#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Part_4
“রুস্তম মেয়েটা কোথায় গেল?”
“জানি না স্যার। হয়তো চলে গেছে।
আশেপাশে তাকিয়ে ছোয়াদের খুঁজে।
“উফ সেট মেয়েটার ডিটেলস আমার চাই।
“ডোন্ট ওয়ারি স্যার আমি আছি তো আমি আপনাকে ওই মেয়ের খবরা-খবর এনে দেব।
ছোঁয়ার উপর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েছিল মাহের কিন্তু রুস্তম ডাকে ওর কথা কাটাকাটি হয়
কথা গুলো হলো,
স্যার আপনি কোন মেয়ে দেখেই ভাবে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছেন অবিশ্বাস্য!
চুপ করবে তুমি।
স্যার আপনি প্রেম পরেছেন?
দেখো ফালতু কথা বলবে না। সত্যি মেয়েটাকে দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। কিন্তু তাই বলে প্রেমে পড়েছি তা বলতে পারোনা চাইলে কি আমি ভালোবাসতে পারি এটা বলতে পারো কারন একে আমি ভালোবেসে ফেলেছি।
রুস্তম মাহের এর কথায় স্তম্ভিত হয়ে যায় বড় বড় চোখ করে সে নিজের স্যারকে দেখছে।
স্যার একদম ভালোবেসে ফেললেন এক দেখায়।
রুস্তম ভালোবাসা এক সেকেন্ডে হয়। সো আমি তো অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। ভাবতে পারবে না ও কন্ঠ আমাকে কতটা পুলকিত করেছেন। তুমি খুব ভালো করে জানো আমি গানটান ভুল করে শুনি না। কিন্তু ওই নজরকাড়া কণ্ঠ আমাকে মুগ্ধ করেছে
ওর দৃষ্টি আমাকে পাগল করে দিয়েছে। কি তার চাহনী, সুন্দর হাসি, আমি মুগ্ধ আই এম লাভ ফর ইউস। ওকে আমার চাইই চাই। আমার ২৮ বছর জীবনে আমি ফার্স্ট কোনো মেয়েকে দেখে এতটা উদাসীন হয়ে পড়েছি। যার মাঝে নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছি। ও শুধু আমার জন্যই তৈরি হয়েছে। ওকে এক দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি ইটস লাভ এন্ড ফাস্ট সাইড।তুমি জানো ওকে যখন দেখছিলাম আমার আর কোন দিকে খেয়াল ছিল না শুধু ওর মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলাম।মনে হচ্ছিল কতদিনের চেনা কত আপন ওর জন্য আমি এতোদিন নিঃসঙ্গ ছিলাম কালকে আমার মনে ধরেনি। আমার প্রিয়সি কে আমি পেয়ে গেছি এবার শুধু নিজের করার পালা।
রুস্তম হা করে মাহের এর দিকে তাকিয়ে আছে।
কথাগুলো বলে আবার বাচ্চাগুলোর দিকে তাকাতেই দেখে মেয়েটা নেই। কোথায় গেল পুরো পার্ক খুঁজে পাওয়া গেল না। হতাশ হয়ে বাসায় ফিরে এলো।বাসায় এসে দেখতে পেল নিজের কাজের লোক খুব বিশ্বস্ত দুজনের মৃত্যু। তাদের দেখে মাহের খুব কষ্ট পেল কিন্তু কিছু করার নেই এমন আপন অনেককেই মৃত্যুবরণ করতে দেখেছে ও। চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের রুমে চলে এলো। বিশাল বড় একটা রম, কাচের সাদা জানালা, নরম তুলতুলে একটা বিছানা, কিন্তু এত সুন্দর রুমটা সুন্দর নেই খুব নোংরা হয়ে আছে
এইসব কিছু করেছে সে আর কেউ নয় মাহেরের চিরশত্রু নিহাল।
বাইরে সব গার্ডরা পড়েছিল কিন্তু কারো শরীরে আঘাতের চিহ্ন নাই তার মানে সবাই কি ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। এবারও নিশ্চিত হলে এসব কিভাবে করেছে? এক মাস আগে একটা নতুন লোক এনেছিলো খাবার তৈরি করার জন্য! সেই নিহালে লোক। যার দ্বারা সবাইকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছে যার জন্য বাসায় ঢুকতে হয়েছে না হলে এটা সম্ভব ছিল না।
রুস্তম সবাইকে জাগা না করলো। বাসা পুরো সাফ করা হলো এক ঘন্টার ভেতরে।মায়ের চোখ বন্ধ করে তার ইজি চেয়ারে বসে আছে। রাগের চোখমুখ শক্ত হয়ে আসছে কিন্তু রাগ নিমিষে ভুলে গেল। চোখ বন্ধ করতে এসে তার প্রিয়সী কে দেখতে পেল। সেই হাসি সেই চাহনি সেই সুর যা মাহেরকে ঘায়েল করেছে। রাগের মাঝেও মাহের চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় ঠোঁটের কোনে হাসি ফোটালো। রাগটা ধরে রাখতে পারছে না। রুস্তম তখন রুমে এসে দেখে তাঁর স্যারের এই অবস্থা। বিস্ময়ে মুখটা হা করে তাকিয়ে আছে মাহের এর দিকে এত কিছু ঘটে গেছে স্যার বসে বসে হাসছে। অবাক করা কান্ড।
মাহের চোখ মেলে দেখে রুস্তম বড় বড় চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,
ও বিরক্ত হয়ে বলল, কী হয়েছে রুস্তম এমন সং হয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে আছো কেন?
স্যার আপনি কি পাগল হয়ে গেলেন নাকি?
হোয়াট?
মাহের চিৎকার শুনে রুস্তম আমতা আমতা করে বলে, সরি স্যার আসলে আপনি হাসছেন তো তাই।
তো হাসবো না কাঁদবো। তুমি কি আমাকে কাঁদতে বল।
এমা কি বলছেন স্যার কাদতে কেন বলবো আমি তো চাই আপনি সব সময় হাসি খুশি থাকেন।
তো হাসছি অবাক হচ্ছ কেন?
হঠাৎ করে একজন গম্ভীর মানুষ কে এমন হাসতে দেখলে সবাই অবাক হবে স্যার? আর পাগল আখ্যায়িত করবে।
কি বললে তুমি?
কই কিছু না তো স্যার আমি আসছি।
এই যে দাঁড়া।
রুস্তম ভয়ে ভয়ে বলে কি?
আমার সুইট হার্ট এর খবর কালকের মধ্যেই চায়।
সুইটহার্ট কে স্যার?
ভীতু মুখ করে।
মাহের রেখে তাকাতেই।
ওকে স্যার ওকে।
কোনমতে ছুটে চলে আসে বাইরে আর বলে বাঁচলাম। স্যার শেষে কেন প্রেমে পাগল হয়ে।
পরদিন রোস্তম কে নিয়ে মাহের গার্ড ছাড়া গাড়ি নিয়ে ছোঁয়ার ভার্সিটিতে আসে।
ছোঁয়া ক্লাস শেষ করে ব্যষ্টিক ম্যামের কাছে যায়। একটা প্রশ্ন বুঝতে তাই ওর বের হতে আধা ঘন্টা লেট হয়। অফিস রুম থেকে বের হয়ে দেখে পুরো ভার্সিটি ফাঁকা। সবাই চলে গেছে একাই ও একাই ধীর পায়ে মাঠ পেরিয়ে গেট দিয়ে বের হয়।
এদিকে মাহের বিরক্তে নাক মুখ কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছে। এত সময় জীবনে কারো জন্য অপেক্ষা করে না কিন্তু আজকে নিজের প্রেয়সীর জন্য করতে হচ্ছে। খুব এক্সাইটেড মাহের। সারা রাত ঘুমোতে পারেনি শুধু নিজের প্রেয়সী দেখেছে সেই হাসি সেই সুর কানে বেজেছে। পাগল করে দিয়েছে ওকে ওর তোর সইছে না কিন্তু উপায় নাই।
ছোঁয়া বাইরে আসতেই চমকে উঠলো,
“কে আপনি আমার হাত ধরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? ছারুন আমার হাত।
একজন অপরিচিত লোক আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ভয়ে হাত ছোটানোর চেষ্টা করছি পারছি না তার মুখটা আমি দেখতে পারিনি। আমার কথা শুনতে পেল কিনা কে জানে সে আমাকে একটা গাড়ির কাছে এনে ছাড়লো আর আমার দিকে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ালো।
আমি রেগে ছিলাম কিন্তু তার দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে গেলাম। আমার সামনে দাড়িয়ে আছে একটা অতি সুদর্শন পুরুষ যার জীম করা বডি, গায়ে রং অত্যাধীক ফর্সা এতো ফর্সা কেন? নীল শার্ট সাদা কোট, চোখে কালো সানগ্লাস যা খুব এ্যাটিডিউট লুক নিয়ে খুলে নিলো।চোখের মনি নীল, আমি হাঁ করে চোখের দিকে তাকিয়ে আছি। ঠোটের কোনে মিষ্টি হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আরো চমকালাম লাল টকটকে ঠোঁট যেন লিপস্টিক দিয়েছে কিন্তু না কারন উনি ঠোট কামড়ে ধরে হাসছে।চুল গুলো ব্রাউন কালো কালার মিলিত যা পেছনে জুটি করে আছে।আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি যেন কোন নায়ক দেখছি এতো সুন্দর ছেলে কখনও দেখি নি।
বিউটিফুল মাই লেডি। তুমি ও কি আমাকে ভালোবাসে ফেললে আমার মতো এক দেখায়।
ছেলেটার কথায় চমকে উঠলাম, কি সব বলছে আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম,
বুঝতে পারছো না।
আপনি কে আর আমাকে এভাবে এখানে আনলেন কেন?
আমি তোমার ফিউচার হাজবেন্ড মাই লেডি।
কিহ? অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেলাম লোকটার কথায়।
হাজবেন কিসের হাজব্যান্ড কি সব বলছেন আপনি পাগলের মত!
সামনের লোকটা আমার কথায় কিছু না বলে আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করল,
হোয়াটস ইওর নেম?
আমি আমতা আমতা করে বললাম, জি ছোঁয়া।
রূস্তম নাম তো ঠিকই বলেছিলে।
রুস্তম এগিয়ে এসে বলল, স্যার আমি কখন আপনাকে ভুল ইনফরমেশন দিয়েছে।
মাহের সেদিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে ছোয়া দিকে তাকিয়ে বলল,
আমি ভনিতা করা একদম পছন্দ করি না যা বলার সরাসরি বলছি। আই লাভ হার ফর ইউ। তোমাকে আমি প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলেছি কিভাবে কেন কিজন্য আমি জানিনা কিন্তু আমি শুধু জানি আমার তোমাকে চাই। তুমি শুধু আমার আমার হবে আমার বউ হবে। তোমাকে ঘিরে হবে আমার ভালোবাসার সংসার। যেটা কখনো আমি চাইনি সেটা তোমাকে দেখার পর থেকে আমার মনের কনে বাসা বাঁধছে। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।তোমার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পেয়েছি তোমার ফ্যামিলিতে কেউ নাই ফ্যামিলি প্রবলেম বাদ। আমি কোন কিছুতে লেট করা পছন্দ করি না তাই তুমি চাইলে আজকেই বিয়ের কাজটা সেরে ফেলব। আসলে অনুষ্ঠান করতে বিয়ে করতে পারব না তাই চুপিচুপি বিয়েটা করতে হবে। আমি চাইনা আমার জন্য তোমার বিপদে পড়তে হোক।
ছোয়া হা করে মাহেরের দিকে তাকিয়ে আছে মাহের একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে।
#চলবে