#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৭
#Tanisha Sultana (Writer)
“ভাবতেছি তোমাকে একটা প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেবো
আদি কপাল চুলকে বলে। নিধি তাড়াহুড়ো করে দাঁড়িয়ে বলে
” মন্দ হয় না। এমনিতেও আমার কাছে টাকা নাই। ভাতা করে দিলে তাও তো প্রতি মাসে টাকা পাবো
“নিজেকে প্রতিবন্ধী বলে পরিচয় দিতে তোমার ভালো লাগবে?
” হুমম লাগবে
“ইডিয়েট একটা
” আই নো
“যাও এখান থেকে
” না বললেও যাইতাম। লাটসাহেবের সাথে থাকার ইচ্ছে আমার নাই
মনে মনে বলে নিধি চলে যায়
বাড়ির কারো সাথে কথা বলে না নিধি। নিধির বোন মা অনেক চেষ্টা করে নিধির সাথে কথা বলার নিধি পাত্তাই দেয় না।
গাড়ি ডাইভ করছে আদি আদির পাশে বসে আছে মনি আর পেছনে নিধি। কক্সবাজার আদি মনি এক সাথে কাজ করে। পাশাপাশি ফ্লাটে থাকে দুজন।
আদি আর মনি কাজ নিয়ে অনেক কথা বলছে নিধি ঘুমিয়ে।
ছয় ঘন্টা পরে ওরা কক্সবাজার পৌছায়। নিধি তো ছয় ঘন্টায় ঘুমিয়েছে।
মনি মনির বাসায় চলে যায়। নিধি আর আদি ওদের বাসায়। আদির বাসায় ঢুকে নিধি হা হয়ে যায়। একটা ছেলের বাসা এতোটা গোছালো হতে পারে?
” হা করে না থেকে রুমে যাও
আদির কথায় নিধি ভেংচি কেটে রুমে চলে যায়। ফ্রেশ হয়য় এখন আবার আরেক ঝামেলা। নিধির পিরিয়ড শুরু হয়ে গেছে।
“এবার কি করবো? এখানকার কিছুই তো চিনি না
নিধি দৌড়ে রুম থেকে বের হয়। আদি কিচেনে কফি বানাচ্ছে
” শুনুন
“কান খোলা আছে
কাজে মন দিয়ে বলে আদি।
” আমি মনি আপুর বাসায় যাবো
আদি নিধির দিকে তাকায়। নিধি ওড়নায় গিট্টু দিচ্ছে আর খুলছে
“এখন মনি বাসায় নেই
” কোথায় গেছে
“সমস্যা কি তোমার?
” বলুন না
“মেবি মার্কেটে গেছে
” মনি আপুর নাম্বারটা প্লিজ দেন না
আদি নিধির কাছে আসে
“বলো
নিধি একটু পিছিয়ে যায়
” নাম্বার
“নাম্বার দিয়ে কি করবে সেটা জানতে চাইছি ইডিয়েট
আদি হাঁত ভাজ করে দাঁড়িয়ে বলে
” কথা বলবো
“আর একটা কথা বলে চাপকে গাল লাল করে দেবো
আদি ধমক দিয়ে বলে। নিধি ভয় পেয়ে যায়
” পিরিয়ড
কাঁপা কাঁপা গলায় বলেই নিধি রুমে চলে যায়।
“এই মেয়েটা সত্যিই গাঁধা। এইটুকু বলার জন্য এতো তালবাহানা। ইডিয়েট একটা
আদি শার্ট চেঞ্জ করে বেরিয়ে যায়।
নিধি আদির বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ নিধির চোখ যায় বেলকনির ঠিক নিচে একটা কবরের দিকে। দুপুরের কড়া রোদে চিকচিক করছে কবরটা। কবরের চার পাশে ফুলের মালা।
” এটা কার কবর? এই বাড়ির মালিকের আপন কেউ হবে হয়ত? এই কবরের মালিক কে হয়ত কেউ একজন ভীষণ ভালো বাসে। তাই এমন সাজিয়ে গুছিয়ে রাখে।
নিধি ভেবে মুচকি হাসে। আর ভাবে বিকেলে একবার কবরটার পাশে যাবে। তারপর আবার কবরের পাশে তাকিয়ে দেখে আরেকটা কবর। এই কবরটা ছোট। হয়ত কোনো ছোট বাচ্চার। নিধির মন খারাপ হয়ে যায়। কেনো জানি মনে হচ্ছে এই কবর দুটোর সাথে নিধির জীবনের অনেকটা আংশ জুড়ে আছে।
“এই যে নাও
আদির কথায় নিধি পেছনে ঘুড়ে দেখে আদি কাগজে মোড়ানো একটা প্যাকেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিধি প্যাকেটটা ধরে।
” এটা বলতে এতো কিসের লজ্জা কে জানে?
বলেই আদি চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে আসে
“দুপুরে আর রাতে তুমি বেলকনিতে আসবা না
বলে আদি চলে যায়
“এতোখনে পুরো ক্লিয়ার হলাম এই কবর দুটোর মধ্যে বিশাল রহস্য আছে
মনে মনে বলে নিধি ওয়াশরুমে যায়। আবার বেরিয়ে আসে ড্রেস নেওয়ার জন্য। লাগেজ খুলে দেখে কোনো ড্রেস নেই খালি পাতলা ছিলছিলে শাড়ি।
” এগুলো পড়বো আমি?
পুরো লাগেজ তন্ন করেও কোনো থ্রি পিছ বা সুতি শাড়ি পায় না নিধি। মন খারাপ করে লাল আর ক্রিম কালার মিশ্রিত একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে যায়।
ছোট হাতার ব্লাউজ। প্রায় দশ মিনিট নিধি শাড়ি পড়ার ট্রাই করে। বাট পারে না। পরে বেরিয়ে আসে।
আদি খাটে বসে গেমস খেলছিলো। নিধি কোনো দিক খেয়াল না করে আয়নার সামনে যায় শাড়ি পড়বে। আজ নিধি শাড়ি পড়া শিখবে আর শাড়ি পড়ে হাঁটতেও শিখবে।
আদি একদৃষ্টিতে নিধির দিকে তাকিয়ে আছে। কেমন নেশা নেশা লাগছে। ভেজা লম্বা চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। এলোমেলো শাড়ি। সব মিলিয়ে আদি একটা ঘোরেন মধ্যে আছে।
খাট থেকে উঠে নিধির কাছে যায়। ব্লাউজের ফিতা বেঁধে দেয়। নিধি অবাকের সাথে ঘাবড়েও গেছে
“কককি করছেন
আদি নিধির ঠোঁটে আঙুল রাখে
” কোনো কথা না
নিধি চুপ করে যায়। আদি নিধিকে শাড়ি পড়িয়ে দিতে থাকে। নিধি চোখ বন্ধ করে আছে। আদি নিধির কুচি ঠিক করে দিয়ে নিজেই গুঁজে দেয়। নিধি কেঁপে ওঠে। আদির ছোঁয়ায় নিধির অদ্ভুত এক ফিলিংস হচ্ছে।
“বাকিটা আমি পারবো।
চোখ বন্ধ করে নিধি।
আদি এবার আচলে হাত দেয়। নিধি বড়বড় চোখ করে আদির দিকে তাকায়। আদি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে আঁচল ঠিক করে দেয়। কিন্তু কিছুতেই পেট ঢাকতে পারছে না। এতোটাই পাতলা শাড়িটা।
তারপর অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে নেয়
“একদম এই রকম ভেজা চুল এলোমেলো শাড়িতে এসে আমাকে ইমপ্রেস করতে আসবা না। তাহলে ভালো হবে না
নিধি মুচকি হেসে বলে
” আমি ইমপ্রেস করতে আসলেই আপনাকে ইমপ্রেস হতে হবে এটা তো কোথাও লেখা নেই
নিধির কথায় আদি বড়সড় চোখ করে নিধির দিকে তাকায়
“ভালোই তো মুখে কথা ফুটেছে
” হুমমম। কথা আগে থেকেই জানতাম কিন্তু থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে বলতাম না।
“এখন ভয় করছে না
নিধি আয়নায় নিজেকে দেখতে দেখতে হবে
” পুরো হিরোইন হিরোইন লাগছে আমায়।
“হিরো আলমের বউয়ের মতো লাগছে
” হিরো আলম তো বিয়ে করে নাই
“করছে
” তাও ভালো লাটসাহেবের বউয়ের মতো লাগছে না
“মুখে মুখে তর্ক করতে শিখে গেছো
” তর্ক করতে আগে থেকেই পারতাম শুধু করতাম না। আম্মু বলে পাগলদের সাথে তর্কে জড়ালে না কি ভালো মানুষও পাগল হয়ে যায়
বলেই নিধি দাঁত দিয়ে জীভ কাটে
“হে খোদা আমি কি বেশি বলে ফেললাম। এবার কি হবে
আদি ভ্রু কুচকে নিধির দিকে তাকিয়ে আছে।
“আমি পাগল
আদি নিধির দিকে এগোতে এগোতে বলে। নিধি পিছিয়ে যাচ্ছে
” আআআপনি এগোচ্ছেন কেনো?
কাঁপা কাঁপা গলায় বলে নিধি
“তুমি পিছিয়ে যাচ্ছ তাই।
” সরি আমি আসলে এমন কিছু বলতে চায় নি
“সরি টু আমিও আসলে তোমার সাথে কি করতে চায় নি
” দেখুন
“এমনিতেই অনেক কিছু দেখে ফেলেছি
নিধি চোখ আপনাআপনি বড় হয়ে যায়। লোকটা আসলেি অসভ্য সাথে বদমাইশ। নিধি ঠাস করে পড়ে যেতে নেয় আদি কোমর জড়িয়ে ধরে।
” হাঁটতে শেখো। সব সময় তো আর আমি থাকবো না
“আমি হাঁটতে পারি
নিধি মুখ বাঁকিয়ে বলে।
আদির ফোন বেজে ওঠে। নিধিকে ছেড়ে ফোন রিসিভ করে
” হেলো
ওপাশ থেকে কিছু কথা বলে আদি ফোনটা আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে। নিধি কেঁপে ওঠে। হনহনিয়ে আদি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
“কি এমন হলো যার জন্য এতো রেগে গেলো। যাই হোক আমার কি?
নিধি আয়নায় নিজেকে দেখে একটু সাজলে মন্দ হয় না। নিধি কাজল নেয় লাল টকটকে লিপস্টিক নেয়। চুলগুলো আঁচড়িয়ে নেয়। বাহহ পারফেক্ট।
এরপর নিধি কিছু সেলফি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়। এটা নিধির একমাত্র কাজ সেলফি তুলে পোষ্ট দেওয়া। একটু পরে কেউ দরজায় নক করে
” এই সময় আবার কে আসলো? লাটসাহেব হলে তো চাবি দিয়ে আসতে পারতো। তাহলে কে?
নিধি ভয়ে ভয়ে গিয়ে দরজা খুলে। দরজা খোলার পরে সামনের মানুষটাকে দেখে নিধির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
“এবার নিধিকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
চলবে
#শুধু তুই ২
#পর্বঃ৮
#Tanisha Sultana (Writer)
“আআআপনি এখানে?
সৌরভ নিধিকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকে।
” বফ তোমার বাড়িতে এসেছে। কোথায় তাকে ওয়েলকাম জানাবে তা না বলছো এখানে কেনো? ইটস নট ফেয়ার নিধিরা
নিধি কি করবে বুঝতে পারছে না। হাত কচলাচ্ছে। ভীষণ ভয় করছে নিধির।
“দেখুন
সৌরভ নিধির পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে
” ওয়াও। ইউ আর লুকিং সো হট। কই আগে তো এরকম সুন্দর করে সাজুগুজু করো নি। একদিনে আদির জন্য এতো সাজ। আর দুই বছর আমার সাথে থেকেও কখনো এতোটুকু লিপস্টিকে দেখি নি তোমায়
নিধির এই সৌরভকে চিনতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ আগের সৌরভ তো নিধির দিকে ভালো করে তাকিয়ে কথা বলতো না। আর এ কতো নাজে কথা বলছে
“আপনি প্লিজ চলে যান
” সব সময় আমিই কেনো চলে যাবো বলতে পারো নিধিরা? প্রেম তো আর একা একা করা যায় না। দুজনেই প্রেম করলাম। বাট প্রথমে তোমার বাবা রিকোয়েস্ট করলে তোমায় মুক্তি দিতে। তুমিও নিখোঁজ হয়ে গেলে। ভালোবাসতে না তাহলে মনটা নিয়ে কেনো খেললে নিধিরা বলো?
সৌরভ চোখ মুখ শক্ত করে চিৎকার করে বলে
“প্লিজ আস্তে কথা বলুন
” নিধি কে এসেছে
মনি নিধিদের বাসায় ঢুকতে ঢুকতে বলে। সৌরভকে দেখে ভ্রু কুচকে তাকায়
“তুই
সৌরভ একটু হাসার চেষ্টা করে বলে
” এতোদিন তো আমি আদি এই বাসাতেই থাকতাম।
“হুমম বাট এখন আদি বিয়ে করেছে।
” হুমম জানি।
“তাহলে
” আসতে বারণ
কিছুটা রেগে বলে সৌরভ।
“সেটা কোথায় বললাম। নিধি আদি কোথায়?
” একটু আগে বেরিয়েছে
“কোথায় গেছে?
” ঠিক জানি না
তখনই আদি আসে। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। সৌরভ মুখ ঘুড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিধি আদির দিকে তাকিয়ে আছে। মনি এগিয়ে গিয়ে বলে
“কি রে কোথায় গেছিলি
” একটা জরুরি কাজ পরে গেছিলো
আদি এক নজর নিধির দিকে তাকায়
“তোরা এখানে?
” আমি এসেছিলাম তোদের দেখতে।
“ওহহ
বলেই আদি রুমে চলে যায়।
” নিধি চলো আমি আর তুমি রান্নাটা সেরে ফেলি। নিশ্চয় তোমাদের রান্না বা খাওয়া কোনোটাই হয় নি
“হুমম। সৌরভদা খেয়ে যাবেন প্লিজ
সৌরভ নিধির দিকে এক নজর তাকায়। নিধি আর মনি রান্না ঘরে যায়।
রান্না শেষে নিধি রুমে গিয়ে দেখে আদি শার্ট খুলে বসে আছে। পেছনে বেশ খানিকটা কেটে গেছে। হাতে ছুড়ির ধারালো অংশ। হাত থেকে টপটপ রক্ত পড়ছে। নিধি দৌড়ে আদির কাছে যায়
” এটা আপনি কি করছেন? ছাড়ুন।
নিধি আদির হাত থেকে ছুড়ি ফেলে দেয়।
আদি নিধির দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে
“প্রথমেই বলেছি আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা একদম করবে না
” এক্সকিউজ মি নিধিরা নিধির কাউকে ইমপ্রেস করার জন্য সাজুগুজু করার প্রয়োজন হয় না। আর সবচেয়ে বড় কথা। আপনাকে আমার ২% ও ভালো লাগে না যে ইমপ্রেস করবো। বিয়ে হয়েছে আমাদের। তবুও আমি কখনো আপনার কাছ থেকে কিছু এক্সপেক্ট করি না।
আদি দেয়ালে ঘুসি মারে। নিধি আদির হাত ধরে
“পাবলেম কি আপনার?
” আমি একা থাকতে চায়
নিধি আদির হাতের রক্ত পরিষ্কার করতে থাকে
“এটেশন পাওয়ার জন্য করছো
নিধি আদির হাতটা ছেড়ে দিয়ে বলে
” কি মনে করেন নিজেকে? হিরো দাদা কোনো সুপারম্যান যে আপনার এটেনশন পাওয়ার জন্য এসব করবো? আমি বরাবরই একটু ইমোশনাল। কারো কষ্ট সয্য করতে পারি না। জাস্ট তাই এসেছিলাম। আপনার এটেনশন বা আপনাকে ইমপ্রেস কখনোই আমি করতে চাই না। আমি বিশ্বাস করি জোর করে পাগলামি করে শুধু পাগল উপাধি পাওয়ার যায় ভালোবাস না
“বড্ড বেশি কথা বলো তুমি।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে আদি।
” কথা না বললেও আপনি বকেন আর কথা বললেই বকেন। এনিওয়ে আপনার পিঠে অনেকটা কেটে গেছে
“তোমার ভাবতে হবে না
” হবে। আপনি এখন আমার দ্বায়িত্বে আছেন। তো যখন আমরা বাসায় ফিরবো তখন যদি বাসার সবাই দেখে আপনার একটা হাত নাই বা পা নাই তাহলে তো সবাই বলবে। নিধি তুই আদির খেয়াল রাখিস নি। তখন আমি কি বলবো। জাস্ট এই জন্যই আপনার পিঠে আমি এখন মলম লাগিয়ে দেবো। অন্য কোনো কারণ নেই
আদি হা করে নিধির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। এটা কি সেই নিধি যাকে আদি বিয়ে করছিলো? দেখতে সভ্যশান্ত কিন্তু এতো কথা বলতে পারে।
নিধির আদির দিকে তাকিয়ে বলে
“আমি কিন্তু আপনাকে ইমপ্রেস করতে আসি নি। এখন যদি আপনি আমাকে ইমপ্রেস করার জন্য তাকিয়ে থাকেন তাহলে আমি থানায় মামলা করবো
আদি চোখ সরিয়ে নেয়। নিধি আদির পিঠে মলম লাগায়
” সৌরভ এসেছে। ওর জন্য এতো সাজ। বাহহহ গুড। তুমি চাইলে আমি ধুমধাম করে সৌরভের সাথে তোমার বিয়ে দেবো
নিধির রাগ হয়
নিধি ভেবেছিলো এখন কেউ আসবে তাই একটু সেজে ছিলো। কিন্তু একটু সাজার জন্য যে সবাই এতোকিছু গবেষণা করবে এটা নিধির ভাবা ছিলো না।
ঠাস করে মলম রেখে নিধি চলে যায়
আদি নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
খাবার টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে আর রাগে গজগজ করছে নিধি। মনি বলে
“নিধি কি হয়েছে?
নিধি ঠাস করে ভাতটা নামিয়ে বলে
” কি মনে করে ওই লাটসাহেব? সব সময় আমার সাথে এমন করবে। আমি কি জোর করে ঘাড়ে চেপে বসেছি না কি?
মনি মুচকি হেসে নিধির কাঁধে হাত রাখে
“আদি এরকমই। কাঁটায় ভরা আদির জীবনটা
” কেনো?
“যাও আদিকে ডেকে নিয়ে এসো
নিধি যাওয়ার সময় সৌরভের মুখোমুখি হয়
” নিধিরা
“পথ ছাড়ুন
” চেনো না আমাকে? অচেনা আমি? এমন বিহেব কেনো করো? মানছি বাবার চাপে বিয়ে করছো। তাহলে এখন বাবা নেই আমি আছি
“পাগলামি করছেন কেনো?
” পাগল তুমি করেছো আমাকে নিধি।
“আমি এমনটা করতে চায় নি
” চুপচাপ আমার সাথে চলে যাবে তুমি। অনেক দুরে চলে যাবো আমরা।
সৌরভ নিধির হাত ধরে বলে
নিধি হাত ছাড়িয়ে নেয়
“আমাকে যেতে হবে।
নিধি চলে যায়। সৌরভ নিধির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসে
নিধি আদির রুমের বাইরে জোরে চিৎকার করে বলে
” আমি কাউকে ইমপ্রেস করতে আসি নি। মনি আপু বলেছে এই বাড়িতে একটা বিড়াল থাকলে তাকেও ডেকে আনতে। আমি ডাকতে এসেছি। কারো খেতে ইচ্ছে হলে চলে আসতে পারে
নিধির কথা শেষ হলে সামনে তাকিয়ে দেখে আদি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নিধি দৌড় দিতে যায় আদি হাত ধরে
“আমি বিড়াল
” আপনি বিড়াল? কই মানুষের মতোই তো দেখা যায়। বেড়াল হলেন কবে?
“সাটআপ। ইডিয়েট একটা।
নিধি কেঁপে ওঠে
” আআমি ভয় পায় নি
একটু সাহস সঞ্চয় করে বলে নিধি
“আচ্ছা। আদি বাঁকা হেসে বলে
আদি নিধিকে রুমে নিয়ে যায়
” ককি করছেন?
“সত্যি সত্যি ভয় পাও না কি টেস্ট করছি
রুমে এনে দরজা বন্ধ করে দেয়। নিধির হাত পা কাঁপছে। আদি নিধির দিকে এগোচ্ছে। নিধি যেখানে ছিলো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে
” দেখুন এভাবে এগুলো আমার ভয় করে না। কারণ আমি জানি আপনি একটা কিসও করবেন না। সো আমি দাঁড়িয়ে আছি আপনি এগোন
আদি দাঁড়িয়ে যায়।
“ওভারস্মার্ট
আদি বিরক্তি নিয়ে বলে নিধিকে
” গাঁধা ইডিয়েট বলদ ননসেন্স স্টুপিট ওভারস্মার্ট। এসব আমি জানি। এবার ভাবুন নতুন কোনো নাম দেওয়া যায় কি না
“ইডিয়েট
বলেই আদি চলে যায়। নিধি জোরে একটা শ্বাস নিয়ে নিধিও যায়।
খাওয়া শেষে মনি আর সৌরভ চলে যায়। নিধি রুমে এসে টিভি দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ে।
গানের শব্দে নিধির ঘুম ভাঙে। গানের সুরটা কোথা থেকে আসছে দেখার জন্য নিধি বেলকনিতে যায়। দেখে কবরের পাশে বসে কেউ গিটার বাজাচ্ছে আর গাইছে
” এতো রোদ্দুর তুই এনে দিলি তাই
তোর বৃষ্টি আমি একটু পেতে চায়
মেঘলা হয়ে যাক আরও পাঁচটা বারো মাস
কোনো বিকেল বেলাতে তুই আমার হয়ে যাস
শুধু তুই শুধু তুই আমি চাইছি না কিছুই
“কে গাইছে গানটা?
চলবে