#শ্রাবণের_মেঘ?
#পর্ব_০৯
#Tabassum_Kotha
দেয়ালের সাথে ঠেস্ দিয়ে দুই বাহু চেপে ধরে আমার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো নীল। নীল এর এমন আকস্মিক আক্রমণে পাথরের মতো জমে গেছি। পুরো মাথা হ্যাং হয়ে আছে আমার। নীল আমাকে এভাবে জোর করে কিস করেছেন! সত্যি কি মানুষটা নীল? কেনো যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না। নীল তো এমন না, তার দ্বারা এমন কিছু আমি স্বপ্নেও আশা করি নি। আর সে কি না নির্দ্বিধায় এই কাজ টা করে যাচ্ছে। নীল এর প্রতি ঘৃণায় আমার গায়ে কাটা দিয়ে উঠছে।
নীল এর বাহুডোর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছি। কিন্তু যতোই নিজেকে ছাড়াতে চাচ্ছি ততোই শক্ত করে আঁকড়ে ধরছে নীল। বেশকিছুক্ষণ চেষ্টা করেও নিজেকে নীলের বাহুডোর থেকে ছাড়াতে পারলাম না। নিজেকে অনেক বেশি অসহায় মনে হচ্ছে। দুচোখ বেয়ে পানি পরছে আমার কিন্তু নীলের সেদিকে কোনো হুশ নেই। এদিকে অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়াতে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। হয়তো আর কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে নীল এর বুকেই মরে যাবো।
হঠাত নীল আমাকে ছেড়ে দিলেন, আমি কান্না জরানো চোখে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি। আর নীল নেশা লাগানো দৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন। এই মুহূর্তে নীল কে খুন করতে পারলে হয়তো আমার ভিতরের রাগ টা কমতো। কিন্তু সেটাও করতে পারছি না।
আচমকা নীল আমাকে তার বুকে জরিয়ে নিলেন। এবার যেনো আমার রাগের বাঁধ ভেঙে গেছে। এতোক্ষণ আমার ঠোঁটের উপর হামলা চালিয়ে কি মনের স্বাদ মিটে নি যে আবার এভাবে জরিয়ে ধরেছে!
— কি করছেন ছাড়ুন আমাকে। এসব অসভ্যতামির মানে কি ছাড়ুন বলছি। নীল! ছাড়ুন আমাকে। এভাবে কেউ দেখলে আপনার কিছু না হলেও আমি কাউকে মুখ দেখাতে পারবো না।
নীল আরও শক্ত করে কথাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
— বলেছিলাম না এইবার যখন ধরেছি আর কোনো ছাড়াছাড়ি হবে না। আর এসব অসভ্যতামি নয় সোনা। এটা আমার ভালোবাসা।
— ছিঃ! এই আপনার ভালোবাসা! ভালোবাসা মানে কি শুধুই শারীরিক চাহিদা!
— আমাকে ভালোবাসার মানে বুঝাতে গেলে যে আবারও আমার প্রেমে পড়ে যাবি। তোর কি মনে হয় অভিমান করে শাড়ি ফেলে দিলেই আমি কষ্ট পেয়ে যাবো! কখনই না। আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিস। এখন আমার ভালোবাসা নিতে শিখে যা।
— ছাড়ুন বলছি আমাকে।
— না ছাড়বো না। আমাকে নিজের নেশায় ফেলে দিয়ে এখন আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছিস! ততোক্ষণ তোকে ছাড়বো না যতোক্ষণ না আমার অশান্ত মন শান্ত হচ্ছে।
— প্লিজ ছাড়ুন আমাকে! কেনো বুঝতে পারছেন না কেউ দেখলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
— দেখলে দেখুক। সবাইকে বলে দেবো আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি।
— আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
— ভালোবাসিস না? (কথাকে ছেড়ে দিয়ে কথার দুই বাহু ধরে বললো নীল)
— না আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
— কালকে সকালেও হয়তো তুই বলেছিলি আমাকে ভালোবাসিস।
— হ্যাঁ বলেছিলাম। আর সাথে এটাও বলেছিলাম আর কখনও ভালোবাসার দাবি নিয়ে আপনার সামনে আসবো না।
— এবার ভালোবাসার দাবি নিয়ে আমি তোর সামনে আসবো। একবার নয় বারবার আসবো। আর তোকে সেই ভালোবাসার ডাকে সাড়া দিতেই হবে। (কথাকে আবারও নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো নীল)
— এমনটা কখনই হবে না। আমি আপনাকে আর ভালোবাসি না।
— তুই আমাকে আগেও পাগলের মতো ভালোবাসতি আর এখনও ভালোবাসিস। শুধু তোর ভালোবাসায় অভিমানের মরিচা ধরে গেছে। সমস্যা নেই। আমার ভালোবাসা দিয়ে তোর সব অভিমান দূর করে দেবো।
নীল এই সব কথাগুলো আমাকে জরিয়ে ধরেই বলছিলেন। নীল এর হাতের বাঁধন একটু শিথিল হয়ে এলেই তাকে নিজের থেকে সরিয়ে তার গালে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলাম। নীল গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে।
— কি মনে করেন আপনি নিজেকে? আমাকেই বা কি মনে হয় আপনার! রাস্তার মেয়ে আমি? নাকি সত্যি কোনো পতিতা? পতিতা বলে গালি দিয়েছিলেন আপনি আমাকে। ভুলে যাই নি কিছুই। আপনার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করতে বসেছিলাম আমি। আপনার মতো একটা ইমোশোনলেস পাথরের জন্য আমি আমার জীবন দিতে বসেছিলাম। কিন্তু এখন আর সেই আগের মতো বোকামি করবো না। আপনাকে আর কখনই ভালোবাসবো না আমি। কখনই না!
— শ্রাবণের প্রতিটি মেঘের মতো তুই আমারই থাকবি। আর তোর সকল অভিযোগ শোনার জন্য আমি তোর পাশে আছি।
কথাগুলো বলে নীল একটা মুচকি হাসি দিয়ে আমার কপালে তার ঠোঁট ছুইয়ে দিলেন। এসব আমি সহ্য করতে পারছি না। নীল কে একটা ধাক্কা দিয়ে আমার সামনে থেকে সরিয়ে তার ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম।
?
?
কাল রাতে কাব্য ভাইয়ার তানিয়া আপুকে লেখা চিঠিটা পড়ার পর থেকে রাতে আর ঘুমোতে পারি নি। আব্বু আর কাব্য ভাইয়া ফুপি আম্মুর বাড়িতে গিয়েছিল রাতে আর ফিরে নি। তাই ভাইয়াকেও কিছু জিজ্ঞেস করতে পারি নি। ভেবে রেখেছিলাম সকাল হতেই তানিয়া আপুকে সব জিজ্ঞেস করবো। সে জন্যই সকাল সকাল খান বাড়িতে এসেছিলাম। কিন্তু দুতলায় উঠতেই নীল এসব কিছু করে বসলেন। অসহ্য, জাষ্ট অসহ্য। এই লোকটা দিন দিন আমার বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। একদিন সত্যি এই লোকটাকে আমি খুন করবো। পরে না হয় ভালো উকিল ধরে জেল থেকে ছাড়া পাবো।
”
”
”
”
”
নিতুর ঘরে গিয়ে ধপ করে বিছানার উপর বসে পরলাম। রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছি। কিন্তু উপকার পাচ্ছি না। নীল এর বাচ্চার সাহস কতোবড় আমাকে এভাবে জোর করে কিস করলো। চড় খাওয়ার পরেও আবার দাঁত কেলানো হচ্ছিল। লাইফের প্রথম চুমু নিয়ে একটা মেয়ের কতো জল্পনা কল্পনা থাকে। আর আমার সেই কল্পনা তে নর্দমার পঁচা পানি ফেলে দিলো। উফফ!
— কি গো ভাবি, বসে বসে কি ভাইয়ার সাথে বাসরের স্বপ্ন দেখছো নাকি? (নিতু)
— চুপ পেত্নি একদম বাজে বকবি না।
— এই কথা এদিকে তাকা তো। এ মা! তুই স্বপ্নে কি করছিলি বলতো!
— কিহ! কি বলছিস এসব?
— আমাকে বোকা বানাস না। তোর ঠোঁট ফুলে আছে আবার কোনায় রক্ত লেগে আছে। সত্যি করে বলতো নীল ভাইয়া তোকে কিস টিস করে নি তো!!
মরেছি! আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম নীল কিস করার সময় কামড় বসিয়ে দিয়েছিলেন। আর সেটা কি না নিতু দেখে ফেললো! এখন কি হবে!
— চুপ করে আছো কেনো ভাবি বলো? ভাইয়া বুঝি আদর করে দিয়েছে?
— পাকনামো হচ্ছে তাই না! তোর ভাইয়া যেই নিরামিষ। আমি পরে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি। আর কিছু হয় নি।
— যদিও বিশ্বাস করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই তবুও মানছি। এই কথা জানিস তুলির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
— কি বলিস! কবে! কার সাথে?
— আরেহ কালকে হঠাত করে তুলিকে দেখতে এসেছিল। সেখানেই পছন্দ করে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে রেখে গেছে।
— কিন্তু এতো কিসের তাড়া ছিল? তুলির বয়স তো এখনও কম। আর কয়েকটা দিন যেতে পারতো!
— কম কোথায়? এই সময়েই মেয়েদের বিয়ে দেয়। তায়েবা আপু তো এই সময় গর্ভবতী ছিলেন। তানিয়া আপুর গায়ের রং টা একটু চাপা বিধায় এতো দিন লাগলো।
— তবুও একটু বেশি তাড়াহুড়া করে ফেললো। সামনে মাসেই ফাইনাল পরীক্ষা।
— শুনেছি পরীক্ষার আগেই নাকি বিয়ে হয়ে যাবে।
— কাজ টা কি ঠিক হলো?
— বেঠিক হলেই বা কি করার, ফ্যামিলি ম্যাটার! আর তুই কালকে কোথায় ছিলি? সেই যে আমাদের বাড়ি থেকে গেলি আর তো ফোনও করলি না।
— তেমন কিছুই না একটু ব্যস্ত ছিলাম।
“কেমন আছিস কথা?” — তানিয়া।
— আরেহ তানিয়া আপু যে! আমি ভালো আছি তুমি কেমন আছো?
— আমি,, ভালোই আছি। নিতু! তোকে ছোট মা ডাকছে। যা শুনে আয় কি বলছে।
— মাও না ডাকার আর সময় পায় না, কথা এসেছে একটু আড্ডা দেবো তবুও।
— এতো কথা বলিস না তো যা জলদি, নয়তো ছোট মা রাগ করবেন।
— হুহ।
— কেমন আছিস কথা?
— ভালো আছি। তুমি ভালো আছো তো?
— হ্যাঁ! চাচি কেমন আছে?
— হুম ভালো।
— আর চাচা?
— ভালোই।
— ওহ। আর সবাই ভালো আছে বাসায়?
— হুম। আচ্ছা তানিয়া আপু দুলাভাই এর নাম টা জানো কি?
— উনার নাম তো কাব্য! না মানে রাজীব।
— হ্যাঁ তোমার বরের নাম রাজীব আর আমার ভাইয়ার নাম কাব্য।
— হ্যাঁ সেটাই। কাব্যর কি খবর ভালো আছে তো!
— নিজের স্বামীর নাম তুমি কি করে ভুলতে পারলে? স্বামীর জায়গায় পরপুরুষের নাম কেনো এলো তোমার মুখে?
কথার তীরের মতো ছোড়া প্রশ্নে তানিয়া থতমত খেয়ে যায়। আসলেই তো বিয়ের পর স্বামীর নামের জায়গায় তার মুখ দিয়ে পরপুরুষের নাম বের হলো!
— আসলে আমি,, মানে,,
— থাক আর বলতে হবে না। রাজীব ভাইয়া কেমন আছে তাই বলো! ভালোবাসে তো তোমাকে?
— হ্যাঁ ভালো আছে। অনেক ভালোবাসে আমাকে।
— আর তুমি? তুমি ভালোবাসো তাকে?
— ভালো না বাসার কি আছে। উনি আমার স্বামী।
— উত্তর পাই নি আমি। আচ্ছা ছাড়ো ওসব কথা। কাব্য ভাইয়াকে কেনো ভালোবাসলে না?
তানিয়া কিছু চুড়ি নাড়চাড়া করছিল, কথার করা প্রশ্নে চুড়িগুলো ঝনঝন করে মেঝেতে বিছিয়ে পরলো। আর তানিয়া চমকে কথার দিকে তাকালো।
— এসব কি বলছিস?
— সব জেনে বুঝেও ওবুঝের মতো করছো কেনো? কেনো চলে গেলে না কাব্য ভাইয়ার হাত ধরে দূরে কোথাও? কেনো দিলে নিজের ভালোবাসাকে বিসর্জন?
— হুশ! আস্তে বল। কেউ শুনতে পারলে আগুন লেগে যাবে আমার সংসারে।
— আর যেই আগুন তোমার আর কাব্য ভাইয়ার মনে জ্বলছে সেটা কিভাবে নেভাবে তুমি?
— এসব তোকে কে বলেছে কাব্য?
— কেউ বলে নি। তোমাকে দেওয়া কাব্য ভাইয়ার চিরকুটে লেখা ছিল। কেনো করলে এই বিয়েটা আপু? কেনো পালিয়ে গেলে না ভাইয়ার হাত ধরে?
— এই সমাজ আমার আর কাব্যর সম্পর্ক কখনই মেনে নিতো না রে কথা। আমি যে কাব্যর চেয়ে বয়সে বড়। এটা যে মানানসই না।
— আজকের সময়ে এসেও তোমার চিন্তা ধারা এই ধরনের! কেনো করলে সমাজের পরোয়া? তোমরা দুজন আলাদা হয়েছো এতে সমাজের কেউ তো কষ্ট পাচ্ছে না। কষ্ট পাচ্ছো তুমি আর ভাইয়া।
— কাব্য আর আমার মধ্যে প্রেমের তো কোনো সম্পর্ক ছিল না। ছিল শুধু কিছু আবেগ, না বলা কিছু কথা। অপূর্ণতায় ভরা কিছু মোহ।
— হ্যাঁ শুধুই মোহ যেটা ভালোবাসার থেকে কম কিছু ছিল না।
— চুপ কর কথা। কাব্য আর আমার কোনো ভবিষ্যত ছিল না একসাথে।
— একবার চেষ্টা করেই দেখতে। হয়তো সুন্দর একটা ভালোবাসায় পরিপূর্ণ ভবিষ্যতের দেখা পেতে।
— সব ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না কথা। কিছু কিছু অসম্পূর্ণ ভালোবাসার কাহিনী সময়ের পাতায় চাপা পরে যায়।
— কেনো পূর্ণতা পায় না ভালোবাসা বলতে পারো?
— চার আঙুলের এই ভাগ্য বড়ই কঠিন রে। কাব্যকে বলিস তার তানুকে ক্ষমা করে দিতে।
— তুমি কি ভাইয়াকে ভুলতে পারবে?
— আমি রাজীবকে ভালোবাসতে চাই নতুন করে।
— অন্তত এই উত্তর টা তো দাও।
— প্রথম প্রেম ভোলা যায় না কথা। শেষ নিশ্বাস অব্দি মনের কোনো এক কোনায় ধুলোর আস্তরে পরে থাকে।
–,,,,
— কিন্তু নতুন করে ভালোবাসতে তো বারণ নেই।
— বারণ আছে। নতুন করে কারো প্রেমে পড়া বারণ আছে। তুমি আর কাব্য ভাইয়া যেই বোকামি করেছো সেটা আমি পারবো না করতে।
— কি বলছিস এসব! সব কথা নিজের মনে চেপে যা কথা। এসব জানাজানি হলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
“কিসের কেলেঙ্কারি হবে?”– নিতু?
— কিছু না। কথা আর আমি এমনেই রাজীবের কথা বলছিলাম। (তানিয়া)
— নিতু আমার শরীর টা ভালো লাগছে না। আমি বাসায় চলে যাচ্ছি।
— আরেহ আড্ডা তো দেওয়াই হলো না। কথা!
।
।
।
।
।
খান বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাগলের মতো ছুটছি রাস্তা দিয়ে। কিসব বললো তানিয়া আপু এগুলো! সব ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না! না এটা হতে পারে না। দ্বিতীয় বার কাউকে ভালোবাসা! অসম্ভব। নীল ব্যতিত অন্য কারো সাথে জীবনের এক মুহূর্ত কাটানোর কথাও আমি চিন্তা করতে পারি না। নীল কে না পেলে সারাজীবন একা কাটিয়ে দেবো আমার এক তরফা ভালোবাসাকে আগলে ধরে। তবুও অন্যকাউকে আমার জীবনে কল্পনাও করতে পারি না।
রাস্তা দিয়ে ছুটতে ছুটতে আচমকা কথা রাস্তার ঠিক মাঝখানে একটা গাড়ির সামনে এসে পরে। গাড়ির ড্রাইভার ঠিক সময়ে ব্রেক কষায় একটুর জন্য কথার এক্সিডেন্ট হতে হতে বেঁচে যায়। যদিও কথার চোট লাগে নি কিন্তু তানিয়ার বলা কথা গুলোতে কথার কষ্ট দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। নীলকে ছাড়া সে কিভাবে বাঁচবে সেটা চিন্তা করতেই রুহ কেঁপে উঠছে কথার।।
?
?
খান বাড়িতে নজরুল সাহেব তাহেরা বেগম আর নয়নতারা বেগম সবাই একসাথে বসে আছেন। তাহেরা বেগম রাইসা কে কোলে নিয়ে খেলছেন আর নয়নতারা বেগম পাশে বসেই আমতা আমতা করছেন।
— কিছু বলতে চাও নয়ন? (নজরুল সাহেব)
— আসলে,, বলছিলাম কি, আমাদের তো ব্যবসা বাণিজ্য বেশ ভালোই চলছে। আপনার পর তো সেগুলো নীল আর নীরবই দেখবে।
— হ্যাঁ সেটা তো ঠিক আছে। মূল কথাটা বলে ফেলো।
— বলছিলাম নীল এর বিয়ে টা করিয়ে দিলে কেমন হয়?
— কি বলছিস তুই নয়ন? নীলের তো পড়া শেষ হয় নি এখনও। (তাহেরা বেগম)
— আপা তোমার কথা ঠিক আছে কিন্তু বিয়ে করিয়ে বউ আনলে বউ তো আর না খেয়ে মরবে না। অঢেল টাকা পয়সা আছে তায়েবার আব্বুর। আমি বিষয় টা নিয়ে ভাবছি কারণ ছেলে বড় হয়েছে। উল্টা পাল্টা কিছু করলে বংশের নাম খারাপ হবে।
— তুমি ঠিক বলছো নয়ন। তা মেয়েও তো দেখতে হবে। (নজরুল সাহেব)
— মেয়ে আমার দেখাই আছে। আমার বোনের মেয়ে মুনতাহা,, ওকে আমার ভীষণ পছন্দ। আমি চাই আপনি আর আপাও মুনতাহা কে দেখেন তারপর বলেন আপনাদের কেমন লাগে।
— তাহলে তুই আজকেই মুনতাহাকে আমাদের বাড়িতে আসতে বল নয়ন। আমরাও দেখি নীল এর সাথে কেমন মানায় মুনতাহা কে। (তাহেরা বেগম)
বোনের মেয়ের সাথে নিজের ছেলের বিয়ের কথাটা উঠাতে পেরে নয়নতারা বেগম যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। যতো দ্রুত নীল আর মুনতাহার বিয়ে দিতে পারবে সে ততো দ্রুত কথা কে নীল এর জীবন থেকে সরাতে পারবে। নীল এর মতি গতি তার সুবিধের ঠেকছে না। আজকে সকালেও কথা নীল কে একঘরে দেখেছে সে।
চলবে..