#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০ (চিঠি নং ০৪)
শোনো হে প্রিয়া,
(“বিবেকের তরে মন”)
যুক্তির কষ্টিপাথরে তুমি স্বাধীন ইচ্ছেগুলোর পায়ে শেকল বেঁধো না। আষ্টেপৃষ্টে সমুদয় আশাগুলোকে আনকোরা আতংক গ্রাস করে ফেলেছে প্রায়। আর তুমি বারংবার আমার ইচ্ছেঘুড়ির নাটাই টেনে ধরছো। বিশ্বাস করো, আস্বাদিত বেদনার বিঘ্নিত ইচ্ছেগুলো সজাগ হয়ে উঠছে। মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে পরিনত শখ। তবু তুমি লাগাম টেনে ধরবে ওদের? ওদের বাঁচার প্রত্যাশা প্রত্যাখ্যাত হলে কোন যুক্তিতে তুমি আমার হতাশায় ঢলে পড়া ঠেঁকাবে?
হকের মানদণ্ডে তুমি ভালবাসা আর স্বপ্নকে মাপতে পারো না। হয়ত তোমার যুক্তিবলে দাবী দাঁড় করাতে পারো, উদোরের সঙ্গে বিবাদ বাঁধতে নেই বলে আমাকে বোঝাও; কিন্তু তুমি নিজেও জানো না আমার মর্ম। আমি রূঢ়ভাষিণী হতে পারি নি বলে, তোমার মত শিক্ষিতা নই বলে, পটু বাগ্মিতা না হবার কারণে আজ যে বিধির আগাম নোটিশ পড়াচ্ছো আমায়; স্বঘোষিত সেচ্ছাচারীর মত বিচরণ করতে চাইছো আমার একলা রাজ্যে…।
অতিশয়োক্তির দরুন আবারো কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে জেনেও আমি তোমায় বলবো, চিঠি লিখবো…।
শত অভিমান তো আমার, যাচিত সুখের উদযাপন তোমার। হতাশার গ্লানিবোধে গ্রাসিত আমার পৃথিবী, উপদেশদাতা হয়ে মাঝেমাঝে শোনাও কটুবাক্য। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিনতির দায় চাপে সবাই আমাকে, তোমায় কেবলই অপরিক্কতার অজুহাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধী বলে না।
রিক্ত যাতনার অসমাদৃত বয়নে আমি কেবলই পাই লাঞ্চনার শক্ত আঘাত। তুমি অসম্পৃক্ত অদেখা কোনো মোহজালে আমায় কারো বাহুডোরে বাঁধতে দেখবে একদিন। আবার দেখবে আমার ব্যাথিত প্রতারিত অম্লান মুখ। আবেগ তাড়নায় তাড়িত, মোহে প্রভাবিত সেই আমি – ক্ষীয়মান আশার আলোতে তাও আমি আঁকড়ে ধরি, পুনরায় সূচিত হয় প্রতীক্ষার প্রহর। তোমার ভাষায় আমি অসংজ্ঞায়িত, নিশ্চেষ্ট নিশ্চেতন কোনো অনূদিত আশায় চেয়ে থাকি…।
কিন্তু তুমি অনুধাবন করো কিংবা না করো, আমিহীনার নিস্পৃহতায় তুমি সংজ্ঞাহীন। আমাতেই তোমার শুন্যতার পূর্ণতা।
[ ভাবার্থ- আমরা কিছু কিছু সময় বিবেকের চিন্তা এতই প্রাধান্য দেই যে নিজেদের ভুলে যাই। কিন্তু আমাদের জানা উচিৎ, আমাদের সুখী করতে মনের গুরুত্বও কম নয়। মন ও বিবেকের সমন্বয়েই আমরা সুখী। আর যখন বিবেকের সাথে মনের দূরত্ব হয়, তখন গুরুত্ব পায় অবহেলিত হতাশা আর কষ্টগুলো।
কিন্তু মনমতো চলাতেও কল্যান নেই। আবেগেই সর্বদা প্রভাবিত হয়ে থাকে সে।
তাই আমাদের মন ও বিবেক দু’টোই প্রাধান্য পাবে কর্মক্ষেত্রে। ]
~ মারইয়াম জামীলা (Maisha Zafreen)