#আরোহী_ইসলাম
#শেষ_বেলা
#পর্ব:তিন
ফারহাজ বসে আছে ঠিক সে সময় একটা মেয়ে এসে হেসে বললো হেই ফারহাজ কি অবস্থা তোর?
‘ আলহামদুলিল্লাহ্ মিষ্টি দিদি। তোমার?
ফারহাজ বসা থেকে উঠে বললো।
‘ আলহামদুলিল্লাহ্।’
তারপর ফারহাজ আর মিষ্টি কথা বলতেছে আর হুর গাছের আড়াল থেকে ওদের কথা শুনার চেষ্টা করতেছে। হুর মনে মনে বললো ফারহাজ কি বলতেছে কিছুই তো শুনতে পারতেছি না। হুর ফারহাজের দিকে তাকিয়ে দেখে ফারহাজ ওই মেয়েটাকে কিস করতেছে। হুর তা দেখে চমকে গেলো এবং অনেক রেগে গেলো। হুর তাড়াতাড়ি করে গাছের আড়াল থেকে এসে ফারহাজকে ধাক্কা দিতেই ফারহাজ নিচে পরে গেলো। হুর ওই মেয়েটার গায়ে হাত তুলতে যাবে ঠিক সে সময় ফারহাজ হুরের হাত ধরে বললো
‘ কি করতেছো হুর? আর তুমি এইখানেই বা কেনো?
‘ আমার হাত ছাড়ুন আজ যদি আমি আপনার পিছু না নিতাম তাহলে আপনার ভালো মানুষের পিছনে থাকা খারাপ রুপটা দেখতে পারতাম না।’
প্রচন্ত রেগে বললো হুর।
ফারহাজ হুরের হাত ছেড়ে বললো
‘ কি করেছি আমি?
‘ আপনি এখন এই মেয়েটাকে কিস করতে গিয়েছিলেন ছিহ্।’
হুর বললো।
ফারহাজ হুরের কথায় রেগে বললো
‘ চুপ থাকো। দিদির চোখে ময়লা পরেছিলো যার জন্য আমি দিদির চোখ থেকে ময়লা বের করে দিতে ছিলাম আর তুমি কিনা…
হুর মাথা নিচু করে নিলো সত্যি সে ফারহাজকে ভুল বুঝছে হুরের হঠাৎ মনে পরলো ওই ভিডিওটার কথা হুর তখন মিষ্টিকে বললো ফারহাজ যা বলছে তা কি সত্যি?
‘ হ্যাঁ তুমি একদম ভুল দেখেছো তাই না ফারহাজ।’
ফারহাজের দিকে তাকিয়ে বললো মিষ্টি।ফারহাজ রেগে হুরকে বললো তুমি আমাকে এই বিশ্বাস করো যেখানে বিশ্বাস নেই সেই খানে থাকা সম্ভব নয়।’
বলে ফারহাজ চলে গেলো।
হুর ফারহাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কান্না করে দিলো। হুর মনে মনে বললো কি করবে এখন সে।
—————-
ফারহাজের মা হুরকে দেখতে না পেয়ে হুরের চাচি শাশুড়িকে বললো
‘ হুর কোথায়? বাড়িতে দেখতেছি না।’
‘ আপা আমি তো একটু আগেই রান্নাঘরে দেখেছিলাম এখন আবার কোথায় যাবে নিজের রুমেই আছে হয়তো।’
মিসেস রাহিমার কথা শুনে হুরের শাশুড়ি বললো
‘ আমি রুমে গিয়েছিলাম কই দেখলাম না তো মনে হয় কোথাও গেছে।’
‘ কই যাবে? হয়তো ছাদে গেছে,
এই বলে মিসেস রহিমা রান্নাঘরে চলে গেলেন।
হুরের শাশুড়ি রিনার রুমে এসে বললো
‘ রিনা বাড়িতে কোথাও নেই। কোথায় গেলো আবার?
রিনা অবাক হয়ে বললো
‘ মানে ভাবি কোথায় যাবে?
‘ আমি কি জানি
বিরক্ত কন্ঠে বললো রিনার মা।
‘ তুমি চিন্তা করো না ভাবি চলে আসবে তখন জিজ্ঞেস করিও।’
রিনা বললো।
হুরের শাশুড়ি হুম বলে নিজের রুমে চলে গেলো।
‘
‘
মিষ্টি হুরকে বললো
‘ এতো চোখের পানি ফেলো না বলা তো যায় না কখন এই চোখের পানি লাগে, এই বলে মিষ্টি ফারহাজের পিছন পিছনে গেলো। হুর মিষ্টির কথায় কিছুই বুঝতে পারলো না। হুর দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলো। হুর বাড়িতে আসতেই
হুরের শাশুড়ি হুরকে দেখে বললো কোথায় গিয়েছিলা? জানো না এই বাড়িতে আমাকে না বলে কেউ বের হয় না। তুমি বাড়ির বউ হয়ে এইভাবে যখন তখন বাহিরে যেতে পারো না।’
হুর শাশুড়ির কথায় তাচ্ছিল্য হেসে বললো
‘ একটু কাজে বাহিরে গিয়েছিলাম। মেয়ে ছেলের বেলা তো নিয়ম না কিন্তু বউয়ের বেলা আপনাদের যতো নিয়ম। রিনা তো রাত দশ বারোটায় বাহিরে ফ্রেন্ডদের সাথে থাকে কই তখন তো কিছু বলেন না।’
‘ ও বাড়ির মেয়ে আর তুমি বাড়ির বউ। মুখের উপরে কথা বলার সাহস পাও কোথা থেকে তুমি?
ফারহাজ আসুক তারপর দেখে নিবো তোমাকে
রাগান্বিত কন্ঠে বলে উঠলো শাশুড়ি।
কথার মাঝেই ফারহাজ আসলো। ফারহাজকে দেখে হুরের শাশুড়ি ন্যাকা কন্ঠে বললো
‘ ফারহাজ বাবা তোর বউ আমার মুখের উপর দিয়ে কথা বলে। বিয়ে হতে না হতের শাশুড়ির সাথে খারাপ আচরন করে।’
ফারহাজ মায়ের কথায় হুরের দিকে তাকাতেই দেখে হুর চুপ করে আছে।ফারহাজ বললো মা ও বাচ্চা বুঝেনি।’
‘ হ্যাঁ এখন তো বাচ্চা বলবি। তোকে যে কি করেছে এই মেয়ে কে জানে,বলে তিনি চলে গেলেন।
হুর ওর মা কে থাকার রুমে এসে বসে ভাবতেছে সে এখন কি করবে। হুরের মা হুরকে দেখে বললো
‘ তুই কোথায় গিয়েছিলি ? সবাই তোকে আর ফারহাজকে খুজতেছে।’
হুর তার মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে বললো
‘ মা আমার ভালো লাগতেছে না। তুমি একটু তোমার কোলে ঘুমাতে দিবে অনেক দিন ঘুমাই না।’
‘ আচ্ছা।’
মুচকি হেসে বললো হুরের মা। হুর তার মায়ের কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে নিলো।
গভীর রাতে হুরের ঘুম ভেঙ্গে যায়। হুর পাশে তাকিয়ে দেখে তার মা নেই ফারহাজ ঘুমানো। হুর ফারহাজের দিকে তাকাতেই থমকে যায় ফারহাজ বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছে। মুখটা অনেক মায়াবী লাগতেছে কে বলবে এই ছেলেটা হুরকে ঠকাচ্ছে। হুর ফারহাজের দিকে তাকিয়ে কি মনে করে ফারহাজের কপালে চুমু দিতেই ফারহাজ চোখ খুলে হুরের দিকে তাকাতেই হুর তাড়াতাড়ি করে কিছুটা সরে এসে বললো আপনি ঘুমাননি? আর আমি তো মায়ের রুমে ছিলাম এইখানে কিভাবে?
‘ না আমি চোখ বন্ধ করে ছিলাম। তুমি ঘুম থেকে উঠলে কেনো?
কিছুটা অবাক হয়ে বললো ফারহাজ।
‘ আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছে।’
হুর বললো।
ওহ।
ফারহাজ বললো।
তারপর হুর আবার ঘুমাতে লাগলো।
সকালবেলায় পাখিয কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙলো হুরের হুর তাড়াতাড়ি করে উঠে ড্রয়িং রুমে এসে দেখে মিষ্টি নামক মেয়েটা তার শাশুড়ির সাথে কথা বলতেছে।
এদিকে
ফারহাজ ছাদে দাড়িয়ে আছে হঠাৎ ম্যানাজারের কল আসায় তাড়াতাড়ি করে অফিসে এসে ম্যানাজারকে বললো কি হয়েছে শফিকুল সাহেব?
‘ স্যার আমাদের ** এই অফিসে কালো মালের কারবারি হচ্ছে। আমি আজ জানতে পেরেছি। এইভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে এই বিজনেস শেষ হয়ে যাবে।’
শফিকুল বললো।
‘ হুয়াট..! কি বলছো এই সব আর কারাই বা এই কাজ করবে?
ফারহাজ অবাক হয়ে বললো।
‘ স্যার আমার মনে হয় সিয়ামের দলের কেউ করেছে কিন্তু ওইখানে কেই বা সিয়ামের দলের।’
সন্দেহ চোখে বললো রফিকুল।
‘ শুনো তুমি খোঁজ লাগাও। আর আমিও দেখতেছি কে আমার বিজনেস নষ্ট করতে চাচ্ছে।’
ফারহাজ বললো।
তারপর ফারহাজ রফিকুল কে সব বুঝিয়ে দিয়ে বাড়িতে চলে আসলো।
” হুর মিষ্টিকে বললো
‘ কেমন আছেন আপু?
মিষ্টি হুরকে দেখে বললো
‘ভালো। তুমি?
‘ ভালো।
হুরের শাশুড়ি হুরকে বললো
যাও নাস্তা নিয়ে আসো মিষ্টির জন্য।
হুর আচ্ছা বলে নাস্তা আনতে গেলো। মিষ্টি বললো আরে আন্টি আমি কিছু খাবো না।
‘ তা কি হয় চুপচাপ বসে থাক।’
শাশুড়ি বললো।
তারপর হুর নাস্তা এনে মিষ্টিকে দিলো। মিষ্টি হুরকে বললো তুমি কোন পযর্ন্ত পড়াশুনা করেছো?
হুর বললো
‘ অনার্স সেকেন্ড ইয়ার।’
‘ নিশ্চয়ই ভালো স্টুডেন্ট ছিলে না।
ফারহাজ এসে বললো
‘ হুর অনেক মেধাবী একজন ছাত্রী। ওর কাছে তুইও ফেল হয়ে যাবি।
ফারহাজ হুরের দিকে তাকিয়ে বললো
‘হুর আমি চাই তুমি আমার সাথে অফিসে কাজ করবে। তুমি নিজের পায়ে দাড়াবে।
হুর মুচকি হেসে বললো,,
#চলবে…