#শুধু তুই #
#Part_12
Writer_ Raidah Islam Nova
অনেকক্ষন ধরে আমরা মেয়ে তিনজন গালে হাত দিয়ে খাদক তিনটার খাওয়া দেখছি।বুঝতে পারছি না ওরা কি পেটে নাকি কুয়ায় খাবার ঢুকাচ্ছে।আমি,এশা,রিনি,ফারিশ,জন,মেহেদী একটা আভিজাত হোটেলের টেবিলে বসে আছি।আমার মুখোমুখি ফারিশ,এশার মুখমুখি জন,রিনির মুখোমুখি মেহেদী বসেছে।আমাদের সামনে হরেক রকমের প্রায় ২০ আইটেমের খাবার সাজানো।টেবিলে এক চিমটি পরিমাণ জায়গা নেই।
পেটুক তিনটায় একের পর এক খাবার গিলছে।মনে হচ্ছে বাপের জন্মে কিছু খায়নি।কে জানে আজ এতো ভালো রেসেপি খাবে বলে কতদিন না খেয়ে আছে? আমরা মেয়ে তিনজন খুব মনোযোগ সহকারে ওদের খাওয়া দেখছি।আর মনে মনে গুনছি কি কি খাচ্ছে,কত আইটেম শেষ করেছে? আমরা যে সাথে আছি সে কথা বোধহয় ভুলেই গেছে।ফারিশ আমাদের কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে খাওয়া থামিয়ে আমাদের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
ফারিশঃ নজর দিচ্ছো কেন টুনটুনি পাখি ?
আমিঃ বয়েই গেছে আপনাদের দিকে তাকিয়ে নজর দিতে।
ফারিশঃ যেভাবে তাকিয়ে আছো আমার ভয় করছে।
আমিঃ কেন?
ফারিশঃ তোমাদের তিনজনের নজরে আমদের তিনজনের পেট খারাপ না হয়ে যায়।
আমিঃ কমও তো গিলেননি। একের পর এক যেভাবে খাচ্ছেন পেট খারাপ এভাবেও হয়ে যাবে।
এশাঃ অসহায়,অভাগা,পথ শিশুগুলো কতদিন ধরে ভালো খাবার খায়নি কে জানে?
রিনিঃ সাথে যে কেউ আছে তার খেয়াল আছে?
আমিঃ থাকবে কি করে? জীবনে খেয়েছে নাকি?
পেটুক, খাদক জানি কোথাকার।
আমাদের এরকম পিন মারা কথা শুনে জন,ফারিশ, মেহেদী খাওয়া রেখে চোখ দুটো ছোট ছোট করে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো।
মেহেদীঃ তোমাদের সমস্যাটা কি?
রিনিঃ কোনো সমস্যা নেই। আপনাদের গিলতে ইচ্ছে করছে যখন আপনারা তিন বন্ধু আসতেন আমাদেরকে নিয়ে কেন এসেছেন? আপনারা অনেক খেতে পারেন তা দেখাতে নিয়ে এসেছেন।
মেহেদীঃ আমার রিনি পরীর দেখি মুখে কথা ফুটে গেছে।আমি ভেবেছিলাম তুমি কথায় বলতে পারো না।এখন তো দেখছি শুধু কথা নয় মুখে খই ফুটে।
রিনিঃ ?
মেহেদীঃ রাগলে তোমাকে আরো বেশি কিউট লাগে।
রিনিঃ বেহায়া, বেশরম,নির্লজ্জ। ( মনে মনে)
এশাঃ একটা মানুষ এতোকিছু কিভাবে খেতে পারে আল্লাহ জানে।
জনঃ এশু মনি তোমার কি আমার সাথে লাগতে ইচ্ছে হচ্ছে? বাকি দুটো কে দেখে?
এশাঃ এগুলো বেহায়া সেটা জানতাম এতো বেহায়া সেটাতো জানা ছিলো না। কাল এতো বড় একটা ঘটনা ঘটলো সেটা মনে নেই। আজকে আবার ধেই ধেই করে নাচতে নাচতে চলে এসেছে।
( বির বির করে)
জনঃ যত বকো কোনো কাজ হবে না। জানতো শকুনের প্রে তে গরু মরে না।
এশাঃ উহহ, আবার প্রবাদ ঝারা হচ্ছে।আমার সামনেই বসেছো চান্দু।এমন লাথি মারবো চেয়ার নিয়ে পরে যাবে।যত্তসব আদিখ্যেতা।(বির বির করে)
আমিঃ কি বির বির করছিস? সরাসরি বলার সাহস নেই যখন বির বির করিস না।আমার থেকে কিছু শেখ। তোরাতো আমার মান- সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিবি।আমি তো দেখিস না মুখে মুখে সব উত্তর দিয়ে দেই।( নিচু স্বরে ভাব নিয়ে)
রিনিঃ তা তো দেখলামই তুমি কত জিনিয়াস? ফারিশ ভাইয়ের এক চোখ রাঙানিতে তুই ভয়ে কচুমচু করিস।
আমিঃ চুপ কর।( ভেংচি কেটে)
এশাঃ সত্যি কথা বললে দোষ।
আমিঃ আরেকটা কথা বললে উষ্ঠা মেরে নাক ফাটিয়ে ফেলবো।
ফারিশঃ কি খুসুর খুসুর করছো তোমরা তিনজন?
আমিঃ কিছু না।গিলতে এসেছেন গিলতে থাকেন।
জনঃ খাচ্ছো না কেন তোমরা?
রিনিঃ খাবো কি করে? সব তো আপনারা খেয়ে ফেলছেন।
মেহেদীঃ আমাদের খেতে দেখে কি হিংসা হচ্ছে? আরে খাও লজ্জা পেয়ো না আমরা আমরাই তো।
ফারিশঃ ঠোঁটের লিপিস্টিকের কথা চিন্তা করে যদি না খাও তাহলে তোমাদের লোস।
আমিঃ আমরা লিপস্টিক দেই না।
জনঃ এখন খাও, পরে লিপস্টিক কিনে দিবোনি।
এশাঃ কি আমার জন দরদীরে? লিপস্টিক কিনে দিয়ে জনসেবা করবে।লাজ- শরম সব খেয়ে ফেলেছে খাবারের সাথে। ( মুখ গোমড়া করে)
আমিঃ বাড়ি যাবো।
এশাঃ আমিও।
রিনিঃ আমিও বাড়ি যাবো।
ফারিশঃ সারাদিন কাঁদলে ও কাজ হবে না।বিকালের আগে বাসায় যেতে পারবে না।
আমিঃ না,আমি মানি না।
ফারিশঃ টুনটুনি পাখি, একটু আগের কথা কি ভুলে গেছো? ( শয়তানি হাসি দিয়ে)
আমিঃ উহু।( ভয় পেয়ে)
ফারিশঃ তাহলে চুপচাপ খেয়ে নেও।
আমিঃ আচ্ছা।(মাথা দুলিয়ে)
এতক্ষণ ওদের যাবতীয় কথা ও যা ঘটেছে সবকিছু পাশের টেবিলে থেকে খুব সাবধানে মোবাইলে ভিডিও করে নিলো একজন।মুখে তার ডেভিল মার্কা হাসি।ওদের ছয়জনের কেউ খেয়াল করে নি।
???
একটু আগে আমি এই হোটেলে আসতে চায়নি।তার জন্য আমার দুই গালে ফারিশ এতো জোরে চাপ দিয়েছে যে কিছু সময়ের জন্য আমার মুখ বাঁকা হয়ে ছিলো।ব্যাথায় কথা বলতে পারছিলাম না।খাওয়া- দাওয়ার পর্ব শেষ।আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছি।বাকি তিন গাধায় বিল দিতে গেছে।
আমিঃ আমার ওপর অধিকার খাটানো শুরু করে দিয়েছে।কি হয় আমি ওর?( রেগে)
রিনিঃ তুই নিশ্চয় অবুঝ না।
এশাঃ আমাদের দুজনকে এই দুই গাধা ভালবাসে আর তোকেও নিশ্চয় ঐ গাধায় ভালোবাসে।
আমিঃ এমন কথা বলিস নারে এটার সাথে বিয়ে হলে আমি মরেই যাবো।ভেবেছিলাম ভদ্র ছেলে এতো ভদ্র কে জানতো? এই কয়দিনে আমার জীবনটা তেজপাতা করে দিয়েছে। বাকি জীবন তো পরেই রইলো।( ন্যাকা কান্না করে)
রিনিঃ এখান থেকে যাবো কি করে সেটা বল?
এশাঃ সব দোষ আইয়ুর।
আমিঃ আমি কি করছি?
রিনিঃ তুই কি করিস নি সেটা বল।
এশাঃ আমাদের এখানে জোর করে তুই এনেছিস।
আমিঃ আমি কি তোদের কোলে করে নিয়ে এসেছি নাকি।তোরা তো নিজে থেকে চলে এসেছিস।তোদের ইচ্ছে না থাকলে আমি জীবনেও নিয়ে আসতে পারতাম না।
রিনিঃ দেখছিস এশু কি বলে?
এশাঃ আজকে বাড়ি যেয়ে নেই তোর খবর আছে আইয়ু। বাড়িতে যুদ্ধ লেগে যাবে।এখানে কিছু বললে ওর গাধা আমাদের অবস্থা নাজেহাল করে দিবে।
আমিঃ তোর মতো বোন থাকলে শত্রুর প্রয়োজন হয় না।ঘরের শত্রু বিভীষণ।
বিল দিয়ে ওরা তিনজন ফিরে এসেছে। আমরা তিনজন চুপ হয়ে গেলাম।বাইকের পেছনে চুপচাপ বসে পরলাম।আমাকে ব্লাকমেইল করে নিয়ে এসেছে।
জোরে টান দিয়ে তিনটা বাইক চলতে লাগলো।আমার কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে।চোখ মুখ খিচে ফারিশকে ধরে রেখেছি।ছেলেদের বাইকে মেয়ে উঠলে এমনেই তাদের এটিটিউড বেড়ে যায়।তখন ভাবই থাকে আলাদা।খুশিতে মনের পাওয়ার এমনেই বেড়ে যায়।ফারিশ,মেহেদী,জনের ক্ষেত্রে তা ভুল হয় নি।
???
আইভিদেরতো লং ড্রাইভে যাওয়ার কথা তা না করে হোটেলে কেন গেলো সেটা বুঝতে পারছেন না তো।আরে ভর দুপুরে কোথাও যেতে হলে খেয়ে নিতে হয়। তাই তারা আগে পেট শান্তি করে নিলো।পেট শান্তি তো সব শান্তি। আমাদের ওদের কথার রহস্য বুঝতে হলে ঘুরে আসতে হবে এক ঘন্টা আগে।যেখানে ওরা তিন বান্ধবী গেইটের সামনে তিন বাঁদর কে দেখেছিলো।
আমি চোখ বন্ধ করে এক ঘন্টা আগের কথা মনে করছি।আমার নিজের চুল নিজের ছিড়তে ইচ্ছে করছে।
এক ঘণ্টা আগে……
আমাদের সেই মুহূর্তে মনে হচ্ছিলো তিনটা বোধহয় পাবনা থেকে পালিয়ে এসেছে।যখন বললো ভর দুপুরে লং ড্রাইভে যাবে।আমরা তখনো হা করে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছি। মেহেদী,জন,ফারিশ তিনজন একসাথে গলা জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।আমি চোখ কচলে ওদের দিকে তাকালাম।না,আমি কিছু ভুল দেখি নি।তিনজন একসাথে হাসি,ঠাট্টা করছে।কে বলবে ওরা কিছু দিন আগে সাপ- নেউলে ছিলো।আসলে ছেলেরা এরকমই।ওদের মধ্যে সব ভুলে বন্ধুত্ব করতে সময় লাগে কয়েক মিনিট। আর মেয়েদের লাগে কয়েক বছর।
ছেলেরা নিজেদের মধ্যে কেনো কিছু মনে রাখে না।আমরা মেয়েরা তো সামান্য লিপস্টিক নিয়ে কথা কাটাকাটি হলেও কারো সাথে কয়েক মাস কথা তো দূরে থাক মুখ ও দেখতে চাই না।সব মেয়েদের কথা বলছি না।কিছু মেয়ে আছে এরকম হিংসুটে।ছেলেদের মাঝে একটু আগে মারামারি,রক্তারক্তি হয়ে গেছে।তারপরও কিছু সময় পর তুমি দেখবে একে অপরের কাঁধে হাত রেখে দিব্যি হেসে কথা বলছে।আর মেয়েরা একদফা চলাচুলি তো করবেই সাথে কুরুক্ষেত্র বানিয়ে ফেলবে।তিল কে তাল বানিয়ে বাপ-রে কত ঝামেলা করবে,তা আমাদের ধারণার বাইরে।আমি আর কিছু বলতে চাইছি না।এর থেকে বেশি কিছু বললে আমি মেয়ে হয়েও পাবলিক প্লেসে মার খেতে পারি।
ফারিশ,জন, মেহেদী তিনজন ফিল্মি স্টাইলে আমাদের সামনে হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমরা কপালে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে তাদের দিকে তাকিয়ে আছি।
ফারিশঃ কি হলো হাত ধরো টুনটুনি পাখি?
আমিঃ কেন?
জনঃ আমরা লং ড্রাইভে যাবো।
এশাঃ মাথার তার কয়টা ছিঁড়ছে?
মেহেদীঃ সোজা কথায় না গেলে তুলে নিয়ে যাবো।
রিনিঃ বললো আর হয়ে গেলো।এসব মুভির ডায়লগ অন্য কোথাও দিয়েন আমাদের সামনে না।
ফারিশঃ এরা সোজা কথার মেয়ে নয় মেহেদী।
মেহেদীঃ তা তো দেখতেই পাচ্ছি।যাবে কি না বলো।( রেগে)
ফারিশঃ দোস্ত,রাগিস না। এদেরকে কি করে নিতে হয় তা আমার জানা আছে।ওরা যাবে না ওদের ঘার যাবে।ভেবেছিলাম ডোজটা কাজে লাগাবো না।কিন্তু তা আর হলো কই?আমার টুনটুনি পাখিই তে বিশ্ব ঘারত্যাড়া।ওরা কেন হবে না বল তো।
( ডেবিল হাসি দিয়ে)
আমিঃ ?
ফারিশঃ টুনটুনি পাখি, এদিকে এসো তোমার সাথে কথা আছে।
আমিঃ আমি যাবো না।
ফারিশঃ তাহলে তো এই পিকচার গুলো তোমার চাচাকে দেখাতেই হয়।
আমিঃ কোন পিকচার??
ফারিশঃ এদিকে সাইড না হলে তো আমি দেখাবো না।
আমিঃ আল্লাহ,কোন পিকচার তুলছে ফারিশ।চাচাকে দেখাবে বলছে।আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।আমাকে ব্লাকমেইল করছে কেন?( মনে মনে)
???
ফারিশ আমার এক হাত ধরে টেনে অন্যদিকে নিয়ে গেলো।
আমিঃ হাত ছারুন আমার।কথায় কথায় হাত ধরা আমার একটুও পছন্দ না।সাহস কি করে হয় আপনার,আমার হাত ধরেন।সাবধান করে দিলাম।আমার হাত ধরবেন না।আমার আশেপাশে ঘেষার ও চেষ্টা করবেন না। পরের বার কিন্তু আমি একশ্যান নিতে বাধ্য হবো।সত্যি আপনি মানুষটা সুবিধার নন।
ফারিশঃ ?আজকে তোমাকে অন্যরকম লাগছে কেন টুনটুনি পাখি?
আমিঃ হাত ছাড়তে বলেছি।ভালো হবে না কিন্তু।
(রেগে)
ফারিশঃ ছারবো না কি করবে?
আরো জোরে হাত মোচর দিয়ে ধরলো।আমি মোচরা- মোচরি করছি হাত ছুটানের জন্য।কিন্তু এত বড় বডি বিল্ডারের সাথে আমি পুঁচকে একটা ইঁদুর কি করে পারবো বলুন তো??
আমিঃ কামড় দিবো।
বলতে না বলতেই আমি জোরে একটা কামড় বসিয়ে দিলাম ফারিশের হাতে।কিন্তু অবাক করা ব্যাপার ফারিশের কোনো রিয়েকশন নেই। আমি একসময় হয়রাণ হয়ে হাত ছেড়ে দিলাম।ফারিশ যেভাবে ছিলো সেভাবেই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।হাত টকটকে লাল হয়ে আছে।তাতে ও কোনো হেলদোল নেই।আমি ওর দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছি। অনেক জোরেই তো কামড় দিয়েছি।অনেক ব্যাথাতো পাওয়ার কথা।কিন্তু তালগাছটা একবারের জন্য উহ্ শব্দটা পর্যন্ত করে নি।তালগাছের মতো চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। আমার হাতটা আগের থেকে আরো জোরে ধরে রেখেছি।
ফারিশঃ তোমার কামড় দেওয়া শেষ হয়েছে।
আমিঃ হুম।মনের আশ মিটিয়ে দিয়েছি।কিন্তু আপনি ব্যাথা পাননি।
ফারিশঃ এর থেকে বড় ক্ষত আমার মনে আছে।তাই ব্যাথা লাগে নি।তাছারা এটাতো আমার টুনটুনি পাখির দেওয়া লাভ ব্রাইড।
মুখে মেকি হাসি দিয়ে কামড় দেওয়ার জায়গায় গভীরভাবে ঠোঁট ছোঁয়ালো।
আমিঃ বেশরম ছেলে কোথাকার? এটা জীবনে বদলাবে না।দেবো নাকি আরেকটা কামড়?
(ভ্রু নাচিয়ে )
ফারিশঃ নাআআআআ।একটা কামড়ে হাতটা জ্বলে পুরে যাচ্ছে আরেকটা দিলে হাতের গোশত তুলে ফেলবে।রাক্ষসী একটা।এভাবে কাউকে কামড় দেয়।ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে চড় মারতে।
(মনে মনে)
ফারিশ মনে মনে এসব ভাবছে।ওর মুখের রং দেখেই আইভি বুঝে গেছে ও কি ভাবছে? তাই মুখ চেপে মিটিমিটি হাসছে।
আমিঃ আমি ওদের কাছে যাবো?
ফারিশঃ যে জন্য তোমাকে এনেছি তা না দেখেই চলে যাবে টুনটুনি পাখি।
আমিঃ কি?
ফারিশঃ দেখো।
ফারিশ পকেট থেকে ফোন বের করে গতকাল আইভি ও নাহানের এক টেবিলে বসে কফি খাওয়ার ছবি দেখালো।আজকে একসাথে দাঁড়িয়ে স্যারের রুমে দাঁড়িয়ে কথা বলেছে তার ছবিও দেখালো।আইভির চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।
ফারিশঃ এই ছবি গুলো তোমার চাচাকে দেখাবো চাচার কাছে থেকে তোমার বাবার কাছে চলে যাবে।তোমার পড়ালেখা শেষ। সাথে বিয়েও হয়ে যাবে।
আমিঃ প্লিজ এমনটা করবেন না।আমি ওনার সাথে উল্টো- পাল্টা কিছু করে নি।উনি খুব ভালো ছেলে।আমার সাথে উনাকে জরিয়ে দুজনের বদনাম করবেন না প্লিজ।
ফারিশঃ তোমরা কি করছিলে সেটাতো আমি,তুমি ও নাহান জানি।তোমার বাবা- চাচা নয়।তাদের ছবি দেখালে তারা ভাববে এটা তোমার বয়ফ্রেন্ড।তারপর যা হবে তা তো তুমি জানোই।
আমিঃ এমন কেন করছেন?
ফারিশ এগিয়ে এসে আমার হাত ছেরে দিয়ে দুই গাল চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
ফারিশঃ আমি তোমাকে ওর আশেপাশে থাকতে মানা করেছিলাম।তা শোনো নি কেন? কতবার বলবো ওর পাশে তোমাকে আমার সহ্য হয় না।সবসময় ওর থেকে দূরত্ব বজায় রাখবে।তা না করে তুমি ওর সাথে চুইংগামের মতো লেগে কেন থাকো? আজকে ওর সাথে একা রুমে কি করছিলে?
আমি উম উম করে শব্দ করছি। চোখ দিয়ে পানি পরছে।কিন্তু ফারিশের গালের থেকে হাত সরানের নামও নেই।
( চলবে)