শেষ পর্বের শুরু পর্ব – ৯

0
868

গল্প: শেষ পর্বের শুরু (নবম পর্ব)
__ ✍️ নীলিমা নওরীন মেঘলা

একটা দোতলা বাড়ির নিচতলায় বসে আছি। চারপাশে আসবাবপত্রে ঠাসাঠাসি। বোঝাই যাচ্ছে, বেশ অবস্থাপন্ন লোক হবে। তবে ভদ্রলোক কিনা বলতে পারছি না।

অদ্ভুতভাবে এখানে এসেছি মেয়ে দেখার নাম করে, হামিদ সাহেবকেও সাথে নিয়ে এসেছি। কল করার পরপরই মানুষটা বিনাবাক্য ব্যয়ে চলে এসেছেন। ফিসফিস করে একবার তো কানের কাছে মুখ নিয়ে বলেও বসলেন, ‘খুনী খোঁজার বদলে কিনা পাত্রী খুঁজে বেরাচ্ছো! অদ্ভুত মানুষ তো তুমি। তোমাকে ভালো ভেবেছিলাম।’

আমি মানুষটার বোকাবোকা কথা শুনে হাসলাম। আমার হাসি দেখে উনি আরও রেগে গেলেন। ওনাকে রাগতে দেখে আমার আবার হাসি পেয়ে গেল। কী বিপদ!

একবার তো রেগেমেগে উঠে ঘরের ভেতর পায়চারিও শুরু করে দিলেন। আমি হাত ধরে টেনে বসাতে বসাতে বললাম, ‘আপনি কি আমায় ডুবাবেন নাকি? এইরকম অদ্ভুত রোগের কথা জানলে কেউ মেয়ে দেবে আমাদের কাছে?’

‘মেয়ে তো দিচ্ছে তোমার কাছে, আমার কাছে নয়। তুমি চুপচাপ বসে থাকলেই হলো। আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করবো। একদম আটকাতে আসবে না।’
বেশ কাঠ কাঠ গলায়ই কথাগুলো বললেন।
কোথাও যেন মানুষটার অভিমান টের পেলাম।
উনি যা ভাবেন ভাবুন। এখন নাহয় সাসপেন্স থাকুক, পরে সবটা বুঝিয়ে বলা যাবে।
.

বেশ কিছুক্ষণের ব্যবধানে সবুজ শাড়ি পরা এক মেয়েকে নিয়ে আসা হলো। পাশে আরও দুজন কমবয়সী মেয়ে। কোনো আত্মীয় হবে বোধহয়। মেয়েটা আমাদের দেখেই সালাম দিলো। হাতের ধরে রাখা ট্রে নামিয়ে রাখতে রাখতে বললো, ‘কিছু মুখে দিন।’

আমি সৌজন্যতা দেখিয়ে বললাম, ‘আপনি বসুন না। দাঁড়িয়ে কেন…’

মেয়েটা পাশের সোফায় বসে পড়লো। দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে দু’টো চলে গেল। মুরুব্বিদের দলে হামিদ সাহেব যোগ দিলেন। মেয়েটাকে কয়েকটা প্রশ্ন করার পর আমাদের কথা বলার জন্য স্পেস দেওয়া হলো। ঘরের একপাশে সবাই মিলে বসে কী সব গুজুরগুজুর ফুসুরফুসুর করতে লাগলেন। এতক্ষণে খেয়াল হলো, মেয়েটা কাচুমাচু মুখে শাড়ির আঁচল শক্ত করে ধরে বসে আছে এক কোণে। খুব কষ্টে যেন মুখটা হাসি-হাসি রাখার চেষ্টা করছে।

আমি ট্রে থেকে শরবতের গ্লাসটা হাতে নিতে নিতে বললাম, ‘আপনার নাম কী?’

‘জ্বি, মিতু…মিতু চৌধুরী।’

‘বাহ, বেশ ভালো নাম। বয়স?’

বয়সের কথা জিজ্ঞেস করায় কিছুটা অস্বস্তিবোধ করলো। আমতা-আমতা করে জবাব দিলো, ‘বিশ…বিশ বছর।’

‘পারফেক্ট। বিশ আর পঁচিশ। পারফেক্ট জুটি না বলুন?’

মেয়েটা আর কিছু বললো না। মনে মনে হয়তো অনেক কথা বললো, তবে সেটা শুধু মনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রইলো। কণ্ঠনালি ভেদ করে আর বাইরে বেরিয়ে এলো না।

আমি প্রসঙ্গ ঘোরালাম। মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, ‘আমাকে পছন্দ হয়?’

হঠাৎ করে অপরিচিত একটা ছেলের মুখে এমন একটা কথা শুনে মেয়েটা যে যথেষ্ট অপ্রস্তুত হয়েছে সেটা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারলাম। অবশ্য আমি অপ্রস্তুত করার জন্যই কথাটা বলেছি।

হাসতে হাসতে বললাম, ‘এখনই বলতে হবে না। কোনো তাড়া নেই। সময় নিয়ে ভেবে নাহয় জানাবেন। কেমন?’

মেয়েটা আগের নিয়মেই ঠায় বসে রইল। মুখে টুঁ শব্দটাও করলো না। আমার প্রশ্নের সাথেসাথে মাথাটা শুধু একদিকে হেলে গেল। সেটা সম্মতিসূচক নাকি অসম্মতিসূচক কিছুই বুঝলাম না।

সোফা থেকে উঠতে উঠতে শেষবারের মতো বললাম, ‘আপনি বেশ সুন্দর। হাসলে আরও সুন্দর দেখাবে। এই যে আমার ফোন নম্বর দিয়ে গেলাম। উত্তরটা নাহয় ফোনেই জানাবেন। কেমন?’
কথাগুলো বলে একটা কাগজ টি-টেবিলের উপর রেখে দিলাম। মেয়েটা সেদিকে বিশেষ কোনো আগ্রহ দেখালো না।

তবে আমি জানি, মেয়েটা আমায় কল করবে, নির্ঘাত করবে। কেননা ফোন নম্বরের পাশে আরেকটা লাইনও যোগ করে দিয়ে এসেছি সেখানে- ‘আপনার সাথে আমার জরুরি কিছু কথা আছে, সবার সামনে বলা সম্ভব নয়।’
.

কেন জানি নিজেরই নিজের বুদ্ধির তারিফ করতে ইচ্ছে করছে। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হামিদ সাহেবকে বললাম, ‘বিয়ে করলে এমন মেয়েকেই করা উচিত। সাত চড়ে রা কাড়ে না। দারুণ মেয়ে কিন্তু।’

হামিদ সাহেব আমার মজা করাটা ঠিক ধরতে পারলেন না। সিরিয়াস কণ্ঠে বললেন, ‘মিতুর বাড়ির সবাই তোমাকে পছন্দ করেছে। তোমার বাড়ির লোকজন ডেকে দিন-তারিখ ঠিক করে নিতে পারো।’

আমি মাথা ঝাঁকিয়ে বেশ গর্বের সাথে বললাম, ‘পছন্দ তো করবেই। পছন্দ হওয়ার মতোই জিনিস। আপনিও তো আমার ফিটনেস দেখে আমাকে প্ল্যানচেটের জন্য বাছাই করেছিলেন। আমার মতো গড়নের সুপুরুষ আর দুটো পাওয়া মুশকিল কিনা।’

হামিদ সাহেব প্রসঙ্গ বদলালেন। শুকনো মুখে বললেন, ‘ইমলি বেঁচে থাকলে আজ মিতুর মতোই হতো। আমারও মেয়ের জন্য পাত্র খুঁজতে হতো। সবই পোড়া কপাল!’

বুঝতে পারলাম উনি আমায় ইমলির মৃত্যুর কথাটা মনে করিয়ে দিতে চাইছেন। আমি এখানে কেন এসেছি, আর কী করছি… সেদিকেই ইশারা করছেন। কী অদ্ভুত মানুষ!
.

বাড়ি পৌঁছানোর মিনিট বিশেকের মাথায় মিতুর কল এলো। অবশ্য মিতুর নম্বর আমার কাছে নেই। তবুও অচেনা নম্বর দেখে নিশ্চিত হলাম এটা মিতুর নম্বরই হবে।
আসলে মেয়েরা নিজেরা কৌতুহল রাখতে পছন্দ করলেও, কৌতুহল নিয়ে বেশিক্ষণ থাকতে পছন্দ করে না। অজান্তেই মুখ থেকে অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে পড়লো, ‘মেয়ে জাতি অদ্ভুত জাতি।’

প্রথমবার রিং বেজে কেটে গেল। এবার দ্বিতীয়বারের মতো রিং হচ্ছে। আমি তবুও ধরলাম না। মেয়েটাকে আরেকটু অস্থির করে তারপর নাহয় রিসিভ করবো। মিতুকে বোঝানো উচিত ওর কল রিসিভ করা ছাড়াও আমার অনেক কাজ থাকে। এতটা সস্তা মানুষ আমি নই।

একবার দুইবার করে ছয়বার রিং বাজতে বাজতে কেটে যাওয়ার পর সপ্তমবারের মাথায় কল রিসিভ করলাম। সালাম দিয়ে জানতে চাইলাম, ‘আপনি কে বলছেন? কাকে চাই?’

মেয়েটা কোনো প্রশ্নের উত্তর দিলো না। বেশ ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললো, ‘অদ্ভুত মানুষ তো আপনি! নিজেই নম্বর দিয়ে গেলেন, নিজেই আবার ফোন ধরেন না। কী জরুরি কথা সেটা বলুন?’

আমি কিছুটা ভণিতা করে আবার জানতে চাইলাম, ‘কে বলছেন? কাকে চাইছেন সেটা তো বলুন? আমি ঠিক আপনাকে চিনতে পারছি না।’

‘আমি মিতু বলছি। আপনি একটু আগে যাকে দেখতে এসেছিলেন সেই মেয়ে। আমি আপনার নাম জানি না। তাই কাকে চাই, তার নাম কী… ঠিক বলতে পারছি না। তবে আমি নিশ্চিত আমি যাকে চাইছি আপনিই সেই ব্যক্তি। এখন বলুন, আমার সাথে আপনার কিসের জরুরি কথা আছে যা সবার সামনে বলা যায় না?’
একনাগাড়ে কথাগুলো বলা শেষ করে মেয়েটা যেন বড়সড় শ্বাস নিলো।

আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘জরুরি কথা কি ফোনে বলা যায় নাকি? ফোন কি কোনো জরুরি জিনিস হলো? জরুরি কথা বলতে হয় সামনা-সামনি, একদম চোখে চোখ রেখে।’

আমার কথা শুনে মিতু পুরো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। অবাক মিশ্রিত কণ্ঠে বললো, ‘মানে? একবার বলেন সবার সামনে বলা যাবে না, আবার বলেন ফোনে বলা যাবে না। এসবের মানে কী?’

‘এতটা উত্তেজিত হবেন না। শরীর খারাপ করবে। আমি বলেছি সবার সামনে বলা যাবে না। কিন্তু সামনা-সামনি বলা যাবে না সেটা তো বলিনি। তাই না?’

‘তার মানে আপনি বলতে চাইছেন, সামনা-সামনি কথা বলবেন কিন্তু কেউ থাকবে না। তাই তো?’

‘এই তো গুড গার্ল। একদম ঠিক ধরেছেন।’

‘কিন্তু আমি আপনার সাথে একা একা কেন দেখা করবো?’

‘করবেন, অবশ্যই করবেন। কাল সকাল আটটার সময় নবগঙ্গার পাড়ে চলে আসবেন। বাকি কথাটা নাহয় সেখানেই বলবো।’
শেষ কথাগুলো বলে ফোনটা নামিয়ে রাখলাম। মেয়েটা এখন উদভ্রান্তের মতো কল দিতে থাকবে, কিন্তু আমি রিসিভ করবো না। মানুষকে কথার মাধ্যমে নাচানোর মধ্যে একটা মজা আছে কিন্তু।
.

ফোন সাইলেন্ট করে পকেটে ভরার সাথে সাথে হামিদ সাহেব এসে পাশে দাঁড়ালেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘রাতে কী খাবে? রান্না বসাবো।’

‘যা খাওয়াবেন, তাই খাবো।’

‘যদি বিষ খাওয়াই?’

মানুষটার কথা শুনে আমি হাসলাম। হাসতে হাসতে বললাম, ‘আপনি যদি খাওয়াতে পারেন, তাহলে আমার খেতে সমস্যা কোথায়?’

‘তোমার কেন মনে হলো আমি খাওয়াতে পারবো না?’

‘সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সব ক্ষমতা দিয়ে পাঠান’নি। তাই আপনি চাইলেও এই কাজ করতে পারবেন না।’

হামিদ সাহেব কিছু না বলে রান্নাঘরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালেন। আমি পেছন থেকে ডাক দিলাম, ‘হামিদ সাহেব।’

উনি ঘুরে দাঁড়ালেন।
‘কিছু বলবে?’

‘একটা কথা জানার ছিল।’

‘কী কথা?’

‘কাল রাতে ক্যালেন্ডারের উপর বেশ কয়েকটা তারিখে গোল চিহ্ন দেওয়া দেখলাম। তারিখগুলো কিসের?’

মানুষটার ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে পড়লো। খুব সন্তপর্ণে সেটা গোপন করার চেষ্টা চললো। ভাবলেশহীনভাবে জবাব দিলেন, ‘ইমলির জন্মদিন, মৃত্যুদিন। শায়লার জন্মদিন আর আমাদের বিবাহ বার্ষিকীর দিন। কোনোকিছুরই অবশ্য আর কোনো মূল্য নেই। মানুষ না থাকলে বিশেষ দিনগুলোও কেমন মূল্যহীন হয়ে যায়, তাই না?’

এত কঠিন প্রশ্নের আমি কোনো জবাব দিতে পারলাম না। চুপ হয়ে রইলাম৷ হামিদ সাহেব চলে গেলেন। আমি ব্যালকনি দিয়ে মুখ বাড়িয়ে চাঁদ দেখার চেষ্টা করলাম। নাহ, চাঁদ নেই। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শুধু দলা দলা অন্ধকার। মুহূর্তেই যেন সেই অন্ধকার আকাশ ছেড়ে আমার ভেতরে প্রতিস্থাপিত হলো। অন্ধকার কি কোনো সংক্রামক রোগ নাকি? যে ছুঁয়ে দেয় সেই আক্রান্ত হয়!
.

রাতে খাওয়া দাওয়া পর্ব সেরে বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে আছি। ঘুম আসছে না। এক এক করে ঘটে যাওয়া সবকিছু ভাবার চেষ্টা করছি। কোথাও যেন একটা যোগসূত্র রয়েছে। তবে সেটা কী তা ঠিক ধরতে পারছি না।
বিছানার এপাশ ওপাশ করেই গোটা রাতটা কাটিয়ে দিলাম। বড্ড অস্বস্তি হচ্ছে।
.

সকাল আটটা নাগাদ নবগঙ্গার পাড়ে এসে দাঁড়ালাম। পুরো পাড় ফাঁকা। শীতের সকালটা একটু দেরিতেই শুরু হয়।
মিতু আগেভাগেই চলে এসেছে, গায়ে একটা শাল জড়ানো। মিষ্টি দেখাচ্ছে মেয়েটাকে।
এতকাল জানতাম মেয়েরা সবকিছুতে দেরি করে। কিন্তু এই মেয়ের ক্ষেত্রে ঠিক সেই সূত্র খাটে না।

আমাকে দেখেই মিতু বলে উঠলো, ‘এই সাতসকালে এখানে কেন ডেকেছেন? কী বলবেন জলদি বলুন?’

আমি কিছুটা রহস্য করে বললাম, ‘আপনাকে নদীতে ডুবিয়ে মারার জন্য ডেকেছি। কেন, ভয় পাচ্ছেন?’

‘হেয়ালি করবেন না। হেয়ালি ভালো লাগে না আমার।’
বেশ দাঁত কটমট করতে করতেই কথাটা বললো। বুঝতে পারলাম যথেষ্ট বিরক্ত আমার উপর। অবশ্য সেটাই স্বাভাবিক।

‘হেয়ালি ভালো লাগে না, তাহলে কী ভালো লাগে? নিজের স্বার্থের জন্য অন্য একজনকে মেরে ফেলতে?’

পুনরায় প্রশ্নটা শুনে মিতুর চোখ কপালে উঠে গেল। থতমত খেয়ে জানতে চাইলো, ‘কা…কে? কাকে মে…রেছি আমি? এসব কী বলছেন?’

‘কেন আপনার বান্ধবী, প্রাণের বান্ধবী ইমলিকে। বান্ধবীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে বিয়ে করছেন তো ঠিকই। এখনও অনামিকা আঙুলে আংটিখানা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। কাল শাড়ির আঁচল দিয়ে সেটাই লুকানোর চেষ্টা করছিলেন। ভুল বললাম কি কিছু?’

হঠাৎ আমার মুখে ইমলির কথা শুনে যে বেশ ঘাবড়ে গেছে সেটা বুঝতে পারছি। আগের মতোই তোতলাতে তোতলাতে বললো, ‘এই আংটিটা আমায় রনি ভালোবেসে দিয়েছে, সেটা ঠিক। তবে ওর সাথে পরিচয় ইমলির মৃত্যুর পরে। বাসায় কাউকে বলার সাহস হয়নি তাই আংটিটা সবার কাছ থেকে লুকানোর চেষ্টা করছিলাম। আমি সত্যি বলছি, আপনার কোথাও বুঝতে ভুল হচ্ছে।’

‘কী ভুল হচ্ছে? ভুলটা নাহয় আপনি ধরিয়ে দেন। ইমলি নিশ্চয়ই মিথ্যা বলেনি আমাকে।’

‘ইমলি তো মারা গেছে। মৃত মানুষ কীভাবে কথা বলবে? আপনি কে? এসব কথা আমাকে কেন বলছেন? আমি তো বলছি আমি ইমলিকে মারিনি। ওকে মেরে আমার কী লাভ? ও আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল।’

কেন জানি মিতুর কথাগুলো বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে। তবে বিশ্বাস করা উচিত হবে কিনা বুঝতে পারছি না। তবুও সাহস করে সবটা খুলে বললাম। হামিদ সাহেবের সাথে পরিচয় থেকে সবকিছু।

সবটা শোনার পর মিতু বললো, ‘আপনি যদি আমায় বিশ্বাস করেন তাহলে আমি আপনাকে সাহায্য করবো। আপনি কি আমার সাহায্য নিতে চান?’

একমুহূর্ত ভেবে রাজি হয়ে গেলাম। এছাড়া তো আর কোনো উপায়ও আমার কাছে নেই। মিতু হয়তো সাহায্য করতে পারবে জন্যই ইমলি সেদিন মিতুর নামটা ডায়েরিতে লিখে রেখেছিল। আবার উল্টোটাও হতে পারে। সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি।
পুরো গোলকধাঁধার মধ্যে নিজেকে এখন আবিষ্কার করছি। দেখা যাক মিতু সত্যি সত্যিই আমায় সাহায্য করে কিনা।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে