বাদ দিয়ে খালি টৌটৌ করে ঘুরলে চলবে ।কয়দিন পরে যে পরীক্ষা সে খেয়াল আছে তোমার। আর এই যে শ্রাবণী বোনকে নিয়ে যে ঘুরতে যাও তোমার মাথায় কি বুদ্ধিশুদ্ধি অভাব হয়েছে নাকি ।ওর সামনে পরীক্ষা ভুলে গেছো তুমি। তুমি না হয় ভালো স্টুডেন্ট ওর মাথায় গোবর পোড়া সেটা কি ভুলে যাও ।কোথায় ওকে একটু পড়াবে না তা না করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াও আর খাওয়া-দাওয়া। টাকার গরম দেখাচ্ছ তোমার চাচা মাসে মাসে যে টাকা গুলো পাঠায় তার গরম দেখাও আমাদেরকে।
না মামী এমন কিছুই না। তুমি ভুল বুঝছো আসলে সকালে ফুচকা খেতে চেয়েছিল তাই খাইয়ে আনলাম আমায় মাফ করে দিও আর যাব না। (কান্না মিশ্রিত কন্ঠে)
হয়েছে হয়েছে মুখে মুখে আর তর্ক করা লাগবে না যাও ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে পড়তে বস।
আম্মু তুমি এমন করো কেন আমি তো খেতে চাইলাম তাই জন্যই তো আপু আমাকে নিয়ে গেছিল।
বোনের সাথে দেখছি মুখে মুখে তর্ক করা শিখে গেছ। একটা মেরে না চেনো তুমি আমাকে ঘর থেকে বের করে দেব বেয়াদব মেয়ে কোথাকার। যাও পড়তে বসো।
হ্যাঁ হ্যাঁ যাচ্ছি যাচ্ছি বলে রাখি একবার যদি ঘর থেকে বিদায় হয়না তোমার ঘরে আর জীবনে পা রাখব না।
বনু যাও বলছি এখান থেকে বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
আচ্ছা যাচ্ছি তুমি সব সময় আম্মুকে লাই দাও তাইতো তোমার মাথায় উঠে হাঁড়ি ভেঙে খায়।
একটা থাপ্পর মারব তোমাকে যেতে বলেছি না এখান থেকে ।মামী যা করে আমার সাথে করে তুমি এর মধ্যে বাধা দেয়ার কে যাও নিজের কাজে যাও। সরি মামি আসলে ও..
হয়েছে হয়েছে যাও নিজের কাজে যাও। যত মরণ আমার হয়েছে ।যত জ্বালা সেই ছোট্টবেলা থেকে ঘরে বসে খাচ্ছে আবার মুখে মুখে তর্ক করা শিখে গেছে। একবার বিদায় হলে আর যাতে মুখ দেখা না লাগে সেই দোয়াই করি আল্লাহর কাছে।একবার বিয়ে হলে বলে দেব যাতে আর আমার বাড়িতে না আসে নিজে তো বেয়াদব বেয়াদব তো আমার মেয়েটাকে শুদ্ধ বেয়াদব করে রেখেছে। আর উনি তার ভাগ্নিকে তো চোখে হারায় যত্তসব।
ঘরে এসে ভাবছিলাম কেন যে ছোট চাচ্চুর সাথে বিদেশ চলে গেলাম না তাহলে আমার এইদিন দেখতে হত না ।আমি কি এতই খারাপ আমিতো মামীকে যথাসাধ্য চেষ্টা করি সব কাজে সাহায্য করার ।আর আমিতো তার সাথে কোনদিন কোন বেয়াদবি করিনা তাও মামী আমাকে এভাবে বলতে পারল ।আল্লাহ তুমি তো দেখো আমার কে আমি কেমন ।প্লিজ আল্লাহ সহায় হও আমার আল্লাহ মামীর দোয়ায় যেন সত্যি হয় একবার বিয়ে হলে যাতে আমার এই বাড়িটার না আসা লাগে।(কান্না করতে করতে)
ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়লাম তারপরে কুরআন তেলাওয়াত করে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম এইসময় মামা ঘরে আসলো।
কিরে আম্মুনি এত জলদি কোরআন তেলাওয়াত শেষ করে দিয়েছিস। আজকে আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম শুনলাম তোর মামি নাকি তোর সাথে আজকে বাজে ব্যবহার করেছে। আম্মু নি আমায় মাফ করে দে তোকে একটু সুখ দিতে পারলাম না ।দেখিস তোর যার সাথে বিয়ে হবে সে তোকে খুব ভালো রাখবে আমি এমন ছেলের কাছেই তোকে তুলে দিতে চাচ্ছি ।সামনের সপ্তাহে তারা তোকে দেখতে আসতে চাইছে আমি কি তাদের হ্যাঁ বলবো।
মামা আমি চাচ্ছিলাম চাচ্চুরা আসলে না হয়।
হ্যাঁ ও আসলে তো হবেই এখনতো দেখতে আসবে আসলে না হয় বিয়েটা করে দেব।
ঠিক আছে তুমি যা ভালো মনে করো ।আর মামীর কথা আমি তেমন কিছু মনে করিনি ।উনি আমার গুরুজন একটু ভক্তে পারে ।কিন্তু আজকে মামি কোরআন তেলওয়াত শুনতে আসেনি আমার খুবই খারাপ লেগেছে এটা ।আর তুমিও বাইরে গিয়েছিলে তাই তাড়াতাড়ি পড়ে রেখে দিয়েছি। নামাজ পড়েছ তুমি দুপুরে খেয়েছিলে?
হ্যাঁ আম্মুনি দুপুরেও খেয়েছি নামাজও পড়েছি এখন একটু রেস্ট নেবো সন্ধ্যার পর এসে তোর সাথে গল্প করবো ঠিক আছে তুই একটু রেস্ট নিয়ে পড়তে বস।
ঠিক আছে মামা।

আরে উৎসব ভাই তুমি কি এত ভাবছো একটু বলবা।
আরে ব্যাটা তোর জন্য কিছু ভাবতেও পারবো না। কি সুন্দর তোর ভাবিকে নিয়ে ফিউচার প্ল্যানিং করছিলাম তুই দিলি পানি ঢেলে তোর বিয়ের সময় আমি এমন করব দেখিস।
আর বিয়ে আমাকে কে বিয়ে করবে শুনি যাকে মন ভালোবাসলাম তাকে তো পেলামই না উল্টা আমারে দিল ইয়ে বড় বাঁশ দিয়ে।
মানে কি তুই আবার ভালবাসলি কবে আমাকে তো কিছু জানাসনি।
জানাবো কি করে তুমি যে বিজি মানুষ ।প্রেমে পড়েছিলাম একজনের কিন্তু সে মেয়ে খুবই ধার্মিক তাই আর আগাতে পারলাম না ।তার কথামতো প্রেম ভালোবাসা নাকি গুনাহ বিয়ের আগে এসব করা উচিৎ না। বিয়ের প্রস্তাব দিতে বলেছিল আমিও চেয়েছিলাম দিতে কিন্তু সে বলল পড়ালেখা শেষ হলে নাহয় দিবেন ।অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।
তাই নাকি এই খানের মেয়ে।
হুম এই খানের মেয়ে শ্রীনগর কলেজেই পড়ে।
তা নাম কি মেয়ের।
এই………..‌..(ফোনে কল আসল) দাঁড়াও আম্মু কল দিয়েছে কথা বলে নেই।
(পরের পর্বে টুইস্ট আছে)
……………….. (চলবে)…………..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে