#সত্যি_ভালোবাসো
#part_05
#writer_Fatema_Khan
আরিশ আর তাহিয়া বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত ৯টা বেজে যায়।আরিশ পাশে তাকিয়ে দেখে তাহিয়া বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।আরিশ তাহিয়াকে কোলে করে বাসার ভিতরে নিয়ে যায়।
নীলিমাঃকিরে আরিশ তাহিয়ার কি হয়েছে,ও ঠিক আছে তো?তোদের আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো?
আরিশঃনা।আমরা ঠিক আছি।তোমাকে কল করে বললাম না একটা গাড়ি ওকে আরেকটুর জন্য ধাক্কা দিতে পারে নি।
নীলিমাঃঅহ।তাহলে ওকে কোলে করে আনলি যে আমি তো ভয় পেয়ে গেছি।
আরিশঃতেমন কিছু না ভয় পাইছে,তাই হয়তো ঘুমিয়ে গেছে।
নীলিমাঃতাই হবে হয়তো।
আরিশঃওর কিচ্ছু হতে দিব না আমি।ওর কিছু হলে আমার কি হবে মা।এতদিনের স্বপ্ন সব ভেংগে যাবে।
নীলিমাঃতোর বাবা এসেছে আজ।আরমান ভাই সাহেব নাকি কল দিছে তোর বাবাকে আর তোদের বউ-ভাতের কথা বলছিলো।
আরিশঃহ্যা মা।তিনদিন পরেই হবে।
নীলিমাঃতিনদিন পর নাকি সে আসবে।
আরিশঃতুমি জানলে কিভাবে।আমি তো তোমাকে বলি নাই।
নীলিমাঃতোর বাবা বললো।কোনো সমস্যা হবে নাতো আবার।
আরিশঃনা উল্টো আরো ভালো হবে বউ-ভাতের সময় আসলে।আলাদা করে আসলে সমস্যা হতো।
নীলিমাঃকেউ চিনে ফেললে?
আরিশঃরিলেক্স মা সব ঠিক হবে।যাও ঘুমিয়ে পড়ো।আমি তাহিয়াকে নিয়ে রুমে যাই।
“তারপর তাহিয়াকে সোফা থেকে আবার কোলে করে রুমে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো।তারপর আরিশ ফ্রেশ হতে চলে গেলো”
_________________________________
“প্রায় ৩০মিনিট পর আরিশ গোসল করে বের হলো।এসে দেখে তাহিয়া বসে আছে গালে হাত দিয়ে।”
আরিশঃকি হয়েছে আমার ষ্টুপিড বউটার
“আরিশের হঠাৎ কথা বলার কারনে তাহিয়া ভয় পেয়ে গেলো।তারপর নিজেকে সামলে বললো “—
তাহিয়াঃআমার কাছে আসুন।পাশে বসুন না(করুন সুরে বললো)
আরিশ তাহিয়ার কাছে এসে হাটু গেরে তাহিয়ার সামনে বসলো।
তাহিয়াঃআপনি একটা কথা জানেন ওইটা এক্সিডেন্ট ছিলো না।আমাকে কেউ মারতে চায়।কিন্তু কেন,আমি তো কাউকে কিছু করিনি।
আরিশঃকে বললো তোমাকে এগুলো।আর এসব বাজে চিন্তা করো আর বেশি কথা বলো তাই না।(একটু রাগ নিয়ে)
তাহিয়াঃআমি সত্যি বলছি।আমি তাকে দেখেছি।
আরিশঃকিহ,কিভাবে দেখলে যে গাড়িতে ছিলো সে তো ড্রাইভ করছিলো।
তাহিয়াঃনা সে আমার দিকে একবার তাকিয়ে দেখে ছিলো।তাকে আমার খুব চেনা চেনা লাগছিলো।ভালো করে খেয়াল করতে যাবো তার আগেই গাড়ি চালিয়ে চলে গেলো।
আরিশঃতুমি ভয় পেয়েছ তাই উল্টো পালটা কথা বলছো।যাও ফ্রেশ হয়ে আসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
তাহিয়াঃওকে।
” তাহিয়া উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো”
__________________________________
“আরিশ হাতে খাবার নিয়ে রুমে ডুকে দেখে তাহিয়া ফ্রেশ হয়ে মাত্র বের হলো”
আরিশঃতারাতাড়ি আসো খিদে লাগছে তো।আমি আবার খিদে সহ্য করতে পারি না বুঝলে।
তাহিয়াঃ হুম বুঝতে পারছি।আসুন খেয়ে নেই।
“তারপর দুইজন খেয়ে ঘুমিয়ে পরলো”
__________________________________
“দেখতে দেখতে তিনদিন কেটে গেলো।আজ তাহিয়া ও তনিমার বউ-ভাত।সকাল থেকে সবাই খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।একসাথে দুটো বউ-ভাত তাই বড় করে এরেঞ্জমেন্ট করা হয়েছে।”
“তাহিয়া ও তনিমা গেছে পার্লারে।সাথে শীলা,মিলি,নিরব গেছে।শীলা আর মিলিও সাজতেছে।গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে আছে নিরব।”
“টানা তিন চার ঘন্টা পর তারা চারজন গাড়ির কাছে আসে।”
নিরবঃএতো টাইম লাগে সাজতে।আমার পা ব্যাথা হচ্ছে জানো তোমরা।
শীলাঃআচ্ছা এখন তারাতাড়ি চল না হয় যাদের জন্য এতকিছুর আয়োজন তারা বাইরে থাকবে।
“সবাই গাড়িতে উঠে বসলো।আমি মেরুন আর গোল্ডেন এর মধ্যে লেহেঙ্গা পরছি,তনিমা আপু খয়েরী রঙের লেহেঙ্গা পরছে।শীলা ও মিলি কালো আর গোল্ডেন এর মধ্যে লেহেঙ্গা পরছে কিন্তু দুটো ভিন্ন ডিজাইন।আর সবাই ভারি মেকাপ সাথে মেচিং গয়না।”
_________________________________
পাশাপাশি দুটো স্টেজ।একটিতে আমি আর আরিশ পাশেরটাতে তনিমা আপু আর রাসেল ভাইয়া।
আমাদের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।অনেক আত্নীয়-স্বজন এসেছে।একে একে সবাই আমাদের সাথে টুকটাক কথা বলে যাচ্ছে।
এমন সময় আমাকে আর তনিমা আপুকে ডাক দিলো নীলিমা খান।আমরা ওইদিকে গেলাম,গিয়ে দেখি আরিশ আর রায়হান খান কার সাথে যেন কথা বলছে।দেখে মনে হচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা।
নীলিমা খান আরিশকে ডাক দিলেন-
নীলিমাঃআরিশ,তনিমা আর তাহিয়ার সাথে রেজোয়ান ভাইয়ের আলাপ করিয়ে দাও।
আরিশঃওহ হ্যা।তাহিয়া তনিমা ইনি হলেন রেজোয়ান হোসেন।আমাদের বিজনেস পার্টনার।
আর রেজোয়ান আংকেল ও হলো তাহিয়া আমার ওয়াইফ,আর ও তনিমা,তাহিয়ার বড় বোন।
রেজোয়ানঃরায়হান তোমার ছেলের বউ ও শালী কিন্তু মারাত্মক সুন্দরী।
রায়হানঃহ্যা তা ঠিক বলেছো।
নীলিমাঃআচ্ছা তাহিয়া তনিমা তোমরা গিয়ে বসো।আমরা একটু বিজনেস এর ব্যাপারে কথা বলে আসছি।
তনিমাঃআচ্ছা আন্টি।
“তারপর আমরা সেখান থেকে চলে এলাম”
তাহিয়াঃআপু আমার না ওনাদের কথাগুলো কেমন যেনো লাগছিলো।
তনিমাঃতুই একটু বেশি ভাবিস।এই ছোট মাথায় এতো চাপ নিস না।বেশি চাপ নিলে কিন্তু ফেটে যাবে।
তাহিয়াঃআপু এবার বেশি হচ্ছে,সবাই আমাকে নিয়ে মজা করো আমি ছোট বলে।কেউ গুরুত্বই দেও না আমার কথার।
“আমি আর আপু কথা বলছি এর মাঝেই আপুর মোবাইলে কল আসে।”
তনিমাঃহ্যালো।
………
তনিমাঃআচ্ছা ঠিক আছে তুই এই এড্রেসে চলে আয়।বাই।
………
তাহিয়াঃকে কল দিয়েছে আপু,কাকে আসতে বললা?
তনিমাঃওই তাহা…..
“আপু বলার আগেই আমাদের আবার ডাক দিলো আম্মু।”
তনিমাঃচল তারাতাড়ি আম্মু ডাকছে।
তাহিয়াঃআচ্ছা চলো আবার কেনো ডাকছে।
_________________________________
তনিমাঃআম্মু তাহিয়া কোথায় ওরে দেখছিনা অনেকক্ষণ হলো?
আফসানাঃদেখ তো ওয়াশরুমে গেছে কিনা
তনিমাঃঠিক আছে আমি দেখছি।
“এই বলে আপু আমাকে খুজতে ওয়াশরুমের দিকে যায়,আর আমাকে দেখতে পায়।”
তনিমাঃআরে তাহিয়া তুই কোথায় ছিলি,কখন থেকে খুজতেছি তোকে
তাহিয়াঃকেনো কিছু দরকারি কথা নাকি,তারাতাড়ি বলো।
তনিমাঃতোর সাথে আমার এক বন্ধুর দেখা করিয়ে দিবো।চল
তাহিয়াঃতোমার কোন বন্ধু?
তনিমাঃতুই ইদানিং বেশি প্রশ্ন করিস।গেলেই তো দেখতে পাবি।এখন তুই চল আমার সাথে ও অপেক্ষা করছে।
তাহিয়াঃতাহলে কি তখন সে বন্ধু কল করছিলো
তনিমাঃ হুম
__________________________________
তনিমাঃএই যে দেখ ধরে নিয়ে আসছি তাহিয়াকে।
লোকটা পিছনে ফিরে ছিলো।আপুর ডাকে আমাদের দিকে তাকালো।
তাহিয়াঃতাহসিন ভাইয়া
চলবে…….