#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৯
#Tanisha Sultana (Writer)
“এই গান আর কন্ঠটা আমার এতো চেনা কেনো মনে হচ্ছে? আদি তো এভাবে গিটার বাজাতে পারবে না ওর হাত কাটা। তাহলে কে? ভুত? কিন্তু ভুত কেনো গিটার বাজিয়েগান গাইতে যাবে। ভুতকে কি ভুতে ধরেছে না কি?
এই অনেক চিন্তা নিধির মাথায় ঘুরছে। অলরেডি ঘামতে শুরু করছে নিধি। এক দৌড়ে রুমে ফেরত আসে। আর ঠাস করে আদির সাথে ধাক্কা খায়।
” এবার নিধি তুই শেষ।
নিধি চোখ মুখ বন্ধ করে বকা খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে বলে
“আই এম ভেরি সরি প্রচুর সরি। আমি দেখি নি। প্লিজ বইকেন না। আপনি বকলে আমার হার্ট খুব জোরে জোরে লাফায় মনে হয় বেরিয়ে যাবে
“আজ আর তোমায় বকবো না। জাস্ট একটা কোশ্চেন। তুমি কি চোখ দেখো না?
আদির শান্ত গলার প্রশ্ন শুনে নিধি চোখ খুলে। কিছুটা সাহস জুগিয়ে বলে
” ভুত দেখেছি
আদি ভ্রু কুচকে তাকায় নিধির দিকে। নিধি গলায় হাত দিয়ে বলে
“সত্যি দেখেছি। গান গাইছিলো।
আদি অনেক কষ্টে হাসি চেপে বলে
” হুমম আছে তো ভুত
নিধি ভয়ে শেষ। এবার ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয়
“কাঁদলে ভুত এখন তোমার কাছে চলে আসবে
ঠাস করে নিধি কান্না অফ করে।
” গুড গার্ল।
“আমি থাকবো না এখানে
” সত্যি। কাল আমি তোমাকে টিকিট কেটে দেবো
“কিন্তু
” এখানে ভুত আছে। তুমি থাকলে তোমার ঘাড় মটকাবে। মেয়েদের তো ভুত একদম পছন্দ করে না। সো তোমার চলে যাওয়াই ভালো
নিধি মাথা নারায়। তারপর কিছু একটা চিন্তা করে বলে
“ভুত শুধু মেয়েদের ঘাড় কেনো মটকাবে? আর আপনি ভয় পান না তাহলে আমি কেনো ভয় পাবো? আর ওটা যে ভুতই গান গাইছিলো তার কি প্রমাণ আছে? তবে একটা জিনিস খুব ভাবাচ্ছে আমাকে?
নিধি মুখে হাত দিয়ে চিন্তিত হয়ে বলে। আদিও আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে
” কি?
“কোনো মানুষ হলে তো কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া পড়তো কিন্তু ওই ভুত বা মানুষ যেই হোক গান কেনো গাইছিলো?
আদি হাত দিয়ে মাছি তাড়ানোর মতো করে বলে
” সেটা তো সেই বলতে পারবো
“কে?
নিধি একটু উঁচু হয়ে আদির সোজাসুজি দাঁড়িয়ে বলে
” ভুত
বলেই আদি বেলকনিতে যেতে নেয়। নিধি দৌড়ে আদির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
“প্লিজ আপনি যাবেন না
আদি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে
” আমি যাবো
“আপনি যে ঘাড় ত্যারা সেটা আমি জানি
” কি বললে তুমি?
আদি চোখ মুখ শক্ত করে বলে। নিধি দাঁত দিয়ে জীভ কেটে বলে
“প্লিজ আপনি যাবেন না। আপনার ঘাড় মটকাবে
” মরলে আমি মরবো তাতে তোমার কি?
আদি কথায় নিধি শান্ত হয়ে যায়। সত্যিই তো আমার কি? কথাটা মাথায় আসে নিধির। আদির সামনে থেকে সরে যায়। আদি দুই পা হেঁটে আবার পিছয়ে নিধির কাছে আছে
“জীবনের রাস্তায় কারো হাত ধরে অনেকটা পথ এগিয়ে যাওয়ার পরে সেখান থেকে একা ফেরা বা অন্য কারো হাত ধরাটা বেশি কঠিন।
নিধি হা করে ভাবছে আদি কি বললো? নিধির মাথায় কিছুই ঢুকলো না
” আমি কিছু বুঝতে পারলাম না
নিধি অসহায় ফেস করে বলে
“আমি কখনোই তোমাকে এটেনশন দিতে পারবো না। আমার কাছে সৌরভ ঠিক যতটা দামী তার তিন ভাগের একভাগও তোমার দাম নেই আমার কাছে। জাস্ট কিছু কন্ডিশনের জন্য তোমাকে বিয়ে করেছি বা এখানে নিয়ে এসেছি। সব ধরনের সাহায্য তুমি পাবে আমার থেকে।
নিধি অনেকটা খুশি হয়
” হেল্প করবেন আপনি আমায়?
“হুমমম। বাট ডিভোর্স টা আমি এখনি দিতে পারবো না। জানোই তো বিয়ের ছয় মাস না হলে ডিভোর্স হয় না।
” আমি স্টাডি করতে চায়
“হুমম করো।
” তো এখানকার কোনো একটা ভার্সিটিতে আমাকে এডমিশন করিয়ে দিন
“ওকে দিবো।
” সত্যি
“হুম সত্যি
নিধি আদির গাল টেনে বলে
” আমার টুনুমুনু
বলেই নিধি দৌড়ে চলে যায়।
“কি বলে গেলো?
আদি ভাবনায় পড়ে যায়।
আদি আর নিধির জন্য দুইটা রুম। এক রুমে আদি থাকে আরেক রুমে নিধি। রাত প্রায় একটা ছুঁই ছুঁই। নিধির ঘুম আসছে না। তখন ঘুমানোর কারণে এখন ঘুম নেই।
নিধি ভাবছে সৌরভের সাথে রিলেশন হওয়ার দিনটার কথা।
নিরার বিয়েতে দেখে নিধি সৌরভকে। সৌরভ ই একমাত্র ছেলে ছিলো যাকে নিধির ভালো লাগতো। সারাক্ষণ সৌরভের দিকে তাকিয়ে থাকতো। সৌরভের সাথে আদি থাকতো তাই নিধি সাহস করে কথা বলতো না।
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সৌরভ নিধিকে প্রপোজ করে। আর নিধি সাত পাঁচ না ভেবেই রাজি হয়ে যায়। খুব সুন্দর ছিলো সৌরভ নিধির প্রেমটা। নিধি তখন ইন্টারে পড়তো। সকাল নয়টা থেকে নিধির কোচিং ছিলো। প্রতিদিন আটটায় বাসা থেকে বের হতো। পুরো রাস্তা সৌরভের সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে যেতো। দশটায় কোচিং শেষে আরও একঘন্টা ফোনে কথা বলে আবার এগারোটা থেকে আরেকটা প্রাইভেট পড়তো। তারপর আবার হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরতো ফোনে কথা বলতে বলতে।
মাঝেমাঝে সৌরভের সাথে ফুসকা খেতে যেতো। কতো ভালো ছিলো সম্পর্কটা। কোনো কন্ডিশন ছিলো না। কোনো চাওয়া পাওয়া ছিলো না।
এসব ভেবে নিধি মুচকি হাসে। সেই দিন আর ফিরে আসবে না। সৌরভ ও আর আগের মতো হতে পারবে না। আমিও পারবো না।
” আচ্ছা যদি আমার বিয়ে না হতো। তাহলে কি আবার সৌরভ আমাকে এক্সেপ্ট করতো? না বলতো তোমার বাবা আমার সাথে এতো কিছু করার পরেও তুমি আমার সামনে কেনো এসেছো? আই হেট ইউ নিধি।
এসব শোনার আগেই আমার বিয়ে হয়ে গেছে এটাই ভালো। সৌরভের কাছ থেকে হেট হই শুনতে আমার প্রচন্ড কষ্ট হতো।
নিধি দীর্ঘ শাশ্ব ফেলে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকাল বেলা প্রচন্ড জোরে দরজা ধাক্কানোর শব্দে নিধির ঘুম ভাঙে। ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে দেখে রনোচন্ডি রুপ ধারণ করে আদি দাঁড়িয়ে আছে। আদির চেহারাটা দেখে নিধির ঘুম পালিয়ে যায়
“আআপনি
” তো কি তোমার সৌরভ থাকবে? আমি তোমাকপ এমনি এমনি আমার বাড়িতে রাখতে পারবো না।
“ওহহ ভাড়া দিতে হবে
” থাপ্পড়ে গাল লাল করে দেবো
আদির ধমকে নিধি দুই পা পিছিয়ে যায়।
“প্রতিদিন সকালে উঠে রান্না করবা। বসে বসে খেয়ে তো হাতির মতো হয়ে যাচ্ছ। এতো কাম কাজ করে ভুরি কমাও
বলে আদি হনহনিয়ে চলে যায়। নিধি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ভালো করে দেখে
” আমি মোটা? হাতি? আমার ভুরি আছে? আল্লাহ কেমন মিথ্যা কথা বলে। আমি মাএ ৩৯ কেজি। আর ওই লাটসাহেব আমাকে হাতি বললো
নিধিও রাগে গজগজ করতে করতে ফ্রেশ হতে যায়। ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে যায়। কালকে মনি তরকারি মাছ নিয়ে এসেছিলো যেগুলো রান্না করেছিলো। আজকে বাসায় করলা ছাড়া কিছু ই নেই।
নিধি এবার ভাত রান্না করে আর করলা ভাজি করে। আর ইলিশ মাছ করলা দিয়ে রান্না করে। এসবের একটাও নিধি খায় না। খাবার টেবিলে রেখে নিধি চেয়ারে বসে গালে হাত দিয়ে ভাবছে
“এসব আদি খেতে পারবে না। ইসস কি যে ভালো লাগছে আমার। আজ সারাদিন না খেয়ে থাকবে। আমি তো একটু পরেই নুডলস রান্না করে খাবো। আজ আমার জানের স্বামী না খেয়ে থাকবে। খুশিতে আমার নাচতে ইচ্ছে করছে।
আদি এসে চেয়ার টেনে বসে। নিজে নিজেই খাবার বেরে নেয়। নিধি দাঁত কেলিয়ে আদির দিকে তাকিয়ে আছে। আদি করলা ভাজি আট তরকারি দিয়ে ভাত মেখে মুখে দেয়
নিধি বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়। এবার আদি সাহেব বুঝবে নিধি কি জিনিস
আদি চোখ বড়বড় তাকায় নিধির দিকে। নিধি উঠে দাঁড়িয়ে দৌড় দেওয়ার পজিশন নেয়।
” 1 2 3 নিধি তুই এবার পালা। নাহলে লাটসাহেব তোকে এসব গিলিয়েই ছাড়বে।
নিধি দৌড় দিতে যাবে তখন আদি নিধির হাত ধরে
“এ বাবা এবার কি হবে? এবার নিধি তুই গেলি। লাটসাহেব তোকে এবার সব করলা খাওয়াবে
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ১০
#Tanisha Sultana (Writer)
“বিশ্বাস করেন আমি জানতাম না আপনি করলা পছন্দ করেন না। জানলে রান্না করতাম না
নিধি চোখ মুখ খিঁচে বলে। আদি নিধির হাত ছেড়ে দেয়
” তোমায় কে বললো আমি করলা পছন্দ করি না?
আদি আবার টেবিলে বসে বলে। নিধি সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
“আপনি করলা পছন্দ করেন?
আদি বেশি করে তরকারি নিয়ে বলে
” ভীষণ পছন্দ করি। এবার থেকে প্রতিদিন তুমি আমার জন্য করলার তরকারি রান্না করবা
আদি খেতে থাকে। নিধি হা করে তাকিয়ে আছে। করলা কারো পছন্দের খাবার হতে পারে জানা ছিলো না নিধির।
নিধি ভেবেছিলো আদি না খেয়ে থাকবে কিন্তু হলো উল্টো এখন নিধির না খেয়ে থাকতে হবে প্রতিদিন। কান্না পাচ্ছে নিধির।
“তুমি হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?
আদির কথায় নিধি আদির দিক থেকে চোখ ফেরায়।
” আমি করলা খায় না। কিছুটা রাগ নিয়ে বলে নিধি।
“তো? খাবার মুখে পুরতে পুরতে বলে আদি। নিধি চোখ পাকিয়ে তাকায় আদির দিকে।
” রাহ্মসীর মতো তাকিয়ে আছো কেনো? খাবে তো খাবার আছে
“আমি করলা খায় না। আর আপনার বাসায় করলা ছাড়া কিছু নেই সো৷ আমি এখন কি খাবো
নিধি দাঁতে দাঁত চেপে চিৎকার করে বলে। আদি কানে দেয়
” স্টুপিট। গাঁধার মতো চেঁচাচ্ছ কেনো? খেতে হলে করলা খাবে না হলে খাওয়া দরকার নেই
আদির এরকম সোজাসাপ্টা জবাবে নিধির রাগটা আরও বেরে যায়। হনহনিয়ে রুমে চলে যায়। পায়চারি করে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে
“তাই তো ভাবি কথার মধ্যে এতো তেতো গন্ধ আসে কোথা থেকে। করলা খেয়ে বড় হলে তো করলার মতোই কথা বের হবে। যতসব। আমাকে স্টুপিট বলা। স্টুপিট তুই তোর চোদ্দ গুষ্টি স্টুপিট। নেহাত আমি একটুখানি ভয় পায়। নাহলে দেখিয়ে দিতাম আমি কি।
আদি খাওয়া শেষ করে নিধির রুমে নক করে
” হেই স্টুপিট
এমনিতেই নিধি রেগে আছে তারপর স্টুপিট বলাতে নিধির আরও রাগ হয়
“কথায়ই বলবো না
নিধি খাটে গোল হয়ে বসে
” শুনতে পাও না? কালা না কি?
আদি আবার বলে। নিধি বালিশ ছুঁড়ে মারে দরজায়
“যদি ভার্সিটিতে যেতে চাও তো পাঁচ মিনিটে রেডি হয়ে আসো
ভার্সিটির কথা শুনে নিধি এক লাফে উঠে দাঁড়ায়। একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। কোনো রকম পেচিয়ে শাড়িটা পড়ে লাফিয়ে বের হয়। কারণ যেভাবে শাড়িটা পেঁচিয়েছে তাতে হাঁটা পসিবল না।
কোনোরকম লাফিয়ে রুমের বাইরে যায় আর ঠাস করে পড়ে যায়। নিধি একবার চারপাশে চোখ বুলায়
” যাক বাবা আজ লাটসাহেবের সামনে পড়ে যায় নি। আমি তো সব সময় মেপে মেপে পা ফেলে তারপরও খালি ওই লাটসাহেবের সামনে উস্টা খায়। মাঝে মাঝে আমিও ভাবি গোটা দুনিয়া রেখে আমি কেনো লাটসাহেবের সামনেই পড়ে যায়
“তুমি যে একটা ইডিয়েট আর প্রতিবন্ধী তাই পড়ে যাও
আদির কন্ঠ শুনে নিধি চমকে সামনে তাকায়। আদি হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে। নিধি মনে মনে বলে
” যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধা হয়
আদি নিধির দিকে এগিয়ে এসে নিধির সামনে হাঁটু ভাজ করে বসে। নিধি কিছুটা ভড়কে যায়। আদি নিধির ঠোঁটের দিকে চোখ রেখে কিছুটা মাতাল করা কন্ঠে বলে
“তোমাকে বলছি এলোমেলো শাড়িতে আমার সামনে আসবা না।
নিধি একটা ঢোক গিলে থেমে থেমে বলে
” আআসলে আমি তো শাড়ি পপপড়তে পারি না
আদি কিছু না বলে নিধির ঠোঁটের দিকেই তাকিয়ে আছে। নিধি অস্বস্তিতে পড়ে যায়। উঠবে যে তারও উপায় নেই
“তোমার ঠোঁটটা এতো বাজে দেখতে কেনো?
নিধি ঠাস করে ঠোঁটে হাত দেয়।
” বাজে দেখতে তাও দশ মিনিট ধরে তাকিয়ে আছেন। একটু সুন্দর হলে কি যে করতেন
মনে মনে বলে নিধি
আদি নিধির ঠোঁটের ওপর থেকে নিধির হাত সরিয়ে দেয়।
“ককি করছেন?
” টাচও করি নি
আদি সোজাসাপ্টা উওর দেয়।
“সত্যিই উনি তো টাচও করে নাই। তাও আমার এমন বাজে ফিলিংস আসছে কেনো? নিধি তুই সত্যিই একটা গাঁধা স্টুপিট।
আদি নিধির ঠোঁটে হাত দিয়ে লিপস্টিক মুছে দেয়। নিধি কেঁপে ওঠে। আদি উঠে সরে দাঁড়ায়। নিধি জোরে জোরে শ্বাস নেয়
” তাড়াতাড়ি করো আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
“আআআমি তো
” আমড়া কাঠের ঢেকি সেটা আমি জানি। উঠে দাঁড়াও আমি হেল্প করছি
নিধি দেয়াল ধরে উঠে দাঁড়ায়। আদি পেছন ঘুরেই বলে
“আচল ঠিক করো
নিধি আচল ঠিক করে। আদি নিধির কুচি ঠিক করতে করতে বলে
” তুমি যথেষ্ট বড় হয়েছো। সব কিছু বুঝো তুমি। তাই একটা কথা বলছি ঠান্ডা মাথায়। আমি তোমাকে ভালোবাসতে চায় না। চাই না বলছি কেনো সেটার কারণ হলো। আমাদের মনটা তো আমাদের কন্ট্রোলে থাকে না। যেহেতু আমি একজন পুরুষ মানুষ তো তোমার ওই নাগিনী রুপ দেখে আমারও অনেক বাজে চিন্তা আসে মনে। তোমার তো লজ্জা জিনিসটা নেই। তো বলছি প্লিজ একটু ভালো ভাবে থাইকো। কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছো নিশ্চয়।
নিধি আদির কথা শুনে চোখে পানি চলে আসে। কেনো জানি বুকের বা পাশে ব্যাথা শুরু করে দেয়।
আদি নিধির হাতে কুঁচিটা দেয়
“তুমি তো সৌরভকে ভালোবাসতে তো তুমি নিশ্চয় ভালোবাসার মর্মটা বুঝো। আমি এখনো একটা মেয়েকে ভীষণ ভালোবাসি। যদিও তাকে কখনো আমি পাবো না তবুও তার জায়গা কাউকে দিতে চায় না। তুমিও নিশ্চয় সৌরভের জায়গাটা কাউকে দিতে পারবে না।
আদি কয়েকপা এগিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসে
” ভার্সিটিতে যাচ্ছো কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে না। সো শাড়ি পড়ে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না।
নিধি দাঁতে দাঁত চেপে বলে
“আমার ড্রেস নেই। সব শাড়ি
” তোমার রুমের কাবার্ড তো খুলে দেখো
আদি চলে যায়। নিধি এবার চোখের পানি আটকে রাখতে পারে না। টপটপ করে পড়ে।
“নাগিনী সাজ দিয়ে থাকি আমি? লজ্জা নেই আমার? এতো বড় কথা বললো আমাকে
নিধি রুমে চলে যায়। কাবার্ড খুলে দেখে কয়েকটা ড্রেস রাখা। নিধি কালো জিন্স আর সাদা টিশার্ট আর তার ওপরে লাল একটা শার্ট পড়ে। চুল গুলো খোলা।
আদি গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছিলো। নিধি কে দেখে আদি ভ্রু কুচকে নিধির দিকে তাকায়।
” এই মেয়েটা মানুষ হবে না
“চলুন
নিধি গাড়ির দরজা খুলতে খুলতে বলে। আদি নিধির হাত ধরে
” আর কোনো ড্রেস পাও নি
নিধি হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে
“আমার এই ড্রেসটাই ভালো লাগছে
” এসব ড্রেস আমার এখানে চলবে না
নিধি একটা ভেংচি কাটে
“যাও ওড়না নিয়ে আসো
” এই ড্রেসের সাথে ওড়না নিলে জাস্ট কাজের মেয়ে জরিনা লাগবে
“তো তুমি কি নিজেকে কারিনা কাপুর ভাবো না কি
” নাহহ। আমি নিধিরা নিধি।
“এতো কথা পছন্দ না। যাও
নিধি কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে ছিট বেল্ট বাঁধে। আদি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে গাড়িতে বসে।
“ইডিয়েট
নিধি গাড়ির কাঁচের দিকে তাকিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখার চেষ্টা করছে।
” কাঁচটা নামালে মন্দ হতো না
নিধি কাঁচটা নামিয়ে হাঁত ভাজ করে হাতের ওপর মাথা রেখে বাইরে দৃশ্য দেখছে। কক্সবাজার নিধি আগে কখনো আসে নি। এই প্রথম। পঁয়ত্রিশ ঘন্টা হয়ে গেছে কক্সবাজার এসেছে এখনো কোথাও ঘোরা তো দুর বাড়ির চারপাশটাই দেখা হয় নাই।
“আমাকে একটা ফোন কিনে দেবেন?
আদির দিকে তাকিয়ে বলে নিধি। আদি এক পলক নিধির দিকে তাকায়।
” সৌরভের সাথে কথা বলার জন্য
নিধি আবার বাইরে তাকায়। এই মানুষটার সাথে কথা বলাই ভুল।
“ঠিক আছে দেবো
নিধি খুশি হয়ে আদির গাল টেনে দিয়ে বলে
” আমার টুনুমুনু
আদি ঠাস করে গাড়ি ব্রেক করে। নিধি এবার বুঝতে পারে ও কি করেছে। কাচুমাচু হয়ে বসে নিধি। আদি চোখ ছোটছোট করে নিধির দিকে তাকায়
“সরি আসলে খুশি হয়ে এমনটা করেছি
” খুশি হলে গাল টেনে দিয়ে টুনুমুনু বলতে হয়
আদি অবাক হয়ে বলে। নিধি মাথা নিচু করে বসে আছে। নিজেকে নিজেই গালি দিচ্ছে নিধি।
“নামো
নিধি নামে। খুব সুন্দর একটা কলেজ। নিধির চোখ জুড়িয়ে যায়। আদি গাড়ি ছাইডে রাখতে যায়। নিধি ঘুরে ঘুরে কলেজটা দেখছে। নিধি আগে যে কলেজে পড়তো সেই কলেজের থেকেও এটা বেশি সুন্দর। কলেজের দুই পাশে ফুল গাছ। সেখানে নানা রকমের ফুল ফুটেছে। নিধি দৌড়ে দৌড়ে ফুল গাছ গুলো ছুঁয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খায়।
এদিকে আদি গাড়ি গাইড করে এসে দেখে নিধি নেই। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কোথাও নেই
” আল্লাহ এখন এই গাঁধাকে আমি কোথায় খুঁজবো? আমারই ভুল হয়েছে ওকে নামিয়ে দিয়ে। এবার খুঁজো ইডিয়েট একটা
চলবে