#আরোহী_ইসলাম
#শেষ_বেলা
#পর্ব: ছয়
হুর রিনাকে না দেখে বসা থেকে উঠে রিনাকে খুজতে লাগলো কিন্তু রিনাকে কোথায় দেখলো না। হুর চিন্তিত সুরে বললো কোথায় গেলো রিনা?
হুর ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়। হুরের কাছে ফোনও নেই যে রিনাকে কল দিবে বাড়ির রাস্তাও চিনে না যে বাড়িতে যাবে। হুরের নিজেকে অনেক অসহায় মনে হচ্ছে। হুর মনে মনে বললো ফারহাজ আপনি কোথায়? আমায় এইখান থেকে নিয়ে যান।’
এদিকে
“ফারহাজ ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে এক ঘন্টা প্রায় হয়ে গেলো এখনো অফিসের কিছু হলো না। ফারহাজের ম্যানেজার বলে উঠলো স্যার এখনো তো বোম ফাটলো না আমি কি ভিতরে যাবো?
ফারহাজ বিরক্ত চোখে তাকিয়ে বললো
‘ না কেউ যাবে না।’
তারপর ফারহাজ ওই নাম্বারে কল দিলো অচেনা লোকটা কল ধরে হোহো করে হেসে বললো
‘ মিস্টার ফারহাজ খুব ভয় পেয়েছিলে তাই না?
ফারহাজ লোকটার কথা শুনে রেগে বললো
‘ কে আপনি? আর বোম ফাটলো না কেনো?
‘ আরে আস্তে গলার সুর নিচু করেন। বোম ফাটবে কিভাবে? ওইখানে তো বোম ছিলো না আমি তোকে ভয় দেখিয়েছি আর তুই কতোটা ভিতু, বলেই পৈশাচিক হাসি দিতে লাগলো।
ফারহাজ বললো
‘ কে তুই আর আমার সাথে এইরকম করতেছিস কেনো?
অচেনা লোকটা বললো
‘ আমার সম্পর্কে জানা এতো সহজ নয়।’
এই বলে লোকটা কল কেটে দিয়ে নাম্বার বন্ধ করে রাখলো। ফারহাজের প্রচুর রাগ হচ্ছে। ফারহাজ সবাই কে বললো সবাই কাজ করেন যান আর অফিসে বোম লাগানো নেই। ফারহাজের কথায় সবাই অফিসে চলে গেলো। ফারহাজ মিষ্টিকে বলে বাড়ির দিকে রওনা দিলো।
হুর একটা রিকশার কাছে এসে ফারহাজের বাসার ঠিকানা দিলো। লোকটা বললো এইখান থেকে তো অনেক দূরে। আর রিক্সা করে যাওয়া তো ওতটা পথ সম্ভব না আপনি অন্য গাড়িতে যান আপা।
হুর আকুল কন্ঠে বললো
‘প্লিজ না করবেন না। আমি এখান কার কিছুই চিনিনা আমি আপনাকে বেশি টাকা দিবো তবুও রাজি হয়ে যান।’
হুরের কথায় রিক্সা ওয়ালা রাজি হয়ে গেলো। তারপর হুরকে রিকশায় উঠতে বললো।
এদিকে
রিনা বাড়ি এসে তার মাকে বলতেছে আম্মু তোমার সাথে কথা আছে
রিনা মা বললো
‘ কি কথা বল?
রিনা তার মাকে বললো
‘ আম্মু ভাবিকে পার্কে ফেলে এসেছি। আমাদের ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে তাড়াতাড়ি পার্টি দাও।’
হুরের শাশুড়ি মেয়ের কথা শুনে অবাক হয়ে বললো
‘ কি বলতেছিস?
‘ ঠিকই বলতেছি ভাবিকে পার্কে রেখে এসেছি। ওনি তো তেমন কিছু চিনে না এখন আর আশা পারবে না বাড়িতে আর আমাদের পথের কাটা নেই।’
খুশি হয়ে বললো রিনা।
রিনা এইগুলো বলতেছে হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো রিনা দরজা খুলতেই দেখে ফারহাজ দাঁড়িয়ে আছে। রিনা ফারহাজ কে দেখে বললো কি হয়েছে ভাইয়া? চোখ মুখ লাল কেনো তোমার ?
ফারহাজ বললো
‘ ভিতরে যেতে দে।’
তারপর ফারহাজ ভিতরে আসলো। ফারহাজের আম্মু ফারহাজকে দেখে বললো কি হয়েছে তোর? সব ঠিক আছে তো?
ফারহাজ তার মাকে সব খুলে বললো। ফারহাজের মা সব শুনে চুপ করে রইলো। ফারহাজ তার মাকে বললো আম্মু হুর কোথায়?
ফারহাজের মা বললো
‘ আছে কোথাও তুই ফ্রেশ হয়েনে।’
রিনা কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো কারন তার ভাই যদি যানে হুরকে সে রেখে আসছে অচেনা জায়গাই তাহলে তাকে শেষ করে দিবে। রিনা বললো ভাইয়া তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।
ফারহাজের কেমন যেনো লাগতেছে। ফারহাজ আচ্ছা বলে ফ্রেশ হতে গেলো। ফারহাজ ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িংরুমে এসে বসে তারপর মিসেস রহিমাকে ডাকে তিনি রুম থেকে এসে বলে কি হয়েছে ফারহাজ?
‘ হুর কোথায় ওকে দেখতেছি না সন্ধ্যা হয়ে গেছে। ‘
‘ ওই তো রিনার সাথে বাহিরে গিয়েছিলো।’
মিসেস রহিমা বললো। তার কথা শুনে ফারহাজ হুরকে ডাক দিলো তবুও হুর সারা দিলো না। ফারহাজ ছাদে এসে দেখে হুর নেই। ফারহাজ সব রুম চেক করে দেখে কোথাও হুর নেই। ফারহাজ রিনাকে ডাক দেয়। রিনা ফারহাজের ডাকে তার কাছে এসে বলে বলো ভাইয়া?
‘ হুর কোথায়?
কিছুটা রেগে বলে।
রিনা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। ফারহাজ আবারো বলবে তার আগেই হুর এসে বলে কি হয়েছে?
হুরের কন্ঠ শুনে সবাই হুরের দিকে তাকিয়ে আছে। ফারহাজ চিন্তিত সুরে হুরকে বললো কোথায় গিয়েছিলা তুমি?
হুর শ্বাস নিয়ে রিনার দিকে তাকিয়ে বলে আমি একটু বাহিরে গিয়েছিলাম একটু কাজ ছিলো।
এদিকে রিনা তো ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে হুর যদি ফারহাজকে বলে দেয় তাকে রেখে সে চলে এসেছে তাহলে তো ফারহাজ তাকে অনেক বকবে। হুরের কথায় ফারহাজ সন্দেহ চোখে তাকিয়ে বললো যাও ফ্রেস হয়ে আসো।
হুর বললো
‘ আচ্ছা।’ তারপর হুর রিনার দিকে তাকিয়ে চুপচাপ ফ্রেস হতে গেলো। হুর ভাবতেছে রিনা কিভাবে এতোটা খারাপ হতে পারে? ও জানে যে সে এই জায়গার বেশি কিছু চিনে না তাহলে সে কিভাবে তাকে ফেলে আসতে পারে। হুর দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো আমার মনে হয় বেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি কি থাকতে পারো শেষ বেলা পযর্ন্ত ফারহাজের সাথে নাকি বেলা শেষ হয়ে যাবে? হুরের চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো। হুর শাড়ির আচর দিয়ে পানি মুছে ফ্রেস হতে গেলো।
এদিকে
ফারহাজ বসে আছে। হঠাৎ ফারহাজের ফোনে কল দিলো। ফারহাজ নাম্বার দেখে খুশি হয়ে গেলো কারন নাম্বারটা তার খুব পরিচিত একজনের। ফারহাজ ফোন রিসিভ করে বললো কেমন আছেন মিস্টার আফজাল?
মিস্টার আফজাল বললো
‘ আলহামদুলিল্লাহ্।’
” মিস্টার আফজাল হলো ফারহাজের বিজনেস পাটনার”
তারপর আফজাল রহস্যময় কন্ঠে বললো
‘ আমি বাংলাদেশে আসছি। তোমার সাথে দেখা হবে ডিয়ার।’
ফারহাজ কিছুটা অবাক হয়ে বললো
‘ আপনি এসেছেন আগে বলবেন না আমাকে?
‘ সময় ছিলো না আজ রাত আট টায় ** এইখানে এসো কথা আছে।’
ফারহাজ আফজালের কথা শুনে আচ্ছা বলে কল কেটে দিলো। তারপর ফারহাজ রুমে এসে ল্যাপটপ অন করে কাজ করতে লাগলো।
বেশ কিছুক্ষন পর
ফারহাজ মিস্টার আফজালের সাথে দেখা করার জন্য রেডি হচ্ছে। হুর ফারহাজ কে বললো আপনার এখন কোথাও যাওয়া লাগবে না।’
ফারহাজ বললো
‘ আমার কাজ আছে। আমি একটু পর চলে আসবো।’
হুর তো নাছোড়বান্দা সে ফারহাজকে যেতে দিবে না। ফারহাজ হুরকে বললো তুমি যদি যেতে দাও তাহলে তোমার জন্য চকলেট আনবো।’
হুর খুশি হয়ে বললো
‘ আচ্ছা। সাবধানে যাবেন আর তাড়াতাড়ি চলে আসবেন। ফারহাজ মুচকি হাসলো।
কিছুক্ষন পর
ফারহাজ মিস্টার আফজালের বলা জায়গা আসলো। ফারহাজ সামনে তাকিয়ে দেখে মিস্টার আফজাল দাঁড়িয়ে আছে। মিস্টার আফজাল ফারহাজকে দেখে মুচকি হেসে বললো আরে মিস্টার ফারহাজ আপনার জন্যই তো অপেক্ষা করতে ছিলাম।’
ফারহাজ কিছু বললো না। তারপর আফজাল আর ফারহাজ একটা চেয়ার টেনে বসলো। আফজাল রহস্য ময় হেসে বললো আপনি আমার অনেক বড় শত্রু সেটা কি জানেন?
‘ মানে?
প্রচন্ত অবাক হয়ে বললো ফারহাজ।
‘ আপনি নিজের প্রান নিজে হারাতে এসেছেন।
বলেই হাহাহা করে হেসে দিলো। ফারহাজ অবাক হয়ে আছে। ফারহাজ মিস্টার আফজাল কে কিছু বলবে তার আগেই ফোনে কল বেজে উঠলো ফারহাজ ধরে বললো হ্যাঁ বলো শফিকুল।
শফিকুল কান্না করে দিয়ে বললো
‘ স্যার আমাকে বাঁচান ওরা আমাকে শেষ করে দিবে সাথে আপনাকেও।
ফারহাজ বললো
‘ কি হয়েছে শফিকুল বলো।
‘ স্যার কালো মাল পাচার কারির লিডার হচ্ছে মিস্টার আ…
শফিকুল আর কিছু বলবে তার আগেই কেউ ওকে গু’লি করে দিলো।গুলির শব্দ ফারহাজের কানে ভেসে আসতেই ফারহাজ জোড়ে বলে উঠলো,,,
#চলবে….