শুধু তোমায় ঘিরে পর্ব-০২

0
1903

#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Part_2

সুইট হার্ট, তুমি আমাকে এত ভয় পাও কেন বলতো?
বলতে বলতে মাহের আমার কপালের ছোট চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে দিল। আমি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছি মাহের এর দিকে। মাহের আমাকে স্পর্শ করতেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
বুকের ভেতর হাটবিট জোরে জোরে লাফাচ্ছে। আমি নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করতে লাগলাম তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,
ছারুন প্লিজ আমাকে।
ছারানোর চেষ্টা করতে করতে বললাম।
মাহেদ আমাকে শক্ত করে ধরে বলল,
ছারার জন্য তো ধরিনি‌। এই যে ধরেছি মৃত্যুর আগে ছারবো না। এখন একটু ভালো বাসতে দাও তো দুদিন দেশে থাকবো না তোমাকে ও কাছে পাব না।
বলেই আমার গলায় মুখ ডুবালো। আমি চোখ বন্ধ করে চোখের জল ফেলছি আমার চোখের পানি মাহের এর গালে পরতেই মাথা উঁচু করলো,
তুমি আবার কাঁদছো?
আমি ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছি উওর দিচ্ছি না।
আমি কাছে আসলে তোমার এতোটাই খারাপ লাগে।

আমি এবার বলে উঠলাম, আপনি আমার কাছে এলে আমার নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করে । আই হেইট ইউ। আমার ঘৃনা লাগে আমার স্পর্শ।
মাহেদ রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
রেগে বলে উঠলো,
তুমি খুব জেদি সুইটহার্ট আই লাইক ইট।মাহেদ এর ব‌উ এর এমন জেদ থাকা উচিত।‌ এজন্য আমি তোমাকে এতো ভালোবাসি। কিন্তু আমার ভালোবাসাকে একদম অপমান করবে না আর এটা ভেবনা তোমার কথায় আমি তোমাকে ছেড়ে দেব‌। এমনিতেই ব‌উকে নিজের থেকে দূরে রেখেছি এটা যদি তোমার লাইফ রিক্স না থাকতো কখনো করতাম না। তোমাকে সেভ রাখার জন্য আমার থেকে আলাদা থাকতে হবে। এতে যে আমার কতো কষ্ট হয় আমি জানি।
বলেই আমার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকালো মাহেদ। মাহের এর ঘনঘন শ্বাস আমার চোখে মুখে আছড়ে পরছে আমি চোখ বন্ধ করে আছি।
হুট করেই আমার নাকের ডগায় চুমু দিলো আমি চমকে চোখ মেললাম।
আমাকে ছেড়ে দিলো আমি নিজের সিটে বসে চোখের জল ফেলছি। মাহের আমার একহাত ধরে রেখেই ড্রাইভ করছে।
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলেছি।মাহের ড্রাইভ করছে আর একটু পর পর আমার দিকে তাকাচ্ছে।একটা রেস্টুরেন্টের পাঁচ মিনিট আগে গাড়ি সাইট করে রাখলো তারপর কাউকে ফোন দিলো 10 মিনিট পর একটা ছেলে একটা প্যাকেট দিয়ে চলে গেল মাহের এর কাছে।
মাহের গাড়ি থেকে নেমে প্যাকেটটা নিয়ে এসেছে। আমি বোঝার চেষ্টা করছি প্যাকেট টা কিসের।
একটু পরেই বুঝতে পারলাম গাড়িতে এনে প্যাকেট খুললো খাবার আছে।
আমি চুপটি করে বসে আছি মাহের খাবার বের করে আমার মুখে ধরলো খাওয়ার জন্য আমি এই কাজ গুলো আগেও দেখেছি মাহের কাছে আসলে এইভাবে আমাকে খাইয়ে দেয়। না করার উপায় নাই ধমকে খাইয়েই ছারবে তাই না করলাম না হাঁ করে খাবারটুকু মুখে নিলাম।
খাবার মুখে নিতে মাহের খাবারের প্যাকেট আমার হাতে দিলো। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি আমার কাছে দিচ্ছে কেন?
আমার কৌতূহল চাহনি দেখে মাহের হেসে উঠলো আর বলল,
তোমাকে তো সবসময় খাইয়ে দেই আজকে তুমি আমাকে খাইয়ে দাও।
আমি চোখ দুটো ইয়া বড় বড় করে মাহেরের দিকে তাকিয়ে আছি।
কি হলো এমন বিশ্মিত হয়ে তাকাচ্ছ কেন? তাড়াতাড়ি করো আমি কিন্তু কাল থেকে কিছু খাইনি! বলে আমার মুখোমুখি হয়ে বসলো। কাল থেকে কিছু খাইনি মানে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি মাহের এর দিকে।তাও জিজ্ঞেস করলাম না জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে না কিন্তু আমি খাইয়ে কিছুতেই দেবো না।
এই লোকটাকে আমি কিছুতেই খাইয়ে দেবো না।
আমি শক্ত হয়ে বসে আছি।
কি হলো এভাবে পাথরে বসে আছো কেন খাইয়ে দিতে পারলাম না একটু সেবা-যত্ন করো স্বামীর।খালি স্বামীর সেবা যত্ন নিতে মন চায় তাই না। আমার কি ইচ্ছে হয় না বউয়ের আদর যত্ন ভালোবাসা পেতে।
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম,এতো ভালোবাসা পেতে ইচ্ছে হলে অন্য কারো কাছে যান। আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর কখনো বাঁসবো না আর না স্বামী মানি‌। আমি আপনাকে খাইয়ে দিতে পারব না। আর কি বললেন শুধু আমি আপনার আদর যত্ন চাই আমি এসব চাই না বুঝতে পেরেছেন আপনি জোর করে করেন এইসব।
আমি তীব্র রাগ নিয়ে কথাগুলো বললাম,
আমার কথা শেষ হতেই মাহের মাথা এগিয়ে এনে ফট করে আমার গালে চুমু খেলো আচমকা কান্ডে বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে গেলাম।
সুইটহাট এত রেগে কথা বল না।তুমি রাগলে তোমার গাল লাল টকটকে হয়ে যায়। আমার তো তখন অনেক কিছু করে ফেলতে ইচ্ছে করে।আর খেইয়ে যেহেতু দিতে বলেছি তোমাকে দিতে হবে তাই জোর করতে বাধ্য করো না প্রচন্ড খিদে পেয়েছে তাড়াতাড়ি করো।
আমি বললাম তো আমি কিছুতেই আপনাকে খাইয়ে দেবো না। আপনি নিজে খেয়ে নিন।
মাহের মুখ এগিয়ে এনে বললো, তাড়াতাড়ি করো না হলে আজকেই তোমার সাথে বাসরটা করে ফেলবো যেটা এক মাসে করিনি।
মাহের কথাটা বলে বাঁকা হাসলো আমি স্তম্বিত হয়ে মাহের এর দিকে তাকালাম,
স্তব্ধ হয়ে মাহেরের দিকে তাকিয়ে আছি।
ও তার মানে তোমার বাসর করার ইচ্ছে জেগেছে ওকে নো প্রবলেম দাও আমি খাইয়ে দিচ্ছি তোমাকে।
বলে খাবার আমার হাঁটুর উপর থেকে নিতে যাবে। আমি চমকে উঠে তারাতারি খাবারের প্যাকেট নিজের হাতে নিলাম,
না না না আমি খাইয়ে দিচ্ছি।

বলে তাড়াতাড়ি খাবার তুলে ‌মাহের এর দিকে দিলাম।মাহের খুশি হয়ে খাবার মুখে তুলে নিলো।
অনিচ্ছাসত্ত্বেও মাহেরকে খাইয়ে দিতে হলো।
নিজের সাথে আমাকে খাবার দিয়েছে। তারপর বাসায় সামনে নামিয়ে দিলো তার আগে একটা কথায় বলেছে,
সুইট হার্ট দুই দিন নিজের খেয়াল রাখবে আমি দেশে থাকব না। কোন কিছুর প্রয়োজন হলে ‌ রুস্তম কে বলবে। ওকে।
বলে আমার কপালে চুমু দিয়ে শো শো শব্দ করে গাড়ি নিয়ে চলে যায়।

বাসায় এসে দেখি ঐশী চলে এসেছে
ও আমার সহপাঠী ও বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে আছে। আমি ভেতরে ঢুকতে ও বলে উঠলো,
ছোঁয়া তোর এতো লেট এলো কেঝ তুই তো সব সময় আমার আগে এসে পড়েছ?
আমি কিছু না বলে ব্যাগ টেবিলের উপর রেখে জগ থেকে গ্লাস পানি নিয়ে ঢটঢক করে বিছানার উপর বসে খেলাম।
ও আমার দিকে ব্রো কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
তারপর ফট করে আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
মাহের আসছিল তাই না।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে সম্মতি দিলাম।
ওর খুশি দেখে কে,
আস্তে বলতি বাসায়। ইস মাহের তোর বর ভাবতেই আমার গর্ব হয়।
আমি রাগী দৃষ্টি তার দিকে তাকালাম।
এ ভাবে তাকাস না প্লিজ। গর্ব হয় বলতে সাহস হয়
কে দেখে সবাই ভয় পায় আর সে কিনা তোর বর ভাবতেই আমার ভালো লাগে। সুইট হ্যান্ডসামটাকে মেনে নেসনা আমি বুঝিনা।
মাহের যদি তোকে পছন্দ না করে আমাকে করতো না আমি এক চান্সে রাজি হয়ে যেতাম সারাদিন মাহের কে নিজের কাছে ধরে রাখতাম।
কত্ত ভালবাসি তোকে বেচারা কথা হয়না করলি অপমান করলি তাও দেখ একটু ভালোবাসা কমায়নি। খেয়ে এসেছিস তাই না। এখন আমি কি খাব আমি আরো ভাবছি তুই আসলে দুজন মিলে রান্না করে খাওয়াব আমার এত টায়ার্ড লাগছে না একা রান্নাঘরে যেতে ইচ্ছে করছে না।
মন খারাপ করে বললো।
সমস্যা নাই আমি রান্না করে দিচ্ছি তুই রেস্ট নে।
তোকে একারণে করতে হবে না আমিও যাচ্ছি চলো।
দেখ আমি জানি তোর এসব অভ্যাস নাই তবুও তুই আমার জন্য করতে যাস আমার জন্য তুই নিজের বাসা ছেড়ে ভাড়া বাসায় আছিস। আমি চাইনা তোর আর কষ্ট দিতে তুই থাক আমি করে দিচ্ছি।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে