#শেষ_বিকেলের_প্রণয়
#আলো_ইসলাম
১৬.
— কিসের দেরি হয়ে যাবে ব্রো? রোহানের কথায় তাশরিফ বলে ছুটি আসলে বলবো সবাইকে একসাথে নিয়ে। আচ্ছা ছুটি কোথায় গেছে জানিস? রোহান হকচকিয়ে উঠে বলে না তো! জানি না কোথায় গেছে শুধু বলেছিলো একটা কাজে বাইরে যাবে। তার বেশি জানি না।
– ওহ! আম্মা বাড়ি ফিরেনি? ভ্রু কুচকে বলে তাশরিফ।
– মা এখনো ফিরেনি৷ কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবে। তোর কি হয়েছে বলতো? আবির বলে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে। তাশরিফ ফোঁস করে একটা নিশ্বাস ছেড়ে বলে সব বলব আর একটু সময় দে। তাশরিফ বেরিয়ে যায় আবারও।
– কি হলো? ব্রো কি বলে গেলো কিছুই বুঝলাম না৷ রোহান বলে বিস্ময় নিয়ে।
– মনে হচ্ছে সুদিন ফিরে আসছে আমাদের রোহান। তাশরিফকে আজ অন্য রকম লাগছিলো। অনেক জরুরি কিছু জানাতে চাই আমাদের ও আবির বলে উল্লাসিত হয়ে।
— আসিফ ছুটির সামনে কয়টা ছবি রাখে। যে ছবিগুলো দেখে ছুটির চোখ আটকে যায় তাতে। বাকরুদ্ধ হয়ে ছবির দিকে তাকিয়ে থাকে।
— আমাকে তোমার ভালো লাগেনি আমি জানি৷ সেদিন তোমার চাহনি তোমার বিহেভিয়ার দেখে বুঝতে পেরেছিলাম। তারপর তোমাদের কিছু না বলে হুট করে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়াও ঠিক হয়নি আমার। তার জন্য সরি। এটা ঠিক ছায়াকে প্রথম দেখেই ভালো লাগে আমার। তবে সব ভালো লাগা যে পরিণতি পায় এমন তো নয়। আমি আবার সরি বলতে চাই গতদিনের ব্যাপারটার জন্য। ছুটি আসিফকে পর্যবেক্ষণ করছে শুধু ভ্রু কুচকে থেকে।
–তোমার কিছু বলার নেই? ছুটিকে চুপ করে থাকতে দেখে বলে আসিফ। ছুটি একটা ছবি তুলে নেয় তার হাতে৷ যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তাশরিফ ছুঁড়ি দিয়ে ইলহামকে খু’ন করছে। ছুটির হাত-পা কাঁপছে৷ সে কি সত্যি দেখছে নাকি স্বপ্ন। নাকি কিছু সময়ের জন্য মতিভ্রম তার।
– কি বিশ্বাস হচ্ছে না তো৷ আমিও তোমার মতো বিশ্বাস করেছিলাম না প্রথমে। কিন্তু যখন তাশরিফের সাথে কথা বলি এই নিয়ে তারপর সবটা ক্লিয়ার হয়ে যায়। ছুটি অবাক চোখে তাকায় আসিফের দিকে। এরপর একটা টেপ-রেকর্ডার বের করে ছুটির সামনে দেয়।
– এখানে একটা রেকর্ড আছে। যেটা শুনলে তোমার কাছে পানির মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে সব। এরপর আসিফ সে রেকর্ডটা চালিয়ে ছুটিকে শোনায়৷ ছুটির যেনো পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়। তাশরিফ ইলহামকে মারা হুমকি দেয়,এরপর যখন খু’ন করে তখন সেটা নিজ মুখে স্বীকারও করে। ছুটির চোখ দুটো ছলছল করে উঠে। তাহলে সে ভুল ছিলো? তার ভাবনা তার বিশ্বাস সব কিছু ভুল।
– আপনি এত সব কিছু কোথায় পেলেন? আর এ-সব প্রমাণ আপনার কাছেই বা কিভাবে এলো? তাশরিফ ভাইয়া কেনো মারতে যাবে ইলহামকে? ছুটি বলে নিজেকে সামলে নিয়ে।
– আমি জানতাম তুমি এই প্রশ্ন করবে আমাকে। সত্যি বলতে এই প্রমাণ গুলো আমার কাছে কে পাঠিয়েছে আমি জানিনা। তার খোঁজ করেও আমি সন্ধান পাইনি। আদালতে যে প্রমাণ গুলো পাঠিয়েছে সেই আমাকে পাঠিয়েছিলো তিন বছর আগে। তবে হ্যাঁ, যিনি প্রমাণ গুলো আমার ঠিকানায় পাঠিয়েছিলো তিনি একবার ফোন দিয়েছিলেন আমাকে এরপর। আমি প্রমাণ গুলো পেয়েছি কি-না জানার জন্য। কিন্তু উনি আমাকে কথা বলার সুযোগ দেয়নি সেদিন৷ প্রমাণগুলো পেয়েছি শুনেই ফোন কেটে দিয়ে ফোন অফ করে দেয়৷ এরপর আর যোগাযোগ করতে পারিনি। তারপর আমি তাশরিফকে দেখায় এই প্রমাণ গুলো আর সেদিনই তাশরিফ সব স্বীকার করে এমনকি আদালতেও। সে জানায় ইলহাম নাকি তাকে ঠকাচ্ছিলো। তাশরিফের আড়ালে ইলহাম পরোকিয়া করে যেটা তাশরিফ জেনে গিয়েছিলো আর এটাই মেনে নিতে পারিনি সেদিন তাশরিফ।
— এত সব প্রমাণ থাকার পরও তাশরিফ ভাইয়া জামিন পাই কিভাবে?ছুটি সব কিছুই জানে তারপরও আসিফের থেকে শুনতে চাই। ছুটির প্রশ্নে আসিফ মুখটা মলিন করে বলে ইলহামের নাকি ছোট ভাই আছে একটা কি যেনো নাম৷ এরপর আসিফ একটু ভাবান্তর হয়ে বলে ও হ্যা ইমরান। তাকে আদালতে উপস্থিত করতে বলে তাশরিফের উকিল। সেদিন ওকে হাজির করতে না পারায় তাশরিফ সাময়িক জামিন পাই৷ তাশরিফই নাকি ইমরান কে কোথায় সরিয়ে রেখেছে। কিন্তু কোথায় রেখেছে সেদিন বলেনি। এরপর আন্টি মানে মমতা খান উনি ক্ষমতা আর টাকার জোরে এতদিন নিয়ে যান কেসটা। তবে এবার সময় ঘনিয়ে এসেছে তাশরিফের। অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হয় এটাই নিয়ম। আমার খুব খারাপ লাগে ওর জন্য। অনেক ভালো ক্যারিয়ার ছিলো ওর,সুন্দর একটা জীবন সঙ্গী ছিলো৷ যাকে ও নিজে পছন্দ করে বিয়ে করে তাকে কি-না। আসিফ আপসেট হয়ে পড়ে কথাটা বলে।
– আচ্ছা আপনি আমাকে কেনো এইসব কথা বলছেন এখানে ডেকে? আমি কি করতে পারি?ছুটি ভ্রু কুচকে বলে।
– আমি তোমাকে এইগুলা এই জন্য দেখায় যে তুমিও যেনো আমার মতো ঠকে না যাও তাশরিফকে বিশ্বাস করে। আমি জানি তোমরা সবাই বিশ্বাস করো তাশরিফ নির্দোষ কিন্তু আমি তো জানি ও কি অন্যায় করেছে।
– ছুটি তার ফোন বের করে এগ্রিমেন্টের কাগজের ছবি দেখায় আসিফকে। ছবিটি দেখে আসিফ চমকে উঠে। এটার জন্য সে প্রস্তুত ছিলো না। এতদুর এগিয়ে গেছে ছুটি ভাবতে পারেনি সে।
-এটা কিসের কাগজ চিনতে পারছেন? সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলে ছুটি।
– আসিফ শুকনো ঢোক গিলে একটা। এরপর হাসার চেষ্টা করে বলে চিনবো না কেনো। এটা তো তাশরিফ আর আমার করা এগ্রিমেন্টের কপি।
— কেনো করা হয় এটা? ছুটি ছোট ছোট চোখ করে তাকায়।
— ইলহাম খু’ন হওয়ার আগে তাশরিফ একদিন আমার কাছে আসে। সে বলে তার গান তার কন্ঠ বেচতে চাই। আমি খুব অবাক হয়ে ছিলাম ওর কথা শুনে৷ ওর তো টাকার অভাব নেই না আছে নাম-ডাকের অভাব। তাহলে কেনো এই কাজ করবে সে?
– আমি তাশরিফকে জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয়না৷ শুধু বলে যদি না রাজি হয় তাহলে ও অন্য জায়গায় দেখবে। তাশরিফ খুব ভালো গান গায় সব সময়। যার জন্য ও ফার্স্ট আর আমি সেকেন্ড থাকতাম। তাই ভাবলাম যদি আমি ওর থেকে এগ্রিমেন্ট করে নি তাহলে প্রথম স্থান আমি পেয়ে যাবো আর সে শর্ত অনুযায়ী আমি ওকে দুই কোটি টাকা দিই আর বলি কখনো গান করতে পারবে না৷ তাশরিফ তাই রাজি হয়ে টাকা নিয়ে যায় আর এগ্রিমেন্টে সাইন করে।
— ছুটি একটা তপ্ত দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। আবারও এলোমেলো লাগছে সব কিছু৷ মানুষ চিনতে কিভাবে ভুল করতে পারে সে। যাকে ছোট থেকে দেখে আসছে, যাকে মন থেকে ভালোবাসে তাকে চিনতে ভুল করলো।
— আমি এখন আসি! ছুটি উঠে দাঁড়ায়। হাঁটার শক্তিটুকুও পাচ্ছে না যেনো।
* তুমি চাইলে প্রমাণ গুলো নিয়ে যেতে পারো। আমার এটা দিয়ে কোনো কাজ নেই৷ শুধু শুধু তিন বছর জমিয়ে রেখেছিলাম। আজ কাজে দেবে ভাবিনি। ছুটি আসিফের দিকে তাকিয়ে ছবিগুলো সত্যি তুলে নেয় ব্যাগে। টেপ-রেকর্ডারটাও নিয়ে নেয় সাথে। হনহনিয়ে বেরিয়ে যায় ছুটি। ছুটি বেরিয়ে যেতেই আসিফ হো হো করে হেসে উঠে।
– তোর সব ভরসার জায়গা বন্ধ করে দিলাম তাশরিফ। তোকে একদম বরবাদ করে দিলাম। ছুটি আমার টোপ গিলে নিয়েছে এবার তুই কিছুতেই বাঁচতে পারবি না৷ ইমরান আমার শেষ গুটি তারপর তোর খেলা খতম।
— এলোমেলো পায়ে হেঁটে চলেছে ছুটি। মস্তিষ্ক জুড়ে নানান ভাবনা। ভোঁ ভোঁ করছে চারিপাশ। দিকশূন্য লাগছে নিজেকে। কীভাবে সম্ভব এটা? রানীমাও যে একই আশায় বুক বেধে আছে।
— সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়। ক্যাফে থেকে বেরিয়ে ছুটি হাঁটতে শুরু করেছে। কোনো গাড়ি বা রিকশা ধরার খেয়াল তার মধ্যে নেই। পা যেনো অবশ হয়ে আসছে চলতে চলতে। তখনই একটা হাত এসে টান মারে ছুটিকে। হুসে ফিরে ছুটি। চোখ তুলে সামনে থাকা মানুষটার দিকে তাকাতেই চোখ ফিরিয়ে নেয় ঘৃণায়।
– কি করছিলে তুমি? রাস্তায় কেউ এইভাবে হাঁটে? আর একটু হলে তো এক্সিডেন্ট করছিলে। কি হয়েছে তোমার? চিৎকার করে বলে তাশরিফ। ছুটি কোনো জবাব দেয়না। রাগ হয় ভীষণ তাশরিফ কে দেখে।
– কোথায় গিয়েছিলে তুমি? তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো? কি হয়েছে ছুটি?
– ছোঁবে না আমায়! তাশরিফের হাত ছাড়িয়ে দিয়ে বলে ছুটি। তাশরিফ কপাল কুচকে তাকায়।
– তোমার সাথে আমার কথা আছে ছুটি। বাড়ি চলো। বাড়ি ফিরে সব বলবো তোমায় আজ।
— তোমার মতো খু’নির সাথে আমার কোনো কথা নাই। চলে যাও এখান থেকে। তাশরিফ অবাক চোখে তাকায়। কি হয়েছে ছুটির বুঝতে পারছে না৷ ছুটি কেনো এমন বিহেভ করছে তাও জানে না।
— কি বললে তুমি? আমি খু’নি? হ্যাঁ তা অবশ্য ঠিক বলেছো। এতদিন তো আমি এই কথায় বলে এসেছি তোমাদের। তবে আজ আমি সত্যিটা বলবো সবাইকে। তোমরা এতদিন যেটা আমার থেকে শোনার জন্য অপেক্ষা করছিলে আজ আমি সে সব সত্যি বলবো ছুটি। বাড়ি চলো।
– কোন সত্যি বলবে তুমি? কি বলার আছে আর তোমার? তুমি যে ইলহামকে খু’ন করেছো, কি নিষ্টুর ভাবে খু:ন করেছো তার গল্প শোনাবে আমাদের?
– তাশরিফ যেনো বিস্ময় চোখে তাকিয়ে। ছুটিকে অচেনা লাগছে বড্ড। তার কথাগুলো অন্যকিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। তোমার কি হয়েছে ছুটি খুলে বলবে আমায়? আমার সাথে এইভাবে কথা বলছো কেনো?
— ছুটির চোখে পানি, ইচ্ছে করছে এখুনি সব কিছু শেষ করে দিতে৷ বিশ্বাস ভাঙলে যে কতটা কষ্ট কতটা বেদনা হয় ভেতরে তার সবটা তাশরিফকে দেখাতে।
— ছুটি কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে যায়। নিজেকে শান্ত করে বলে তুমি যাও আমি আসছি।
– রাত হয়ে গেছে খেয়াল নেই হয়তো তোমার! আচ্ছা তোমার কি আমার সাথে বাড়ি যেতে সমস্যা? কৌতুহলী হয়ে তাকিয়ে থেকে বলে তাশরিফ।
– ছুটি কিছু না বলে পাশে তাশরিফের গাড়িতে গিয়ে বসে৷ মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে হবে৷ সব কিছুতে এত তাড়াহুড়ো করলে হবে না৷ তার বিশ্বাস এইভাবে ভেঙে যেতে পারেনা৷ কোথাও একটা খামতি আছে বলে মনে হচ্ছে ছুটির। যার জন্য সে তাশরিফকে কিছুই বলে না প্রমাণ গুলোর ব্যাপারে।
— সারাটা পথ দুজন চুপচাপ আসে। তাশরিফ ড্রাইভের মাঝে ছুটিকে পর্যবেক্ষণ করছে অনেকবার। অস্থির দেখাচ্ছিলো ছুটিকে আজ,ছুটি কোথায় গিয়েছিলো সেটা নিয়ে ভাবে তাশরিফ।
— ছবিগুলো সামনে নিয়ে বসে আছে রোহান,আবির ছায়া। পাশেই ছুটি হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাইরের দিকে তাকিয়ে। সবাই যেনো ছোটখাটো শকড পেয়েছে একটা। এইগুলা সত্যি কেউ মানতে পারছে না।
– তাশরিফ বাড়ি ফিরেই সবার সাথে কথা বলতে চাই৷ কিন্তু ছুটি জানায় সে ক্লান্ত আছে পরে কথা বলবে তার সাথে। এরপর ছুটি সবাইকে তার ঘরে ডেকে প্রমাণ গুলো দেখায়।
— I can’t believe this. ব্রো কখনোই এমন কাজ করতে পারেনা৷ ইলহাম ভাবিকে ব্রো অনেক ভালোবাসতো৷ তাহলে কেনো মা/রবে ওকে?
— সন্দেহ! তাশরিফ ইলহামকে সন্দেহ করছিলো। ইলহামের অন্য কোথাও রিলেশন চলছে ভেবে তাশরিফ ভাইয়া ইলহামের উপর নির্যাতন শুরু করে। ছুটি বলে মলিন কন্ঠে।
– আমি তোমার কথা মানতে পারলাম না ছুটি। তাশরিফ কখনোই এমন কিছু করিনি। তাছাড়া আমি ছিলাম আমি দেখেছি ওদের সম্পর্ক কতটা ভালো চলছিলো। অনেক সুখী ছিলো ওরা দুজন। হঠাৎ করেই সব উলট পালট হয়ে গেলো। ইলহামের খু’ন এরপর তাশরিফের জেল। সব কিছু এত দ্রুত হয়েছিলো যে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কেসটা কোর্টে উঠে যায়। এরপর কেউ একজন এই প্রমাণ গুলো আদালতে পেশ করে। আবির বলে।
আমার মনে হয় কোথাও একটা ভুল হচ্ছে আপাই। তাশরিফ ভাইয়া দোষী হতে পারেনা।
– আমিও এটাই চাই ছায়া। আমিও বিশ্বাস করতে পারছি না উনি এমন কিছু করেছে৷ কিন্তু নিজের চোখকে কীভাবে অবিশ্বাস করি বলতে পারিস? ওই রেকর্ডটা যেখানে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে তাশরিফ ভাইয়ার কন্ঠস্বর। ছুটি কেঁদে দেয় কথাগুলো বলে। ছায়া উঠে ছুটির কাছে যায়।
– আমি জানি আপাই তোর অনেক কষ্ট হচ্ছে৷ তুই মন থেকে মানতে পারছিস না তাশরিফ ভাইয়া খু’নি। কিন্তু বিশ্বাস কর, আমারও এটাই মনে হচ্ছে৷ রোহান ভাইয়া, আবির ভাইয়া সবাই এটাই বিশ্বাস করে। এতগুলো মানুষের বিশ্বাস কিভাবে ঠুনকো হতে পারে বল?
– আমি কিছু জানিনা রে ছায়া৷ কিছু ভালো লাগছে না আমার। রানীমাকে কি জবাব দেব আমি বুঝতে পারছিনা৷ উনাকে তো কথা দিয়েছিলাম তাশরিফ ভাইয়াকে নির্দোষ প্রমাণ করবো সব সত্য সামনে আনবো৷ কিন্তু এখন কিভাবে বলবো যে উনার ছেলেই সত্যিকারের খু’নি। আড়াল থেকে সবটা শুনে তাশরিফ..
চলবে.
#শেষ_বিকেলের_প্রণয়
#আলো_ইসলাম
১৭.
— ছুটির কথাটা শুনে তাশরিফ প্রস্থান করে সেখানে থেকে। বাকি কথাগুলো শোনার মতো সাহস বা ধৈর্য তার নেই।
— আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করো ছুটি! রোহানের কথায় ছুটি চোখ মুছে নিজেকে স্থীর করে বলে বলুন।
— একটা কথা ভেবে দেখো, সব কিছুর মধ্যে আমরা কিন্তু আসিফকেই খুঁজে পাচ্ছি৷ অন্য কারো নাম বা অন্য কেউ এই কেসের সাথে নেই বা আসছে না। আসিফ যদি নিজ ইচ্ছায় আমাদের সামনে না আসতো আর এতসব ঘটনা না হতো তাহলে আমরা কখনো রিয়েলাইজই করতে পারতাম না যে এখানে কাছের কেউ থাকতে পারে। রোহানের কথায় সবার ভ্রু কুচকে আসে। ছুটি বোঝার চেষ্টা করে রোহানের কথাটা।
– আমার কথা তোমরা বুঝোনি তাই তো? রোহানের প্রশ্নে আবির বলে একটু ক্লিয়ার করো প্লিজ।
– দেখো আবির,অনেক সময় আমরা যেমন ভাবি তেমন কিছুই থাকে না আর যেটা ভাবতে পারিনা সেটাই ঘটে থাকে৷ আই মিন সব দেখা সত্য হয়না৷ দেখার মধ্যেও অনেক ফাঁড়াক থাকে আমাদের। আমি তো একজন এডভোকেট তাই আমি এইটা ভালো জানি বা বুঝি বলতে পারো৷ আমার তো মনে হচ্ছে সব কিছুর পেছনে আসিফই আছে। সেদিন আসিফ যখন বাসায় আসে তখনই ওকে দেখে সুবিধার লাগেনি আমার৷ তাছাড়া ও ছায়ার দিকে কু-দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিলো বারবার। তোমরা ব্যাপারটা নোটিশ করেছো কি-না জানি না, বাট আমি দেখেছি। আমার তো মনে হচ্ছে আসিফ কিছু একটা আন্দাজ করতে পেরে ছুটিকে ডাকে। এরপর প্রমাণ গুলো দিয়ে ব্রেন ওয়াশ করতে চেয়েছে আমাদের। কারণ শুধু আমরাই বিশ্বাস করি ব্রো নির্দোষ। আর আমরা যে এটা নিয়ে ভাবছি এটাও আসিফ বুঝতে পারে। খুব বড় মাপের খেলোয়াড় মনে হচ্ছে আসিফকে।
— তাশরিফ কিছু একটা বলতে চেয়েছিলো আমাদের। মনে হচ্ছে ও আমাদের সত্যিটা বলতে চাই এবার। তাশরিফের কথাগুলো তোমার শোনা উচিত ছিলো ছুটি। ছুটি অসহায় চোখে তাকায়৷ তার মানে সে ভুল ভাবছিলো এতখন৷ সত্যি কি এমন কিছু হচ্ছে৷ তাশরিফ ভাইয়া নির্দোষ, সব কিছুর পেছনে কি আসিফই আছে? মাথার মধ্যে ভনভন করে উঠে ছুটির৷ দুই হাতে চেপে ধরে মাথা। আর ভাবতে পারছে না৷ ভুল করে ফেলেছে সে। তবে তাশরিফকে তো এই বিষয়ে কিছু বলেনি এখনো। কি বলতে চাই তাশরিফ এখন শুনবে ছুটি। ছুটির চোখ দুটো চকচক করে উঠে। মুখে হাসি এনে রোহানের দিকে এক প্রকার তেড়ে এসে রোহানের দুটো গাল ধরে টেনে দেয় ছুটি ।
– ধন্যবাদ উকিল সাহেব। আপনি না বললে সত্যি আমি একটা ভুলের মধ্যে থেকে যেতাম৷ আমি তো এইভাবে ভাবিনি কথাগুলো। কি না একটা বোকামি করতে যাচ্ছিলাম। থাংকু থাংকু বলে একটু জোরে গাল টিপে দেয় ছুটি। ওর কান্ডে সবাই হতবাক। ছায়া শব্দ করে হেসে দেয়। আবির মুখ চেপে হাসে। আর এদিকে রোহানের অবস্থা হযবরল।
– আমি আসছি, ছুটি বেরিয়ে যায় এক ছুটে।
– এটা কি হলো? রোহান বিস্ময়কর চাহনি।
– আপু বেশি উত্তেজিত হয়ে আপনাকে ধন্যবাদ প্রকাশ করলো আর কি। ছায়া বলে মুচকি হেসে।
– আচ্ছা ও গেলো কোথায়? আবির বলে ভ্রু কুচকে।
– মনে হয় তাশরিফ ভাইয়ার কাছে। চলেন আমরাও যায়। ছায়ার কথায় সবাই বেরিয়ে আসে ঘর থেকে।
– ছুটি সোজা তাশরিফের ঘরে আসে। কিন্তু তাশরিফ ঘরে নাই। ছুটি ওয়াশরুম, বারান্দায় হন্নি হয়ে খুঁজে হতাশ হয়। এর মধ্যে বাহিনী হাজির হয় সেখানে।
তাশরিফ ঘরে নেই? আবির বলে।
– নাহ! হতাশ হয়ে বলে ছুটি। আবির বাড়ির দারোয়ানকে ডাকে উপরে।
– তাশরিফ কি বেরিয়েছে একটু আগে?
– না তো সাব! ছোট সাব তো বাড়ি থেকে বের হয়নি ছুটি আপারে আনার পর। দারোয়ান বলে।
– আচ্ছা তুমি যাও। ছুটি বলে।
– তাশরিফ ভাইয়ারে খুঁজছেন? তিনি তো ছাদে গেলো দেখলাম। কাজের মেয়েটা বলে।
– ছুটি আর এক মুহুর্ত দাঁড়ায় না। সোজা ছাদে দৌড় লাগায়।
– আমরা একটু পরে যায়? ছায়া বলে ওদের থামিয়ে।
– কেনো? রোহান জিজ্ঞেস করে।
— আপাই আগে কথা বলে নিক ভাইয়ার সাথে এরপর আমাদের ডাকলে আমরা যাবো।
– ছায়ার কথাটা ভেবে দেখে আবির আর রোহান৷ এরপর ওরা ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসে।
— ছুটি গিয়ে তাশরিফের পেছনে দাঁড়ায়। ছুটে যাওয়ার কারণে হাঁপিয়ে গেছে অনেক। ছুটি হাঁটুতে হাত রেখে ভড় দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে তুমি এখানে।
– ছুটির কথায় তাশরিফ ঘুরে তাকায়। ছুটিকে হাঁপাতে দেখে বিস্মিত হয়ে বলে কি হয়েছে, এইভাবে হাঁপাচ্ছো কেনো?
– কিছু না৷ দৌড়ে এসেছি তাই একটু। ছুটি কথাটা বলতে দুইবার থামে৷ অনেকদিন পর একটা দৌড়ে প্রতিযোগিতা হলো যেনো তার।
– তাশরিফ ঘুরে দাঁড়ায় আবারও পকেটে হাত রেখে।
– তুমি এখানে কেনো? তাশরিফ বলে গম্ভীর কণ্ঠে।
– তুমি না কি বলবে বলেছিলে! সেটা শোনার জন্য তো আসলাম। তাশরিফ তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় একটা। তবে ছুটির অগোচরে।
– কি হলো চুপ কেনো বলো? ছুটি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে।
– কি বলবো? তাশরিফের অভিমান প্রকাশ পাই ছোট বাক্যে তবে ছুটি সেটা উপলব্ধি করতে পারে না।
– কি বলবে মানে! ছুটি তাশরিফের কাধে হাত রেখে তার দিকে ফেরায়।
– তুমি সবাইকে বলেছো তুমি কিছু একটা বলতে চাও আমাদের, এমনকি আমাকেও বলেছো। কি একটা ইমপোর্টেন্ট কথা বলার আছে আমাদের
এখন বলো সেটা।
— তাশরিফ হাসে। যেটা দেখে ছুটি ভ্রু কুচকে তাকায়।
– বলার অনেক কিছু ছিলো সত্যি,কিন্তু এখন সব হারিয়ে গেছে৷ আমার মধ্যে আর কোনো কথা অবশিষ্ট নেই ছুটি । তুমি চলে যাও এখান থেকে। আমি একটু একা থাকতে চাই৷ বেশ স্বাভাবিক ভাবে কথাগুলো বলে তাশরিফ। ভীষণ অভিমান জমা হয়েছে তার মধ্যে। নিয়তি বারবার তাকে নিয়ে খেলা করছে।
— দরজার আড়ালে তুমি ছিলে তাই না? হঠাৎ ছুটির এমন কথা শুনে ঘাবড়ে যাওয়া ফেসে তাকায় তাশরিফ। আমরা যখন কথা বলছিলাম তখন একটা ছায়া সরে যেতে দেখি দরজার পাশ থেকে। যদিও তখন এতটা খেয়াল করিনি বা ভাবিনি বিষয়টা নিয়ে কিন্তু এখন বুঝতে পারছি ওইটা তুমি ছিলে।
– তাশরিফ আবারও মুখ ফিরিয়ে নেয়।
– কি বলছো এইসব। আমি কখন কোন দরজার আড়ালে ছিলাম? তাছাড়া তোমরা কি কথা বলছিলে না বলছিলে আই ডোন্ট কেয়ার। সাথে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তাশরিফের।
— আমার দিকে ঘুরো! ছুটির কথায় তাশরিফ আবারও ঘুরে দাঁড়ায়।
— আইম সরি! সত্যি আমি অনেক বড় ভুল করেছি কিছু সময়ের জন্য আমার বিশ্বাস থেকে সড়ে গিয়ে। তবে আমি আমার ভুলটা আবার বুঝতেও পেরেছি। আমার মন বলছিলো এটা সত্যি হতে পারেনা তাই তো তোমার কাছে ছুটে আসলাম সত্যিটা জানতে। তুমি কি এবারও ফিরিয়ে দেবে আমায়? নিদারুণ অবেদনীয় বাক্য যেটা উপেক্ষা করার সাধ্যি যেনো কারো নেই।
– আমার কিছু ভালো লাগছে না ছুটি প্লিজ লিভ। নিজেকে আবারও কঠিন দেখানোর প্রচেষ্টা তাশরিফের।
– আজ আমি সব সত্যি না জেনে কোথাও যাবো না। আমি জানি তুমি সব কিছু বলতে চেয়েছিলে আজ কিন্তু আমার বোকামির জন্য, ছুটির মধ্যে অপরাধী ভাব।
– তাশরিফের বুক ভরা হতাশার দীর্ঘশ্বাস।
– আমার ভাগ্যটাই এমন, তোমার কোনো দোষ নেই ছুটি । সঠিক নিয়মে কোনো কিছুই হয়নি আমার জিবনে। না নিজে ভালো থাকতে পারলাম আর না কাছের মানুষ গুলোকে ভালো রাখতে পারলাম৷ জানো ছুটি, ইলহামকে খুব ভালোবাসতাম আমি৷ প্রথম দেখায় তার যে মায়ায় ডুবেছিলাম আমি সে মায়া কখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। একসাথে পথ চলার প্রয়াসে এক হলাম আমরা৷ কিন্তু দেখো কি পরম সৌভাগ্য আমার, সেটা স্থায়ী হলো না। আবার আমার প্রিয় মানুষটার, খু’নের জন্য আমি দায়ী হয়ে আছি গোটা পৃথীবির কাছে। আমি কাউকে বলতে পারিনি আমি কিছু করিনি, আমি আমার প্রিয় মানুষটাকে হারিয়ে আমার কষ্ট হচ্ছে, আমার একটু শান্তনা দরকার আমি বলতে পারিনি।
– কয়টা প্রমাণ আর আমার উন্মুক্ত স্বীকারোক্তি সবকিছু সত্যি হয়ে দাঁড়ালো সবার কাছে। আসল সত্যটা কেউ বোঝার চেষ্টাই করলো, কেউ বুঝলো না আমি আমার ভালোবাসার মানুষটাকে হারিয়েছি, আমি আমার অর্ধাঙ্গিনীকে হারিয়েছি। আমারও কষ্ট হয় আমিও মানুষ! তাশরিফ কান্নায় ভেঙে পড়ে কথাগুলো বলে। ছুটির দম বন্ধ হয়ে আসছে। চোখ ভরে পানি চলে আসে তারও। ছাদের দরজার পাশে তিনজন দাঁড়িয়ে কান্না করছে তাশরিফের কথা শুনে৷ ছায়া রা আর ধৈর্য রাখতে পারিনি তাই নিজেরাই চলে এসেছে আর এসেই তাশরিফের কথাগুলো শুনে সবাই।
— আমি আর পারছি না ছুটি, আমি এবার মুক্তি চাই। আমি ক্লান্ত এই লুকোচুরি করতে করতে। অপরাধের বোঝা আর টানতে পারছি না আমি৷ মূর্তির ন্যায় হৃদয়হীন হয়ে থাকতে পারছি না আর৷ আমার একটা আশ্রয় দরকার, একটু শান্তির দরকার, আমি প্রাণ খুলে একটু নিশ্বাস নিতে চাই। কিন্তু আমার হাত-পা বাঁধা। আমি চাইলেও কিছু করতে পারছি না৷ কাউকে কিছু বলতে পারছি না৷ আম্মা কষ্ট পাচ্ছে তোমরা কষ্ট পাচ্ছো তারপরও নিরুপায় আমি। কি করলে শান্তি মিলবে, কিভাবে নির্দোষ প্রমাণ করবো আমি বুঝতে পারছি না। আমি বাঁচতে চাই ছুটি, আমি আমার জন্য বাঁচতে চাই, আম্মার জন্য বাঁচতে চাই তোমাদের জন্য বাঁচতে চাই৷ আমি আমার গানকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাই। ছুটি কি বলবে বুঝতে পারছে না। কিভাবে সান্ত্বনা দেবে তাশরিফকে তার জানা নেই। এত কষ্ট একটা মানুষের মধ্যে তারা কখনো বুঝতেই পারেনি৷ এই শক্ত আবরণের মাঝে যে পুরোটা দুঃখের পাহাড় উপলব্ধি করতে পারেনি একবারও।
— ছুটি কাঁপা কাঁপা হাতে তাশরিফের হাত ধরলে তাশরিফ নিজেকে সামলাতে পারেনা। আবেগি হয়ে জড়িয়ে ধরে ছুটিকে। জমিয়ে রাখা কষ্ট, নিঃস্বঙ্গ অনুভূতি নিঙড়ে দেয় চোখের পানিতে।
– আমি ইলহামকে মা/রিনি বিশ্বাস করো ছুটি! আমি তো অনেক ভালোবাসতাম,আমার অর্ধাঙ্গিনী ছিলো ও৷ ওকে কেনো মা/রবো আমি বলো? আসিফের কথা বিশ্বাস করো না প্লিজ৷ এই অবিশ্বাসের বেড়াজালে আমি আর জড়াতে চাইনা। তোমরা যদি আমাকে অবিশ্বাস করো তাহলে আমার আর কোনো জায়গা থাকবে না ভরসার৷ আমি যে শান্তিটা পেতাম তোমাদের দেখে সেটাও হারিয়ে ফেলবো। আমি নির্দোষ ছুটি আমি নির্দোষ।
– ছুটি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। ইতি মধ্যে সবাই তাশরিফের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
— শান্ত হও তাশরিফ ভাইয়া। আমরা আছি তো তোমার সাথে
ছুটির কথায় ভরসা পাই তাশরিফ।
– আমরা সবাই তোর সাথে ছিলাম আর আছি। তোর কিছু হবে না তাশরিফ আবির বলে। তাশরিফ ছুটিকে ছেড়ে দেয়।
– তোরা এখানে? তাশরিফ বলে চোখ মুছে।
— তোর মধ্যে কষ্ট আছে বুঝতাম কিন্তু এতটা যন্ত্রণা নিয়ে আছিস কখনো বুঝিনি। আবির বলে নুয়ে পড়া কন্ঠে।
– অনেক কথা হয়ছে, এবার ব্রো তুমি সবটা ক্লিয়ার করবে আমাদের। আসলে কি হয়েছিলো সেদিন,কেনো ইলহাম ভাবি খু’ন হলো? ইমরান কোথায়? কে জড়িত এইসবের পেছনে? রোহানের কথায় তাশরিফ ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে সব বলবো তোদের আজ। কিছু লোকাবো না আজ আমি । এবার আসল অপরাধী সামনে আসা দরকার।
— এরপর তাশরিফ সবটা খুলে বলে ওদের৷ সব শোনার পর সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। ভাবনাহীন হয়ে পড়ে কিছু সময়ের জন্য। মানুষ এত জঘন্য কিভাবে হতে পারে ভেবে পাচ্ছে না।
– মাঝে আর একটা দিন! এর মধ্যেই আমাদের যা করার করতে হবে। আসিফের মুখোশ সবার সামনে খুলতে হবে৷ এমন কিছু করতে হবে আমাদের যে,আসিফ নিজ মুখে সব স্বীকার করে। আর ইমরানও যাতে আমাদের হাতে আসে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই। কিন্তু কিভাবে? ছুটি বলে ভাবান্তর হয়ে।
— তুমি কোনো চিন্তা করো না ব্রো! বাকিটা সামলে নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের৷ কি পারবো না আমরা? রোহান ছুটির দিকে তাকিয়ে বলে কথাটা। ছুটি মুচকি হেসে বলে অবশ্যই, আর আইডিয়াও পেয়ে গেছি আমি।
– সত্যি? কি আইডিয়ারে আপাই? ছায়া বলে উত্তেজিত হয়ে।
– এখানে তোর ভূমিকা বেশি ছায়া, পারবি তো ভরসা রাখতে আমাদের? ছায়া হকচকিয়ে উঠে ছুটির কথায়.। আ- আমি আবার কি করবো? ভয়ার্ত কন্ঠে বলে ছায়া….
চলবে…
,