শুধু তুই ৩ পর্ব-২০+২১

0
1471

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২০
#Tanisha Sultana

কান ধরে টানতে টানতে নিধিকে রুমে নিয়ে আসে আদি। কান লাল হয়ে গেছে। ভীষণ ব্যাথা করছে তবুও আদিকে বলার সাহস পাচ্ছে না।
রুমে এসে নিধির কান ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেতেই নিধি কানে হাত বুলিয়ে কটমট চোখে আদির দিকে তাকায়।
“পবলেম কি তোমার? সব সময় বাঁদরের মতো লাফাও কেনো?
চেঁচিয়ে বলে আদি। নিধি দুইকানে হাত দিয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে।
নিধিকে উওর দিতে না দেখে আদি আরও হ্মেপে যায়। নিধির দুই কাঁধে হাত দেয়। নিধি চট করে চোখ খুলে
” আমাকে ইগনোর করো? যখন কথা বলা দরকার কখন চুপ করে থাকো আর যখন কথা বলার প্রয়োজন নেই তখন বকবক করো৷ পবলেম কি? ঠাটিয়ে থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে হচ্ছে তোমাকে।
কাঁধে হাত দিয়ে ঝাঁকিয়ে বলে আদি।
নিধি কাচুমাচু হয়ে দাঁড়ায়। গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে ভিজে গেছে নিধি। চুল বেয়ে টপটপ করে মুখে পানি পড়ছে। চোখের পাপড়ি গুলো ভিজে গেছে। মুখে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে। সব থেকে আকর্ষণীয় হলো ঠোঁটের গুড়ি গুড়ি পানি। জামাকাপড় শরীরের সাথে লেপ্টে আছে।
আদির চোখটা নিষিদ্ধ জায়গায় পড়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের জন্য মাথাটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। চট করে চোখ বন্ধ করে নিধির থেকে দুই পা পিছিয়ে যায়। চোখ খুলে অন্য দিকে তাকিয়ে ঘনোঘনো চোখের পলক ফেলে। জোরে জোরে শ্বাস নেয়।
নিধি ভ্রু কুচকে আদির দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ কি হলো বুঝতে পারছে না। ওনার কি শরীর খারাপ? হলে হোক তাতে নিধির কি?
নিধি এক পা এক পা করে দরজার দিকে যাচ্ছে নিঃশব্দে।
“স্টপ
নিধি পা বাড়াতেই আদি বলে ওঠে। নিধি দাঁড়িয়ে যায়। আবার ভয়ে কাচুমাচু হয়ে যায়। এই বুঝি আবার কান ধরবে। দুুই হাত দিয়ে দুটো কান ঢেকে ফেলে নিধি। এখন কিছুতেই কানে হাত দিতে দেবে না। কান ছিঁড়ে গেলে সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না।
আদি নিধির মুখের দিকে তাকায়। মনে মনে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয় চোখটা নিধির মুখেই সীমাবদ্ধ রাখবে।
” তোমাকে আমি যেতে বলেছি?
বুকে হাত গুঁজে নিধির দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বলে আদি।
“আআপনার কথা আমি শুনবো কেনো?
বেশ সাহস সঞ্চয় করে থেমে থেমে বলে নিধি। আদি ভ্রু কুচকে ফেলে। নিধি হাত কচলাচ্ছে। এই বুঝি ঠাস করে গালে থাপ্পড় পড়লো। কিন্তু আদি এখনও কিছু করছে না দেখে নিধির সাহস বেরে যায়। একপলক আদির মুখের দিকে তাকায়। বেশ ঠান্ডাই আছে। তা দেখে নিধি আঙুল তুলে বলে
” আমার বেপারে আপনাকে ভাবতে হবে না। আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করবো। এটা আমার পারসোনাল বিষয়। আপনার বেপারে তো আমি নাক গলায় না। তাহলে আপনি কেনো গলান?আপনি আপনার মতো থাকবেন আমি আমার মতো। বুঝলেন?
নিধি খুব রাগ দেখিয়ে বলে।
আদি এবার কপালে দুটো ভাজ ফেলে।
“ভেবে বলেছো তো কথা গুলো?
বেশ ঠান্ডা গলায় বলে আদি।
নিধি আগের মতোই তেজ দেখিয়ে বলে।
” এখানে ভাবা ভাবির কি আছে?
“ওকে আমিও তোমার বেপারে ভাববো না আর তুমিও আমার বেপারে ভাবনা না। এজ ইউ আর ইউস
কপাল চুলকে বলে আদি।
নিধি এবার ভরকে যায়। সরু চোখের তাকায় আদির দিকে। আদির মনের মধ্যে কি চলছে বোঝার চেষ্টা করছে।
” এই বাড়িটা কার? এখানে কে এনেছে তোমায়? সারাদিন গাণ্ডেপিণ্ডে গিলছো সেগুলো কার টাকায়? অবশ্যই আমার। সিরিয়াসলি আমি ভাবতে পারছি না। আমার খেয়ে আমার পরে আমাকে বলছো আমি কে?
বের হও আমার বাড়ি থেকে।
তুরি বাজিয়ে বলে আদি।
নিধি চমকে ওঠে। কোথায় যাবে। কিন্তু এভাবে দমে গেলে তো চলবে না।
“এএখানে আপনি ভাড়া থাকেন। এটা আমার বাড়ি মানে কি? ভালোই তো চাপা মারেন। এক মিনিট আপনি কি অফিসেও বলে বেড়ান না কি? আমার এতোগুলা বাড়ি আছে। আমি এতো এতো বড়লোক। এইসব বলে মেয়েদের ইমপ্রেস করান? জানি জানি
নিধির কথায় আদি চোখ মুখ শক্ত করে ফেলে। নিধি সেটা দেখে একটা ঢোক গিলে। কথা ঘোরানোর চেষ্টা করে বলে
” ননা মানে আআমি আআপনার টাকায় খাবো না। বববলে দিলাম হহুম। আমি জব করবো। কারো খোটার টাকায়,খায় না আমি। আর বেশি চাপাও মারি না😏
থেমে থেমে বলে নিধি।
আদি কিছু বলে না। আদির থেকে উওর না পেয়ে নিধি আবার বলে
“দুই দিন খেয়েছি বলে খোটা দিলেন তো। বড় হয়ে নি সব ধণ শোধ করে দেবো। হুম? নিধিরা নিধি কখনো কারো কাছে ঋণী থাকে না। কি এমন খায় আমি? তাতেই এতো কথা।
আঙুল তুলে তেঁতে উঠে বলে নিধি।
আদি এদিক ওদিক তাকিয়ে ফট করে নিশ্বাস নেয়। থ্রি কোয়াটার প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকায়। তারপর নিধির দিকে এগিয়ে যায়।
” এএএগোচ্ছেন কেনো? ভরকে গিয়ে পেছতে পেছতে বলে নিধি।
আদি উওর না দিয়ে এগোতেই থাকে।
নিধি পিছতে পিছতে দেয়ালের কাছে গিয়ে পিঠ ঠেকে যায়। আদি এক হাত পকেটে রেখে আরেক হাত দেয়ালে নিধি মাথার পাশে রেখে নিধির দিকে একটু ঝুঁকে
“কি বলছিলে এতোখন? দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি। আদির নিশ্বাস গুলো নিধির মুখে আছড়ে পড়ছে। নিধির কথা গুলো গলার কাছেই আটকে আছে। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে ফেলে।
“কথা বলতে পারলেই হলো এটা ভাবো তুমি? তোমার কথা বলা আজ বের করছি?
দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি। আর একটু নিধির দিকে ঝুঁকে হাতটা নিধির কোমরে দেয়। কেঁপে ওঠে নিধি৷ হাত পা আগে থেকেই কাঁপছিলো এখন আরও বেশি কাঁপছে। যে কোনো মুহুর্তে কাঁপতে কাঁপতে শহীদ হয়ে যাবে এমন অবস্থা।
নিধির নাক ছুঁই ছুঁই আদির ঠোঁট। নিধির ঠোঁট গুলো কাঁপছে ঠক ঠক শব্দ করে।
” আআর কখনো কককিছু বববলললবো না।
নিধি কেঁদে দিয়ে তুতলিয়ে বলে।
আদি বাঁকা হেসে নিধির মাথায় চাটি মেরে সরে দাঁড়ায়। নিধি বুকে হাত দিয়ে জোরে শ্বাস নেয়।
“আউট
আদি বিছানায় বসে বলে।
নিধি এক দৌড়ে দরজা ওবদি গিয়ে থেমে যায়। আদির দিকে ঘুরে বলে
” আরিব বাস আপনি দেখি স্টুপিট ইডিয়েট আর ননসেন্স ছাড়া আরও একটি ইংরেজি ওয়ার্ড পারেন। ‘আউট’
আর শুনুন আমি যখন বড়লোক হয়ে যাবো তখন আপনাকেও বলবো ‘আউট’
“তেমাকে তো
আদি দাঁড়াতেই নিধি ভেংচি কেটে এক দৌড় দেয়।
” ইডিয়েট একটা
আদি এক হাত কোমরে আরেক হাত দিয়ে কপাল হাতিয়ে বলে।

চেঞ্জ করে নাপা খেয়ে নেয় নিধি। অনেকখন ভেজা ছিলো জ্বর আসছে শিওর। তাই অসুস্থ হওয়ার আগেই ঔষুধ খেয়ে নিলো। চুল গুলো ঝাঁড়তে ঝাঁড়তে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ফোনে বাবা মার কাছে কথা বলে নেয় নিধি।
এবার আদির বাবার কাছে ফোন দেয়। কিছুদিন আগে উনি বলেছিলেন অফিসে কাজ করার জন্য। এখন নিধি অফারটা এক্সেপ্ট করবে। আদি আজ খোটা দিলো? ভাবা যায়? খাবে না আর আদির টাকায়। আর এতোদিন যা যা খেয়েছে একসময় ফ্রী হলে হিসেব করে দেখবে কতো টাকা হয়েছে। সেই টাকাও দিয়ে দেবে আদিকে। নিধিরা নিধিকে কথা শোনানো।

শশুড় মশাই খুব খুশি হয়। আদির অফিসে জুঁই এসেছে এটা ভেবে উনি বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন এবার নিধি সেখানে থাকে উনি বেশ নিশ্চিত হবেন। বাবার অফিসের এমডি আদি। কখনো কাউকে বাবার পরিচয়ে নিজেকে পরিচিত করতে সে পছন্দ করে না।

টম এসে নিধির পাশে লেজ নারাচ্ছে আর ঘেউ ঘেউ করছে। হয়ত কিছু বলার চেষ্টা করছে।
“এই টম শোননা
নিধির ফ্লোরে বসে টমকেও বসায়।
টম নিধির মুখের দিকে তাকায়।
“একদিন আমি আর তুই মিলে আচ্ছা মতো ধোলাই দেবো আদু ভাইকে বুঝলি। বেটা খবিশ খালি বকে। তোর মালিক বলে তুই আবার বলে দিস না।
টম ঘেউ ঘেউ করে ওঠে।
” চুপ কর না। তোর ওই খবিশ মালিক সুরসুর চলে আসবে তো।
বিরক্ত হয়ে বলে নিধি।
টম চুপ করে নিধির সাথে চেপে বসে। নিধি মুচকি হেসে টমের নরম নরম শরীরে হাত বুলাই।
“তোকে না আমার বেশ লাগে। কি মিষ্টি তুই। আর তোর মালিক তেঁতো। একটু মিষ্টি হতে বলিস কেমন? আমার মন্টুসোনা
টমের মাথার কাছে মুখটা নিয়ে বলে।

চলবে

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ২১
#Tanisha Sultana

সকাল সকাল নিধি টমকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছে। এখানকার রাস্তা ঘাট দেখায় হয় নি। তাছাড়াও ওই ফুলের বাগানটা ছুঁয়ে দেওয়ার ইচ্ছে টা নিধি দমিয়ে রাখতে পারছে না।
টমের গলায় বেল্ট বেধেছে। খুব সকাল হওয়াতে রাস্তা ঘাটে লোকজন নেই বললেই চলে। সকালের ফুরফুরে হাওয়ায় নিধির মনটা নেচে নেচে উঠছে। শিশিরে ঘাস ভিজে গেছে। নিধি জুতো খুলে ঘাসের ওপর দাঁড়ায়। একটু নিচু হয়ে ঘাস গুলো ছুঁয়ে দেয়।
বাসা থেকে বেশ খানিকটা দুরে চলে এসেছে ওরা। নির্জন জায়গা। দুইধারে সারি সারি কাঠ গাছ আর মাঝখানে রাস্তা। টম রাস্তার পাশে বসে নিধির দিকে তাকিয়ে আছে।
নিধি জুতো পড়ে নেয়। এতোখনে খেয়াল হলো কতো দুর চলে এসেছে। রাস্তা ঘাট কিছুই তেমন চেনে না। হারিয়ে গেলে আর বাড়ি ফেরা হবে না বাবা মাকে দেখাও হবে না। কেউ জানতেও পারবে না নিধি কোথায় হারিয়ে গেছে। আদি তো খুঁজবেও না।
“টম তারাতাড়ি চল
নিধি টমের বেল্ট ধরে হাঁটা শুরু করে।
” ওই বাড়ির ছাঁদে থেকে ফুল ছিড়বো। আবার আজকে আমি অফিসে যাবো সাথে কোচিং এ। খাবো গোছল করবো ড্রেস পড়বো। কতো কাজ আমার তা ছেড়ে হাঁটতে হাঁটতে কতো দুর চলে এসেছি।
নিধি হাঁটতে হাঁটতে বলে।
হঠাৎ করে একটা গাড়ি ব্রেক করে নিধির সামনে। ভয় পেয়ে যায় নিধি। সাথে নিধির জুতোটাও ছিঁড়ে যায়।
টম ঘেউ ঘেউ করে গাড়ির দরজার দিকে যায়। নিধি বুকে থু থু নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে কোমরে হাত দিয়ে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। কিছু কড়া কথা শুনিয়ে দেবে ডাইভারকে।
গাড়ির ভেতর থেকে বের হয় লম্বা চওড়া সুদর্শন যুবক। যার গালে চাপ দাঁড়ি নেই। গোফ আর থুতনিতে কিছু দাঁড়ি। এমনিতেই লোকটা নিধিকে ভয় দেখিয়েছে তারপর চাপ দাঁড়ি নেই। নিধির রাগটা দ্বীগুন বেড়ে যায়। ছেলেদের চাপ দাঁড়ি কেনো থাকবে না?
সরি সরি সরি ভেরি সরি। আসলে আপনি এমন ভাবে হাঁটছিলেন আবার হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার মাঝখানে চলে আসলেন। আমি ঠিক বুঝতে পারি নি। ভেরি সরি।
ছেলেটা এক হাত দিয়ে কান ধরে মিষ্টি করে হেসে বলে।
নিধি কিছু বলার জন্য হা করেছিলো। ছেলেটার কথা শুনে মুখটা বুজে নেয়। দোষটা যে নিধির সেটা নিধি বুঝতে পেরে চুপসে যায়। রাগটাও চলে যায়। মাথা নিচু করে ফেলে।
“সরি বললাম তো। আমারও দোষ আছে আমি একটু তারাহুরো করেই ডাইভ করছিলাম। একটু সাবধান থাকা উচিৎ ছিলো আমার। এতোগুলো সরি।
ছেলেটার কথা শুনে ভালো লাগে নিধির। দোষ না করেও কেমন নিজের দোষ স্বীকার করছে।
ছেলেটা নিধির পায়ের দিকে তাকিয়ে বলে
” ওপপপপস আমার জন্য আপনার জুতো ছিঁড়ে গেলো। আমি না একটা কুম্ভকর্ণ।
নিধি মিষ্টি করে হেসে ফেলে।
“ইটস ওকে। আপনার দোষ নেই। ভুলটা আমারই।
রিনরিনিয়ে বলে নিধি।
” দোষটা যারই হোক। আপনি এভাবে বাসায় যাবেন কিভাবে?
“পবলেম নেই আমার বাসাটা সামনেই।
” প্লিজ আমি পৌঁছে দেই। জুতো ছিঁড়ে দেওয়ার জন্য বলছি। প্লিজ। না কিন্তু করবেন না
নিধি আমতা আমতা করছে। অচেনা ছেলের গাড়িতে উঠবে। যদি নামিয়ে না দেয়? যদি বাচ্চা ধরা হয়? যদি নিয়ে যায়?
“কি ভাবছেন? আমি বাচ্চা ধরা না। আমি খুব ভালো। ভালো একটা জব করি। এখন অফিসেই যাচ্ছিলাম। আসলে আমাদের বস খুব রাগী। লেট হলেই বকা দেয়। ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে তাই তো এভাবে ডাইভ করছিলাম।
ছেলেটার কথা শুনে নিধি হালকা হাসে। আবার ভাবে বুঝলো কি করে নিধি এসবই ভাবছিলো?
অনিচ্ছা স্বতেও নিধি টমকে নিয়ে গাড়িতে ওঠে। টমকে কোলের মধ্যে বসিয়েছে। ছেলেটা গাড়িতে উঠে ছিট বেল্ট বাঁধতে বাঁধতে প্রশ্ন করে।
” আপনার নামটা জানতে পারি? না আসলে এতো কথা বললাম। যেভাবেই হোক আপনার মুখটা চিনে ফেললাম। এবার নামটা জানলে ভালো হতো। বাই এনি চান্স যদি কখনো রাস্তায় বা কোথাও দেখা হয়ে যায়। তখন তো জুতো ছিঁড়ে ফেলছিলাম এটা বলে ডাকতে পারবো না। তাই নামটা জানলে নাম ধরে ডাকতে পারতাম
তাছাড়াও আপনার জুতোটাতো ফেরত দিতে হবে। তাই না?
নিধি হাকরে কথা গুলো শুনছে। নিধি এতোদিন জানতো নিধিই সর্বোচ্চ কথা বলতে পারে। এবার দেখছে এই লোকটা নিধিকেও ছাপিয়ে যাবো।
“ইয়ে মিস বলেন?
গাড়ি স্ট্রাট দিয়ে বলে।
” নিধিরা নিধি। আপনার?
“সৌরভ
” সৌরভ গাঙ্গুলি?
নিধি হেসে বলে।
“সৌরভ খান। আপনার নামটা কিন্তু জোশ। ভালো লাগছে।
” একটু পরে বলবেন আপনি জোশ ভালো লাগছে।
“এক্সজেকলি, আপনিও জোশ
দাঁত কেলিয়ে বলে সৌরভ।
নিধি কপালে দুটো ভাজ ফেলে তাকায়।
” সরি সরি মজা করলাম।
“ভালো
নিধি মুখ ঘুরিয়ে বসে। এই লোকটা বদের হাড্ডি। গোমড়ামুখো নিরামিষ বরের থেকেও বিরক্তিকর।
” গাড়ি থামান গাড়ি থামান নামবো
নিধি চেঁচিয়ে বলে ওঠে। সৌরভ হকচকিয়ে গাড়ি থামিয়ে ফেলে।
“কি হলো?
বেশ ভয় পেয়ে বলে।
” আমার বাড়ি এসে গেছে। দাঁত কেলিয়ে ছিট বেল্ট খুলতে খুলতে বলে নিধি।
সৌরভ মন খারাপ করে বলে
“ওহহহ
” বাই।
ধন্যবাদ দেবো না। জুতো ছিঁড়ে ফেলছেন আপনি আমার। শোধবোধ।
বলে নিধি টমের বেল্ট ধরে টানতে টানতে চলে যায়।

আদি খাবার রেডি করেও যখন টমের কোনো সারাশব্দ পায় না তখন বুঝতে পারে বাসায় নেই। নিধির রুমে গিয়ে দেখে রুমটা ফাঁকা।
“কোথায় গেলো?
ভাবতে ভাবতে খাবার টেবিলে সাজিয়ে নেয়। গোছল করে অফিসের জন্য তৈরি হয়ে এসেই দেখে নিধি আর টম এখনো আসে নি। তাই দরজা খুলে বাড়ির গেটের কাছে যায়। দেখার জন্য রাস্তায় গেছে কি না?
কিন্তু গেটের কাছে যেতেই দেখতে পায় নিধি একটা ছেলের গাড়ি থেকে নামছে। ছেলেটাকে দেখতে পায় না। কিন্তু নামার পরে নিধি হাত নারিয়ে বাই বলে এটা দেখে ফেলে।

নিধি গেটের কাছে আসতেই আদিকে দেখতে পায়। বুকে হাত গুঁজে ভ্রু কুচকে দাঁড়িয়ে আছে।
নিধি আদিকে দেখে ঘাবড়ে যায়। এই বুঝি বকা দেয়। বা কান ধরে। নিধি টমের বেল্ট ছেড়ে দুই হাত দিয়ে কান লুকিয়ে ফেলে।
” আআআসললে আআমি
নিধি থেমে থেমে বলতে যায়।
“যা খুশি করো। আই ডোন্ট কেয়ার।
একরাশ অভিমান নিয়ে আদি টমের বেল্ট ধরে হনহনিয়ে চলে যায়। আদি চলে যেতেই নিধি কান থেকে হাত সরিয়ে নেয়। বুকে হাত দিয়ে জোরে শ্বাস নেয়।
” আল্লাহ বাঁচাইছে।
নিধির কথা শেষ হওয়ার আগেই আদি এসে নিধির কান ধরে। নিধি আহহহহ বলে আদির দিকে তাকায়।
“খুব বার বেরেছে তোমার? বয়ফ্রেন্ডের গাড়ি করে আমার বাড়িতে আসা হচ্ছে? কি ভেবেছিলে আমি কিছুই বলবো না? থাপ্পড়িয়ে গাল লাল করে দেবো।
মারাক্তক রেগে বলে আদি।
নিধি ব্যাথায় চোখ মুখ কুঁচকে নেয়।
” লাগছে
ব্যাথায় মিয়িয়ে যাওয়ার কন্ঠে বলে নিধি।
“লাগুক। কে ছেলেটা? আমার বাড়িতে থাকলে এসব চলবে না। স্টুপিট একটা। বলো কে ও?
” বলবো কেনো?
নিধি ত্যারা ভাবে বলে।
আদি দমে যায়। নিধির কান ছেড়ে দেয়। কান ছাড়া পেতেই নিধি কানে হাত দেয়।
“বলবা কেনো? ভেতরে চলো
আদি নিধির হাত ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে যায়।
” আজ কপালে দুঃখ আছে আমার। নিধি কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে নিধি।
বাড়িতে ঢুকে। দরজা লাগিয়ে আদি চেয়ার টেনে বসে। ঢকঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে ফেলে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে নয়টা ছুঁই ছুঁই। সাড়ে নয়টায় মিটিং আছে।
নিধি দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে আছে। তবে নিধি মনে মনে ভয়টা কমিয়ে নিয়েছে। কেনো ভয় পাবে?

আদি ফস করে শ্বাস নিয়ে খেতে বসে যায়। নিধিকে খাওয়ার জন্য বলে না। টমকে মাছ দিয়ে ভাত মাখিয়ে টমের থালাতে দিয়ে আদি খাওয়ায় মন দেয়।
নিধি আদিকে ভেংচি কেটে রুমে যেতে নেয়। আর তখনই

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে